নিউইয়র্ক ০২:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাকারিয়া চৌধুরীকে বহিস্কার : যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আ.লীগ মুখোমুখী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০১৫
  • / ৮৭৩ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ কর্তৃক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বহিষ্কারের ঘটনায় মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছে সংগঠন দুটি। সেই সাথে আবার বিভক্তি দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে। বলা হয়েছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাকারিয়াকে বহিস্কার করা হয়েছে। এদিকে বহিষ্কৃত জাকারিয়া চৌধুরীর সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা ও নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতির ঘটনায় আওয়ামী পরিবারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে মুখ খুলছেন না কেউ। কেউ বলছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ কোন সংগঠন কারো অধীনে নয়, বরং জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন সংগঠন। আবার কেউ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন সংগঠন আর নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যসহ আওয়ামী লীগের সকল শাখাই সাংগঠনিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অধীনস্থ। খবর ইউএনএ’র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক নেতা ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের সময় ভাগ্যক্রমে দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে অবস্থান করছিলেন এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্যই নিজে সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ঐ নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর রয়েছে অপরদিকে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরেই। এনিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কোন কারণ নেই। কেউ কেউ সাংগঠনিক নিয়মের অপব্যাখ্যা করছেন। আর দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মুখে কোন কমিটির নাম বললেই সেটা সাংগঠনিক নিয়মের বাইরে থাকবে তা নয়। দল করলে দলের নিয়ম, শৃঙ্খলার পাশাপাশি ‘চেইন অব কমান্ড’ও মানতে হয়। ঐ নেতা বলেন, আমরা দলের মধ্যে কোন বিভেদ-বিভক্তি চাই না। তবে সাংগঠনিক নিয়মের মধ্যে থেকে মুজিব আদর্শের সকল সৈনিককে সাথে নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর নাতী সজিব ওয়াজেদ জয়ের হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। অপর এক নেতা বলেন, দলের দায়িত্বে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ। তারাই আমাদের মুখপাত্র। তাদের সম্পর্কে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তা কেন্দ্রকে জানাতে পারেন। দলীয় ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৬(ক) ধারা মতে প্রাতিষ্ঠানিক (সাংগঠনিক) শৃংখলা ভঙ্গের কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ-এর নামে দলীয় প্যাডে প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত ১৫ মার্চ রোববার রাতে মিডিয়াকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে জাকারিয়া চৌধুরী বহিষ্কারের পর মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গত ১৬ মার্চ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জাকারিয়া চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশকে অবৈধ ও অসাংগঠনিক দাবী করে ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নবী কামন্ডার বলেছেন, শুনেছি আমাদের কমিটি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের স্বাক্ষরে অনুমোদিত। সেই বিবেচনায় তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারেন কিন্তু তাদের স্বাক্ষরের কথা আমার জানা নেই। জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমার কর্মকান্ডে ঈর্ষান্বীত হয়ে সিদ্দিক-সাাজ্জাদ ক্ষোভের বশে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। যা অগঠনতান্ত্রিক। তাকে বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কে ড. সিদ্দিকুর রহমানের ঘোষণাকে হাস্যকর অভিহিত করে এক প্রশ্নের উত্তরে জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ড. সিদ্দিকুর রহমান বর্ডার ক্রস করে বহিষ্কারের নাটক শুরু করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সংঠনের অন্যতম সহ সভাপতি সামসুদ্দীন আজাদ ২২ মার্চ রোববার ইউএনএ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জাকারিয়া চৌধুরীর বহিষ্কার সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে না করে বলেন, বহির্বিশ্বে স্ব স্ব দেশের আইন-কানুন মেনেই আমাদেরকে দলীয় রাজনীতি করার কথা থাকলেও সকল সংগঠনেই সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা দলের অন্য কোন অঙ্গ বা সহযোগী এই সাংগঠনিক নিয়-কানুনের বাইরে নয়। তিনি বলেন, যেমন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তেমনী যুক্তরাষ্ট্রের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি অনুমোদন করার ক্ষমতাও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের। এটাই হওয়া উচিৎ।
উল্লেখিত বিষয়ে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল শাহীন ২২ মার্চ রোববার ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হয়েছে। এবং এই তিন সংগঠন স্বাধীন, কোন সংগঠনই কারো অধীনে নয় বরং একই মর্যাদা সম্পন্ন। মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতির পদ থেকে জাকারিয়া চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার করতে পারেন না। এধরনের বহিষ্কার অবৈধ। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অতীতেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে এমন অনেক অবৈধ বহিষ্কার/আবিষ্কার হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধরণ সম্পাদকের অবৈধ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নবী কমান্ডার ও জাকারিয়া চৌধুরীর সাংবাদিক সম্মেলনে (১৬ মার্চ) উপস্থিত ছিলাম।
নিউইয়র্ক মহানগর আ. লীগের সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্য
এদিকে গত ১৬ মার্চ জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেষ্টেুরেন্টে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্তর্ভূক্ত নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ মহানগর আওয়ামী লীগের কোন নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে পারে না। একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই কোন নেতাকে বহিষ্কার করতে পারেন বলে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ শরীফ রাসেল। এরপর বক্তব্য রাখেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সভাপতি নবী কমান্ডর ও সিনিয়র সহ সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী। তবে লিখিত বক্তব্যের কোন কোন অংশের সাথে দ্বি-মত পোষন করে নবী কামন্ডার বলেন, এসব বক্তব্য আমার সাথে আলোচনা করে লিখা হয়নি।
সাংবাদিক সম্মেলনে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন ও মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রচার সম্পাদক দুলাল মিয়া (হাজী এনাম), নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে বলা হয়: ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য সন্তান, বিশ্বের মানচিত্রে উন্নত বাংলাদেশের প্রবক্তা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জীবন বিনাশ ও কালিমা লেপনের অপপ্রয়াস, বিগত কয়েক মাস বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর মানুষ পুড়িয়ে মারার জঘন্য কার্যকলাপ ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের বিরোধীতাকারীদের হাতে নিরীহ স্বাধীনচেতা মানুষের করুন মৃত্যু-এগুলোর বিরোধীতা জানাতে ও এইসব নারকীয় কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধমূলক কর্মসূচী অবহিত করতেই এই সাংবাদিক সম্মেলন। কনভিকটেড ক্রিমিনাল রিজভী আহমেদ সিজার পরপর দু’দিন বাংলাদেশের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অপপ্রচারের নির্লজ্জ প্রয়াসকে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো কঠোর হস্তে প্রতিহত করে। বিশেষভাবে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূর নবী নোয়াখালীর দাগনভূঁইয়া যুদ্ধাপরাধী রাজাকার মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের মুখোশ উম্মোচন করেন তার অতীতের কর্মকান্ডের ইতিহাস তুলে ধরে। সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী সমমনাদের সংগঠিত করে যেখানেই মামুন/রিজভী সেখানেই রাজনীতিতে সাদী/মুুজিব/খোকার হঠাৎ করে ঘা মেরে পানি ঘোলা করার অপপ্রয়াসে এবার সামিল হয়েছে মামুন/রিজভী গং। অখ্যাত অপরিচিত রিজভী এফবিআই-এর মতো খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে ঘুষ দিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে কলংকিত করতে যেয়ে শুধু ব্যর্থ হয়নি, চার বছর কারাবাসের দন্ড পেয়েছে। কনভিকটেড হওয়ার পর যেখানে সে তার কালো মুখ লুকিয়ে রাখবে, সেখানে তা না করে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর কিছু দূর্বৃত্তের প্রচেষ্টায় গলাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার-পরিজনের সততায় ও কর্মনিষ্ঠায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত মাথায় হুলিয়া নিয়ে পালানো খালেদা তারেক গংদের বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্রমূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে সাদী/মুজিব/খোকা/মামুন/রিজভীদের উত্থান। অতীব দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দিবারাত্রী নিরলস কর্মকান্ডকে তলিয়ে দেয়ার ঘৃন্য প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান ও কতিপয় নেতৃবৃন্দ। সিদ্দিকুর রহমান নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীকে বহিষ্কার করেছেন বলে এক হাস্যকর দাবী করেছেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গ সংগঠন নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি সংগঠনকে জেলা কমিটির মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছিলেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ তার মধ্যে অন্যতম। সংগঠনটির জবাবদিহিতা কেবলমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে। প্রবাসের আওয়ামী রাজনীতিতে যিনি নিদ্রাবিহীন কাজ করে যাচ্ছেন, যিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু তিনি ড. সিদ্দিকুর রহমানের