নিউইয়র্ক ০৯:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কড়া নিরাপত্তায় নিউইয়র্কে ইংরেজী বর্ষবরণ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৬
  • / ৮১১ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: সব ভয়-ডর উপেক্ষা করে প্রায় ১০ লাখ পর্যটকের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউইয়র্ক বরণ করে নিলো নতুন বছর ২০১৬। ঘড়ির কাটা রাত ১২টা ছুঁতেই মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ম্যানহাটনের টাইম স্কয়ারে ১১ হাজার ৮৭৫ পাউন্ডের ওয়াটার ফোর্ড স্ক্রিস্টাল বল ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত জানান। আর সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দে মেতে ওঠে নিউইয়র্কবাসী। এদিকে টাইম স্কয়ারের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইংরেজী নতুন বছরকে স্বাগত জানান প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। বাঙালী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, উডসাইড, জ্যামাইকা, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস ও স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে বাংলাদেশী পরিবারগুলো মেতে ওঠে পার্টিতে। নেচে-গেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হামলার হুমকি থাকায় শুধুমাত্র টাইম স্কয়ারে প্রায় ছয় হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১২টা বাজতেই অধিকাংশ প্রেমিকযুগল মেতে ওঠেন বছরের প্রথম চুম্বনে। এসময় টাইম স্কয়ারের আকাশে বর্ণিল আতশবাজির আলোকছটায় ভিন্নমাত্রা এনে দেয়। লাউড স্পিকারে বাজতে থাকে নতুন বছরকে বরণ করার গান।
নিউইয়র্ক পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নববর্ষ উৎসবে নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টাইম স্কয়ারের প্রতিটি ভবনের ছাদে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ছিল বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। হাডসন ও ইস্ট রিভারে ছিল সশস্ত্র ওয়াটার পেট্রল। এসময় আকাশে ছিল পুলিশের হেলিকপ্টার।
টাইম স্কয়ারে প্রবেশের আগে প্রত্যেক পর্যটকের দেহ তল্লাশি করা হয়। যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার উইলিয়াম জে. ব্রাটন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন জানান, নিউইয়র্কে বর্ষবরণ উৎসবে কোনো হুমকি ছিল না। তবু অনাকাংক্ষিত ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া ছিল। নিউইয়র্কের স্পর্শকাতর স্থাপনা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও স্ট্যাচু অব লিবার্টির ওপর ছিল পুলিশ ও বিশেষ সংস্থার নজরদারী।
প্রায় ২৫০ মাইল দুরের রাজ্য মেরিল্যান্ড থেকে আসা ইকু কাবা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ৫ বছর ধরে আমি এখানে বর্ষবরণ উৎসবে আসি। আমি বিশ্বাস করি টাইমস স্কয়ার হচ্ছে বিশ্বের নিরাপদ জায়গা।’ তিনি বলেন, অঘটন যে কোনো সময় ঘটতেই পারে। এজন্য আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ঘরে বসে থাকার মানে হয় না।’
শীতের তীব্রতা না থাকলেও সাপ্তাহিক কর্মদিবস হওয়ায় অনেক বাংলাদেশী পরিবার নিজ বাড়িতে এবার ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করেছেন। স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের বাসিন্দা ওমর চৌধুরী ও ফারহানা চৌধুরী জানান, এবার বাড়িতে বসেই তারা পরিবার ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ইংরেজী নববর্ষকে বরণ করেছেন। টাইমস স্কয়ারে না গেলেও বাড়িতে বসেই বড় পর্দায় উপভোগ করেছেন সেখানকার উৎসব।
এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্যতিক্রম ছিল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির চিত্র। সেখানে ছিল না কোনো আলোকসজ্জা। আকাশে দ্যুতি ছড়ায়নি আতশবাজি। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল পুরো রাজধানী। কড়া নিরাপত্তা ও ভিন্ন চিত্রের মাঝেও সেখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
বার্তা সংস্থা ইউএনএ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার রাজধানী রলি শহরে বসবাসকারী এক বাংলাদেশী পরিবার নিউইয়র্ক এসেছিলেন। বিশেষ করে ঐ পরিবারের কলেজগামী জৈষ্ঠ্য কন্যা রিয়ানার বিশেষ আগ্রহ ছিলো এবার টাইমস স্কয়ারে ইংরেজী ববর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখবে পরিবারটি। কিন্তু তা হলো না। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা আর প্রচন্ড ট্রাফিক (জ্যাম)-এর কথা বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত পরিচারটি তাদের টাইমস স্কয়ারে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দিলেও নিউইয়র্ক শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও দর্শণীয় জায়গা পরিদর্শন করে ছুটি কাটিয়েছেন বলে ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

কড়া নিরাপত্তায় নিউইয়র্কে ইংরেজী বর্ষবরণ

প্রকাশের সময় : ০২:০৫:২৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৪ জানুয়ারী ২০১৬

