নিউইয়র্ক ১২:২১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আ.লীগ সরকার আর সামরিক সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই : ব্যারিষ্টার খোকন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০১:১৭:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ১৪৩৫ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: কেন্দ্রীয় বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও সেই গণতন্ত্র দেশে নেই। আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এই সরকারের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আর সামরিক সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশে দূর্বিসহ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় নির্বাচন দাবী করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যুক্তরাষ্ট্র-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ ফুডকোর্ট রেষ্টুরেন্টের হলরুমে গত ২৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ডা. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
US BNP Press Confa-2 (Dr. Mujib)সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার। এর আগে সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু এবং প্রধান অতিথিকে পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
US BNP Press Confa-Leaders-1সাংবাদিক সম্মেলনে লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলীসহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি যথাক্রমে ইলিয়াস আহমেদ মাস্টার, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী এবং  বিএনপি’র সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে এমদাদুল হক কামাল, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নূরুল আমীন, আব্দুস সবুর, আবুল কাশেম, শাহাদৎ হোসেন রাজু, সুভাষ মজুদার, কাজী খায়রুল বাসার, এবি সিদ্দিক, শাহজাহান শেখ, আব্দুল রহিম, বদিউল আলম, রাসেদ রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুর রহমান জীবন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
US BNP Press Confa-Leaders-2সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে বলা হয়: বাংলাদেশে আজ দূর্বিসহ অবস্থা বিরাজ করছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার কথায় কথায় দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিনা অপরাধে মিথ্যা ও হাস্যকর মামলা দিয়ে জেলে আটক রাখছে। সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অওয়াজ আসলেই সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক ধরনের পাগলামী সরকারের মধ্যে কাজ করছে। সরকার নিজেদের ইচ্ছেমত ইতিহাস পরিবর্তন করছে, ইতিহাস রচনা করতে যে নিয়ম বা প্রথা অনুসরণ করা দরকার তা তারা বিবেচনায় আনছে না। দেশ ডুবে যাক, জগত ডুবে যাক শেখ হাসিনা সরকার এসবের পরোয়া করছে না। শেখ হাসিনা যে কোন মূল্যে তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ঢাকার পিলখানায় দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে হত্যার মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতার অভিসারে বিদেশী রাষ্ট্রের তাবেদার হওয়ার নীল নক্সা নিয়ে দেশপ্রেমিক রাজনীতিক নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করছে।
সামসুল ইসলাম মজনু বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় হুংকার দিয়ে যাচ্ছে বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না। তারা র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ নামিয়ে বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পন্ড করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। সরকার জানে না যে, স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ রাষ্ট্রপতি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপি জনগণের দল। র‌্যাব, পুলিশ না নিয়ে জনগণকে নিয়ে মাঠে নামুন তখন দেখা যাবে জনগণ কাদের সাথে। দেখা যাবে কে কাকে নামতে দেবে না। তখন তাদের এই সকল অপচেষ্টা বন্যার পানির মতো ভেসে যাবে, সেদিন আর দূরে নয়।
বর্তমান সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সমাবেশে লাখো লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে দিশেহারা হয়ে গেছে। মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে দেশনেত্রীর চলার পথ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। সরকার জিয়া অর্ফানেজ ট্রাষ্ট-এর ফান্ড নিয়ে মামলা করে দেশনেত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার যত প্রকার দূরবিসন্ধি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ভাবতে অবাক লাগে তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার সহধর্মিনীকে কিভাবে অসম্মানিত করা যায়, তার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপির পাল্টা কর্মসূচী দিয়ে অহেতুক পরিস্থিতি অশান্ত করছে। যখন দেশনেত্রী জেলায় জেলায় কর্মসূচী দিয়ে দেশের মানুষকে সংগঠিত করছেন তখন প্রতি সপ্তাহে মামলার তারিখ দিয়ে, যাতে করে দেশনেত্রী সমাবেশে অংশ নিতে না পারেন, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে। একটা অন্যায় মামলা দিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করে অন্যায় আদেশ আদালতের মাধ্যমে কার্যকরী করছে। যাতে করে বিএনপি’র দলীয় কর্মসূচী সার্থক না হয় এবং সরকারের ষড়যন্ত্রের কথা দেশের মানুষ জানতে না পারে। সর্বশেষ গাজীপুরে বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত তোরণ, ফেস্টুন, ব্যানার সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সরকার এখানেই ক্ষান্ত নয়। বাংলাদেশের আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নোংরা ভাষায় কথা বলছে। অথচ তারেক রহমান বই-পত্র পড়ে সত্য কথাই বলছেন, আর তাতেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পারলে বই-পত্র নিয়ে প্রমাণ দিয়ে এসে তারেক রহমানের বক্তব্য খন্ডন করতে পারতেন। উল্লেখ্য, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন কন্যা শারমীন ও মুক্তিযুদ্ধের সাবেক উপ অধিনায়ক একে খন্দকারের বক্তব্য কি যথার্থ নয়। তারেক রহমানের আলোচনা বা কথাগুলো তার নিজের নয়, এগুলো তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে সবার সামনে উপস্থাপন করছেন মাত্র। এই অবৈধ সরকার তারেক রহমানের তথ্য-উপাত্ত-এর বিপক্ষে কোন প্রমাণ হাজির করতে না পেরে নির্লজ্জ ও হীন মানসকিতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে এবং পশুর মতো নিত্য ব্যবহার করছে। একবিংশ শতাব্দিতে এসেও আমরা কি জংলী সমাজে বসবাস করছি?