অসাংগঠনিক কার্যকলাপের নমুনা দেখে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ইমেইল বার্তার প্রেক্তিতে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার নিরলস প্রচেষ্টায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ বর্হিবিশ্বে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিনত হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, সিনেট, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ফরেন রিলেশন কমিটির নেতৃবৃন্দকে বিএনপি-জামাত গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিষয়ে নিয়মিত অবহিত করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সাফল্যগুলোকে যিনি নিরলস প্রচার করে যাচ্ছেন। যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের ফাঁসির দাবীতে যিনি বছরের পর বছর সোচ্চার, তাঁর ব্যাপারে কেবল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি। চাঁদাবাজ, ঘন ঘন দেশ ভ্রমনের সিদ্ধহস্ত সিদ্দিকুর রহমান, মামুন/রিজভীর পক্ষে মিটিংরত আব্দুল লতিফ স¤্রাটের ফুডকোর্টের সভায় যেয়ে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার আমন্ত্রণ জানায়। খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মা তার উপর ভর করেছে, তা না হলে ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে রক্ষার পরিবর্তে তাদের বিনাশের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে এই মৌসুমী নেতা। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে বিনাশ করার জন্য তিনি দীর্ঘদিন ঈর্শ্বান্বিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, অতীতে কোনো ফল পাননি, ভবিষ্যতেও পাবেন না।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ প্রবাসের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের বিএনপি-জামাত গোষ্ঠীর দেশদ্রোহী কার্যকলাপের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ নিষ্ঠার সাথে চালিয়ে যাবে। কেউ এর বিরোধীতা করে কোনো ফল পাবে না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জাকারিয়া চৌধুরীকে বহিস্কার : যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আ.লীগ মুখোমুখী

প্রকাশের সময় : ০৮:২৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০১৫

নিউইয়র্ক: যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ কর্তৃক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বহিষ্কারের ঘটনায় মুখোমুখী অবস্থান নিয়েছে সংগঠন দুটি। সেই সাথে আবার বিভক্তি দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে। বলা হয়েছে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জাকারিয়াকে বহিস্কার করা হয়েছে। এদিকে বহিষ্কৃত জাকারিয়া চৌধুরীর সাংবাদিক সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ একাধিক নেতা ও নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের উপস্থিতির ঘটনায় আওয়ামী পরিবারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তবে মুখ খুলছেন না কেউ। কেউ বলছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ কোন সংগঠন কারো অধীনে নয়, বরং জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন সংগঠন। আবার কেউ বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ জেলা পর্যায়ের মর্যাদা সম্পন্ন সংগঠন আর নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগসহ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য অঙ্গরাজ্যসহ আওয়ামী লীগের সকল শাখাই সাংগঠনিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অধীনস্থ। খবর ইউএনএ’র।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক নেতা ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠনের সময় ভাগ্যক্রমে দলীয় সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিউইয়র্কে অবস্থান করছিলেন এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের জন্যই নিজে সংগঠনগুলোর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন এবং পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। ঐ নেতা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে সভানেত্রী শেখ হাসিনার স্বাক্ষর রয়েছে অপরদিকে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদিত হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরেই। এনিয়ে ভুল বুঝাবুঝির কোন কারণ নেই। কেউ কেউ সাংগঠনিক নিয়মের অপব্যাখ্যা করছেন। আর দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা মুখে কোন কমিটির নাম বললেই সেটা সাংগঠনিক নিয়মের বাইরে থাকবে তা নয়। দল করলে দলের নিয়ম, শৃঙ্খলার পাশাপাশি ‘চেইন অব কমান্ড’ও মানতে হয়। ঐ নেতা বলেন, আমরা দলের মধ্যে কোন বিভেদ-বিভক্তি চাই না। তবে সাংগঠনিক নিয়মের মধ্যে থেকে মুজিব আদর্শের সকল সৈনিককে সাথে নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বঙ্গবন্ধুর নাতী সজিব ওয়াজেদ জয়ের হাতকে শক্তিশালী করতে চাই। অপর এক নেতা বলেন, দলের দায়িত্বে সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ। তারাই আমাদের মুখপাত্র। তাদের সম্পর্কে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তা কেন্দ্রকে জানাতে পারেন। দলীয় ব্যাপারে সকল সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা কেন্দ্রের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৬(ক) ধারা মতে প্রাতিষ্ঠানিক (সাংগঠনিক) শৃংখলা ভঙ্গের কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ-এর নামে দলীয় প্যাডে প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গত ১৫ মার্চ রোববার রাতে মিডিয়াকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ থেকে জাকারিয়া চৌধুরী বহিষ্কারের পর মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গত ১৬ মার্চ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে জাকারিয়া চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশকে অবৈধ ও অসাংগঠনিক দাবী করে ড. সিদ্দিকুর রহমানের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের উত্তরে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নবী কামন্ডার বলেছেন, শুনেছি আমাদের কমিটি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদের স্বাক্ষরে অনুমোদিত। সেই বিবেচনায় তারা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে পারেন কিন্তু তাদের স্বাক্ষরের কথা আমার জানা নেই। জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমার কর্মকান্ডে ঈর্ষান্বীত হয়ে সিদ্দিক-সাাজ্জাদ ক্ষোভের বশে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। যা অগঠনতান্ত্রিক। তাকে বহিষ্কারাদেশ সম্পর্কে ড. সিদ্দিকুর রহমানের ঘোষণাকে হাস্যকর অভিহিত করে এক প্রশ্নের উত্তরে জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ড. সিদ্দিকুর রহমান বর্ডার ক্রস করে বহিষ্কারের নাটক শুরু করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের চলমান পরিস্থিতি সম্পর্কে সংঠনের অন্যতম সহ সভাপতি সামসুদ্দীন আজাদ ২২ মার্চ রোববার ইউএনএ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে জাকারিয়া চৌধুরীর বহিষ্কার সম্পর্কে কোন মন্তব্য করতে না করে বলেন, বহির্বিশ্বে স্ব স্ব দেশের আইন-কানুন মেনেই আমাদেরকে দলীয় রাজনীতি করার কথা থাকলেও সকল সংগঠনেই সাংগঠনিক কাঠামো রয়েছে। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা দলের অন্য কোন অঙ্গ বা সহযোগী এই সাংগঠনিক নিয়-কানুনের বাইরে নয়। তিনি বলেন, যেমন ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি অনুমোদন করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। তেমনী যুক্তরাষ্ট্রের সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি অনুমোদন করার ক্ষমতাও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের। এটাই হওয়া উচিৎ।
উল্লেখিত বিষয়ে নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল শাহীন ২২ মার্চ রোববার ইউএনএ প্রতিনিধিকে বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠিত হয়েছে। এবং এই তিন সংগঠন স্বাধীন, কোন সংগঠনই কারো অধীনে নয় বরং একই মর্যাদা সম্পন্ন। মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতির পদ থেকে জাকারিয়া চৌধুরীকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ বা আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক বহিষ্কার করতে পারেন না। এধরনের বহিষ্কার অবৈধ। অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, অতীতেও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে এমন অনেক অবৈধ বহিষ্কার/আবিষ্কার হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি/সাধরণ সম্পাদকের অবৈধ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদেই মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত নবী কমান্ডার ও জাকারিয়া চৌধুরীর সাংবাদিক সম্মেলনে (১৬ মার্চ) উপস্থিত ছিলাম।
নিউইয়র্ক মহানগর আ. লীগের সাংবাদিক সম্মেলনের বক্তব্য
এদিকে গত ১৬ মার্চ জ্যাকসন হাইটসের ফুডকোর্ট রেষ্টেুরেন্টে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বলেন, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের অন্তর্ভূক্ত নয়। তাই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ মহানগর আওয়ামী লীগের কোন নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করতে পারে না। একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই কোন নেতাকে বহিষ্কার করতে পারেন বলে মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দাবী করা হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ শরীফ রাসেল। এরপর বক্তব্য রাখেন ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সংগঠনের সভাপতি নবী কমান্ডর ও সিনিয়র সহ সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী। তবে লিখিত বক্তব্যের কোন কোন অংশের সাথে দ্বি-মত পোষন করে নবী কামন্ডার বলেন, এসব বক্তব্য আমার সাথে আলোচনা করে লিখা হয়নি।
সাংবাদিক সম্মেলনে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মকর্তা ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হাসিব মামুন ও মহিউদ্দিন দেওয়ান, প্রচার সম্পাদক দুলাল মিয়া (হাজী এনাম), নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে বলা হয়: ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য সন্তান, বিশ্বের মানচিত্রে উন্নত বাংলাদেশের প্রবক্তা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জীবন বিনাশ ও কালিমা লেপনের অপপ্রয়াস, বিগত কয়েক মাস বাংলাদেশে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর মানুষ পুড়িয়ে মারার জঘন্য কার্যকলাপ ও মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের বিরোধীতাকারীদের হাতে নিরীহ স্বাধীনচেতা মানুষের করুন মৃত্যু-এগুলোর বিরোধীতা জানাতে ও এইসব নারকীয় কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমাদের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধমূলক কর্মসূচী অবহিত করতেই এই সাংবাদিক সম্মেলন। কনভিকটেড ক্রিমিনাল রিজভী আহমেদ সিজার পরপর দু’দিন বাংলাদেশের উন্নয়নে নিবেদিত প্রাণ সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে অপপ্রচারের নির্লজ্জ প্রয়াসকে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলো কঠোর হস্তে প্রতিহত করে। বিশেষভাবে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি কমান্ডার নূর নবী নোয়াখালীর দাগনভূঁইয়া যুদ্ধাপরাধী রাজাকার মোহাম্মদ উল্লাহ মামুনের মুখোশ উম্মোচন করেন তার অতীতের কর্মকান্ডের ইতিহাস তুলে ধরে। সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী সমমনাদের সংগঠিত করে যেখানেই মামুন/রিজভী সেখানেই রাজনীতিতে সাদী/মুুজিব/খোকার হঠাৎ করে ঘা মেরে পানি ঘোলা করার অপপ্রয়াসে এবার সামিল হয়েছে মামুন/রিজভী গং। অখ্যাত অপরিচিত রিজভী এফবিআই-এর মতো খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠানে ঘুষ দিয়ে সজীব ওয়াজেদ জয়কে কলংকিত করতে যেয়ে শুধু ব্যর্থ হয়নি, চার বছর কারাবাসের দন্ড পেয়েছে। কনভিকটেড হওয়ার পর যেখানে সে তার কালো মুখ লুকিয়ে রাখবে, সেখানে তা না করে বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর কিছু দূর্বৃত্তের প্রচেষ্টায় গলাবাজিতে লিপ্ত হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবার-পরিজনের সততায় ও কর্মনিষ্ঠায় ঈর্ষান্বিত হয়ে সাজাপ্রাপ্ত মাথায় হুলিয়া নিয়ে পালানো খালেদা তারেক গংদের বিশ্বব্যাপী ষড়যন্ত্রমূলক কর্মসূচী বাস্তবায়ন করতে সাদী/মুজিব/খোকা/মামুন/রিজভীদের উত্থান। অতীব দুঃখের সাথে জানাতে হচ্ছে যে, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের বিএনপি-জামায়াত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দিবারাত্রী নিরলস কর্মকান্ডকে তলিয়ে দেয়ার ঘৃন্য প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান ও কতিপয় নেতৃবৃন্দ। সিদ্দিকুর রহমান নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরীকে বহিষ্কার করেছেন বলে এক হাস্যকর দাবী করেছেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কোনো অঙ্গ সংগঠন নয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রে তিনটি সংগঠনকে জেলা কমিটির মর্যাদায় অভিষিক্ত করেছিলেন। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ তার মধ্যে অন্যতম। সংগঠনটির জবাবদিহিতা কেবলমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাছে। প্রবাসের আওয়ামী রাজনীতিতে যিনি নিদ্রাবিহীন কাজ করে যাচ্ছেন, যিনি জননেত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক স্বাক্ষরিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। কিন্তু তিনি ড. সিদ্দিকুর রহমানের অসাংগঠনিক কার্যকলাপের নমুনা দেখে স্বেচ্ছায় যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেন। পরবর্তীতে জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও সজীব ওয়াজেদ জয়ের ইমেইল বার্তার প্রেক্তিতে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে তার নিরলস প্রচেষ্টায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ বর্হিবিশ্বে আওয়ামী লীগের একটি শক্তিশালী সংগঠনে পরিনত হয়। তিনি যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেস, সিনেট, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, ফরেন রিলেশন কমিটির নেতৃবৃন্দকে বিএনপি-জামাত গোষ্ঠীর সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিষয়ে নিয়মিত অবহিত করেন। আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের সাফল্যগুলোকে যিনি নিরলস প্রচার করে যাচ্ছেন। যুদ্ধাপরাধী মানবতাবিরোধীদের ফাঁসির দাবীতে যিনি বছরের পর বছর সোচ্চার, তাঁর ব্যাপারে কেবল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা ও নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি। চাঁদাবাজ, ঘন ঘন দেশ ভ্রমনের সিদ্ধহস্ত সিদ্দিকুর রহমান, মামুন/রিজভীর পক্ষে মিটিংরত আব্দুল লতিফ স¤্রাটের ফুডকোর্টের সভায় যেয়ে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দের হাত পা ভেঙ্গে দেয়ার আমন্ত্রণ জানায়। খন্দকার মোশতাকের প্রেতাত্মা তার উপর ভর করেছে, তা না হলে ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে রক্ষার পরিবর্তে তাদের বিনাশের অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে এই মৌসুমী নেতা। নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে বিনাশ করার জন্য তিনি দীর্ঘদিন ঈর্শ্বান্বিত হয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, অতীতে কোনো ফল পাননি, ভবিষ্যতেও পাবেন না।
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ প্রবাসের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীদের বিএনপি-জামাত গোষ্ঠীর দেশদ্রোহী কার্যকলাপের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ নিষ্ঠার সাথে চালিয়ে যাবে। কেউ এর বিরোধীতা করে কোনো ফল পাবে না।