নিউইয়র্ক: সব ভয়-ডর উপেক্ষা করে প্রায় ১০ লাখ পর্যটকের উপস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম শহর নিউইয়র্ক বরণ করে নিলো নতুন বছর ২০১৬। ঘড়ির কাটা রাত ১২টা ছুঁতেই মেয়র বিল ডি ব্লাজিও ম্যানহাটনের টাইম স্কয়ারে ১১ হাজার ৮৭৫ পাউন্ডের ওয়াটার ফোর্ড স্ক্রিস্টাল বল ফেলে নতুন বছরকে স্বাগত জানান। আর সঙ্গে সঙ্গেই আনন্দে মেতে ওঠে নিউইয়র্কবাসী। এদিকে টাইম স্কয়ারের উচ্ছ্বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইংরেজী নতুন বছরকে স্বাগত জানান প্রবাসী বাংলাদেশীরাও। বাঙালী অধ্যুষিত জ্যাকসন হাইটস, উডসাইড, জ্যামাইকা, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস ও স্ট্যাটেন আইল্যান্ডে বাংলাদেশী পরিবারগুলো মেতে ওঠে পার্টিতে। নেচে-গেয়ে তারা আনন্দ প্রকাশ করেন।
বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হামলার হুমকি থাকায় শুধুমাত্র টাইম স্কয়ারে প্রায় ছয় হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়। ১২টা বাজতেই অধিকাংশ প্রেমিকযুগল মেতে ওঠেন বছরের প্রথম চুম্বনে। এসময় টাইম স্কয়ারের আকাশে বর্ণিল আতশবাজির আলোকছটায় ভিন্নমাত্রা এনে দেয়। লাউড স্পিকারে বাজতে থাকে নতুন বছরকে বরণ করার গান।
নিউইয়র্ক পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নববর্ষ উৎসবে নিñিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে টাইম স্কয়ারের প্রতিটি ভবনের ছাদে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত ছিল বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী। হাডসন ও ইস্ট রিভারে ছিল সশস্ত্র ওয়াটার পেট্রল। এসময় আকাশে ছিল পুলিশের হেলিকপ্টার।
টাইম স্কয়ারে প্রবেশের আগে প্রত্যেক পর্যটকের দেহ তল্লাশি করা হয়। যদিও নিউইয়র্ক পুলিশের কমিশনার উইলিয়াম জে. ব্রাটন সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন জানান, নিউইয়র্কে বর্ষবরণ উৎসবে কোনো হুমকি ছিল না। তবু অনাকাংক্ষিত ঘটনা মোকাবেলায় পুলিশের সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া ছিল। নিউইয়র্কের স্পর্শকাতর স্থাপনা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও স্ট্যাচু অব লিবার্টির ওপর ছিল পুলিশ ও বিশেষ সংস্থার নজরদারী।
প্রায় ২৫০ মাইল দুরের রাজ্য মেরিল্যান্ড থেকে আসা ইকু কাবা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ‘গত ৫ বছর ধরে আমি এখানে বর্ষবরণ উৎসবে আসি। আমি বিশ্বাস করি টাইমস স্কয়ার হচ্ছে বিশ্বের নিরাপদ জায়গা।’ তিনি বলেন, অঘটন যে কোনো সময় ঘটতেই পারে। এজন্য আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ঘরে বসে থাকার মানে হয় না।’
শীতের তীব্রতা না থাকলেও সাপ্তাহিক কর্মদিবস হওয়ায় অনেক বাংলাদেশী পরিবার নিজ বাড়িতে এবার ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন করেছেন। স্ট্যাটেন আইল্যান্ডের বাসিন্দা ওমর চৌধুরী ও ফারহানা চৌধুরী জানান, এবার বাড়িতে বসেই তারা পরিবার ও বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে ইংরেজী নববর্ষকে বরণ করেছেন। টাইমস স্কয়ারে না গেলেও বাড়িতে বসেই বড় পর্দায় উপভোগ করেছেন সেখানকার উৎসব।
এদিকে নিরাপত্তাজনিত কারণে ব্যতিক্রম ছিল রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির চিত্র। সেখানে ছিল না কোনো আলোকসজ্জা। আকাশে দ্যুতি ছড়ায়নি আতশবাজি। নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা ছিল পুরো রাজধানী। কড়া নিরাপত্তা ও ভিন্ন চিত্রের মাঝেও সেখানকার রেস্টুরেন্টগুলোতে ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।
বার্তা সংস্থা ইউএনএ জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার রাজধানী রলি শহরে বসবাসকারী এক বাংলাদেশী পরিবার নিউইয়র্ক এসেছিলেন। বিশেষ করে ঐ পরিবারের কলেজগামী জৈষ্ঠ্য কন্যা রিয়ানার বিশেষ আগ্রহ ছিলো এবার টাইমস স্কয়ারে ইংরেজী ববর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখবে পরিবারটি। কিন্তু তা হলো না। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিরাপত্তা আর প্রচন্ড ট্রাফিক (জ্যাম)-এর কথা বিবেচনা করে শেষ পর্যন্ত পরিচারটি তাদের টাইমস স্কয়ারে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করে দিলেও নিউইয়র্ক শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও দর্শণীয় জায়গা পরিদর্শন করে ছুটি কাটিয়েছেন বলে ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন।