নিউইয়র্ক ০৩:১১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তিনি এক অন্য রকম ব্লাজিও

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৬
  • / ৭১৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বিল ডি ব্লাজিও। নামটির সঙ্গে শুধু নিউইয়র্ক বা যুক্তরাষ্ট্র নয় পৃথিবীর খুব প্রায় সব দেশের মানুষ কম বেশি পরিচিত। বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বলেই হয়তো তিনি অধিক পরিচিত। কিন্তু কয়েক দিনে নিউইয়র্ক নয়, দুনিয়ার মানুষের কাছে পরিচিত অন্যরকম মেয়র হিসেবে তিনি পরিচিত হয়েছেন। কারণ শুক্রবার (২২ জানুয়ারী) থেকে তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত গণমাধ্যমগুলোর মুখোমুখি। শুক্রবার এবং শনিবার বারবার তাকে সামনে আসতে হয়েছে গণমাধ্যমের। কোন কোন সময় ব্লাজিওকে দেখা গেছে ভীষণ ক্লান্ত, আবার কোন কোন সময় দেখা গেছে ব্যাপক ‘কমিটেড’। সবচেয়ে বেশি যেটি উল্লেখ করার সেটি হলো; বক্তব্য দেয়ার সময় নিউইয়র্কবাসীর প্রিয় মেয়রকে দেখা গেছে খুবই সাহসী একজন রাজনীতিক হিসেবে।
গত কয়েকদিন ধরে তুষার ঝড়ের যে আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে আসছিল আবহাওয়া বার্তা বিভাগ, তার চেয়ে মানুষের কম চোখ ছিলনা ব্লাজিও’র দিকে। ফি কয়েক বছরের অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে ব্লাজিও তুষার ঝড় মোকাবেলায় নিউইয়র্কবাসীকে সতর্ক করার ব্যাপরে ছিলেন খুবই প্রতিজ্ঞ। আর শেষ পর্যন্ত সে কাজটি তিনি করেছেন শক্ত হাতে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারী) থেকে তিনি নিউইয়র্কবাসীকে সব ধরনের সতর্ক থাকার ব্যাপারে আহবান অব্যাহত রেখেছিলেন। তা করতে গিয়ে ব্লাজিওকে থাকতে হয়েছে নির্ঘুম রাতও। শুক্রবার তাকে অফিসিয়াল ড্রেসে দেখা গেলেও শনিবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। জরুরী প্রয়োজন মনে করে গণমাধ্যমের সমানে দাঁড়িয়েছেন সাদা মাটা ড্রেসে। ছুটির দিনেও যে মেয়র বিশ্রামহীন ছিলেন সেটি দৃশ্যত হয়েছে প্রায় সবার কাছে। মুহুর্ত্বে মুহুত্বে সিটির সব হালনাগাদ তথ্য নিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বস্তুনিষ্টতার সঙ্গে। সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ব্লাজিওকে দিতে হয়েছে জরুরী অবস্থার ঘোষণাও। তবে সবকিছুকে চাপিয়ে মেয়র যে তুষার ঝড়ের আগাম পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিটিকে প্রস্তুত রাখার জন্য দৃঢ প্রতিজ্ঞ ছিলেন সেটি বাবার ফুটে ওঠছে সিটিবাসীর মুখে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মেয়র যেমন কাজ করেছেন ঠিক তেমনি তার সঙ্গে ছিলেন সিটি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। আবাহওয়ার বার্তা বিভাগের খবর ক্লিক করার আগে মেয়রের মুখ থেকে বক্তব্য শুনার জন্য টেলিভিশনের সামনে স্থির বসে ছিলেন অনেকেই। মুলধারাসহ সব গণামধ্যমগুলোও সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাবার সামনে নিয়ে এসেছেন ব্লাজিওকে। যিনি কিনা তুষার ঝড়ের সময় নিজের পরিবার পরিজন থেকে দূরে থেকে সিটির মানুষকে সকর্ত করতে কাজ করেছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। এজন্য তিনি সিটিবাসীর ধন্যবাদেরও দাবীদার হয়েছেন।
ফ্লাশিং থেকে চাইনিজ দম্পত্তি টি ওয়াংচিং তাদের ফেইসবুক পেইজে লিখেছেন, থ্যান্কস ব্লাজিও, সুইট ব্লাজিও, লিডার ব্লাজিও, থ্যাঙ্কস ফর উইথ সিটি‘স পিপল’। জ্যামাইকার ব্যবসায়ী তপন শীল তার পেইজবুক পেজে লিখেছেন, ব্লাজিও আমরা আরো চার বছর আপনাকে সিটির মেয়র হিসেবে দেখতে চাই’, আপনি সত্যিই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবির চৌধুরী তার পেইজবুক পেইজে লিখেছেন, মেয়র ব্লাজিও আপনাকে ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চাই, আপনি স্নো বা তুষার ঝড় মোকাবেলা প্রস্তুতি নিতে সিটিবাসীকে যা করেছেন তা সত্যিই ভুলতে পারবে না সিটির মানুষ, আপনি দীর্ঘজীবি হউন’।
সিটির ১০৯তম মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। ২০১৩ সালে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি প্রায় সময় অসাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়ে সিটিবাসীর বিশেষ করে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির প্রশংসার দাবীদার হন। যুক্তরাষ্ট্রে যখন কিছু রাজনীতিক ইসলাম বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন ব্লাজিও ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর কুইন্সের বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিদর্শন করেছিলেন।
এসময় তিনি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মুসলিমরা যুক্তরাষ্ট্রের বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। কেউ যেন ধর্মীয় কারণে প্রতিহিংসা এবং বিড়ম্বনার শিকার না হয়, সে জন্য নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসন অঙ্গিকারাবদ্ধ।
তিনি আরো বলেছিলেন, নিউইয়র্কে কোথাও কোনো মুসলিম কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায় ‘হেইট ক্রাইম’র শিকার হলে তা বরদাশত করা হবে না। এ বক্তব্যের পরও ব্লাজিও বাংলাদেশী কমিউনিটির কাছে প্রসংশীত হয়েছিলেন।(সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

তিনি এক অন্য রকম ব্লাজিও

প্রকাশের সময় : ০১:৫৯:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ জানুয়ারী ২০১৬

নিউইয়র্ক: বিল ডি ব্লাজিও। নামটির সঙ্গে শুধু নিউইয়র্ক বা যুক্তরাষ্ট্র নয় পৃথিবীর খুব প্রায় সব দেশের মানুষ কম বেশি পরিচিত। বিশ্বের রাজধানীখ্যাত নিউইয়র্ক সিটির মেয়র বলেই হয়তো তিনি অধিক পরিচিত। কিন্তু কয়েক দিনে নিউইয়র্ক নয়, দুনিয়ার মানুষের কাছে পরিচিত অন্যরকম মেয়র হিসেবে তিনি পরিচিত হয়েছেন। কারণ শুক্রবার (২২ জানুয়ারী) থেকে তিনি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত গণমাধ্যমগুলোর মুখোমুখি। শুক্রবার এবং শনিবার বারবার তাকে সামনে আসতে হয়েছে গণমাধ্যমের। কোন কোন সময় ব্লাজিওকে দেখা গেছে ভীষণ ক্লান্ত, আবার কোন কোন সময় দেখা গেছে ব্যাপক ‘কমিটেড’। সবচেয়ে বেশি যেটি উল্লেখ করার সেটি হলো; বক্তব্য দেয়ার সময় নিউইয়র্কবাসীর প্রিয় মেয়রকে দেখা গেছে খুবই সাহসী একজন রাজনীতিক হিসেবে।
গত কয়েকদিন ধরে তুষার ঝড়ের যে আগাম সতর্ক বার্তা দিয়ে আসছিল আবহাওয়া বার্তা বিভাগ, তার চেয়ে মানুষের কম চোখ ছিলনা ব্লাজিও’র দিকে। ফি কয়েক বছরের অভিজ্ঞতাকে মাথায় রেখে ব্লাজিও তুষার ঝড় মোকাবেলায় নিউইয়র্কবাসীকে সতর্ক করার ব্যাপরে ছিলেন খুবই প্রতিজ্ঞ। আর শেষ পর্যন্ত সে কাজটি তিনি করেছেন শক্ত হাতে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারী) থেকে তিনি নিউইয়র্কবাসীকে সব ধরনের সতর্ক থাকার ব্যাপারে আহবান অব্যাহত রেখেছিলেন। তা করতে গিয়ে