নিউইয়র্ক ১১:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের পাকিস্তানী কন্স্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:২৩:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫
  • / ৯০৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ও একাত্তুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে নিউইয়র্কস্থ পাকিস্তানী কন্স্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান। আগামী ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে এই কর্মসূচী পালন করা হবে। এদিকে নিউইয়র্কের পাকিস্তানী কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য দাবী করা হয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ একটি পার্টি সেন্টারে গত ২ ডিসেম্বর সন্ধায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান-এর নেতৃবন্দ পাকিস্তানী কনস্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণার কথা জানানো পাশাপাশি এই কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য বলে দাবী করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়: একাত্তরের গণহত্যা অস্বীকার এবং যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার নিন্দা জানাতে ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২ টায় ম্যানহাট্যানের ফিফ্থ এভিনি ও ইস্ট সিক্সটি ফিফথ স্ট্রিটের কর্ণারে অবস্থিত পাকিস্তান কন্স্যুলট ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশে করা হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশীকে এই সমাবেশে যোগ দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের আহ্বান জানান সমাবেশের আয়োজক এলায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকানের নেতৃবন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ও সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী। মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদুর রহমান, হিরু ভূইয়া ও খোরশেদ আলম বাবলু সহ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মোর্শেদা জামান, গোপাল স্যানাল, স্বীকৃতি বড়ৃয়া প্রমূখ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ-এর মৃত্যুদন্ডাদেশের
রায় কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার এমন কিছু বক্তব্য প্রকাশ করে চলেছে যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও রীতিমতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ। সরকার ছাড়াও পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল বিশেষ করে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসীতে ক্ষুব্ধ প্রকাশ ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দলের নেতা ক্রিকেটার ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা খোলা এক চিঠিতে ‘যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের’ উদ্দেশ্য জানতে চেয়ে এবং সাকা ও মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চরম ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেন। যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন। এ নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন মহল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত সহ গত ২৩ নভেম্বর পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পরও পাকিস্তান উদ্বেগ জানিয়ে অন্যায়ভাবে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে এবং সে সময়ও দেশটির পার্লামেন্টে এ বিষয়ের উপর একটি প্রস্তাব গ্রহন করেছিল। তখনো বাংলাদেশে বিভিন্ন মহলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানোর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে ওই প্রস্তাব গ্রহণ কড়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। আমরাও সে সময় নিউইয়র্কে পাকিস্থানের কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে স্বারকলিপি মাধম্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে পাকিস্থানের অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছিলাম।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় যে, একাত্তরে এদেশে নারকীয় গণহত্যা চালানোর পরও পাকিস্তানের ভেতর সামান্যতম অনুতাপ পরিলক্ষিত হয়নি, বরং বিভিন্ন সময় তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে একাওুরে সংঘটিত গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ নির্লজ্জভাবে অস্বীকার করল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ড. কর বলেন, পাকিস্তানের এ ধৃষ্টতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানকে এই ধৃষ্টতার কড়া জবাব দেওয়া না হলে তা হবে ত্রিশ শহীদের রক্তের প্রতি অপমান। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাঙ্গলীরা আপনাদের মাধ্যমে (মিডিয়া) পাকিস্তানের বারবার সীমাহীন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন, কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও নির্লজ্জ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাকিস্তানের এ ধরনের আচরণে আমাদের ক্ষোভ এতই তীব্র যে তা প্রকাশের জন্য আমরা নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত পাকিস্তানের কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সামনে আগামী ৮ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার, ঠিক দুপুর ২টায় অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান্স-এর উদ্যোগে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন চলছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশ স্বার্থক করে তুলতে আপনাদের সাবিক সহযোগিতা কামনা করছি।
পাকিস্তানের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বা সরকারের কাছে আমাদের কয়েকটি দাবীঃ
১) পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করা।
২) সার্ক থেকে পাকিস্তানকে বহিস্কার করা।
৩) একাত্তুর সালের গণহত্যার দায় স্বীকার করতে পাকিস্তানকে বাধ্য করা।
৪) পাক হানাদার সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের আওতায় আনা।
৫) পাকিস্তানের কাছে নায্য হিস্যার পাওনা অর্থ ফিরিয়ে আনা।
৬) একাত্তুরে আটকে পড়া পাকিস্তানীদের ফেরত নেয়া।
সাংবাদিক সম্মেলনে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের উপর বাংলাদেশের অধিকার রয়েছে। পাক-ভারত পৃথক হওয়ার পরপরই বৃটিশ কর্তৃপক্ষ ভবন দুটি (ভারতীয় কনস্যুলেট ভবন ও পাকিস্তানী কনস্যুলেট ভবন) ভারত ও পাকিস্তান সরকাকে বুঝিয়ে দেয়। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের সামনেই ভারতীয় কনসুলেট ভবন। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনটির মূল্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সকল সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার অধিকার রয়েছে। এজন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের আচরণের নিন্দা জানিয়ে ৮ ডিসেম্বরের বিক্ষোভ সমাবেশে সফল করতে সকল প্রবাসী বাংলাদেশীর সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, সমাবেশ শেষে পাকিস্তান কনস্যুলেট অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের পাকিস্তানী কন্স্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য

প্রকাশের সময় : ০২:২৩:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: কূটনৈতিক শিষ্টাচার লংঘন করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ও একাত্তুরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচারে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে নিউইয়র্কস্থ পাকিস্তানী কন্স্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করবে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান। আগামী ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে এই কর্মসূচী পালন করা হবে। এদিকে নিউইয়র্কের পাকিস্তানী কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য দাবী করা হয়েছে। খবর ইউএনএ’র।
সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ একটি পার্টি সেন্টারে গত ২ ডিসেম্বর সন্ধায় আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান-এর নেতৃবন্দ পাকিস্তানী কনস্যুলেট ভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ঘোষণার কথা জানানো পাশাপাশি এই কনস্যুলেটের অর্ধেক বাংলাদেশের প্রাপ্য বলে দাবী করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে বলা হয়: একাত্তরের গণহত্যা অস্বীকার এবং যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে সাফাই গাওয়ার নিন্দা জানাতে ৮ ডিসেম্বর মঙ্গলবার দুপুর ২ টায় ম্যানহাট্যানের ফিফ্থ এভিনি ও ইস্ট সিক্সটি ফিফথ স্ট্রিটের কর্ণারে অবস্থিত পাকিস্তান কন্স্যুলট ভবনের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশে করা হবে। দলমত নির্বিশেষে সকল বাংলাদেশীকে এই সমাবেশে যোগ দিয়ে পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা প্রকাশের আহ্বান জানান সমাবেশের আয়োজক এলায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকানের নেতৃবন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ড. প্রদীপ রঞ্জন কর। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্রবীন সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ ও সাংবাদিক মুজাহিদ আনসারী। মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাসুদুর রহমান, হিরু ভূইয়া ও খোরশেদ আলম বাবলু সহ কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট মোর্শেদা জামান, গোপাল স্যানাল, স্বীকৃতি বড়ৃয়া প্রমূখ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও মানবতাবিরোধী অপরাধী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদ-এর মৃত্যুদন্ডাদেশের
