নিউইয়র্ক ০৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জ্যামাইকাবাসীদের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম ॥ আমার জীবন স্বার্থক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:১১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০১৬
  • / ১১৬৪ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীদের পরিচিতি মুখ, বিশিষ্ট সংগঠন ও সমাজসেবক নাসির আলী খান পলকে সম্বর্ধিত করেছে জ্যামাইকাবাসী। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, জ্যামাইকাবাসীরা আমাকে এতো ভালোবাসেন আগে কখনো বুঝতে পারিনি। আমি ঋনমুক্ত থাকা মানুষ, আমি ঋণমুক্ত থাকার নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু জ্যামাইকাবাসী বাংলাদেশীদের ভালবাসায় আমি আমৃত্যু ঋণী হয়ে গেলাম। আমার জীবন স্বার্থক হয়েছে। আমার আর জাওয়া পাওয়ার কিছু নেই।
নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটির সুপ্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি (জেবিএফএস)-এর দীর্ঘদিনের ‘সফল’ বিদায়ী প্রধান উপদেষ্টা নাসির আলী খান পলের সম্মানে জ্যামাইকার সুশিল সমাজের ব্যানারে ৪ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় এই সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জেবিএফএস’র উদেষ্টাবৃন্দ এবং বর্তমান ও সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করা হয়। খবর ইউএনএ’র।
জ্যামাইকার হিলসাউড এভিনিউস্থ তাজমহল পার্টি হলে আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্বর্ধনা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক,নাট্য সংগঠন জ্যামাইকা থিয়েটারের সভাপতি ও জেবিএফএস’র সহ সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা শেখ হায়দার আলী। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যাভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব ও ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, জেবিএফএস’র নবনির্বাচিত প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, অন্যতম উদেষ্টা সালেহ আহমেদ, ছদরুন নূর ও মনজুর আহমেদ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং আমেরিকা-বাংলাদেশী বিজনেস এলায়েন্স (এবিবিএ)’র সভাপতি ও জেবিএফএস’র সাবেক সভাপতি বিলাল চৌধুরী।
Plag to Pal Khanঅনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, আইঅন বাংলাদেশ টিভি’র পরিচালক রিমন ইসলাম, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, নিউইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক ড. দীন আর রশীদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সামসুদ্দীন আজাদ, জেবিএফএস’র উপদেষ্টা অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম ও রেজাউল করীম চৌধুরী, শাহানা রহমান, সম্বর্ধিত পল খানের পতœী স্বপ্না খান, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. আব্দুল লতিফ, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি ও জেবিএফএস’র উপদেষ্টা মিসবাহ আহমেদ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেবিএফএস’র উপদেষ্টা ফরিদ আলম, জেবিএফএস’র সহ সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, নিউ আমেরিকান ওমেন্স ফোরামের সভাপতি রোকেয়া আক্তার, জ্যামাইকা থিয়েটারের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, জেবিএফএস’র কার্যকরী পরিষদের সদস্য দরুদ মিয়া রনেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেবিএফএস’র