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সুন্দরবন শাসক ও তসকরদের লোভ-ষড়যন্ত্রে ধ্বংসের পথে। আমাদের হেরিটেজ ও মূল্যবান প্রাণ বৈচিত্র, শিল্পায়ন বিনিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ আজ, কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ, গার্মেনট শিল্পে অনিশ্চয়তার কালো অন্ধকার, জনশক্তি রপ্তানীর  দুয়ার একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগের শূন্য পরিবেশে মূদ্রার রিজার্ভ স্ফীত দেখিয়ে মিথ্যা আতœপ্রসাদ লাভ করছে সরকার।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: বিগত ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এই নির্বাচন ছিলো একটি প্রহসনের নির্বাচন। ৫ জানুয়ারীর তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। ঐ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে মানুষের পরিবর্তে দেখা গেছে কুকুর-বিড়াল। ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন করে সরকার দেশে রাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছে। বর্তমান সরকার ও জাতীয় সংসদ অবৈধ। এখানে জনগনের কোন প্রতিনিধিত্ব নেই।
দেশের আপামর মানুষ যে উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেই চেতনা আওয়ামী লীগের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বসং করে দিচ্ছে। এই অবৈধ সরকার যেখানে তাদের সৃষ্টি সেখান থেকেই শুরু হওয়া তাদের মিথ্যাচার, স্বৈরাচারী আচরণ ও পেশীশক্তি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও এসে পড়েছে। দেশের জনপ্রিয় রাষ্ট্র নায়ক শহীদ জিয়ার নামে এই যুক্তরাষ্ট্রে রাস্তার নামকরণ নিয়ে মামলা করেছে এবং আদালতে হেরে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রী এবং দলীয় নেতারা বিশোধাগার করছে। এমনকি প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। জনগণের অর্থে বেতন পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কূটনীতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কর্মকান্ড করে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মীতে পরিনত হয়েছে। সেই সাথে আমাদের আহ্বান বহিবিশ্বে নিয়োজিত কোন দেশের কূটনীতিকরা সরকারী কাজের নামে যেন এমন দলীয় কর্মকান্ডে নিয়োজিত না থাকেন।
বর্তমার সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীরা এতো বেশী পরশ্রীকাতর ও হিংসাপরায়ণ হয়ে বিদেশী অতিথিদেরকে দু’আনার মন্ত্রী ও কাজের মেয়ে বলতেও দ্বিধা করছেন না, তারা এসবকল সম্মানিত ব্যক্তিদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল করছে। ভাবতে অবাক লাগে এতো সাহস তারা পায় কোত্থেকে?
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীরা অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের এসব কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। সাথে সাথে দেশের সকল জনগণকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অবৈধ, জালেম ও স্বৈরাচারী সরকারকে হঠিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করি। সরকার তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুক তারা কত জনপ্রিয়। তাই আমরা অবিলম্বে অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় নির্বাচন দাবী করছি। এটা আমার, আপনার সবার দাবী, বাংলাদেশের জনগণের দাবী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন বয়কট করেছে। ঐ নির্বাচনে মাত্র ৫% মানুষ ভোট দিয়েছে। বাকী ৯৫% ভাগ মানুষ ভোট দেয়নি। আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও ঐ নির্বাচনে ভোট দেয়নি। কেননা, দেশের ৫ ভাগেরও বেশী মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থন করে। তাহলে ভোটার বিহীন নির্বাচনে দাবী করা সরকারের বৈধতা কোথায়। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে একটি মামলাবাজ আর খুনী সরকার আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের জেলায় জেলায় এক-দেড় হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে, সরকার প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ৫/১০জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে খুন করেছে। তিনি বলেন, ভোটার বিহীন নির্বাচনে সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। এজন্য তাদের নাম গ্রীনিজ বুকে লেখা থাকবে। তিনি বলেন, সেদিন বেশী দূরে নয়, জনবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য আওয়ামী লীগের আমও যাবে ছালাও যাবে।
জিয়া অর্ফানেজ ট্রাষ্ট-এর মামলা সম্পর্কে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, আমি বেগম খালেদা জিয়ার মামলার উকিল। তিনি (খালেদা জিয়া) এই ট্রাষ্টের কেউ নন, সদস্যও নন। ট্রাষ্টের কোন অর্থ অনুদানে তার (খালেদা জিয়া) কোন স্বাক্ষর নেই, প্রমান নেই। অথচ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সরকার দুদুক-কে খালেদা জিয়াকে আসামী করে হয়রানী করছেন। আর বেগম জিয়া যাতে দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিতে না পারেন তার জন্য সপ্তাহের পার সপ্তাহ মামলার তারিখ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ট্রাষ্ট-এর অর্থ কেলেঙ্কারীর ব্যাপারে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তা তুলে নেয়া হয়েছে আর জিয়া ট্রাষ্ট্রের ব্যাপারে খালেদা জিয়াকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে সম্পর্কে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের উপ অধিনায়ক একে খন্দকারের বইসহ অন্যান্য বই থেকে তথ্য নিয়ে তারেক রহমান বক্তব্য দিয়েছেন। অথচ তার নামে মানহানীর মামলা হচ্ছে। তিনি বলেন, মৃত লোকের মানহানী হয় না। ঐ বইগুলো বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা সরকারের নেই।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, ১/১১-এর দুই নেত্রীকে দেশ ছাড়া করার পরিকল্পা ছিলো। বিএনপি নেতাদের মামলার কারণেই সেই সময় বেগম খালেদা জিয়াকে তৎকালীন সরকার দেশের বাইরে পাঠাতে পারেনি। আর খালেদা জিয়ার জন্যই শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সুযোগ পান।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা লিমিট আছে। আমরা তার বাইরে যেতে চাই না। আমরা সামরিক শাসন চাই না। ঐ পরিস্থিতি আমাদের কাম্য নয়। আওয়ামী লীগ বিএনপি’র দাবী না মানলে জনগনই সরকারকে ক্ষমতাচুত্য করবে বলে মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি প্রসঙ্গে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, আমি কোন সাংগঠনিক সফরে যুক্তরাষ্ট্র আসিনি। যুক্তরাষ্ট্র কমিটির ব্যাপারে আমি কি করতে পারি তাই জানতে চেয়েছি নেতৃবৃন্দের কাছে। উল্লেখ্য, বিগত তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন কমিটি নেই।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

আ.লীগ সরকার আর সামরিক সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই : ব্যারিষ্টার খোকন

প্রকাশের সময় : ০১:১৭:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: কেন্দ্রীয় বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলদেশ সুপ্রীম কোর্ট বার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, গণতন্ত্রের জন্য বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও সেই গণতন্ত্র দেশে নেই। আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। এই সরকারের ক্ষমতার উৎস জনগণ নয়, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার আর সামরিক সরকারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি বাংলাদেশে দূর্বিসহ অবস্থা বিরাজ করছে উল্লেখ করে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় নির্বাচন দাবী করেছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) যুক্তরাষ্ট্র-এর ব্যানারে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন বিএনপি নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত কথা বলেন। সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ ফুডকোর্ট রেষ্টুরেন্টের হলরুমে গত ২৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ডা. মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
US BNP Press Confa-2 (Dr. Mujib)সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. মজিবুর রহমান মজুমদার। এর আগে সংক্ষিপ্ত স্বাগত বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি সামসুল ইসলাম মজনু এবং প্রধান অতিথিকে পরিচয় করিয়ে দেন সংগঠনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মোহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন।
US BNP Press Confa-Leaders-1সাংবাদিক সম্মেলনে লং আইল্যান্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. শওকত আলীসহ যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি যথাক্রমে ইলিয়াস আহমেদ মাস্টার, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, মনজুর আহমেদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী এবং  বিএনপি’র সাবেক নেতৃবৃন্দের মধ্যে এমদাদুল হক কামাল, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, নূরুল আমীন, আব্দুস সবুর, আবুল কাশেম, শাহাদৎ হোসেন রাজু, সুভাষ মজুদার, কাজী খায়রুল বাসার, এবি সিদ্দিক, শাহজাহান শেখ, আব্দুল রহিম, বদিউল আলম, রাসেদ রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুর রহমান জীবন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
US BNP Press Confa-Leaders-2সাংবাদিক সম্মেলনে পঠিত বক্তব্যে বলা হয়: বাংলাদেশে আজ দূর্বিসহ অবস্থা বিরাজ করছে। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার কথায় কথায় দেশের জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বিনা অপরাধে মিথ্যা ও হাস্যকর মামলা দিয়ে জেলে আটক রাখছে। সরকার তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য সারা দেশে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা-মামলা করে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অওয়াজ আসলেই সরকার ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক ধরনের পাগলামী সরকারের মধ্যে কাজ করছে। সরকার নিজেদের ইচ্ছেমত ইতিহাস পরিবর্তন করছে, ইতিহাস রচনা করতে যে নিয়ম বা প্রথা অনুসরণ করা দরকার তা তারা বিবেচনায় আনছে না। দেশ ডুবে যাক, জগত ডুবে যাক শেখ হাসিনা সরকার এসবের পরোয়া করছে না। শেখ হাসিনা যে কোন মূল্যে তার অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। ঢাকার পিলখানায় দেশ প্রেমিক সেনাবাহিনীকে হত্যার মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতার অভিসারে বিদেশী রাষ্ট্রের তাবেদার হওয়ার নীল নক্সা নিয়ে দেশপ্রেমিক রাজনীতিক নেতা-কর্মীকে হত্যা ও গুম করছে।
সামসুল ইসলাম মজনু বলেন, শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের মন্ত্রীরা কথায় কথায় হুংকার দিয়ে যাচ্ছে বিএনপিকে রাস্তায় নামতে দেয়া হবে না। তারা র‌্যাব, বিজিবি, পুলিশ নামিয়ে বিএনপি’র শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পন্ড করার ব্যর্থ প্রয়াস চালাচ্ছে। সরকার জানে না যে, স্বাধীনতার ঘোষক, শহীদ রাষ্ট্রপতি, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপি জনগণের দল। র‌্যাব, পুলিশ না নিয়ে জনগণকে নিয়ে মাঠে নামুন তখন দেখা যাবে জনগণ কাদের সাথে। দেখা যাবে কে কাকে নামতে দেবে না। তখন তাদের এই সকল অপচেষ্টা বন্যার পানির মতো ভেসে যাবে, সেদিন আর দূরে নয়।
বর্তমান সরকার দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সমাবেশে লাখো লাখো মানুষের উপস্থিতি দেখে দিশেহারা হয়ে গেছে। মিথ্যা বানোয়াট মামলা দিয়ে দেশনেত্রীর চলার পথ বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। সরকার জিয়া অর্ফানেজ ট্রাষ্ট-এর ফান্ড নিয়ে মামলা করে দেশনেত্রীকে হেয় প্রতিপন্ন করার যত প্রকার দূরবিসন্ধি চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের ভাবতে অবাক লাগে তিন তিনবারের প্রধানমন্ত্রী, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার সহধর্মিনীকে কিভাবে অসম্মানিত করা যায়, তার জন্য তারা মরিয়া হয়ে উঠেছে। বিএনপির পাল্টা কর্মসূচী দিয়ে অহেতুক পরিস্থিতি অশান্ত করছে। যখন দেশনেত্রী জেলায় জেলায় কর্মসূচী দিয়ে দেশের মানুষকে সংগঠিত করছেন তখন প্রতি সপ্তাহে মামলার তারিখ দিয়ে, যাতে করে দেশনেত্রী সমাবেশে অংশ নিতে না পারেন, সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছে। একটা অন্যায় মামলা দিয়ে আদালতকে প্রভাবিত করে অন্যায় আদেশ আদালতের মাধ্যমে কার্যকরী করছে। যাতে করে বিএনপি’র দলীয় কর্মসূচী সার্থক না হয় এবং সরকারের ষড়যন্ত্রের কথা দেশের মানুষ জানতে না পারে। সর্বশেষ গাজীপুরে বিএনপির সমাবেশ উপলক্ষ্যে আয়োজিত তোরণ, ফেস্টুন, ব্যানার সরকারদলীয় ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করেছে। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সরকার এখানেই ক্ষান্ত নয়। বাংলাদেশের আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নোংরা ভাষায় কথা বলছে। অথচ তারেক রহমান বই-পত্র পড়ে সত্য কথাই বলছেন, আর তাতেই সরকারের মাথা খারাপ হয়ে যাচ্ছে। পারলে বই-পত্র নিয়ে প্রমাণ দিয়ে এসে তারেক রহমানের বক্তব্য খন্ডন করতে পারতেন। উল্লেখ্য, দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন কন্যা শারমীন ও মুক্তিযুদ্ধের সাবেক উপ অধিনায়ক একে খন্দকারের বক্তব্য কি যথার্থ নয়। তারেক রহমানের আলোচনা বা কথাগুলো তার নিজের নয়, এগুলো তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে সবার সামনে উপস্থাপন করছেন মাত্র। এই অবৈধ সরকার তারেক রহমানের তথ্য-উপাত্ত-এর বিপক্ষে কোন প্রমাণ হাজির করতে না পেরে নির্লজ্জ ও হীন মানসকিতার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছে এবং পশুর মতো নিত্য ব্যবহার করছে। একবিংশ শতাব্দিতে এসেও আমরা কি জংলী সমাজে বসবাস করছি?
বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ সুন্দরবন শাসক ও তসকরদের লোভ-ষড়যন্ত্রে ধ্বংসের পথে। আমাদের হেরিটেজ ও মূল্যবান প্রাণ বৈচিত্র, শিল্পায়ন বিনিয়োগ সম্পূর্ণ বন্ধ আজ, কর্মসংস্থানের পথ বন্ধ, গার্মেনট শিল্পে অনিশ্চয়তার কালো অন্ধকার, জনশক্তি রপ্তানীর  দুয়ার একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বিনিয়োগের শূন্য পরিবেশে মূদ্রার রিজার্ভ স্ফীত দেখিয়ে মিথ্যা আতœপ্রসাদ লাভ করছে সরকার।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: বিগত ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে আওয়ামী লীগের অধীনে কোন নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না। এই নির্বাচন ছিলো একটি প্রহসনের নির্বাচন। ৫ জানুয়ারীর তথাকথিত নির্বাচনের মাধ্যমে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। ঐ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে মানুষের পরিবর্তে দেখা গেছে কুকুর-বিড়াল। ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচন করে সরকার দেশে রাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছে। বর্তমান সরকার ও জাতীয় সংসদ অবৈধ। এখানে জনগনের কোন প্রতিনিধিত্ব নেই।
দেশের আপামর মানুষ যে উদ্দেশ্য নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেই চেতনা আওয়ামী লীগের ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বসং করে দিচ্ছে। এই অবৈধ সরকার যেখানে তাদের সৃষ্টি সেখান থেকেই শুরু হওয়া তাদের মিথ্যাচার, স্বৈরাচারী আচরণ ও পেশীশক্তি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও এসে পড়েছে। দেশের জনপ্রিয় রাষ্ট্র নায়ক শহীদ জিয়ার নামে এই যুক্তরাষ্ট্রে রাস্তার নামকরণ নিয়ে মামলা করেছে এবং আদালতে হেরে গেছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার মন্ত্রী এবং দলীয় নেতারা বিশোধাগার করছে। এমনকি প্রশাসনকে ব্যবহার করছে। জনগণের অর্থে বেতন পাওয়া যুক্তরাষ্ট্রে নিয়োজিত রাষ্ট্রদূত ও কূটনৈতিক কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তারা কূটনীতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত কর্মকান্ড করে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মীতে পরিনত হয়েছে। সেই সাথে আমাদের আহ্বান বহিবিশ্বে নিয়োজিত কোন দেশের কূটনীতিকরা সরকারী কাজের নামে যেন এমন দলীয় কর্মকান্ডে নিয়োজিত না থাকেন।
বর্তমার সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রীরা এতো বেশী পরশ্রীকাতর ও হিংসাপরায়ণ হয়ে বিদেশী অতিথিদেরকে দু’আনার মন্ত্রী ও কাজের মেয়ে বলতেও দ্বিধা করছেন না, তারা এসবকল সম্মানিত ব্যক্তিদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল করছে। ভাবতে অবাক লাগে এতো সাহস তারা পায় কোত্থেকে?