রায় কার্যকর হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার এমন কিছু বক্তব্য প্রকাশ করে চলেছে যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও রীতিমতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ। সরকার ছাড়াও পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল বিশেষ করে পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামী সাকা চৌধুরী ও মুজাহিদের ফাঁসীতে ক্ষুব্ধ প্রকাশ ও তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) দলের নেতা ক্রিকেটার ইমরান খানের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে লেখা খোলা এক চিঠিতে ‘যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের’ উদ্দেশ্য জানতে চেয়ে এবং সাকা ও মুজাহিদের যুদ্ধাপরাধের প্রমাণ দিতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে চরম ঔদ্ধত্য প্রদর্শন করেন। যা কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন। এ নিয়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন মহল ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত সহ গত ২৩ নভেম্বর পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন ব্যাপারে পাকিস্তানের অযাচিত হস্তক্ষেপের কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।
তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের পরও পাকিস্তান উদ্বেগ জানিয়ে অন্যায়ভাবে কাদের মোল্লাকে ফাঁসি দেয়া হয়েছে বলে দাবি করে এবং সে সময়ও দেশটির পার্লামেন্টে এ বিষয়ের উপর একটি প্রস্তাব গ্রহন করেছিল। তখনো বাংলাদেশে বিভিন্ন মহলের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানানোর মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের হাইকমিশনারকে তলব করে ওই প্রস্তাব গ্রহণ কড়ায় প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। আমরাও সে সময় নিউইয়র্কে পাকিস্থানের কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সামনে ব্যাপক বিক্ষোভ সমাবেশ করে পাকিস্তান প্রধানমন্ত্রীকে স্বারকলিপি মাধম্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীন বিষয়ে পাকিস্থানের অযাচিত হস্তক্ষেপ থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছিলাম।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয় যে, একাত্তরে এদেশে নারকীয় গণহত্যা চালানোর পরও পাকিস্তানের ভেতর সামান্যতম অনুতাপ পরিলক্ষিত হয়নি, বরং বিভিন্ন সময় তারা আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানোর ঔদ্ধত্য দেখিয়েছে। গত ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ইসলামাবাদে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনারকে তলব করে একাওুরে সংঘটিত গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ নির্লজ্জভাবে অস্বীকার করল পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
ড. কর বলেন, পাকিস্তানের এ ধৃষ্টতা বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানকে এই ধৃষ্টতার কড়া জবাব দেওয়া না হলে তা হবে ত্রিশ শহীদের রক্তের প্রতি অপমান। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাঙ্গলীরা আপনাদের মাধ্যমে (মিডিয়া) পাকিস্তানের বারবার সীমাহীন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন, কূটনৈতিক শিষ্টাচার লঙ্ঘন ও নির্লজ্জ মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ, নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাকিস্তানের এ ধরনের আচরণে আমাদের ক্ষোভ এতই তীব্র যে তা প্রকাশের জন্য আমরা নিউইয়র্ক শহরে অবস্থিত পাকিস্তানের কনস্যুলেট জেনারেল অফিসের সামনে আগামী ৮ ডিসেম্বর ২০১৫, মঙ্গলবার, ঠিক দুপুর ২টায় অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশী আমেরিকান্স-এর উদ্যোগে এক বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন চলছে। এ বিক্ষোভ সমাবেশ স্বার্থক করে তুলতে আপনাদের সাবিক সহযোগিতা কামনা করছি।
পাকিস্তানের ধৃষ্টতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ রাষ্ট্র বা সরকারের কাছে আমাদের কয়েকটি দাবীঃ
১) পাকিস্তানের সঙ্গে সব ধরনের কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত করা।
২) সার্ক থেকে পাকিস্তানকে বহিস্কার করা।
৩) একাত্তুর সালের গণহত্যার দায় স্বীকার করতে পাকিস্তানকে বাধ্য করা।
৪) পাক হানাদার সেনাবাহিনীর ১৯৫ জন চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীর বিচারের আওতায় আনা।
৫) পাকিস্তানের কাছে নায্য হিস্যার পাওনা অর্থ ফিরিয়ে আনা।
৬) একাত্তুরে আটকে পড়া পাকিস্তানীদের ফেরত নেয়া।
সাংবাদিক সম্মেলনে সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের উপর বাংলাদেশের অধিকার রয়েছে। পাক-ভারত পৃথক হওয়ার পরপরই বৃটিশ কর্তৃপক্ষ ভবন দুটি (ভারতীয় কনস্যুলেট ভবন ও পাকিস্তানী কনস্যুলেট ভবন) ভারত ও পাকিস্তান সরকাকে বুঝিয়ে দেয়। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনের সামনেই ভারতীয় কনসুলেট ভবন। পাকিস্তান কনস্যুলেট ভবনটির মূল্য ২৫০ মিলিয়ন ডলার। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সকল সম্পদে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যার অধিকার রয়েছে। এজন্য সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
ড. প্রদীপ রঞ্জন কর বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পাকিস্তানের আচরণের নিন্দা জানিয়ে ৮ ডিসেম্বরের বিক্ষোভ সমাবেশে সফল করতে সকল প্রবাসী বাংলাদেশীর সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, সমাবেশ শেষে পাকিস্তান কনস্যুলেট অফিসে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।