নিউইয়র্ক ১০:০৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কে তাজমহল রেষ্টুরেন্টে গাফফার চৌধুরীর আলোচনা সভা বাতিল

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০১৫
  • / ৯৩৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবারের ব্যানারে নিউইয়র্কের জ্যামাইকাস্থ তাজমহল পার্টি সেন্টারে আয়োজিত কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরীর আলোচনা সভা বাতিল হয়ে গেছে। রোববার সন্ধ্যায় এই সভা হওয়ার কথা ছিলো। জানা গেছে, গত ৩ জুলাই বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আল্লাহতায়ালার নাম সহ নবী-রাসুল, ধর্ম, ইসলাম প্রভৃতি স্পর্শকারতর বিষয়ে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দেশ-প্রবাসে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার ফলে ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি’র আর ব্যবসায়িক সুনাম বিনষ্টেরর আশংকায় রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ এই আলোচনা সভা বাতিল করেছে।
রোববার তাজমহল পার্টি সেন্টারে আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার, শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার পক্ষের উদ্যোগে ‘আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল’ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে ফেব্রুয়ারীর গানের রচয়িতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে অŸ্দুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী ও কাউন্সিলম্যান ড. নূরন নবী, সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, চলচ্চিত্রকার সৈয়দ কবীর আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা ও সিলেট পৌরসভার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম খান, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শদ আলম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী, বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার সভাপতি বেদারুল ইসলাম বাবলা, বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সাবেক সভাপতি কামাল আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান। আলোচনা সভা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন শরাফ সরকার, প্রধান সমন্বয়কারী ড. শাহজাহান মাহমুদ আর সদস্য সচিব হাজী এনাম।
উল্লেখ্য, রোববারের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সহ দলে শীর্ষ স্থানীয় অনেক নেতা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত নন। তবে ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেনছেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ করি, দলের সভাপতি। তাই আওয়ামী পরিবারের নামে আহুত যেকোন অনুষ্ঠানে যাওয়ারঅধিকার রাখি এবং এই আলোচনা সভায় আমি যোগ দেবো। তিনি আরো বলেছেন, দলের সকল নেতা-কর্মীকেও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বলেছি।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, তাজমহল পার্টি সেন্টারের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল ব্রুকলীনে আয়োজনের প্রস্তুুতি চলছে এবং সেখানে আব্দুল গাফফার চৌধুরী বক্তব্য রাখবেন। তবে এই সভা ঘিরে ব্রুকলীনেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তাজমহল পার্টি সেন্টারের অন্যতম স্বত্তাধিকারী মাসুম খান এই প্রতিবেদককে বলেন, গাফফার চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে ফেস বুকে নানা রকম মন্তব্য দেখে আমরা ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি’র আর ব্যবসায়িক সুনাম বিনষ্টেরর আশংকায় আজকের (৫ জুলাই রোববার) আলোচনা সভা বাতিল করেছি। তিনি এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না বলে জানান ‘সবকিছু বুঝতেই পারছেন’।
এব্যাপারে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আহ্বায়ক শরাফ সরকার এই প্রতিবেদনকে বলেন, অন্য কোন কারণে নয় রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ মানা করার কারণেই তাজমহল পার্টি সেন্টারে আনুষ্ঠানটি হচ্ছে না। তবে ব্রুকলীন আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি ব্রুকলীনে হচ্ছে।
একাত্তুরের বীর মুক্তিযোদ্ধার, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী অঙ্গরাজ্যের প্লেইন্স বরো সিটির কাউন্সিলম্যান ড. নূরন নবী বলেন, বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে আব্দুল গাফফার চৌধুরী ইসলাস বা ধর্ম সম্পর্কে কোন বিরূপ মন্তব্য করেননি। তার বক্তব্য পুরোপুরো না শুনেই অনেকে ভুল ধারণাবশত: যা না তাই মন্তব্য করছেন। এটা দু:খজনক। তিনি বলেন, গাফফার ভাইর বক্তব্য পুরোপুরি শুনলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। বাংলা ভাষার উৎপত্তি আর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিকথা বলতে গিয়েই তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে কিছু কথা বলেছেন যা যুক্তি নির্ভর। ড. নবী বলেন, বিএনপি-জামায়াতিরাই তার বক্তব্য বিকৃত করে ইস্যূ তৈরী করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, আমি অনুষ্ঠানে ছিলাম, গাফফার সাহেবের বক্তব্য শুনেছি। তবে তার বক্তব্য বিষয় বস্তুর (বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত) বাইরে চলে গিয়েছিল। এমন বিষয়ে আল্লাহতায়ালার নাম সহ নবী-রাসুল, ধর্ম, ইসলাম প্রভৃতি স্পর্শকারতর বিষয়ে এতো বক্তব্য না রাখলেই ভালো হতো। ঐ অনুষ্ঠানে তিনি দেশ নিয়ে যত না কথা বলেছেন তার চেয়ে বেশী কথা বলেছেন হিন্দু-মুসলিম বিষয়ে। যা অনেককেই বিব্রত করেছে। পাশাপাশি প্রশ্নকারী ২/১ সাংবাদিকের প্রশ্নও ছিলো ‘সেনসেটিভ’।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কে তাজমহল রেষ্টুরেন্টে গাফফার চৌধুরীর আলোচনা সভা বাতিল

প্রকাশের সময় : ০৬:৩৮:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ৫ জুলাই ২০১৫