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়: আমরা প্রবাসী বাংলাদেশীরা অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের এসব কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানাই। সাথে সাথে দেশের সকল জনগণকে আহ্বান জানাই, আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই অবৈধ, জালেম ও স্বৈরাচারী সরকারকে হঠিয়ে নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে বাধ্য করি। সরকার তার জনপ্রিয়তা প্রমাণ করতে নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুক তারা কত জনপ্রিয়। তাই আমরা অবিলম্বে অবৈধ শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগ ও জাতীয় নির্বাচন দাবী করছি। এটা আমার, আপনার সবার দাবী, বাংলাদেশের জনগণের দাবী।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বাংলাদেশের বেশীর ভাগ মানুষ ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন বয়কট করেছে। ঐ নির্বাচনে মাত্র ৫% মানুষ ভোট দিয়েছে। বাকী ৯৫% ভাগ মানুষ ভোট দেয়নি। আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও ঐ নির্বাচনে ভোট দেয়নি। কেননা, দেশের ৫ ভাগেরও বেশী মানুষ আওয়ামী লীগ সমর্থন করে। তাহলে ভোটার বিহীন নির্বাচনে দাবী করা সরকারের বৈধতা কোথায়। তিনি আওয়ামী লীগ সরকারকে একটি মামলাবাজ আর খুনী সরকার আখ্যায়িত করে বলেন, দেশের জেলায় জেলায় এক-দেড় হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে, সরকার প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে ৫/১০জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে খুন করেছে। তিনি বলেন, ভোটার বিহীন নির্বাচনে সরকারের প্রধানমন্ত্রী, স্পীকার, বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হয়েছেন। এজন্য তাদের নাম গ্রীনিজ বুকে লেখা থাকবে। তিনি বলেন, সেদিন বেশী দূরে নয়, জনবিরোধী কর্মকান্ডের জন্য আওয়ামী লীগের আমও যাবে ছালাও যাবে।
জিয়া অর্ফানেজ ট্রাষ্ট-এর মামলা সম্পর্কে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, আমি বেগম খালেদা জিয়ার মামলার উকিল। তিনি (খালেদা জিয়া) এই ট্রাষ্টের কেউ নন, সদস্যও নন। ট্রাষ্টের কোন অর্থ অনুদানে তার (খালেদা জিয়া) কোন স্বাক্ষর নেই, প্রমান নেই। অথচ প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে সরকার দুদুক-কে খালেদা জিয়াকে আসামী করে হয়রানী করছেন। আর বেগম জিয়া যাতে দলীয় কর্মকান্ডে অংশ নিতে না পারেন তার জন্য সপ্তাহের পার সপ্তাহ মামলার তারিখ দেয়া হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধুর ট্রাষ্ট-এর অর্থ কেলেঙ্কারীর ব্যাপারে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা হলেও তা তুলে নেয়া হয়েছে আর জিয়া ট্রাষ্ট্রের ব্যাপারে খালেদা জিয়াকে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
বিএনপি’র সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাম্প্রতিক বক্তব্যে সম্পর্কে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের উপ অধিনায়ক একে খন্দকারের বইসহ অন্যান্য বই থেকে তথ্য নিয়ে তারেক রহমান বক্তব্য দিয়েছেন। অথচ তার নামে মানহানীর মামলা হচ্ছে। তিনি বলেন, মৃত লোকের মানহানী হয় না। ঐ বইগুলো বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা সরকারের নেই।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, ১/১১-এর দুই নেত্রীকে দেশ ছাড়া করার পরিকল্পা ছিলো। বিএনপি নেতাদের মামলার কারণেই সেই সময় বেগম খালেদা জিয়াকে তৎকালীন সরকার দেশের বাইরে পাঠাতে পারেনি। আর খালেদা জিয়ার জন্যই শেখ হাসিনা বিদেশ থেকে দেশে ফেরার সুযোগ পান।
অপর এক প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিষ্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনের একটা লিমিট আছে। আমরা তার বাইরে যেতে চাই না। আমরা সামরিক শাসন চাই না। ঐ পরিস্থিতি আমাদের কাম্য নয়। আওয়ামী লীগ বিএনপি’র দাবী না মানলে জনগনই সরকারকে ক্ষমতাচুত্য করবে বলে মন্তব্য করেন।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র কমিটি প্রসঙ্গে ব্যারিষ্টার খোকন বলেন, আমি কোন সাংগঠনিক সফরে যুক্তরাষ্ট্র আসিনি। যুক্তরাষ্ট্র কমিটির ব্যাপারে আমি কি করতে পারি তাই জানতে চেয়েছি নেতৃবৃন্দের কাছে। উল্লেখ্য, বিগত তিন বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির কোন কমিটি নেই।