সহ সভাপতি শেখ আনসার আলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ও সম্বর্ধনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এডভোকেট কামরুজ্জামান বাবু। এছাড়া মানপত্র পাঠ করেন এবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ও জেবিএফএস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএফ মিসবাহউজ্জামান। যৌথভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্বর্ধনা কমিটির সদস্য সচিব ও এবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী এবং জেবিএফএস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএফ মিসবাহউজ্জামান। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলো আমেরিকা-বাংলাদেশী বিজনেস এলায়েন্স, জ্যামাইকা থিয়েটার, জ্যামাইকা কমিউনিটি ক্লাব ও সুরবাহার।
অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত নাসির আলী খানের বড় ভাই ফরিদ আলী খান, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ সভাপতি আবুল কাশেম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, জেবিএসএ’র অন্যতম উদেষ্টা এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. নার্গিস রহমান, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি খন্দকার আলী নাসিম, ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেবুল মিয়া, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শিরীন কামাল সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সপরিবারে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত নাসির আলী খান পল আরো বলেন, দুই বছর বয়সে মা-কে হারিয়ে অভাগা মানুষ হিসেবে আমি সংগ্রাম করে বড় হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের ২৯টি আসনের জন্য ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে আমিও ভর্তির সুযোগ পাই। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি কঠিন মনের মানুষ। কারো মৃত্যু আমাকে কাঁদায়নি। কিন্তু জ্যামাইকাবাসীদের সম্বর্ধনা আর ভালোবাসায় আমি এই মঞ্চে বসে চোখে জল এসেছে। অনেক কষ্টে চোখের জল ধরে রেখেছি।
নাসির আলী খান পল তার জীবনের সাফল্যের পিছনে স্ত্রী স্বপ্না খানের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, যেকোন পুরুষের সাফল্যের পিছনের মানুষটি হচ্ছেন তার স্ত্রী। স্বপ্না শুধু আমার স্ত্রীই নয়, সে আমার বাল্যবন্ধুও। আমার ১৯ বছর বয়সে আমি তাকে বিয়ে করি। এখন আমাদের বিবাহিত জীবনের ৪৪ বছর চলছে। তিনি আরো বলেন, স্ত্রীর সহযোগিতা ছাড়া কোন বীর পুরুষের পক্ষেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়, কমিউনিটির সেবা করা সম্ভব নয়।
জামালউদ্দিন হোসেন বলেন, নাসির আলী খান পল ‘জ্যামাইকার কলাম্বাস’ এটা যথার্থ তার জন্য। তিনি একজন সদাহাস্যময় প্রিয়ব্যক্তি, সমাজসেবক। কমিউনিটির সকল ক্ষেত্রেই তার বিচরণ। আমার ৯ বছরের প্রবাস জীবনে কমিউনিটির কোন কাজ পল খান ছাড়া হতে দেখিনি। আরো আগেই তার সম্বর্ধনা প্রাপ্য ছিলো। আমি তার শতায় নয়, শতায়ুর চেয়েও অধিক আয়ু কামনা করি।
ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নাসির আলী খান পল আমাদের কমিউনিটির জন্য উদাহরণ। কমিউনিটির এমন কোন অনুষ্ঠান নেই যেখানে স্বস্ত্রীক পল খান সামনের সারিতে নেই। তাকে অনুসরণ করলে কমিউনিটিই উপকৃত হবে।