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবারের ব্যানারে নিউইয়র্কের জ্যামাইকাস্থ তাজমহল পার্টি সেন্টারে আয়োজিত কলামিস্ট আব্দুল গাফফার চৌধুরীর আলোচনা সভা বাতিল হয়ে গেছে। রোববার সন্ধ্যায় এই সভা হওয়ার কথা ছিলো। জানা গেছে, গত ৩ জুলাই বাংলাদেশ মিশনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আল্লাহতায়ালার নাম সহ নবী-রাসুল, ধর্ম, ইসলাম প্রভৃতি স্পর্শকারতর বিষয়ে বক্তব্যের প্রেক্ষিতে দেশ-প্রবাসে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার ফলে ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি’র আর ব্যবসায়িক সুনাম বিনষ্টেরর আশংকায় রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ এই আলোচনা সভা বাতিল করেছে।
রোববার তাজমহল পার্টি সেন্টারে আয়োজিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী পরিবার, শহীদ পরিবার, মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতার পক্ষের উদ্যোগে ‘আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল’ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন একুশে ফেব্রুয়ারীর গানের রচয়িতা, বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক আব্দুল গাফফার চৌধুরী। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে অŸ্দুল মোমেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিজ্ঞানী ও কাউন্সিলম্যান ড. নূরন নবী, সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমান, বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, চলচ্চিত্রকার সৈয়দ কবীর আনোয়ার, মুক্তিযোদ্ধা ও সিলেট পৌরসভার সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম খান, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শদ আলম, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূরুন নবী, বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকার সভাপতি বেদারুল ইসলাম বাবলা, বাংলাদেশ সোসাইটি ইন্্ক নিউইয়র্কের সাবেক সভাপতি কামাল আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায় ও শহীদ হাসান। আলোচনা সভা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন শরাফ সরকার, প্রধান সমন্বয়কারী ড. শাহজাহান মাহমুদ আর সদস্য সচিব হাজী এনাম।
উল্লেখ্য, রোববারের অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ সহ দলে শীর্ষ স্থানীয় অনেক নেতা এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত নন। তবে ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেনছেন, যেহেতু আমি আওয়ামী লীগ করি, দলের সভাপতি। তাই আওয়ামী পরিবারের নামে আহুত যেকোন অনুষ্ঠানে যাওয়ারঅধিকার রাখি এবং এই আলোচনা সভায় আমি যোগ দেবো। তিনি আরো বলেছেন, দলের সকল নেতা-কর্মীকেও এই অনুষ্ঠানে যোগ দেয়ার জন্য বলেছি।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, তাজমহল পার্টি সেন্টারের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল ব্রুকলীনে আয়োজনের প্রস্তুুতি চলছে এবং সেখানে আব্দুল গাফফার চৌধুরী বক্তব্য রাখবেন। তবে এই সভা ঘিরে ব্রুকলীনেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
তাজমহল পার্টি সেন্টারের অন্যতম স্বত্তাধিকারী মাসুম খান এই প্রতিবেদককে বলেন, গাফফার চৌধুরীর বক্তব্য নিয়ে ফেস বুকে নানা রকম মন্তব্য দেখে আমরা ‘অপ্রীতিকর পরিস্থিতি’র আর ব্যবসায়িক সুনাম বিনষ্টেরর আশংকায় আজকের (৫ জুলাই রোববার) আলোচনা সভা বাতিল করেছি। তিনি এব্যাপারে বিস্তারিত কিছু না বলে জানান ‘সবকিছু বুঝতেই পারছেন’।
এব্যাপারে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলের আহ্বায়ক শরাফ সরকার এই প্রতিবেদনকে বলেন, অন্য কোন কারণে নয় রেষ্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষ মানা করার কারণেই তাজমহল পার্টি সেন্টারে আনুষ্ঠানটি হচ্ছে না। তবে ব্রুকলীন আওয়ামী লীগের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি ব্রুকলীনে হচ্ছে।
একাত্তুরের বীর মুক্তিযোদ্ধার, বিশিষ্ট বিজ্ঞানী এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সী অঙ্গরাজ্যের প্লেইন্স বরো সিটির কাউন্সিলম্যান ড. নূরন নবী বলেন, বাংলাদেশ মিশনের অনুষ্ঠানে আব্দুল গাফফার চৌধুরী ইসলাস বা ধর্ম সম্পর্কে কোন বিরূপ মন্তব্য করেননি। তার বক্তব্য পুরোপুরো না শুনেই অনেকে ভুল ধারণাবশত: যা না তাই মন্তব্য করছেন। এটা দু:খজনক। তিনি বলেন, গাফফার ভাইর বক্তব্য পুরোপুরি শুনলে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। বাংলা ভাষার উৎপত্তি আর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ইতিকথা বলতে গিয়েই তিনি প্রাসঙ্গিকভাবে কিছু কথা বলেছেন যা যুক্তি নির্ভর। ড. নবী বলেন, বিএনপি-জামায়াতিরাই তার বক্তব্য বিকৃত করে ইস্যূ তৈরী করার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রবাসী বলেন, আমি অনুষ্ঠানে ছিলাম, গাফফার সাহেবের বক্তব্য শুনেছি। তবে তার বক্তব্য বিষয় বস্তুর (বাংলাদেশ : অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত) বাইরে চলে গিয়েছিল। এমন বিষয়ে আল্লাহতায়ালার নাম সহ নবী-রাসুল, ধর্ম, ইসলাম প্রভৃতি স্পর্শকারতর বিষয়ে এতো বক্তব্য না রাখলেই ভালো হতো। ঐ অনুষ্ঠানে তিনি দেশ নিয়ে যত না কথা বলেছেন তার চেয়ে বেশী কথা বলেছেন হিন্দু-মুসলিম বিষয়ে। যা অনেককেই বিব্রত করেছে। পাশাপাশি প্রশ্নকারী ২/১ সাংবাদিকের প্রশ্নও ছিলো ‘সেনসেটিভ’।