নিউইয়র্ক ০৭:৪১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জেবিবিএ’র নির্বাচন-২০১৫ : জাকারিয়া মাসুদ জিকো সভাপতি তারেক হাসান খান সাধারণ সম্পাদক

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:২৬:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫
  • / ১২৬১ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) নিউইয়র্ক-এর দ্বি-বার্ষিক (২০১৬-২০১৭) নির্বাচনে জাকারিয়া মাসুদ জিকো সভাপতি এবং তারেক হাসান খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। বহুল আলোচিত জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই প্যানেলের মধ্যে ‘জিকো-তারেক’ ও ‘দিদার-কামরুল’ ৭টি করে আসনে জয়লাভ করেছেন। কার্যকরী পরিষদের একটি পদে দুই প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় এই পদের ফল ঘোষণা করা হয়নি। খবর ইউএনএ’র।
জ্যাকসন হাইটসস্থ বাংলাদেশ প্লাজার কনফারেন্স কক্ষে গত ২০ ডিসেম্বর রোববার উৎসব মুখর পরিবেশে জেবিবিএ’র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জেবিবিএ’র কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদে ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘জিকো-তারেক’ ও ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেল সকল পদেই প্রার্থী দেয়। এই দুই প্যানেলের বাইরে সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমান টুকু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে জেবিবিএ’র ২৫৭ জন ভোটারের মধ্যে ২৪৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। রোববার সকাল ১১টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। দিনব্যাপী ভোটাররা আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য তাদের নেতা নির্বাচিত করেন। ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট নেয়া হয। রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ এবং গণনা শেষে ভোর রাত চার দিকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেন।
Publiciteনির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য কাজী মন্টু। এসময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য যথাক্রমে সাঈদ রহমান মান্নান, এম এফ রহমান, মাহবুব চৌধুরী ও পারভেজ কাজী সহ উভয় প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তারেক হাসান খান ও কামরুজ্জামান কামরুল, স্বতন্ত্রভাবে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু এবং উভয় প্যানেলের নির্বাচনী এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
Ziko-Tarek-1নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে ১৪টি পদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে ঋষিধাম চৌধুরী এবং মোহাম্মদ আলী ১২০টি করে ভোট পাওয়ায় এই পদের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেল সভাপতি, একজন সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ৭টি পদে জয়লাভ করে। অন্যদিকে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেল একজন সহ সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদসহ ৭টি পদে জয়লাভ করে। কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে যে দু’জন প্রার্থী সমান ভোট পেয়েছেন তারা দু’জনই ‘জিকো-তারেক’ প্যানেরের প্রার্থী।
Vot Counting-1কে কত ভোট পেলেন: নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ১৪০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাকারিয়া মাসুদ জিকো। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে তারেক হাসান খান ১১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান কামরুল পেয়েছেন ৯৪ ভোট। এই পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু পেয়েছেন মাত্র ৩৭ ভোট।
সহ সভাপতি (দু’টি) পদে মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ সর্বোচ্চ ১৪৭ এবং মোল্লা মাসুদ ১৪৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই পদের অপর প্রার্থীদের মধ্যে মনসুর আলম চৌধুরী ৯০ ভোট আর সুরুজ্জামান ৮৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ফাহাদ রাজভিন সোলায়মান ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল কাইয়ুম খান পেয়েছেন ১১৬ ভোট।
কোষাধ্যক্ষ পদে ১২৭ ভোটে পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সেলিম। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন পেয়েছেন ১১৬ ভোট।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আতিকুল ইসলাম। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাকিল মিয়া পেয়েছেন ১০২ ভোট।
সাংস্কৃতিক সম্পদক পদে ১৩৬ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ হোসাইন জিলানী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী রাশেদ আহমেদ পেয়েছেন ১০৪ ভোট।
প্রচার সম্পাদক পদে সাজ্জাদ হোসাইন ১৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন । তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজুর রহমান পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
দপ্তর সম্পাদক পদে মাহমুদ হোসেন ১৩৫ ভোট পেয়ে বাদশা নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ আলী পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
কার্যকরী পরিষদের (৫টি পদ) সদস্য পদে ১২৯ ভোট পেয়ে কামরুজ্জামান বাচ্চু, ১২৬ ভোট পেয়ে এম হোসাইন, ১২৩ ভোট পেয়ে এস এম এ হাসান, সমানসংখ্যক ভোট পেয়ে আব্দুল আলিম নির্বাচিত হয়েছেন। একটি পদের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে।
Vot Counting-2এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজয়ী সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ জিকো তার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবাইকে নিয়েই জেবিবিএ-কে আরো শক্তিশালী করার প্রতিশ্রতি দেন এবং ব্যবসায়ী সহ জনগণের দাবী জ্যাকসন হাইটসে মসজিদ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিজয়ী সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান বলেন, কারো সাথে কোন ধরনের বিভেদ নয়। ঐক্যের সেতুবন্ধন দিয়েই জ্যাকসন জাইটসের ব্যাবসায়ী সমাজকে সাহায্য করতে চাই। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান কামরুলকে ‘ভাই’ উল্লেখ করে বলেন আমরা ‘দুই ভাই’ মিলে মিশে কাজ করবো। এজন্য তিনি সকলের সাহায্য কামনা করেন।
অপদিকে নির্বাচনে বিজিত আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান কামরুল বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমরা নির্বাচিতদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো। সবাই মিলে কাজ করবো।
Vot Counting-3ফলাফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অপেক্ষমান সমর্থকদের মাঝে ফিরে আসলে সমর্থকরা তাদের নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন। এ সময় অনেকেই তাদের পক্ষে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেন মধ্যরাতের জ্যাকসন হাইটস। আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এ সময় বক্তব্য রাখেন জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও তারেক হাসান খান।
এদিকে জেবিবিএ’র নির্বাচন ঘিরে স্থানীয় ৭৩ ষ্ট্রীট নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। এই স্ট্রীটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফটোক ছাড়াও সড়কের পাশে দন্ডায়মান গাড়ীর গায়ে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে যায়। কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থী, সমর্থক আর শুভান্যধায়ীদের পদচারনাও ছিলো চোখে পড়ার মতো। বার্তা সংস্থা ইউএনএ’র সাথে আলাপকালে সবার সহযোগিতায় এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দাবী করেছেন নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় জেবিবিএ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য সাঈদ রহমান মান্নান বলেন, একটি সুষ্টু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধপরিকর ছিলাম। নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম বা পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ উঠেনি। নির্বাচনের পর দুই পক্ষই একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটা অনুকরনীয় এবং অনুসরণীয়।
নির্বাচন কমিশনের অপর সদস্য মাহবুবু চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন তুলতে পারেননি। তাই বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এই নির্বাচন একটি অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন পরিচালনায় সকল মহলের সহযোগিতার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
P & 2 GS Candidetsউল্লেখ্য, বিভক্ত জেবিবিএ’র ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর এই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। ইতিপূর্বে জিকো-তারেক জেবিবিএ’র একাংশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে দিদার অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী তথা কমিউনিটির বৃহত্তর স্বার্থে বিভক্ত জেবিবিএ ঐক্যবদ্ধ করা হয় এবং ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেন। কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সাঈদ রহমান মান্নান, এম এম রহমান, কাজী পারভেজ, মাহবুব চৌধুরী এবং কাজী মন্টু।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জেবিবিএ’র নির্বাচন-২০১৫ : জাকারিয়া মাসুদ জিকো সভাপতি তারেক হাসান খান সাধারণ সম্পাদক

প্রকাশের সময় : ১১:২৬:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: নিউইয়র্ক তথা উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বৃহৎ সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) নিউইয়র্ক-এর দ্বি-বার্ষিক (২০১৬-২০১৭) নির্বাচনে জাকারিয়া মাসুদ জিকো সভাপতি এবং তারেক হাসান খান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন। বহুল আলোচিত জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই প্যানেলের মধ্যে ‘জিকো-তারেক’ ও ‘দিদার-কামরুল’ ৭টি করে আসনে জয়লাভ করেছেন। কার্যকরী পরিষদের একটি পদে দুই প্রার্থী সমান সংখ্যক ভোট পাওয়ায় এই পদের ফল ঘোষণা করা হয়নি। খবর ইউএনএ’র।
জ্যাকসন হাইটসস্থ বাংলাদেশ প্লাজার কনফারেন্স কক্ষে গত ২০ ডিসেম্বর রোববার উৎসব মুখর পরিবেশে জেবিবিএ’র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। জেবিবিএ’র কার্যকরী পরিষদের ১৫টি পদে ৩১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ‘জিকো-তারেক’ ও ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেল সকল পদেই প্রার্থী দেয়। এই দুই প্যানেলের বাইরে সাধারণ সম্পাদক পদে মাহবুবুর রহমান টুকু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচনে জেবিবিএ’র ২৫৭ জন ভোটারের মধ্যে ২৪৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। রোববার সকাল ১১টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলে রাত ৮টা পর্যন্ত। দিনব্যাপী ভোটাররা আনন্দ উচ্ছ্বাসের মধ্যে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে আগামী দুই বছরের জন্য তাদের নেতা নির্বাচিত করেন। ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোট নেয়া হয। রাত ৮টায় ভোট গ্রহণ এবং গণনা শেষে ভোর রাত চার দিকে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেন।
Publiciteনির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য কাজী মন্টু। এসময় নির্বাচন কমিশনের সদস্য যথাক্রমে সাঈদ রহমান মান্নান, এম এফ রহমান, মাহবুব চৌধুরী ও পারভেজ কাজী সহ উভয় প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, এবং সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী তারেক হাসান খান ও কামরুজ্জামান কামরুল, স্বতন্ত্রভাবে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু এবং উভয় প্যানেলের নির্বাচনী এজেন্টরা উপস্থিত ছিলেন।
Ziko-Tarek-1নির্বাচনে ১৫টি পদের মধ্যে ১৪টি পদের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। কার্যকরী কমিটির সদস্য পদে ঋষিধাম চৌধুরী এবং মোহাম্মদ আলী ১২০টি করে ভোট পাওয়ায় এই পদের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়। নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেল সভাপতি, একজন সহ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদসহ ৭টি পদে জয়লাভ করে। অন্যদিকে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেল একজন সহ সভাপতি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদসহ ৭টি পদে জয়লাভ করে। কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে যে দু’জন প্রার্থী সমান ভোট পেয়েছেন তারা দু’জনই ‘জিকো-তারেক’ প্যানেরের প্রার্থী।
Vot Counting-1কে কত ভোট পেলেন: নির্বাচন কমিশন ঘোষিত প্রাথমিক ফলাফলে ১৪০ ভোট পেয়ে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন জাকারিয়া মাসুদ জিকো। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
সাধারণ সম্পাদক পদে তারেক হাসান খান ১১১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান কামরুল পেয়েছেন ৯৪ ভোট। এই পদের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু পেয়েছেন মাত্র ৩৭ ভোট।
সহ সভাপতি (দু’টি) পদে মোহাম্মদ শাহ নেওয়াজ সর্বোচ্চ ১৪৭ এবং মোল্লা মাসুদ ১৪৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এই পদের অপর প্রার্থীদের মধ্যে মনসুর আলম চৌধুরী ৯০ ভোট আর সুরুজ্জামান ৮৩ ভোট পেয়ে পরাজিত হয়েছেন।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে ফাহাদ রাজভিন সোলায়মান ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল কাইয়ুম খান পেয়েছেন ১১৬ ভোট।
কোষাধ্যক্ষ পদে ১২৭ ভোটে পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ সেলিম। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন পেয়েছেন ১১৬ ভোট।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ১২৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন আতিকুল ইসলাম। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী সাকিল মিয়া পেয়েছেন ১০২ ভোট।
সাংস্কৃতিক সম্পদক পদে ১৩৬ ভোট নির্বাচিত হয়েছেন মোহাম্মদ হোসাইন জিলানী। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী রাশেদ আহমেদ পেয়েছেন ১০৪ ভোট।
প্রচার সম্পাদক পদে সাজ্জাদ হোসাইন ১৩১ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন । তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী মোস্তাফিজুর রহমান পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
দপ্তর সম্পাদক পদে মাহমুদ হোসেন ১৩৫ ভোট পেয়ে বাদশা নির্বাচিত হয়েছেন। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী শেখ আলী পেয়েছেন ১০৬ ভোট।
কার্যকরী পরিষদের (৫টি পদ) সদস্য পদে ১২৯ ভোট পেয়ে কামরুজ্জামান বাচ্চু, ১২৬ ভোট পেয়ে এম হোসাইন, ১২৩ ভোট পেয়ে এস এম এ হাসান, সমানসংখ্যক ভোট পেয়ে আব্দুল আলিম নির্বাচিত হয়েছেন। একটি পদের ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে।
Vot Counting-2এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজয়ী সভাপতি জাকারিয়া মাসুদ জিকো তার তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলকে বিজয়ী করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সবাইকে নিয়েই জেবিবিএ-কে আরো শক্তিশালী করার প্রতিশ্রতি দেন এবং ব্যবসায়ী সহ জনগণের দাবী জ্যাকসন হাইটসে মসজিদ প্রতিষ্ঠার উপর গুরুত্বারোপ করেন। বিজয়ী সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান বলেন, কারো সাথে কোন ধরনের বিভেদ নয়। ঐক্যের সেতুবন্ধন দিয়েই জ্যাকসন জাইটসের ব্যাবসায়ী সমাজকে সাহায্য করতে চাই। তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী কামরুজ্জামান কামরুলকে ‘ভাই’ উল্লেখ করে বলেন আমরা ‘দুই ভাই’ মিলে মিশে কাজ করবো। এজন্য তিনি সকলের সাহায্য কামনা করেন।
অপদিকে নির্বাচনে বিজিত আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান কামরুল বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমরা নির্বাচিতদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবো। সবাই মিলে কাজ করবো।
Vot Counting-3ফলাফল ঘোষণার পর নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অপেক্ষমান সমর্থকদের মাঝে ফিরে আসলে সমর্থকরা তাদের নিয়ে উল্লাসে মেতে উঠেন। এ সময় অনেকেই তাদের পক্ষে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত করে তুলেন মধ্যরাতের জ্যাকসন হাইটস। আনন্দ-উল্লাসের মধ্যে সমর্থকদের উদ্দেশ্যে এ সময় বক্তব্য রাখেন জাকারিয়া মাসুদ জিকো ও তারেক হাসান খান।
এদিকে জেবিবিএ’র নির্বাচন ঘিরে স্থানীয় ৭৩ ষ্ট্রীট নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে। এই স্ট্রীটের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ফটোক ছাড়াও সড়কের পাশে দন্ডায়মান গাড়ীর গায়ে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে যায়। কেন্দ্রের বাইরে প্রার্থী, সমর্থক আর শুভান্যধায়ীদের পদচারনাও ছিলো চোখে পড়ার মতো। বার্তা সংস্থা ইউএনএ’র সাথে আলাপকালে সবার সহযোগিতায় এই নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে বলে দাবী করেছেন নির্বাচন কমিশন।
নির্বাচন বিষয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় জেবিবিএ’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য সাঈদ রহমান মান্নান বলেন, একটি সুষ্টু নির্বাচন অনুষ্ঠানে আমরা বদ্ধপরিকর ছিলাম। নির্বাচনে কোন ধরনের অনিয়ম বা পক্ষপাতদুষ্টতার অভিযোগ উঠেনি। নির্বাচনের পর দুই পক্ষই একে অপরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এটা অনুকরনীয় এবং অনুসরণীয়।
নির্বাচন কমিশনের অপর সদস্য মাহবুবু চৌধুরী বলেন, নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কেউ কোন প্রশ্ন তুলতে পারেননি। তাই বাংলাদেশী কমিউনিটির জন্য এই নির্বাচন একটি অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। নির্বাচন পরিচালনায় সকল মহলের সহযোগিতার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
P & 2 GS Candidetsউল্লেখ্য, বিভক্ত জেবিবিএ’র ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর এই প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। ইতিপূর্বে জিকো-তারেক জেবিবিএ’র একাংশের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। অপরদিকে দিদার অপরাংশের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে ব্যবসায়ী তথা কমিউনিটির বৃহত্তর স্বার্থে বিভক্ত জেবিবিএ ঐক্যবদ্ধ করা হয় এবং ৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব পালন করেন। কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সাঈদ রহমান মান্নান, এম এম রহমান, কাজী পারভেজ, মাহবুব চৌধুরী এবং কাজী মন্টু।