নিউইয়র্ক প্রবাসী এলামনাইদের আনন্দ সমাবেশ
- প্রকাশের সময় : ১১:৩৭:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ নভেম্বর ২০১৬
- / ১০৪২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তী উপলক্ষে নিউইয়র্ক প্রবাসী এলামনাইগণ আনন্দ উৎসব ও সমাবশের আয়োজন করেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসাসিয়েশন অব ইউএসএ’র উদ্যোগে গত ১৮ নভেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে এলামনাইদের স্মৃতিচারণে উঠে আসে চবি ক্যাম্পাসের রোমঞ্চকর নানা স্মৃতি আর আনন্দ-বেদনার কথা। ক্যম্পাসের স্মৃতি চারণ করতে গিয়ে অনেকেই নস্টালজিক হয়ে উঠেন। উপস্থিত এলামনাইদের বক্তব্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় উজ্জল হয়ে দৃশ্যমান হয় আটলান্টিক মহাসাগরের এই পারে।
সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ হাটবাজার রেষ্টুরেন্টের পার্টি হলে আয়োজিত এই আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাজী ইসমাইল। মুল অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এমলাক হোসেন ফয়সাল। খবর ইউএনএ’র।
সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সামসুল ইসলাম মজনু, প্রফেসর নূরুল ইসলাম, এনামুল হায়দার, প্রফেসর দেলোয়ার হোসেন, শামীমা শাবনাজ, হাবিবুর রহমান চৌধুরী, মোসাম্মৎ শাহেদা, মোহাম্মদ সুজন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আরো স্মৃতি চারণ করেন ড. রুহুল মতিন, প্রিন্সিপাল নূরুল আমীন, ড. আবুল কাশেম, মোহাম্মদ সোলায়মান, জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ হানিফ, বদরুল হক আজাদ, মোহাম্মদ খালেদ, নূরুল আমীন, মাকসুদুল হক চৌধুরী, মোবাশ্বির হোসেন, সিরাজুল ইসলাম, নাসিমা সেলিম, মোহাম্মদ খালেদ, কামাল হোসেন, নূরুল আনোয়ার, অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক আশিক মাহমুদ প্রমুখ।
বাংলাদেশ কৃষিবিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি শওকত আনোয়ার, কমিউনিটি নেতা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যা ৮টার দিকে আনন্দ উৎসব শুরু হয়ে চলে প্রায় মধ্যরাত পর্যন্ত। অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো আড্ডা, স্মৃতিচারণ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নৈশভোজ প্রভৃতি। অনুষ্ঠানের স্মৃতি চারণে এলামনাইদের বক্তব্যে তাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে হল বরাদ্দ, কিভাবে হলে সিট পাওয়া যেতো, কেন নতুন শিক্ষার্থীরা হল পেতেন না বা হলে সিট পেতে হলে কি কি করতে হতো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক প্রভৃতি বিষয় উঠে আসে। আরো উঠে আসে হলের ডাইনিং-এ খাবারের কথা, বিশেষ করে ভাতের সাথে ডালের রং-এর মতো পানির ডাল আর ঝোলের মাঝে ২/১ টুকরো মাছ/মাংস পাওয়াই ছিলো দুষ্কর। এলামনাইরা বলেন, ক্যাম্পাসে যাতায়াতে বাস-ট্রেনে আনন্দ-বেদনার স্মৃতির কথা। মনে করেন, ভীড়ের মধ্যে শ্যাটল ট্রেনে উঠতে গিয়ে দুই ছাত্র মারা যাওয়া সহ অনেকের আহত হওয়ার ঘটনার কথা। এছাড়াও আড্ডায় ক্যাম্পাস জীবনের প্রেম-পিরিতীর কথাও ফুটে উঠে কারো কারো স্মৃতি চারণে।
অনুষ্ঠানে এলামনাইরা বলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় যেমন বাংলাদেশের গর্বিত সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ তেমনী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে আমরাও গর্ব বোধ করি। কেউ কেউ বলেন, আমাদের সময়ের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস আর এখনকার ক্যাম্পাসের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। আমাদের সময়ের মতো এখনকার ক্যাম্পাস রঙ্গীন থাকলেও কলুসিত ছাত্র রাজনীতি ক্যাম্পাসের রঙ্গীন আকাশ মলিন করেছে।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব আর চবি এলামনাই শামীমা শাবনাজ, ডা. আতাউল প্রমুখ সহ স্থানীয় শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এই পর্বে এলামনাইদের কেউ কেউ গানের তালে তালে নেচে-গেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন। এলামনাইদের পরিবারের সদস্যরাও অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ফলে অনুষ্ঠানটি মিলন মেলায় পরিণত হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসাসিয়েশন অব ইউএসএ’র সামসুল ইসলাম মজনু জানান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তী পালন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসে দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এলামনাই সহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের মানুষের ব্যাপক সমাবেশ ঘটে। স্থানীয় পরিবেশ-পরিস্থিতি আর সময়ের আলোকে আমরা একদিন আনন্দ উৎসবের আয়োজন করি। অনুষ্ঠানটি সফল করার জন্য তিন সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আয়োজকদের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান।