নিউইয়র্ক ০৪:৫০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ইয়াহিয়া আর হাসিনা সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই : সাদেক হোসেন খোকা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:২৩:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫
  • / ১০৬৮ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার সাথে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া সরকারের কোন পার্থক্য নেই। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া সরকার যেভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাংলাদেশে মানুষ হত্যা করেছিলো, জেল- জুলুম- হুলিয়া জারি করেছিলো, মানুষের উপর অত্যাচার করেছিলো, ঠিক একই কায়দায় ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকারও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও ৩৪ সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাদেক হোসেন খোকা উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ জুইস সেন্টারে গত ১৯ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় এই সভার আয়োজন করা হয়। খবর ইউএনএ’র।
BNP Khoka--2যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শারাফত হোসেন বাবুর সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. শওকত আলী, বিএনপি নেতা আব্বাস উদ্দিন দুলাল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদল, তারেক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিউল্যাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সভায় সাদেক হোসেন খোকা দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, মওলানা ভাসানীই স্বাধীনতার রূপকার। সেই সময়ে ভাসানীর কোন দায় না থাকলেও তিনি পাকিস্তানের বিরোধীতা করেন, ভারতে গ্রেফতার হন। ভাসানী বলেছিলেন ‘আমরা দিল্লীর জিঞ্জির ভেঙেছি, পিন্ডির জিঞ্জিরে আবদ্ধ হবার জন্য নয়’। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ মুজিবের অবদানকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার তিনি একে খন্দকারের অনুরোধে শেখ মুুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কোন উচ্চভিলাসী মানুষ ছিলেন না। ভবিষ্যতে রাষ্ট্রপতি হবেন এমন চিন্তা করেও তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। শেখ মুজিব যখন পাকিস্তানীদের বাহিনীর হাতে ধরা দেন, তখন জাতিকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতেই শহীদ জিয়া প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের ২২ পরিবারের কথা জানি। সেই ২২ পরিবারের একটি পরিবার হলো চট্টগ্রামের খান পরিবার। সেই পরিবারের এ কে খন্দকার জিয়াউর রহমানকে বলেছিলেন, ‘আপনি শেখ মুুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, তা নাহলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। এই সময় বাঙালীকে বিভ্রান্তি করা যাবে না। তখন জিয়াউর রহমান তার দ্বিতীয় ঘোষণাটি দেন শেখ মুজিবের পক্ষে। সুতরাং জিয়াই স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি আরো বলেন, হাজার বছরের ইতিহাসে জিয়ার মতো সৎ রাষ্ট্রনায়ক নেই।
BNP Khoka-3তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে দেশের মালিক হবে দেশের জনগণ। জনগণের ভোটে সরকার গঠন হবে। কিন্তু সেই অবস্থা আর নেই। আজ দেশের যে অবস্থা তাতে দেশে গণতন্ত্র আছে বলে মনে হয় না। আজ মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার। আর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার বাড়ী থেকে যেভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে তার সরকারের জঘন্য কাজ।
তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, যারা শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতার ঘোষণা বলার চেষ্টা করছেন, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হবার কথা। তাহলে ২৬ মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়? তিনি তাজউদ্দিনের কন্যার বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দিন সাহেব ৭ মার্চের পর শেখ মুজিবের পেছনে পেছনে ঘুরেছিলেন টেপ রেকর্ডার নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার জন্য। সেই সময় শেখ মুজিব বলেছিলেন, আমি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী হতে চাই না এবং হটকারি সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতার ঘোষণা বলার অর্থ হচ্ছে ইতিহাস বিকৃত করা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে তার দায়ভার আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে। তিনি বলেন, এই বিচার যদি স্বাধীনতার পরপরই মুজিব সরকার করতো তাহলে এতো প্রশ্ন উঠতো না। মিথ্যা সাক্ষী আর মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে বিচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচার দাবি করে পান্না কায়সার এবং সূচন্দা তৎকালীন শেখ মুজিব সরকারের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার জন্য বঙ্গভবনে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের বঙ্গভবনে যেতে দেয়া হয়নি। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সেই দিন বধ্যভূমি থেকে সাংবাদিক সেলিনা পারভীন এবং ডা. আলিমের লাশ উদ্ধার করেছিলাম। তখন যদি মুজিব সরকার বুদ্ধিজীবী হত্যার সঠিক তালিকা করে বিচার করতো তাহলে আজকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠতো না।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আন্দোলনে জনগণ সাড়া দিয়েছিলো বলেই ৫ জানুয়ারী ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে। ঐ নির্বাচনে শতকরা ৫ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের মতে ঐ নির্বাচনে ১৫৩ নয় ২০৯জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আগামী ৫০টি নির্বাচনেও এমন ফলাফল হবে না।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার জন্য তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই একাত্তুরের চেতনা বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, আন্দোলন চলবে, আপোষের সুযোগ নেই, ফিরে যাবারও সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, সভায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও সভাস্থলে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিলো। সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কোন সভায় এতো নেতা-কর্মী ও প্রবাসীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ইয়াহিয়া আর হাসিনা সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই : সাদেক হোসেন খোকা

প্রকাশের সময় : ০৬:২৩:০৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: বীর মুক্তিযোদ্ধা, কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকা বলেছেন, ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনার সাথে পাকিস্তানের স্বৈরশাসক ইয়াহিয়া সরকারের কোন পার্থক্য নেই। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের ইয়াহিয়া সরকার যেভাবে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাংলাদেশে মানুষ হত্যা করেছিলো, জেল- জুলুম- হুলিয়া জারি করেছিলো, মানুষের উপর অত্যাচার করেছিলো, ঠিক একই কায়দায় ক্ষমতাসীন শেখ হাসিনা সরকারও বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও ৩৪ সংগঠনের ব্যানারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাদেক হোসেন খোকা উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির জ্যাকসন হাইটসস্থ জুইস সেন্টারে গত ১৯ ডিসেম্বর শনিবার সন্ধ্যায় এই সভার আয়োজন করা হয়। খবর ইউএনএ’র।
BNP Khoka--2যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি শারাফত হোসেন বাবুর সভাপতিত্বে ও কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূঁইয়ার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অধ্যাপক ড. শওকত আলী, বিএনপি নেতা আব্বাস উদ্দিন দুলাল, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, তারেক পরিষদ আন্তর্জাতিক কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আকতার হোসেন বাদল, তারেক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ভিপি জসীম, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি মাওলানা অলিউল্যাহ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান প্রমুখ।
সভায় সাদেক হোসেন খোকা দেশের স্বাধীনতার ঘোষণা প্রসঙ্গে বলেন, মওলানা ভাসানীই স্বাধীনতার রূপকার। সেই সময়ে ভাসানীর কোন দায় না থাকলেও তিনি পাকিস্তানের বিরোধীতা করেন, ভারতে গ্রেফতার হন। ভাসানী বলেছিলেন ‘আমরা দিল্লীর জিঞ্জির ভেঙেছি, পিন্ডির জিঞ্জিরে আবদ্ধ হবার জন্য নয়’। তিনি বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে শেখ মুজিবের অবদানকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি বলেই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার তিনি একে খন্দকারের অনুরোধে শেখ মুুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান কোন উচ্চভিলাসী মানুষ ছিলেন না। ভবিষ্যতে রাষ্ট্রপতি হবেন এমন চিন্তা করেও তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। শেখ মুজিব যখন পাকিস্তানীদের বাহিনীর হাতে ধরা দেন, তখন জাতিকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করতেই শহীদ জিয়া প্রথমে নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমরা পাকিস্তানের ২২ পরিবারের কথা জানি। সেই ২২ পরিবারের একটি পরিবার হলো চট্টগ্রামের খান পরিবার। সেই পরিবারের এ কে খন্দকার জিয়াউর রহমানকে বলেছিলেন, ‘আপনি শেখ মুুজিবের পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন, তা নাহলে মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হবে। এই সময় বাঙালীকে বিভ্রান্তি করা যাবে না। তখন জিয়াউর রহমান তার দ্বিতীয় ঘোষণাটি দেন শেখ মুজিবের পক্ষে। সুতরাং জিয়াই স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি আরো বলেন, হাজার বছরের ইতিহাসে জিয়ার মতো সৎ রাষ্ট্রনায়ক নেই।
BNP Khoka-3তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা হচ্ছে দেশের মালিক হবে দেশের জনগণ। জনগণের ভোটে সরকার গঠন হবে। কিন্তু সেই অবস্থা আর নেই। আজ দেশের যে অবস্থা তাতে দেশে গণতন্ত্র আছে বলে মনে হয় না। আজ মানুষের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত, বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা, গ্রেফতার। আর মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রী, দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তার বাড়ী থেকে যেভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে তার সরকারের জঘন্য কাজ।
তিনি আওয়ামী লীগের নেতাদের সমালোচনা করে বলেন, যারা শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতার ঘোষণা বলার চেষ্টা করছেন, তাদের বক্তব্য অনুযায়ী ৮ মার্চ স্বাধীনতা দিবস হবার কথা। তাহলে ২৬ মার্চ কেন স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়? তিনি তাজউদ্দিনের কন্যার বইয়ের উদ্বৃতি দিয়ে বলেন, তৎকালীন আওয়ামী লীগ নেতা তাজউদ্দিন সাহেব ৭ মার্চের পর শেখ মুজিবের পেছনে পেছনে ঘুরেছিলেন টেপ রেকর্ডার নিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দেবার জন্য। সেই সময় শেখ মুজিব বলেছিলেন, আমি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে রাষ্ট্রদ্রোহী হতে চাই না এবং হটকারি সিদ্ধান্ত নিতে চাই না। তিনি বলেন, ৭ মার্চের ভাষণকে স্বাধীনতার ঘোষণা বলার অর্থ হচ্ছে ইতিহাস বিকৃত করা।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রসঙ্গে সাদেক হোসেন খোকা বলেন, এই বিচারের স্বচ্ছতা নিয়ে যে প্রশ্ন উঠেছে তার দায়ভার আওয়ামী লীগকেই বহন করতে হবে। তিনি বলেন, এই বিচার যদি স্বাধীনতার পরপরই মুজিব সরকার করতো তাহলে এতো প্রশ্ন উঠতো না। মিথ্যা সাক্ষী আর মিথ্যা কাগজপত্র দিয়ে বিচার করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার বিচার দাবি করে পান্না কায়সার এবং সূচন্দা তৎকালীন শেখ মুজিব সরকারের কাছে স্মারকলিপি দেয়ার জন্য বঙ্গভবনে যেতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তাদের বঙ্গভবনে যেতে দেয়া হয়নি। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সেই দিন বধ্যভূমি থেকে সাংবাদিক সেলিনা পারভীন এবং ডা. আলিমের লাশ উদ্ধার করেছিলাম। তখন যদি মুজিব সরকার বুদ্ধিজীবী হত্যার সঠিক তালিকা করে বিচার করতো তাহলে আজকে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে প্রশ্ন উঠতো না।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার আন্দোলনে জনগণ সাড়া দিয়েছিলো বলেই ৫ জানুয়ারী ভোটারবিহীন নির্বাচন হয়েছে। ঐ নির্বাচনে শতকরা ৫ ভাগ ভোটার ভোট দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের মতে ঐ নির্বাচনে ১৫৩ নয় ২০৯জন এমপি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে আগামী ৫০টি নির্বাচনেও এমন ফলাফল হবে না।
সাদেক হোসেন খোকা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম শুরু হয়েছে। এই সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশ নেয়ার জন্য তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলেই একাত্তুরের চেতনা বাস্তবায়িত হবে। তিনি বলেন, আন্দোলন চলবে, আপোষের সুযোগ নেই, ফিরে যাবারও সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, সভায় বিপুল সংখ্যক প্রবাসীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও সভাস্থলে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিলো। সাম্প্রতিককালে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কোন সভায় এতো নেতা-কর্মী ও প্রবাসীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।