নিউইয়র্কে একুশের আলোচনা : প্রবাসে নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষা বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গীকার
- প্রকাশের সময় : ০৫:৫৬:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ৯৬৭ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রবাসে মাতৃভাষার ব্যাপক ব্যবহার এবং নতুন প্রজন্মের মাঝে বাংলা ভাষাকে বাঁচিয়ে রাখার অঙ্গীকারে নিউইয়র্কে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও মহান একুশে ফেব্রুয়ারী। একুশের প্রথম প্রহরে ২গ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার রাতে প্রবাসের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী সংগঠন অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে। এর আগে দিনব্যাপী বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে অনুষ্ঠিত হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে শিশু চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা। বিপুলসংখ্যক শিশু এসব প্রতিযোগিতায় আগ্রহভরে অংশ নেয়।
অমর একুশে পালন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশ দূতাবাস, নিউইয়র্কের ম্যানহাটনে জাতিসংঘের বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন, সানিসাইড কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ সোসাইটি, এস্টোরিয়ার সাউন্ডভিউ মিলনায়তনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জ্যাকসন হাইটসের ডাইভারসিটি প্লাজায় জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন এবং জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস অ্যাসোসিয়েশন (জেবিবিএ-এনওয়াই), উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে শরীয়তপুর সমিতি অব নর্থ আমেরিকা এবং ম্যানহাটনে জাতিসংঘের সামনে ড্যাগ হ্যামারশোল্ড পার্কে মুক্তধারা ফাউন্ডেন এবং বাঙালীর চেতনা মঞ্চ অুমর একুশের বিস্তারিত কর্মসূচী পালন করে।
বাংলাদেশী অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকা জ্যাকসন হাইটস, ব্রঙ্কস, ব্রুকলিনসহ বিভিন্ন এলাকায় অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়। বছরের সর্বনিম্ন ঠান্ডর রেকর্ড-এর মধ্যে কোথাও খোলা আকাশের নিচে, আবার কোথাও ভাড়া করা অডিটরিয়ামে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করা হয়।
দিনব্যাপী আলোচনা সভা এবং নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোদের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হলেও ২০ ফেব্রুয়ারী রাত ১২ টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে বিভিন্ন শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তারা প্রবাসে জন্ম নেয়া এবং বেড়ে ওঠা নতুন প্রজন্মকে বাংলা ভাষা শিখানোর উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। এসব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আমরা যদি নতুন প্রজন্মকে আমাদের ভাষা শেখাতে, সংস্কৃতি শেখাতে না পারি তাহলে এটি হবে আমাদের সবচেয়ে বড় ভুল। এই ভুলের কারণেই তারা বাংলা ভাষা এবং বাংলাদেশকে ভুলে যাবে।
ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাস: ওয়াশিংটন বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে একুশ পালন করা হয় গত ২০ ফেব্রুয়ারী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অডিটোরিয়ামে। এতে আলোচনায় অংশ নেন রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন।
বাংলাদেশ সোসাইটি:
প্রবাসের ছাতা সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি একুশ পালন করে সানিসাইড কম্যুনিটি সেন্টারে। সোসাইটির সভাপতি আজমল হোসেন কুনুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম হাওলাদারের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেন। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং, নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ শামীম আহসান, নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলম্যান কস্টা কনস্ট্যানটিনাইডস প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের ট্রাস্টি জামাল আহমেদ জনি, সাবেক সভাপতি মুজিব-উর রহমান, নার্গিস আহমেদ ও কামাল আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্ব সঞ্চালনায় ছিলেন সাংস্কৃতিক সম্পাদক মনিকা রায়। সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসের বিভিন্ন শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এর আগে অনুষ্ঠিত হয় শিশু চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। পরে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণী বিজয়ী ছাড়াও অংশগ্রহণকারী সবাইকে পুরস্কৃত করা হয়।
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে রাত ১২টা ১ মিনিটে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে প্রবাসের শতাধিক সংগঠন।
বাংলাদেশ সোসাইটির অস্থায়ী শহীদ মিনারে যেসব সংগঠন পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করে তারা হলো: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি, যুক্তরাষ্ট্র জাসদ, বাংলাদেশ লীগ অব আমেরিকা, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি), জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন ইউএসএ ইনক, বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অব আমেরিকা, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রেটার ঢাকা জাতীয়তাবাদী ফোরাম, নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেস ক্লাব, স্টেট আওয়ামী লীগ, মহানগর আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা যুব কমান্ড, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, শেখ হাসিনা মঞ্চ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ফোরাম ইউএসএ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র কৃষক লীগ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদল, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদল, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস), স্টেট বিএনপি, সিটি বিএনপি, স্টেট যুবলীগ, সিটি যুবলীগ, স্টেট যুবদল, সিটি যুবদল, বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন ইনক, বরিশাল বিভাগীয় সমিতি ইউএসএ ইন্ক, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া কমিউনিটি অব নর্থ আমেরিকা ইন্ক, মাদারীপুর জেলা সমিতি ইউএসএ ইন্ক, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া সোসাইটি ইউএসএ ইনক, মুন্সিগঞ্জ বিক্রমপুর এসোসিয়েশন ইন্ক, গ্রেটার রংপুর ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকা ইন্ক, বাংলাদেশ বিয়ানীবাজার সামাজিক ও সাংস্কৃতি সমিতি, কুমিল্লা জেলা সোসাইটি ইউএসএ ইন্ক, রূপসী চাঁদপুর ফাউন্ডেশন ইন্ক, ঢাকা জেলা এসোসিয়েশন ইউ এস এ ইন্ক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি, ডাউনটাউন ম্যানহাটন বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন, কেরাণীগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউএস ইন্ক, নবাবগঞ্জ ফাউন্ডেশন ইউএস ইন্ক, রংপুর জেলা এসোসিয়েশন, প্রবাসী টাঙ্গাইলবাসী ইউএসএ ইন্্ক, যশোর এসোসিয়েশন নিউইয়র্ক ইন্ক, শাপলা ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েটস নিউইয়র্ক ইন্ক, বগুড়া ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন ইউএসএ ইন্ক, কুমিল্লা মহানগর সোসাইটি অব নর্থ আমেরিকা, নিউইয়র্ক গোলাপগঞ্জ সোসাইটি, হবিগঞ্জ বৃন্দাবন কলেজ এলামনাই এসোসিয়েশন, ভোলা ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ আমেরিকান কালচার একাডেমী, গ্রীণক্যাব ওনার্স নিউইয়র্ক ইন্ক, বৃহত্তর গুলশান সোসাইটি, সম্মিলিত বরিশাল বিভাগবাসী ইউএসএ ইন্ক, গজারিয়া সোসাইটি ইউ এস এ ইন্ক, শিল্পকলা একাডেমী ইন্ক, সার্বজনীন পুজা উদযাপন পরিষদ, বৃহত্তর রাজশাহী এসোসিয়েশন ইন্ক, কুমিল্লা সোসাইটি ইউএসএ ইন্ক, প্রবাসী সিরাজগঞ্জ জেলা সমিতি, জামালপুর জেলা সমিতি ইউএসএ, আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ যুক্তরাষ্ট্র শাখা, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, বঙ্গমাতা পরিষদ, বাংলাদেশ ‘ল’ সোসাইটি ইউএসএ ইন্ক, ঠাকুরগাও ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন ইন্ক, পদ্মা ইয়েলো সোসাইটি, বাংলাদেশ আমেরিকান কার ও লিমোজিন এসোসিয়েশন ইন্ক, মিলেনিয়াম টিভি পরিবার ইউএসএ, গোপালগঞ্জ ডিষ্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন আমেরিকা ইন্ক, ফরিদপুর জেলা কল্যাণ সমিতি, কুষ্টিয়া জেলা সমিতি ইউএসএ ইন্ক, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন, নবাবগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউএসএ ইন্ক, ঝিনাইদহ জেলা সমিতি ইউএসএ ইন্ক, গ্রেটার কুমিল্লা ফাউন্ডেশন অব নর্থ আমেরিকা ইন্ক, সম্মিলিত বরিশাল বিভাগবাসী ইউএসএ, ইন্ক, বগুড়া সমিতি অব নর্থ আমেরিকা, ওয়ার্ল্ড হিউম্যান রাইটস, উল্লাপাড়া সোসাইটি অব ইউএসএ, ইন্ক, মানিকগঞ্জ সমিতি নর্থ আমেরিকা, ইন্ক, গাঙচিল সাহিত্য আসর, হিন্দোল সঙ্গীতালয়, মানিকগঞ্জ জেলা সমিতি, আড়াই হাজার উপজেলা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইউএসএ ইন্ক, গ্রেটার দাউদকান্দি এসোসিয়েশন ইউএসএ ইন্ক, দাউদকান্দি কান্দি সোসাইটি ইউএসএ ইন্ক, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ড সোসাইটি নিউইয়র্ক ইন্ক, কুইন্স বাংলাদেশ সোসাইটি, ইন্ক,বাংলা নাট্যদল, চাপাইনবাবগঞ্জ এসোসিয়েশন ইউএসএ ইন্ক, বাংলাদেশ আমেরিকান কালচারাল এসোসিয়েশন ইন্ক, যুক্তরাষ্ট্র নেত্রকোনা জেলা সমিতি, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন ইউএসএ।
মুক্তধারা ফাউন্ডেশন:
মুক্তধারা ফাউন্ডেশন এবং বাঙালী চেতনা মঞ্চের উদ্যোগে অমর একুশের অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় প্রতিবছরের মত জাতিসংঘ সদর দপ্তরের সামনে ড্যাগ হ্যামারশোল্ড পার্কে। রাত ১২টা ১ মিনিটে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনার বিভিন্ন সংগঠন পুষ্মমাল্য অপর্ণ করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে।
এর আগে বিকাল ৫টায় নিউইয়র্ক স্টেটের স্টেট সিনেটর হোজে পেরেলটার প্রতিনিধি কমিউনিটি রিলেশন বিভাগের উপ-পরিচালক দীনা ফুটে মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের কাছে নিউইয়র্ক স্টেট সিনেট ও এসেম্বলী অমর একুশর আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতির রেজুলেশন হস্তান্তর করেন। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এসময় ড. মোমেন বলেন, এই স্বীকৃতির মাধ্যমে আমেরিকায় বাংলা ভাষার নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো।
জালালাবাদ এসোসিয়েশন ও জেবিবিএ:
জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা ইন্্ক ও জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন জেবিবিএন) নিউইয়র্ক ইন্্ক যৌথ উদ্যোগে মহান একুশ পালন করা হয় খোলা আকাশের নিচে জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার সিটি প্লাজায়। এর আগে পালকি পার্টি সেন্টারে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্রনাথ রায়কে বিশেষ সম্মাননা জানানো হয়। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বদরুল খান, জেবিবিএ নিউইয়র্ক-এর সভাপতি মহসীন মিয়া, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জেড এ চৌধুরী জুয়েল ও জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। পরে রাত ১২টা ১ মিনিটে ডাইভারসিটি প্লাজায় মাইনাস তাপমাত্রার মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষেরা সবাই শহীদ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের উদ্যোগে এস্টোরিয়ার সাউন্ড ভিউ অডিটোরিয়ামে একুশের বিস্তারিত কর্মসূচী পালন করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি তাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এস আলমের পরিচালয় অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের শিশু কিশোরদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয় এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করে। পরে রাত ১২টা ১ মিনিটে শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে বিভিন্ন সংগঠন সাউন্ডভিউ মিলনায়তনে ভাষা শহীদদের স্মরণে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পম্যাল্য অর্পণ করে।
একুশ উদযাপন উপলক্ষে ‘চেতনায় একুশ’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়। এটি সম্পাদনা করেছেন স্বপন বড়–য়া।
যেসব সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রথম পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন নিউইয়র্ক বাংলাদেশ কনস্যুলেট-এর কনসাল জেনারেল শামীম আহসান। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। সংগঠনগুলো হচ্ছে-সম্মিলিত মহান একুশ উদযাপন পরিষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, জাহাঙ্গীরনগর এলামনাই এসোসিয়েশন, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট বাংলাদেশী পুলিশ অফিসার্স, সিলেট এমসি ও সরকারী মহাবিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ যুক্তরাষ্ট্র কমান্ড, উদীদী যুক্তরাষ্ট্র, বিপা, সঙ্গীত পরিষদ, বঙ্গিশিখা সঙ্গীত নিকেতন, বাংলাদেশ একাডেমী অব ফাইস আর্টস, ড্রামা সার্কেল, চিটাগাং এসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা, প্রবাসী বরিশাল বিভাগ কল্যাণ সমিতি, ফেনী জেলা সমিতি, প্রবাসী শরীয়তপুর সমিতি, মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর এসোসিয়েশন, নরসিংদী জেলা সমিতি, কিশোরগঞ্জ ডিস্ট্রিক্ট এসোসিয়েশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা সমিতি নর্থ আমেরিকা, ইয়ুথ কংগ্রেস অব বাংলাদেশ-আমেরিকা, গাজীপুর জেলা এসোসিয়েশন, মাদারীপুর জেলা সমিতি ইউএসএ, বাংলাদেশ স্টুডেন্ট এসোসিয়েশন (লাগোয়ার্ডিয়া কমিউনিটি কলেজ), জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন, বাংলাদেশ পূজা সমিতি, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধা খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ, মিরসরাই সমিতি ইউএসএ, মৈত্রী ফাউন্ডেশন অব নিউইয়র্ক, পঞ্চগড় জেলা কল্যাণ সমিতি ইউএসএ এবং মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর এসোসিয়েশন।
পুরো অনুষ্ঠানটি যাদের সঞ্চালনায় প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিল তারা হলেন রুহুল আমীন সরকার, ইভান চৌধুরী, শারমিন ইভা ও সুমী। উপস্থাপনা ছাড়াও তাদের আবৃত্তি অনুষ্ঠানে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট (এনওয়াইপিডি):
প্রথমবারে মত নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের (এনওয়াইপিডি) পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে অমর একুশের ভাষা শহীদদের প্রতি আনুষ্ঠানিক শ্রদ্ধা জানিয়েছে। পুলিশ অফিসার জামিল সারওয়ার জনির নেতৃত্বে ইউনিফর্মধারী বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত নিউইয়র্ক পুলিশের একটি চৌকস দল একুশের প্রথম প্রহরে সাউন্ডভিউ মিলনায়তনের অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদীতে পুষ্মমাল্য অর্পণ করে।
নিউইয়র্ক পুলিশের বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত অন্যান্য পুলিশ অফিসাররা হলেন মাহবুব রহমান, মোহাম্মদ লতিফ, আবু সাঈদ মোল্লা, ফুহাদ হোসেন, হুমায়ূন কবীর ভূঁইয়া এবং মোহাম্মদ শহীদ মালেক।
শরীয়তপুর সমিতি অব নর্থ আমেরিকা:
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুর সমিতি অব নর্থ আমেরিকা ২০ ফেব্রুয়ারী শুক্রবার কুইন্স প্যালেসে নানান কর্মসূচীর আয়োজন করে। রাত ১২টা ১ মিনিটে একুশের প্রথম প্রহরে কুইন্স প্যালেসের মঞ্চে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এছাড়া আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রতন শরীফ সরকার। পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আমিনুর রহমান রুবেল। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সাংবাদিক আশরাফুল হাসান বুলবুল। সাংস্কৃতিক পর্বে প্রবাসের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জিএইচ আরজুর কবিতালেখ্য সবার দৃষ্টি কাড়ে।
অমর একুশে ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে শরীয়তপুর সমিতি অব নর্থ আমেরিকা ৫২’র শোণিত পাত’ নামে একটি স্মরণিকা প্রকাশ করে। এটি সম্পাদনা করেছেন মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। (দৈনিক ইত্তেফাক)