ব্লাজিওকে থাকতে হয়েছে নির্ঘুম রাতও। শুক্রবার তাকে অফিসিয়াল ড্রেসে দেখা গেলেও শনিবারের চিত্র ছিল ভিন্ন। জরুরী প্রয়োজন মনে করে গণমাধ্যমের সমানে দাঁড়িয়েছেন সাদা মাটা ড্রেসে। ছুটির দিনেও যে মেয়র বিশ্রামহীন ছিলেন সেটি দৃশ্যত হয়েছে প্রায় সবার কাছে। মুহুর্ত্বে মুহুত্বে সিটির সব হালনাগাদ তথ্য নিয়ে তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বস্তুনিষ্টতার সঙ্গে। সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি ব্লাজিওকে দিতে হয়েছে জরুরী অবস্থার ঘোষণাও। তবে সবকিছুকে চাপিয়ে মেয়র যে তুষার ঝড়ের আগাম পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিটিকে প্রস্তুত রাখার জন্য দৃঢ প্রতিজ্ঞ ছিলেন সেটি বাবার ফুটে ওঠছে সিটিবাসীর মুখে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, মেয়র যেমন কাজ করেছেন ঠিক তেমনি তার সঙ্গে ছিলেন সিটি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। আবাহওয়ার বার্তা বিভাগের খবর ক্লিক করার আগে মেয়রের মুখ থেকে বক্তব্য শুনার জন্য টেলিভিশনের সামনে স্থির বসে ছিলেন অনেকেই। মুলধারাসহ সব গণামধ্যমগুলোও সে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাবার সামনে নিয়ে এসেছেন ব্লাজিওকে। যিনি কিনা তুষার ঝড়ের সময় নিজের পরিবার পরিজন থেকে দূরে থেকে সিটির মানুষকে সকর্ত করতে কাজ করেছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। এজন্য তিনি সিটিবাসীর ধন্যবাদেরও দাবীদার হয়েছেন।
ফ্লাশিং থেকে চাইনিজ দম্পত্তি টি ওয়াংচিং তাদের ফেইসবুক পেইজে লিখেছেন, থ্যান্কস ব্লাজিও, সুইট ব্লাজিও, লিডার ব্লাজিও, থ্যাঙ্কস ফর উইথ সিটি‘স পিপল’। জ্যামাইকার ব্যবসায়ী তপন শীল তার পেইজবুক পেজে লিখেছেন, ব্লাজিও আমরা আরো চার বছর আপনাকে সিটির মেয়র হিসেবে দেখতে চাই’, আপনি সত্যিই ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য।
লং আইল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবির চৌধুরী তার পেইজবুক পেইজে লিখেছেন, মেয়র ব্লাজিও আপনাকে ভবিষ্যৎ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে চাই, আপনি স্নো বা তুষার ঝড় মোকাবেলা প্রস্তুতি নিতে সিটিবাসীকে যা করেছেন তা সত্যিই ভুলতে পারবে না সিটির মানুষ, আপনি দীর্ঘজীবি হউন’।
সিটির ১০৯তম মেয়র বিল ডি ব্লাজিও। ২০১৩ সালে তিনি দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি প্রায় সময় অসাম্প্রদায়িক বক্তব্য দিয়ে সিটিবাসীর বিশেষ করে বাংলাদেশী মুসলিম কমিউনিটির প্রশংসার দাবীদার হন। যুক্তরাষ্ট্রে যখন কিছু রাজনীতিক ইসলাম বিরোধী বক্তব্য দিচ্ছিলেন তখন ব্লাজিও ২০১৫ সালের ৪ ডিসেম্বর কুইন্সের বাংলাদেশী অধ্যুষিত জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার পরিদর্শন করেছিলেন।
এসময় তিনি বলেছিলেন, সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় মুসলিমরা যুক্তরাষ্ট্রের বড় সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। কেউ যেন ধর্মীয় কারণে প্রতিহিংসা এবং বিড়ম্বনার শিকার না হয়, সে জন্য নিউইয়র্ক সিটি প্রশাসন অঙ্গিকারাবদ্ধ।
তিনি আরো বলেছিলেন, নিউইয়র্কে কোথাও কোনো মুসলিম কিংবা অন্য কোনো সম্প্রদায় ‘হেইট ক্রাইম’র শিকার হলে তা বরদাশত করা হবে না। এ বক্তব্যের পরও ব্লাজিও বাংলাদেশী কমিউনিটির কাছে প্রসংশীত হয়েছিলেন।(সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)