এবিবিএ’র বিজনেস সামিটে অর্থমন্ত্রী মুহিত : হরতালের রাজনীতি বিদায় নিয়েছে, দেশে জ্বালাও-পোড়াও’র রাজনীতি থাকবে না
- প্রকাশের সময় : ০৮:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- / ১১৮১ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: প্রবাসী ও দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যকার ব্যবসায়িক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রত্যয়ে নিউইয়র্কে সপ্তমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো আমেরিকান বাংলাদেশী বিজনেস অ্যালায়েন্স (এবিবিএ)-এর বিজনেস সামিট। সামিটে অর্থমন্ত্রী এম এ মুহিত তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ রাজনীতি আর অর্থনৈতিকভাবে দৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে গেছে, হরতালের রাজনীতি বিদায় নিয়েছে, আগামী দুই বছর পর দেশে আর জ্বালাও-পোড়াও-এর রাজনীতি থাকবে না। এখন দেশের মানুষ তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনীতিকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সেদিকেই ধাবিত হচ্ছেন। অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, আমরা সবাই দূর্নীতি করি, দূর্নীতিই বাংলাদেশের মহাসমস্যা। তবে সহজে দূর্নীতি দূর হবে না, রোধও সম্ভব নয়। কিন্তু দূর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নিয়ে তা প্রশমিত করা যাবে।
আমেরিকান বাংলাদেশী বিজনেস অ্যালায়েন্স (এবিবিএ)-এর চলতি বছরের বিজনেস সামিটে অর্থমন্ত্রী এম মুহিত প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে উপস্থিত প্রবাসী ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির ইস্ট এলমহার্স্টের ডিটমার্স বুলেভার্ডস্থ লাগোর্ডিয়া ম্যারিয়ট হোটেলে গত ২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সন্ধ্যায় এই সামিট অনুষ্ঠিত হয়। খবর ইউএনএ’র।
এবিবিএ’র বিজনেস সামিটে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ডা. দিপু মনি এমপি, গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর বিক্রম) এমপি, রুস্তম আলী ফরাজী এমপি, নিউইয়র্কস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটে নিযুক্ত কনসাল জেনারেল শামীম আহসান, এফবিসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট আব্দুল মাতলুব আহমেদ, এফবিসিসিআই’র প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ শাফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), এফবিসিসিআই’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের প্রেসিডেন্ট মাহবুবুল আলম তালুকদার, ইউএ-বাংলাদেশ গ্লোবাল চেম্বার অব কমার্সের চেয়ারম্যান আজিজ আহমেদ, সেন্টার ফর এনআরবি’র চেয়ারপার্সন শাকিল চৌধুরী ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন।
এবিবিএ’র সামিট কমিটির আহ্বায়ক, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এএফএম দিদারুল ইসলাম দিদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সামিটের শুরুতেই বাংলাদেশের ভাষা ও স্বাধীনতা আন্দোলনসহ ৯/১১সহ যুক্তরাষ্ট্রের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহতের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। এরপর স্বাগত বক্তব্য রাখেন সদস্য সচিব বিলাল চৌধুরী। সামিটে অতিথিবৃন্দ ছাড়াও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন এছাড়া কমিউনিটি নেতা নাসির আলী খান পল সহ এবিবিএ’র কর্মকর্তাদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রধান সমন্বয়কারী তারেক হাসান খান, কো কনভেনর আব্দুল কাদের মিয়া, সমন্বয়কারী শাহ নেওয়াজ, প্রধান উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, সিনিয়র উপদেষ্টা সাঈদ রহমান মান্নান, উপদেষ্টা বদরুল হক, ইয়াকুব এ খান সিপিএ, ফরিদ আলম ও নূরুল আবসার। ধন্যবাদ সূচক বক্তব্য রাখেন এবিবিএ’র যুগ্ম সদস্য সচিব এএফ মিসবাহউজ্জামান। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন আশরাফুল হাসান বুলবুল।
সামিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর সঙ্গী, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি (নাসিব)-এর কেন্দ্রীয় প্রেসিডেন্ট, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নূরুল গণি শোভন সহ দেশের ১০৬জন ব্যবসায়ীসহ প্রায় দুই শত ব্যবসায়ী অংশ নেন বলে আয়োজকরা ইউএনএ প্রতিনিধিকে জানান। সন্ধ্যা ৮টার দিকে সামিটের কর্মকান্ড শুরু হয়ে চলে মধ্যরাত পর্যন্ত। নৈশ ভোজের মধ্য দিয়ে সামিটের সমাপ্তি ঘটে।
সামিটে অর্থমন্ত্রী এম মুহিত তার বক্তব্যের শুরুতেই জাতিসংঘে প্রদত্ত খৃষ্টান সম্প্রদায়ের শীর্ষ ধর্মীয় নেতা পোপের বক্তব্যের উদৃতি দিয়ে বলেন, আমরা বিশ্বব্যাপাী শান্তি চাই, বন্ধুত্ব চাই। ধর্ম আর আগের মতো নেই, ধর্মীয় সংস্কারের ফলে নতুন প্রজন্মের মাঝে পরিবর্তন এসেছে। তিনি বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধ, সততা, ন্যায় পরায়ণতা আর বেসিক গুনাবলী এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে হবে। তিনি দক্ষিণ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার রাজনীতি সম্পর্কে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বক্তব্যের আলোকে বলেন, এই অঞ্চলের রাজনীতিতে ভারত-চীন কোন সমস্যা হবে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি স্ট্রং। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ভালো অবস্থানে রয়েছে। সব মিলিয়ে আগামী দুই বছর বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে খুব ভাল থাকবে। যদিও এ সময়ে ইউরোপের অর্থনীতি খারাপ যাবে। এর প্রভার বাংলাদেশে পড়তে পারে। তাতে বাংলাদেশের চিন্তা করার কিছু নেই। এমনকি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেছে যে ইউরোপের মন্দা প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে না।
অর্থমন্ত্রী মুহিত বলেন, নানা সমস্যা মোকাবেলা করে বাংলাদেশে নারীরা ক্ষমতাবান হচ্ছে, নারীর ক্ষমতায়নে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। ফলে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছে। যা শুধু দেশ নয়, বিশ্বের জন্যও আনন্দের খবর। প্রসঙ্গত তিনি বলেন, ৩৫ বছর আগেও আমি অর্থমন্ত্রী ছিলাম। তখন দেশের উন্নয়নে ৭% নারীর অংশগ্রহণ ছিলো। এখন পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও সমানভাবে কাজ করছেন। ৩৫% নারী কাজ করছে। এটা ৫০%-এ উন্নিত করা দরকার।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমার এখন ৮২ বছর বয়স। এই বয়সে ড্রিম দেখতে ভালো লাগে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে মনে হতো দেশ স্বাধীন হলে ভালোই হবে। ভারত বিভক্তির ফলে তিনটি রাষ্ট্রের জন্ম হবে। আর এখন বাংলাদেশ অর্থনীতিতে স্ট্রং হওয়ায় মনে হচ্ছে দেশে হরতাল করা ইমপসেবল, হরতাল চলে গেছে। ‘ডিষ্টার্ব অব ভায়োলেন্স’ও চলে যাবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশে জ্বালাও-পোড়াও এবং হরতালের রাজনীতি থাকবে না। দেশে ‘সিভিলাইজড কালচার’ থাকবে। এখন মানুষ তার অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ‘ব্রাইট ফিউচার’-এর স্বপ্ন দেখছে। দেশের অর্থনীতিকে কিভাবে শক্তিশালী করা যায় সেদিকেই সবাই ধাবিত হচ্ছেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক কারণে দেশের ইনফ্রেক্চার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইনভেস্ট দরকার, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনার বৃদ্ধি করা দরকার। প্রসঙ্গত তিনি বৃটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউনের কথা উল্লেখ করে বলেন গর্ডন যখন ক্ষমতায় আসেন তখন বৃটেনের অর্থনীতি ভালো ছিলো না। এই সমস্যা মোকাবেলায় গর্ডন পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশীপের উপর গুরুত্বারোপ করেন। ভারতেও এমন ব্যবস্থা রয়েছে। পরে অর্থমন্ত্রী মুহিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যবসায়ী ও সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
অনুষ্ঠানে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতি চালু হওয়ার ফলে দেশে দূর্নীতি কমছে, অনেক সমস্যার সামাধান হচ্ছে।
দেশের দূর্নীতিবাজদের ক্রস ফায়ারে দেয়ার দাবী সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ক্রস ফায়ার ভালো না। এটা সমস্যার সমাধান নয়।
নিউইয়র্কে ব্যাংক প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছর ধরে নিউইয়র্কে ব্যাংক প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চলছে। এটি একটি জটিল কাজ। এজন্য সবার আগে প্রবাসীদের উদ্যোগী হতে হবে।
অনুষ্ঠানে ডা. দিপু মনি এমপি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ব্যবসা বান্ধব সরকার। এক সময় সরকারে ছিলাম, এখন পার্লামেন্ট আছি। আমার অবস্থান থেকে ব্যবসায়ীদের সাহায্য, সহযোগিতা করতে পারলে খুশি হবো।
প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, বিশ্বব্যাপাী ব্যবসা নিয়ে কথা হচ্ছে। বাংলাদেশও এর বাইরে নেই। জাতিসংঘের এমএজি পুরষ্কার অর্জন আমাদের সরকারের সাফল্য। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে মধ্য আয়ের দেশে পরিণত করেছেন। গার্মেন্টস সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণের ফলে অর্জিত সাফল্য বিদেশে তুলে ধরতে হবে। তিনি বলেন, দেশের জায়গা-জমি সোনার খনিতে পরিণত হয়েছে। এসব খনি ফেলে না রেখে কাজে লাগানোর জন্য প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী চুমকি।
গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর বিক্রম) এমপি বলেন, কঠিন সমস্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এগুতে হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী চান দেশের ব্যবসায়ীরা ভালোভাবে ব্যবসা করুক। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। ব্যাংক লোন পাওয়া সহ ব্যাংকের ইন্টারেস্ট বড় সমস্যা। অফিস-আদালতের ফাইল সহজে নড়াচড়া করে না। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মার্কেট ‘ভার্জিন মার্কেট’ তাই সকল ক্ষেত্রেই সফলতা অর্জন সম্ভব।
রুস্তম আলী ফারাজী এমপি বলেন, দেশের সরকার প্রধানের উপর দেশবাসীর আস্থা আছে। তাই উন্নয়নের জন্য দরকার সরকার ও শ্রমিকদের মধ্যে সুসম্পর্ক। দরকার ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, বিনিয়োগ আর শিল্পাঞ্চল প্রতিষ্ঠা। এজন্য সম্মিলিত উদ্যোগ দকার। সেই সাথে স্থবির বিনিয়োগ বোর্ডকে সচল করা দরকার।
কনসাল জেনারেল শামীম আহসান বলেন, দেশ ও প্রবাসের ব্যবসায়ীদের নিয়ে নিউইয়র্কে সফল্যের সাথে সপ্তবারের মতো এমন সম্মেলনের আয়োজন প্রমাণ করে প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করতে ব্যবসায়ীরা ভূমিকা রাখতে পারেন।
আব্দুল মাতলুব আহমেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশে অর্থনীতি সমৃদ্ধশালী হয়েছে। দেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হচ্ছে। জেলায় জেলায় শিল্পাঞ্চল গড়ে উঠছে। ব্যবসা ক্ষেত্রে গ্লোবালী বাংলাদেশ লিডিং দিচ্ছে। তিনি বলেন, দেশ ও প্রবাসের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে এফবিসিসিআই আগ্রহী উল্লেখ করে প্রবাসী ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ বেষ্ট কান্ট্রি ফর ইউর মানি, বেষ্ট পসিবল কান্ট্রি ফর ইউ’।
মোহাম্মদ শাফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন) বলেন, আমরা ব্যবসায়ীরা সরকারের সাথে বারগেনিং করে সমস্যা মোকাবেলা করে চললেও কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য এসেছে। রানা প্লাজার ঘটনায় ৫০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। দেশের অর্থনীতিকে আরো সমৃদ্ধ করতে হলে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতার হাত প্রসারিত করতে হবে, সবাইকে সাহস নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।
মাহবুবুল আলম তালুকদার বলেন, বাংলাদেশ এখন আর কারো মুখাপেক্ষী নয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্চে। বিশেষ করে সরকারের সগযোগিতার ফলে প্রাইভেট সেক্টরে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেই ব্যবসায়ীরাই দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরিয়ে দিচ্ছে। এই ধারা অব্যবহত রাখতে দেশ-প্রবাসী ব্যবসায়ীদের ঐক্য দরকার।
এএফএম দিদারুল ইসলাম দিদার বলেন, বাংলাদেশ আর যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী বাংলাদেশী ব্যবসায়েিদর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার করাই এবিবিএ সামিটের মূল্য লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। এই সামিটের মধ্য দিয়ে আমরা দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যকার সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পাবো। একে অপরের সাথে যোগসূত্র স্থাপনে সহযোগিতা করবে। তিনি বলেন, প্রবাসীরা দেশে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী হচ্ছেন। এই আগ্রহ সরকারকে কাজে লাগাতে হবে।
বিলাল চৌধুরী এবিবিএ সামিটের যোগদানকারী সকল ব্যবসায়ীদের স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের পণ্য, কিনে হও ধন্য’, ‘প্রমোট বাংলাদেশ অ্যারাউন্ড দ্য ওয়ার্ল্ড’ প্রভৃতি দেশ প্রেমের শ্লোগান নিয়ে যারা উত্তর আমেরিকায় কাজ করা ব্যবসায়ীদের বৃহত্তম সংগঠন হচ্ছে এবিবিএ। তিনি বলেন, দেশ ও প্রবাসের ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক ও সৌহার্দ্য স্থাপন করে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনই আমাদের মূল লক্ষ্য। এছাড়া দেশ ও প্রবাসের ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিচিতি করিয়ে দেয়া, ব্যবসা সম্পর্কিত নতুন সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে অবহিত করাও এই সামিটের অন্যতম উদ্দেশ্যে। গত ছয় বছর ধরে এই কাজটিই করে আসছে এবিবিএ। এবিবিএ’র কাজে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ মিশন, বাংলাদেশ দূতাবাস আর বাংলাদেশ কনস্যুলেট। উৎসাহিত করছেন অর্থমন্ত্রী সহ সরকারের মন্ত্রী আর দেশের ব্যবসায়ীরা।
নাসির আলী খান পল বলেন, প্রবাসীরা দেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি। এই কথা মুখে বললেই চলবে না। মনে রাখতে হবে ‘ন্যাড়া একবারই বেলতলায় যায়’।
তারেক হাসান খান বলেন, এবিবিএ সামিট দুই দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বড় রকমের মেল বন্ধন। আজকের সামিতে এতো ব্যবসায়ীর অংশগ্রহণ ‘পাওয়ার হাউজ’-এ পরিণত হয়েছে। আমরা এই সামিটকে ব্যবসায়ীদের কনভেনশনে রূপ দিতে চাই। তিনি ভবিষ্যতে নিউইয়র্কের বিখ্যাত মেডিসন স্কয়ার গার্ডেনে এই কনভেন করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
ফরিদ আলম বলেন, আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্ন এগিয়ে নিতে চাই, দেশে বিনিয়োগ করতে চাই, ভূমিকা রাখতে চাই। এজন্য দেশের আমলাতান্ত্রিক জটিলতা দূর করতে হবে, বিনিয়োগ করার সুযোগ সহজ করতে হবে।
অনুষ্ঠানে ব্যবসা ও সামাজিক কর্মকান্ডে অবদান রাখার জন্য একাধিক ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীকে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অর্থমন্ত্রী তাদের হাতে সম্মাননা স্মারক তুলে দেন। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এফবিসিসিআই’র সভাপতি এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম আব্দুল মোমেন সহ ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন, আই খানন সুলতান, মোস্তফা কামাল, নূরুল আবসার, শাহ নেওয়াজ, শক্তিপদ রায়, জাকির এ খান, মোশাররফর হোসেন, আবুল কালামকে এবিবিএ’র পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।
উল্লেখ্য, এবিবিএ’র সামিট সফল করতে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এএফএম দিদারুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও বিলাল চৌধুরীকে সদস্য সচিব করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন- ডা. মাসুদুল হাসান (প্রধান উপদেষ্টা), সৈয়দ রহমান মান্নান (সিনিয়র উপদেষ্টা), ইয়াকুব এ খান, মহসিন ননি, হারুন ভূঁইয়া, মাকসুদুর রহমান, মোহাম্মদ ফরিদ আলম ও নূরুল অবসার (উপদেষ্টা), তারেক হাসান খান (প্রধান সন্বয়কারী), আতিকুল ইসলাম জাকির (সিনিয়র কো-অর্ডিনেটর), শুভ রায় ও মোহাম্মদ আই খান (সমন্বয়কারী), আব্দুল কাদের, ইমরান কে বুলু, কামাল এইচ মিঠু (কো কনভেনর) এবং এএফ মিসবাহউজ্জামান (যুগ্ম সদস্য সচিব)।