নিউইয়র্ক ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের একুশের গ্রন্থমেলা পরিণত হলো প্রতিবাদ মঞ্চে

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মার্চ ২০১৫
  • / ৭৭৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিউইয়র্কের একুশের গ্রন্থমেলার সকল আনন্দ-উৎসব বাতিল হলো মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হলো প্রতিবাদ মঞ্চে। উকেন্ডের প্রথম দিন ২৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার মেলার আলোচনা, কবিতা, আবৃত্তি দিনের সবই ছিল অভিজিৎ রায়কে ঘিরে। মেলায় অভিজিতের ‘নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের’ প্রত্যয় শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার জন্য তদন্তে এবং প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রর সরকারের সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের পিএস-৬৯ স্কুল মিলনায়তনে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত একুশে গ্রন্থমেলার ১১তম দিনে আলোচনায় বক্তারা উপরোক্ত আহ্বান জানান। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সাংবাদিক-কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস, নিনি ওয়াহেদ, লেখক-সাহিত্যিক ফেরদৌস সাজেদীন, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, লেখক আহমেদ মুসা, ফেরদৌস সাজেদীন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী, সাংবাদিক-লেখক দর্পণ কবীর, লেখক ফকির ইলিয়াস, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরণ, জয়ন্ত নাগ, রানু ফেরদৌস, তানভীর রাব্বানী প্রমুখ।
সভায় আনিসুল হক ব্লগার অভিজিৎ রায় ও ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা, শামসুর রাহমানের বাসায় হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস ও অন্ধকারকে রুখতে পারে আলো। আলোর জন্য চাই জ্ঞান। তাই আমাদের অনেক বই পড়তে হবে। তিনি দেশে শুধু হতাশা আর সন্ত্রাস নয়, আশার আলো শুনিয়ে বলেন, ভালবাসা আর জ্ঞানের আলো দিয়ে আমাদেরকে সন্ত্রাস রুখতে হবে।
ড. আব্দুল মোমেন বলেন, জঙ্গীবাদ দমন করা খুব জরুরী। নতুবা অভিজিৎদের হারাতে হবে। তাই সন্ত্রানের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নিনি ওয়াহেদ অভিজিৎ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং জননিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের দূর্বলতার সমালোচনা করেন।
নাজমুল আহসান বলেন, অভিজিৎ হত্যা হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক দূবৃত্তায়নেসর শিকার। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা। পুলিশ থেকে কয়েক গজ দূরে সংঘটিত এই হত্যাকান্ডে পুলিশের ভূমিকা ছিলো নিরব। সাংবাদিক দম্প্রতি সাগর-রুনী হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমি কারো বেডরুমের নিরাপত্তা কিভাবে দেবো। এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কেউ যদি বলেন বইমেলায় আগতদের নিরাপত্তা কিভাবে দেবো। সেক্ষেত্রে সরকার কি বলবে।
রতন তালুকদার বলেন, দুই নেত্রীর জেদাজেদীর শিকারে দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিজিৎ খুনের শিকার হলেন।
দর্পণ কবীর বলেন, আমি নিজেও দেশে গিয়েও চার ঘন্টার জন্য গুম হয়েছিলাম। কেউ একবিন্দুও প্রতিবাদ করেননি। দেশে কেউই নিরাপদে নেই।
সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, হুমায়ূন আজাদ থেকে শুর করে অভিজিৎ রায়কে যেভাবে খুন করা হয়েছে তা একই রকম। একটা সংবদ্ধ দল এই কাজটি করছে। এদের প্রতিরোধ করা দরকার। এছাড়া সভায় অধিকাংশ বক্তাই অভিজিৎ রায়ের হত্যাকান্ডের তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেমন্তী ওয়াহেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে আসা প্রায় ২০ জন কবি এদিন প্রতিবাদের কবিতা পড়েন। ছিল সমকালীন ঘটনা প্রবাহ নিয়ে প্রধান অতিথি আনিসুল হকের সঙ্গে হাসান ফেরদৌসের লেখক-পাঠক মুখোমুখি।
অনুষ্ঠানের প্রবেশ পথে ছিল অভিজিৎ রায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত শোক বই। কবি, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসীরা শোক বইতে স্বাক্ষর করে তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের একুশের গ্রন্থমেলা পরিণত হলো প্রতিবাদ মঞ্চে

প্রকাশের সময় : ০১:১২:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ মার্চ ২০১৫

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী মুক্তমনা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা অভিজিৎ রায়ের নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিউইয়র্কের একুশের গ্রন্থমেলার সকল আনন্দ-উৎসব বাতিল হলো মেলা প্রাঙ্গণ পরিণত হলো প্রতিবাদ মঞ্চে। উকেন্ডের প্রথম দিন ২৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার মেলার আলোচনা, কবিতা, আবৃত্তি দিনের সবই ছিল অভিজিৎ রায়কে ঘিরে। মেলায় অভিজিতের ‘নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধের’ প্রত্যয় শীর্ষক প্রতিবাদ সভায় বক্তারা এই হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার জন্য তদন্তে এবং প্রকৃত অপরাধীকে ধরতে যুক্তরাষ্ট্রর সরকারের সার্বিক সাহায্য ও সহযোগিতা কামনা করেন।
সিটির জ্যাকসন হাইটসের পিএস-৬৯ স্কুল মিলনায়তনে গত ২৮ ফেব্রুয়ারী শনিবার সন্ধ্যায় মুক্তধারা ফাউন্ডেশন আয়োজিত একুশে গ্রন্থমেলার ১১তম দিনে আলোচনায় বক্তারা উপরোক্ত আহ্বান জানান। প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, সাংবাদিক-কলামিস্ট হাসান ফেরদৌস, নিনি ওয়াহেদ, লেখক-সাহিত্যিক ফেরদৌস সাজেদীন, সাপ্তাহিক পরিচয় সম্পাদক নাজমুল আহসান, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, লেখক আহমেদ মুসা, ফেরদৌস সাজেদীন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী, সাংবাদিক-লেখক দর্পণ কবীর, লেখক ফকির ইলিয়াস, সাংবাদিক আকবর হায়দার কিরণ, জয়ন্ত নাগ, রানু ফেরদৌস, তানভীর রাব্বানী প্রমুখ।
সভায় আনিসুল হক ব্লগার অভিজিৎ রায় ও ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা, শামসুর রাহমানের বাসায় হামলার ঘটনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সন্ত্রাস ও অন্ধকারকে রুখতে পারে আলো। আলোর জন্য চাই জ্ঞান। তাই আমাদের অনেক বই পড়তে হবে। তিনি দেশে শুধু হতাশা আর সন্ত্রাস নয়, আশার আলো শুনিয়ে বলেন, ভালবাসা আর জ্ঞানের আলো দিয়ে আমাদেরকে সন্ত্রাস রুখতে হবে।
ড. আব্দুল মোমেন বলেন, জঙ্গীবাদ দমন করা খুব জরুরী। নতুবা অভিজিৎদের হারাতে হবে। তাই সন্ত্রানের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
নিনি ওয়াহেদ অভিজিৎ হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং জননিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের দূর্বলতার সমালোচনা করেন।
নাজমুল আহসান বলেন, অভিজিৎ হত্যা হচ্ছে দেশের রাজনৈতিক দূবৃত্তায়নেসর শিকার। সরকারের দায়িত্ব হচ্ছে সকল নাগরিকের নিরাপত্তা বিধান করা। পুলিশ থেকে কয়েক গজ দূরে সংঘটিত এই হত্যাকান্ডে পুলিশের ভূমিকা ছিলো নিরব। সাংবাদিক দম্প্রতি সাগর-রুনী হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন আমি কারো বেডরুমের নিরাপত্তা কিভাবে দেবো। এখন সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কেউ যদি বলেন বইমেলায় আগতদের নিরাপত্তা কিভাবে দেবো। সেক্ষেত্রে সরকার কি বলবে।
রতন তালুকদার বলেন, দুই নেত্রীর জেদাজেদীর শিকারে দেশের উদ্ভুত পরিস্থিতিতে অভিজিৎ খুনের শিকার হলেন।
দর্পণ কবীর বলেন, আমি নিজেও দেশে গিয়েও চার ঘন্টার জন্য গুম হয়েছিলাম। কেউ একবিন্দুও প্রতিবাদ করেননি। দেশে কেউই নিরাপদে নেই।
সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ বলেন, হুমায়ূন আজাদ থেকে শুর করে অভিজিৎ রায়কে যেভাবে খুন করা হয়েছে তা একই রকম। একটা সংবদ্ধ দল এই কাজটি করছে। এদের প্রতিরোধ করা দরকার। এছাড়া সভায় অধিকাংশ বক্তাই অভিজিৎ রায়ের হত্যাকান্ডের তদন্তের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সেমন্তী ওয়াহেদ।
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর থেকে আসা প্রায় ২০ জন কবি এদিন প্রতিবাদের কবিতা পড়েন। ছিল সমকালীন ঘটনা প্রবাহ নিয়ে প্রধান অতিথি আনিসুল হকের সঙ্গে হাসান ফেরদৌসের লেখক-পাঠক মুখোমুখি।
অনুষ্ঠানের প্রবেশ পথে ছিল অভিজিৎ রায়ের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নিবেদিত শোক বই। কবি, লেখক, সাংবাদিক, শিল্পী ও বিভিন্ন পেশাজীবী প্রবাসীরা শোক বইতে স্বাক্ষর করে তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন।