‘ঋণের ফাঁদ : অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা’

- প্রকাশের সময় : ০৮:২২:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০১৯
- / ২৯৬ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটি, ইউএসএ’র জ্যামাইকাস্থ কার্যালয়ে নিয়মিত সাপ্তাহিক সাদাকায়ন প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয় গত ৭ ডিসেম্বর শনিবার। নিউইয়র্ক সময় সকাল ১০টায় শুরু হওয়া প্রোগ্রামের সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কোয়ান্টাম মেডিটেশন সোসাইটির দায়িত্বশীল, লিড আইটি বিজনেস এ্যানালিষ্ট জনাব মোঃ রকিবুর রহমান।
মেডিটেশন, মেডিটেশন সংক্রাšন্ত ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন এবং বিষয়ভিত্তিক আলোচনা দিয়ে সাজানো এই অনুষ্ঠানে অনসাইট এবং অনলাইনে লাইভ স্ট্রিমিং এর মাধ্যমে আমেরিকার ৭টি স্টেট, কানাডার একাধিক প্রভিন্সসহ মোট ৬টি দেশের ৪৪জন মানুষ অংশগ্রহণ করেন। ‘ঋণের ফাঁদ : অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা’ বিষয়ে লাইভ স্ট্রিমিং এর মাধ্যমে কানাডা থেকে সরাসরি আলোচনায় অংশ নেন মিসেস শম্পা রায়।
আলোচক বলেন, বর্তমান বিশ্বে মহামারির আকারে ছড়িয়ে পড়েছে ভোগবাদিতা বা পণ্যাসক্তি, সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি এবং ক্রেডিট কার্ড আসক্তি। একটা সময় ছিলো যখন মানুষ কেনাকাটা করতো প্রয়োজন বুঝে। আর এখন কেনাকাটা করে হুজুগে। সোশ্যাল মিডিয়া (ফেসবুক, ইউটিউব ইত্যাদি) ক্রমাগত লোভনীয় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মানুষকে পণ্যে আসক্ত করে তুলছে। সেই সাথে ক্রেডিট কার্ডের নানাবিধ অপশন (ইন্সটল্মেন্ট, মিনিমাম পেমেন্ট ইত্যাদি) মানুষকে এই দুষ্টচক্রে আর আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলছে। আমরা অপ্রয়োজনীয় কেনাকাটা করতে গিয়ে যে ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়ছি, সেটা বুঝতেই পারছিনা। অথচ ঋণগ্রস্ত জীবন এক ধরণের দাসের জীবন। ঋণ ও কিস্তির চাপ মানুষকে হয় দাসে পরিণত করে, নয়তো সে হয়ে ওঠে দুর্বৃত্ত। ঋণ মানুষের সম্ভাবনাকে নষ্ট করে দেয়। ধ্বংস করে দেয় তার নৈতিক চরিত্র ও দৃঢ়তাকে। আর শারিরীক-মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ঋণের কুপ্রভাবের কথা উল্লেখ করে আলোচক বলেন, ২০১৮ সালে `Royal Soceity of Public Health,UK’ একটি গবেষণা করেছে ঋণ গ্রহীতাদের-ওপরে। এই জরিপে ৬৫% মানুষ বলেছে তারা এত চিন্তিত ও মানসিক ভোগান্তিতে থাকেন যে, চারপাশের লোকজনের সাথে যোগাযোগ কমিয়ে দিয়েছে এবং আরো একা হয়ে গেছে। ৭৬% বলেছে, ঋণের ফলে তাদের ঘুম খারাপ হচ্ছে। তাদের পারিবারিক সুখকে প্রভাবিত করেছে। যার প্রভাবে নানাবিধ রোগ বাসা বাঁধছে শরীরেও।
ঋণের ব্যাপারে ধর্মের শিক্ষা উল্লেখ করে আলোচক আরো বলেন, ইসলাম ধর্মে সত্য অস্বীকার করে কাফের হওয়া আর ঋণগ্রস্ত হওয়াকে নবীজী (সা:) একই রকম পাপ বলে গণ্য করেছেন। ঠিক তেমনি গীতা, বাইবেল, ত্রিপিটকেও ঋণমুক্ত জীবনযাপন করতে বলা হয়েছে। ঋণের এই দুষ্ট চক্র থেকে মুক্তি পেতে আমাদের করণীয় সম্পর্কে আলোচক বলেন, যতদূর সম্ভব ডেবিট কার্ডে কেনাকাটা করা উচিত। ঋণ করে কখনো ভোগ্য পণ্য না কিনে আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় পণ্যটি কেনা উচিত। ঋণ করে ভোগ্য পণ্য কেনার মত বোকামি আর হয়না। কারণ পণ্যে আসক্তি দেহ-মনে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। এই অস্থিরতা/ আসক্তি মুক্তির অত্যন্ত কার্যকরী উপায় হতে পারে মেডিটেশন।নিয়মিত মেডিটেশন চর্চায় মনের ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। মনে প্রশান্তি আসে। ফলে সুখের সন্ধানে কেনাকাটা বা অযথা ব্যয়ের প্রতি আকর্ষণ দূর হয়। মেডিটেশনের পাশাপাশি সাধ্যানুযায়ী দান আমাদের মিতব্যয়ী হতে সাহায্য করবে এবং বালা মুছিবত থেকে দূরে রাখবে এবং মানসিক তৃপ্তি দেবে, যা বস্তুু কখনো দিতে পারেনা। পরিশেষে, পরম করুণাময়ের কাছে সবার জন্য ঋণমুক্ত স্বাধীন জীবনের প্রার্থনা জানিয়ে আলোচক আলোচনা শেষ করেন। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।