আ.লীগের রাজনীতি ব্যালটের আর বিএনপির রাজনীতি বুলেটের
- প্রকাশের সময় : ১২:৪৪:১৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ নভেম্বর ২০১৪
- / ১২৩৯ বার পঠিত
প্রবীণ রাজনীতিক, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ানের বলেছেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আর আওয়ামী লীগের রাজনীতি হচ্ছে ব্যালটের। অপরদিকে খালেদা জিয়া আর বিএনপির রাজনীতি হচ্ছে বুলেটের, মিথ্যাচারের রাজনীতি। কেনন, বিএনপি ক্যান্টনমেন্ট থেকে আর আওয়ামী লীগ রাজপথের আন্দোলন থেকে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল। আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের নেতৃত্বকারী দল, দেশের স্বার্ধনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার দল। আর বিএনপি দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। বিএনপি-জামায়াতের কাছে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষা সম্ভব নয়। আমরা দেশে শান্তি চাই, কিন্তু বিএনপি-জামায়াত দেশে অশান্তির রাজনীতি করছে। তাদের বাংলাদেশে স্থান নেই। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া চাইলে পাকিস্তান চলে যেতে পারেন। তার জন্য পাকিস্তানের পথ খোলা রয়েছে।
আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ানের সম্মানে প্রবাসী সিলেটবাসী আয়োজিত সর্বজনীন সম্বর্ধনা সভায় তিনি উপরোক্ত কথা বলেন। প্রবাসী সিলেট বিভাগবাসীর উদ্যোগ এবং বৃহত্তর সিলেট আওয়ামী পরিবার যুক্তরাষ্ট্র ও স্বাধীনতার পক্ষের প্রগতিশীল সংগঠনসমূহ এই সম্বর্ধনা সভার আয়োজন করে। গত ২ নভেম্বর রোববার রাতে এস্টোরিয়ার ক্লাব সনমে আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সম্বর্ধনা কমিটির আহ্বায়ক ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশনে নিযুক্ত স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একেএম আব্দুল মোমেন, এডভোকেট ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী এমপি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকার সভাপতি বদরুল হোসেন খান এবং যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এম এ সালাম।
সভায় বক্তারা বলেন, চৌধুরী সুফিয়ান একজন খাঁটি রাজনীতিক ও জননেতা। তার কর্মের মধ্য দিয়ে প্রমাণ করলেন সিলেটের মতো এই প্রবাসেও তিনি কত জনপ্রিয়। তিনি কারো রাজনৈতিক নেতা, কারো রাজনৈতিক গুরু, কারো অভিভাবক। তার নেতৃত্বে সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সুসংগঠিত। বক্তারা বলেন, কেউ নেতা হয়ে সম্মানিত হন, আবার কারো জন্য চেয়ার সম্মানিত হয়। কিন্তু সুফিয়ান চৌধুরী এম নেতা যার জন্য সিলেটের দু’টি চেয়ারই সম্মানিত। তার সম্মানে আমরাও সম্মানিত। বক্তারা বৃহত্তর সিলেটের উন্নয়নে আরো অবদান রাখার জন্য চৌধুরী সুফিয়ানের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা অহিদুর রহমান মুক্তা, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের সভাপতি আব্দুল মুসাব্বির ও সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম জিকো, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ ও আব্দুর রহিম বাদশা, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র সহ সভাপতি ও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, সাবেক কোষাধ্যক্ষ আখতার আহমেদ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম, মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা শিরিন আক্তার দিবা, কানেকটিকাট আওয়ামী লীগের সভাপতি জুনেদ এ খান, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের উপদেষ্টা তোফায়েল আহমেদ, এসোসিয়েশনের সাবেক সহ সভাপতি ফয়েজুর রহমান ফটিক, সাবেক ছাত্রনেতা সাহাবউদ্দীন ও সৈয়দ মোস্তাক, সোসাইটির সহ সাধারণ সম্পাদক সিরাজ উদ্দিন আহমেদ সোহাগ, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের জনসংযোগ সম্পাদক ও সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কাজী কয়েস, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাঈদুর রব খান জামাল, যুক্তরাষ্ট্র কৃষক লীগের সভাপতি হাজী নিজাম, নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি মহি আহমেদ, সিটি অঅওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র শ্রমিক লীগের সভাপতি কাজী আজিজুল হক খোকন ও সাধারণ সম্পাদক জুয়েল আহমেদ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, সাবেক ছাত্রনেতা এস এম গোলাম রব্বানী চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন, রুহেল চৌধুরী, ওসমানী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি নজমুল ইসলাম চৌধুরী, সিলেটের দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা সিরাজ আহমেদ, অনুষ্ঠানে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদানকারী হেলিম উদ্দিন, সম্বর্ধনা কমিটির উপদেষ্টা জুনেদ এ খান, যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আতিকুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্য সচিব রুহেল চৌধুরী, সদস্য সুব্রত বিশ্বাস, সাখাওয়াত আলী, মামুন আহমেদ, দরুদ মিয়া রনেল প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে পরিচালনা করেন সম্বর্ধনা কমিটির সদস্য সচিব আব্দুল হাসিব মামুন ও সমন্বয়কারী দুলাল মিয়া (হাজী এনাম)। অনুষ্ঠানে সম্বর্ধিত অতিথিকে আয়োজক কমিটির পক্ষ থেকে ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন এম এইচ মতিন। এরপর অতিথি চৌধুরী সুফিয়ানকে ফুল দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের পক্ষে মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, আব্দুল মুহিত, জামাল আহমেদ, আব্দুল ওয়াহিদ, জামাল হোসেন, রহিমুজ্জামান সুমন ও আব্দুল হান্নান এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগের পক্ষে দরুদ মিয়া রনেল অভ্যর্থনা জানান।
অনুষ্ঠানে আব্দুস জহির চৌধুরী সুফিয়ান তাকে সম্বর্ধিত করার জন্য প্রবাসী সিলেটবাসীদের ধন্যবাদ জানান এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমরা সবাই একই পরিবারের (আওয়ামী পরিবার) সদস্য। তাই দেশ ও দলের জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রবাসে দেশের মর্যাদা বৃদ্ধি করতে হবে।
ড. মোমেন বলেন, জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস কাউন্সিল, সিপিএ-তে স্পীকার ড. শিরিন শারমীন চৌধুরী আর আইপিইউতে সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি সহ অতি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশ ৫টি বিজয় অর্জন করেছে। এই বিজয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের প্রতি বিশ্ব নেতৃবৃন্দের আস্থাই প্রমাণ করে।
ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা পাকিস্তানীদের ক্যাম্পে ছিলেন, যারা দেশের অর্থ লুট করেছেন তাদের মুখে গণতন্ত্রের কথা মানায় না। আর এতোদিন যারা ভি চিহ্ন দেখিয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের রায়ে এখন আমাদের ভি চিহ্ন দেখানোর সময় এসেছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেথখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বাংলার মাটিতে পাকিস্তানীদের জায়গা হবে না।
উল্লেখ্য, সভায় সভাপতির বক্তব্যের পর সভামঞ্চে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক (প্রথম) ফারুক আহমদের আসন দেয়া ও নেয়ায় সম্বর্ধনা কমিটির অন্যতম যুগ্ম সদস্য সচিব, যুবলীগ নেতা ওয়ালী হোসেন উচ্চস্বরে প্রতিবাদ করেন এবং ফারুক আহমেদও প্রতিবাদী হয়ে উঠেন। ফলে উত্তপ্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অনুষ্ঠানে অতিথিদের সমানেই ঘটনাটি ঘটায় উপস্থিত সকলে বিব্রতকর পরিস্থিতে পড়েন। পড়ে মুরুব্বীদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
প্রচন্ড ঠান্ডা উপক্ষো করে বিপুল সংখ্যক বৃহত্তর সিলেটবাসী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।