Imam Mirza Abu Jafor Begইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ হাদিসের আলোকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়েই মানুষকে বড় হতে হয়। পল খান এমনি মানুষ যিনি জ্যাসাইকা মুসলিম সেন্টার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে অনেক ভালো কাজের সাথে জড়িত। আর এসব কাজে তার স্ত্রীর সহযোগিতা তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পল খান আর স্বপ্না খান ভালো দম্পতি। প্রসঙ্গত তিনি জ্যামাইকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ ২৩ বছর ধরে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাথে জড়িত। কতদিন বাঁচবো জানি। তবে যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন আমি আপনাদের ইমাম নয়, বন্ধু হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই।
মুহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিদিন সকালে কমিউনিটির কয়েকজন মানুষের কথা আমার স্মরণ হয়, তাদের মধ্যে পল খান একজন। তিনি বলেন, সর্বগুণে গুনান্বিত নাসির আলী খান পলকে সম্বর্ধিত করার আয়োজন আমাদেরকে আনন্দ দিচ্ছে। তার ভালো কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বিষন্ন মানুষদের মন ভালো করার মন্ত্র পল খানের মধ্যে রয়েছে। তাই পল খানের মতো মানুষদের দীর্ঘায়ু হওয়া জরুরী, অন্য মানুষদের দীর্ঘায়ু বৃদ্ধি করতে।
আবু তাহের বলেন, ২৫ বছর ধরে পল খানের সাথে আমার পরিচয়। পরিচয়ের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তাকে একই ভাবে দেখছি। তাকে আর তার কর্মকান্ড অনুসরণ করলে কমিউনিটি আরো এগিয়ে যাবে।
Fakrul Alamফখরুল আলম বলেন, নাসির আলী খান পলের সাথে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয়। তার গুণ গেয়ে শেষ করা যাবে না। তিনি বলেন, গুণীজনদের মৃত্যুর আগে নয়, মৃত্যুর পরে আমরা স্মরণ করা আমাদের স্বভাব। তারা জীবিত থাকতে তাদের সম্মান দিতে কৃপণতা করি। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠান ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। জ্যামাইকাবাসী যোগ্য ব্যক্তিকে সম্মান জানালো। তিনি আরো বলেন, কমিউনিটিকে সঠিকভাবে পথ দেখাতে, উৎসাহিত করতে পল খান একাই ১০০।
রিমন ইসলাম বিগত ২৫ বছর ধরে পল খানকে চিনি, জানি। বিগত ৪০ বছর ধরে তিনি কমিউনিটিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, আমেরিকান বাংলাদেশী ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ব্যক্তিগ জীবনে তিনি ফর্মাসিস্ট হলেও প্রবাসে একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিসেবে সফল। তিনি একজন সফল সংগঠক, একজন সফল মানুষ। সম্বর্ধনা তারই প্রাপ্য।
রতন তালুকদার বলেন, পল খানের সাথে ৩৫ বছর ধরে পরিচয়। সেই ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কেই তার সাথে পরিচয় ঘটে। কমিউনিটির এমন কোন জায়গা নেই যে, সেখাতে তাকে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আমেরিকা আবিষ্কার করেন কলাম্বাস, আর বাংলাদেশীদের জন্য জ্যমাইকা আবিষ্কার করেন নাসির আলী খান পল। তাই তো তিনি জ্যামাইকার কলাম্বাস। তিনি তার বত্তব্যে ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগের বক্তব্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গিয়াস আহমেদ বলেন, বিগত ২৮ বছর ধরে পল খানের সাথে পরিচয়। তিনি একজন অমায়িক, মানবসেবী আর ভালো মনের মানুষ।
মনজুর আহমেদ বলেন, পল খান কাজের লোক বলেই সব খানেই তাকে দেখেছি, পেয়েছি। আর তার মতো মনের মানুষের পক্ষেই কমিউনিটির জন্য কাজ করা সম্ভব।
এবিএম ওসমান গণি বলেন, কমিউনিটির মুরুব্বী হিসেবে নাসির আলী খানকে সম্মানিত করার মধ্য দিয়ে কমিউনিটিতে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। ভভিষ্যতে এই ধারা অব্যহত থাকবে। কমিউনিটির গুণীজনদের পর্যায়ক্রমে সম্মানিত করা হবে। এজন্য তিনি আয়োজক ও উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান।
সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, পল খানের মতো কমিউনিটির আলোকিত মানুষদের সম্মানিত করলে কমিউনিটিই লাভবান হবে। তিনি সকল প্রবাসীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম বলেন, আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহায়ালার গুণবাচক ৯৯টি নাম রয়েছে। অনুষ্ঠানের বক্তারা যেভাবে পল খানের গুণ-গান করছেন তাতে ৯৯টির অধিক যাতে না হয় সেই বিবেচনায় পল খান সম্পর্কে নতুন করে আর কিছুই বলার নেই।
Shawpna Khanস্বপ্না খান বলেন, আমার স্বামীকে প্রবাসীরা এতো ভালোবাসেন তা আগে বুঝতে পারিনি। তার গর্বে আমার বুক ফুলে যাচ্ছে। আমি অভিভুত, আমার চোখে পানি চলে এসেছে। তিনি মানুষকে খুব ভালবাসেন। তার মতো মানুষ পৃথিবীতে কমই আছেন।
মিসবাহ আহমেদ বলেন, পল খানের সাথে আমার ২৯ বছরের পরিচয়। তার সাথে আমাদের সস্পর্ক বাবা আর বড় ভাইয়ের মতো। তিনি জ্যামাইকার গর্ব।
ফরিদ আলম বলেন, চিন্তা চেতনায় পল খান একজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ। তার মতো আমরা মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা লালন-পালন করতে পারি তাহলে প্রবাসী বাঙালী কমিউনিটিসহ দেশ-জাতি উপকৃত হবে।
মনির হোসেন বলেন, পল খান কমিউনিটির নিবেদিত প্রাণ। তার নেতৃত্বে আমরা দেশের প্রাকৃতিক দূর্যোগ ‘আইলা’ সহ বিভিন্ন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক একটি ডলার সংগ্রহ করে লাখো ডলার সংগ্রহ করে দেশে পাঠিয়েছি। তিনি পল খানের মতো শত মানুষের জন্ম কামনা করেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন। আমরা সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করতে চাই।
বিলাল চৌধুরী বলেন, আমরা গুণীজনকে সম্মান জানাতে চাই, সম্মান দিতে চাই। কমিউনিটির জন্য সেবা দিয়ে পল খান সবার সম্মান অর্জন করেছেন। আজকের সম্মান তার প্রাপ্য।
Delower-Monir-Sebul-Rejaul..ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার তার বক্তব্যে পল খানের কর্মকান্ড আর জেবিএফএস প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, গুণীজনদের সম্মানিত করলে কমিউনিটি, জাতিই সম্মানিত হবে। পল খানের সম্বর্ধনার মধ্য দিয়ে জ্যামাইকায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। তিনি বলেন, কমিউনিটির উন্নয়ন আর কল্যাণের জন্য এখন সকলে ঐক্য জরুরী। আমরা সকল বাংলাদেশী ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবীর তার বক্তব্যে পল খানের গুণ-গান করেন এবং বলেন, জ্যামাইকার নাম যদি একটি ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নামকরণ হয়ে থাকে। তাহলে ভবিষ্যতে নিউইয়র্কের জ্যামাইকার নাম বাংলাদেশ-ও হতে পারে। কেননা, নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় এখন আর জ্যামাইকানরা বসবাস করেন না, বসবাস করেন বাংলাদেশীরা। তাই জ্যামাইকার নাম বাংলাদেশ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুবের একক সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মধ্যরাতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এর আগে ছিল নৈশভোজ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জ্যামাইকাবাসীদের কাছে ঋণী হয়ে গেলাম ॥ আমার জীবন স্বার্থক

প্রকাশের সময় : ১০:১১:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৮ এপ্রিল ২০১৬

নিউইয়র্ক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশীদের পরিচিতি মুখ, বিশিষ্ট সংগঠন ও সমাজসেবক নাসির আলী খান পলকে সম্বর্ধিত করেছে জ্যামাইকাবাসী। এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, জ্যামাইকাবাসীরা আমাকে এতো ভালোবাসেন আগে কখনো বুঝতে পারিনি। আমি ঋনমুক্ত থাকা মানুষ, আমি ঋণমুক্ত থাকার নীতিতে বিশ্বাসী। কিন্তু জ্যামাইকাবাসী বাংলাদেশীদের ভালবাসায় আমি আমৃত্যু ঋণী হয়ে গেলাম। আমার জীবন স্বার্থক হয়েছে। আমার আর জাওয়া পাওয়ার কিছু নেই।
নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটির সুপ্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি (জেবিএফএস)-এর দীর্ঘদিনের ‘সফল’ বিদায়ী প্রধান উপদেষ্টা নাসির আলী খান পলের সম্মানে জ্যামাইকার সুশিল সমাজের ব্যানারে ৪ এপ্রিল সোমবার সন্ধ্যায় এই সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে জেবিএফএস’র উদেষ্টাবৃন্দ এবং বর্তমান ও সাবেক সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় অভিষিক্ত করা হয়। খবর ইউএনএ’র।
জ্যামাইকার হিলসাউড এভিনিউস্থ তাজমহল পার্টি হলে আয়োজিত সম্বর্ধনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্বর্ধনা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক,নাট্য সংগঠন জ্যামাইকা থিয়েটারের সভাপতি ও জেবিএফএস’র সহ সভাপতি এবং প্রতিষ্ঠাতা উপদেষ্টা শেখ হায়দার আলী। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন এবং বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যাভিনেতা জামালউদ্দিন হোসেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের খতিব ও ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, জেবিএফএস’র নবনির্বাচিত প্রধান উপদেষ্টা এবিএম ওসমান গণি, অন্যতম উদেষ্টা সালেহ আহমেদ, ছদরুন নূর ও মনজুর আহমেদ চৌধুরী, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার, সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এবং আমেরিকা-বাংলাদেশী বিজনেস এলায়েন্স (এবিবিএ)’র সভাপতি ও জেবিএফএস’র সাবেক সভাপতি বিলাল চৌধুরী।
Plag to Pal Khanঅনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সাপ্তাহিক ঠিকানা’র প্রধান সম্পাদক মুহাম্মদ ফজলুর রহমান, সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহের, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম, আইঅন বাংলাদেশ টিভি’র পরিচালক রিমন ইসলাম, সাপ্তাহিক জন্মভূমি সম্পাদক রতন তালুকদার, নিউইয়র্ক সিটি ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন অধ্যাপক ড. দীন আর রশীদ, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি সামসুদ্দীন আজাদ, জেবিএফএস’র উপদেষ্টা অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম ও রেজাউল করীম চৌধুরী, শাহানা রহমান, সম্বর্ধিত পল খানের পতœী স্বপ্না খান, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি ডা. আব্দুল লতিফ, সাংবাদিক হাকিকুল ইসলাম খোকন, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি ও জেবিএফএস’র উপদেষ্টা মিসবাহ আহমেদ, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেবিএফএস’র উপদেষ্টা ফরিদ আলম, জেবিএফএস’র সহ সভাপতি সৈয়দ আতিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, নিউ আমেরিকান ওমেন্স ফোরামের সভাপতি রোকেয়া আক্তার, জ্যামাইকা থিয়েটারের সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর কবীর, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন, জেবিএফএস’র কার্যকরী পরিষদের সদস্য দরুদ মিয়া রনেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জেবিএফএস’র সহ সভাপতি শেখ আনসার আলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন জ্যামাইকা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ও সম্বর্ধনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী এডভোকেট কামরুজ্জামান বাবু। এছাড়া মানপত্র পাঠ করেন এবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ও জেবিএফএস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএফ মিসবাহউজ্জামান। যৌথভাবে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সম্বর্ধনা কমিটির সদস্য সচিব ও এবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ইফজাল আহমেদ চৌধুরী এবং জেবিএফএস’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক এএফ মিসবাহউজ্জামান। সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানটি আয়োজনে সহযোগিতায় ছিলো আমেরিকা-বাংলাদেশী বিজনেস এলায়েন্স, জ্যামাইকা থিয়েটার, জ্যামাইকা কমিউনিটি ক্লাব ও সুরবাহার।
অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত নাসির আলী খানের বড় ভাই ফরিদ আলী খান, মূলধারার রাজনীতিক মোর্শেদ আলম, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্যতম সহ সভাপতি আবুল কাশেম ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, জেবিএসএ’র অন্যতম উদেষ্টা এবিএম সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. নার্গিস রহমান, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সহ সভাপতি খন্দকার আলী নাসিম, ফ্রেন্ডস সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেবুল মিয়া, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট শিরীন কামাল সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সপরিবারে উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত নাসির আলী খান পল আরো বলেন, দুই বছর বয়সে মা-কে হারিয়ে অভাগা মানুষ হিসেবে আমি সংগ্রাম করে বড় হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের ২৯টি আসনের জন্য ৩৫ হাজার শিক্ষার্থীর মধ্যে আমিও ভর্তির সুযোগ পাই। তিনি বলেন, ৪০ বছর ধরে নিউইয়র্ক তথা যুক্তরাষ্ট্রে বাস করছি। ব্যক্তিগতভাবে আমি কঠিন মনের মানুষ। কারো মৃত্যু আমাকে কাঁদায়নি। কিন্তু জ্যামাইকাবাসীদের সম্বর্ধনা আর ভালোবাসায় আমি এই মঞ্চে বসে চোখে জল এসেছে। অনেক কষ্টে চোখের জল ধরে রেখেছি।
নাসির আলী খান পল তার জীবনের সাফল্যের পিছনে স্ত্রী স্বপ্না খানের অবদানের কথা উল্লেখ করে বলেন, যেকোন পুরুষের সাফল্যের পিছনের মানুষটি হচ্ছেন তার স্ত্রী। স্বপ্না শুধু আমার স্ত্রীই নয়, সে আমার বাল্যবন্ধুও। আমার ১৯ বছর বয়সে আমি তাকে বিয়ে করি। এখন আমাদের বিবাহিত জীবনের ৪৪ বছর চলছে। তিনি আরো বলেন, স্ত্রীর সহযোগিতা ছাড়া কোন বীর পুরুষের পক্ষেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব নয়, কমিউনিটির সেবা করা সম্ভব নয়।
জামালউদ্দিন হোসেন বলেন, নাসির আলী খান পল ‘জ্যামাইকার কলাম্বাস’ এটা যথার্থ তার জন্য। তিনি একজন সদাহাস্যময় প্রিয়ব্যক্তি, সমাজসেবক। কমিউনিটির সকল ক্ষেত্রেই তার বিচরণ। আমার ৯ বছরের প্রবাস জীবনে কমিউনিটির কোন কাজ পল খান ছাড়া হতে দেখিনি। আরো আগেই তার সম্বর্ধনা প্রাপ্য ছিলো। আমি তার শতায় নয়, শতায়ুর চেয়েও অধিক আয়ু কামনা করি।
ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, নাসির আলী খান পল আমাদের কমিউনিটির জন্য উদাহরণ। কমিউনিটির এমন কোন অনুষ্ঠান নেই যেখানে স্বস্ত্রীক পল খান সামনের সারিতে নেই। তাকে অনুসরণ করলে কমিউনিটিই উপকৃত হবে।
Imam Mirza Abu Jafor Begইমাম মির্জা আবু জাফর বেগ হাদিসের আলোকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের কথা তুলে ধরে বলেন, সামাজিক কর্মকান্ডের মধ্য দিয়েই মানুষকে বড় হতে হয়। পল খান এমনি মানুষ যিনি জ্যাসাইকা মুসলিম সেন্টার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে অনেক ভালো কাজের সাথে জড়িত। আর এসব কাজে তার স্ত্রীর সহযোগিতা তাকে এগিয়ে নিয়ে গেছে। পল খান আর স্বপ্না খান ভালো দম্পতি। প্রসঙ্গত তিনি জ্যামাইকাবাসীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আজ ২৩ বছর ধরে জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের সাথে জড়িত। কতদিন বাঁচবো জানি। তবে যতদিন বেঁচে থাকবো ততদিন আমি আপনাদের ইমাম নয়, বন্ধু হিসেবে বেঁচে থাকতে চাই।
মুহাম্মদ ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিদিন সকালে কমিউনিটির কয়েকজন মানুষের কথা আমার স্মরণ হয়, তাদের মধ্যে পল খান একজন। তিনি বলেন, সর্বগুণে গুনান্বিত নাসির আলী খান পলকে সম্বর্ধিত করার আয়োজন আমাদেরকে আনন্দ দিচ্ছে। তার ভালো কাজের স্বীকৃতি পাচ্ছে। তিনি বলেন, বিষন্ন মানুষদের মন ভালো করার মন্ত্র পল খানের মধ্যে রয়েছে। তাই পল খানের মতো মানুষদের দীর্ঘায়ু হওয়া জরুরী, অন্য মানুষদের দীর্ঘায়ু বৃদ্ধি করতে।
আবু তাহের বলেন, ২৫ বছর ধরে পল খানের সাথে আমার পরিচয়। পরিচয়ের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত তাকে একই ভাবে দেখছি। তাকে আর তার কর্মকান্ড অনুসরণ করলে কমিউনিটি আরো এগিয়ে যাবে।
Fakrul Alamফখরুল আলম বলেন, নাসির আলী খান পলের সাথে আমার দীর্ঘ দিনের পরিচয়। তার গুণ গেয়ে শেষ করা যাবে না। তিনি বলেন, গুণীজনদের মৃত্যুর আগে নয়, মৃত্যুর পরে আমরা স্মরণ করা আমাদের স্বভাব। তারা জীবিত থাকতে তাদের সম্মান দিতে কৃপণতা করি। কিন্তু আজকের অনুষ্ঠান ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো। জ্যামাইকাবাসী যোগ্য ব্যক্তিকে সম্মান জানালো। তিনি আরো বলেন, কমিউনিটিকে সঠিকভাবে পথ দেখাতে, উৎসাহিত করতে পল খান একাই ১০০।
রিমন ইসলাম বিগত ২৫ বছর ধরে পল খানকে চিনি, জানি। বিগত ৪০ বছর ধরে তিনি কমিউনিটিকে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন, আমেরিকান বাংলাদেশী ফার্মাসিস্ট এসোসিয়েশন, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশন বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের তিনি প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। ব্যক্তিগ জীবনে তিনি ফর্মাসিস্ট হলেও প্রবাসে একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী হিসেবে সফল। তিনি একজন সফল সংগঠক, একজন সফল মানুষ। সম্বর্ধনা তারই প্রাপ্য।
রতন তালুকদার বলেন, পল খানের সাথে ৩৫ বছর ধরে পরিচয়। সেই ১৯৮১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কেই তার সাথে পরিচয় ঘটে। কমিউনিটির এমন কোন জায়গা নেই যে, সেখাতে তাকে পাওয়া যায় না। তিনি বলেন, আমেরিকা আবিষ্কার করেন কলাম্বাস, আর বাংলাদেশীদের জন্য জ্যমাইকা আবিষ্কার করেন নাসির আলী খান পল। তাই তো তিনি জ্যামাইকার কলাম্বাস। তিনি তার বত্তব্যে ইমাম মির্জা আবু জাফর বেগের বক্তব্যের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
গিয়াস আহমেদ বলেন, বিগত ২৮ বছর ধরে পল খানের সাথে পরিচয়। তিনি একজন অমায়িক, মানবসেবী আর ভালো মনের মানুষ।
মনজুর আহমেদ বলেন, পল খান কাজের লোক বলেই সব খানেই তাকে দেখেছি, পেয়েছি। আর তার মতো মনের মানুষের পক্ষেই কমিউনিটির জন্য কাজ করা সম্ভব।
এবিএম ওসমান গণি বলেন, কমিউনিটির মুরুব্বী হিসেবে নাসির আলী খানকে সম্মানিত করার মধ্য দিয়ে কমিউনিটিতে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হলো। ভভিষ্যতে এই ধারা অব্যহত থাকবে। কমিউনিটির গুণীজনদের পর্যায়ক্রমে সম্মানিত করা হবে। এজন্য তিনি আয়োজক ও উদ্যোক্তাদের ধন্যবাদ জানান।
সামসুদ্দীন আজাদ বলেন, পল খানের মতো কমিউনিটির আলোকিত মানুষদের সম্মানিত করলে কমিউনিটিই লাভবান হবে। তিনি সকল প্রবাসীকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
অধ্যাপিকা হুসনে আরা বেগম বলেন, আমাদের সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহায়ালার গুণবাচক ৯৯টি নাম রয়েছে। অনুষ্ঠানের বক্তারা যেভাবে পল খানের গুণ-গান করছেন তাতে ৯৯টির অধিক যাতে না হয় সেই বিবেচনায় পল খান সম্পর্কে নতুন করে আর কিছুই বলার নেই।
Shawpna Khanস্বপ্না খান বলেন, আমার স্বামীকে প্রবাসীরা এতো ভালোবাসেন তা আগে বুঝতে পারিনি। তার গর্বে আমার বুক ফুলে যাচ্ছে। আমি অভিভুত, আমার চোখে পানি চলে এসেছে। তিনি মানুষকে খুব ভালবাসেন। তার মতো মানুষ পৃথিবীতে কমই আছেন।
মিসবাহ আহমেদ বলেন, পল খানের সাথে আমার ২৯ বছরের পরিচয়। তার সাথে আমাদের সস্পর্ক বাবা আর বড় ভাইয়ের মতো। তিনি জ্যামাইকার গর্ব।
ফরিদ আলম বলেন, চিন্তা চেতনায় পল খান একজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষ। তার মতো আমরা মুক্তিযুদ্ধেও চেতনা লালন-পালন করতে পারি তাহলে প্রবাসী বাঙালী কমিউনিটিসহ দেশ-জাতি উপকৃত হবে।
মনির হোসেন বলেন, পল খান কমিউনিটির নিবেদিত প্রাণ। তার নেতৃত্বে আমরা দেশের প্রাকৃতিক দূর্যোগ ‘আইলা’ সহ বিভিন্ন সময়ে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক একটি ডলার সংগ্রহ করে লাখো ডলার সংগ্রহ করে দেশে পাঠিয়েছি। তিনি পল খানের মতো শত মানুষের জন্ম কামনা করেন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি একটি অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠন। আমরা সবাইকে নিয়ে মিলেমিশে কমিউনিটির কল্যাণে কাজ করতে চাই।
বিলাল চৌধুরী বলেন, আমরা গুণীজনকে সম্মান জানাতে চাই, সম্মান দিতে চাই। কমিউনিটির জন্য সেবা দিয়ে পল খান সবার সম্মান অর্জন করেছেন। আজকের সম্মান তার প্রাপ্য।
Delower-Monir-Sebul-Rejaul..ফখরুল ইসলাম দেলোয়ার তার বক্তব্যে পল খানের কর্মকান্ড আর জেবিএফএস প্রতিষ্ঠার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে বলেন, গুণীজনদের সম্মানিত করলে কমিউনিটি, জাতিই সম্মানিত হবে। পল খানের সম্বর্ধনার মধ্য দিয়ে জ্যামাইকায় নতুন ইতিহাস সৃষ্টি হলো। তিনি বলেন, কমিউনিটির উন্নয়ন আর কল্যাণের জন্য এখন সকলে ঐক্য জরুরী। আমরা সকল বাংলাদেশী ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে পারলে অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব।
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবীর তার বক্তব্যে পল খানের গুণ-গান করেন এবং বলেন, জ্যামাইকার নাম যদি একটি ক্যারিবিয়ান দ্বীপ রাষ্ট্রের নামে নামকরণ হয়ে থাকে। তাহলে ভবিষ্যতে নিউইয়র্কের জ্যামাইকার নাম বাংলাদেশ-ও হতে পারে। কেননা, নিউইয়র্কের জ্যামাইকায় এখন আর জ্যামাইকানরা বসবাস করেন না, বসবাস করেন বাংলাদেশীরা। তাই জ্যামাইকার নাম বাংলাদেশ করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুবের একক সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে মধ্যরাতে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। এর আগে ছিল নৈশভোজ।