‘অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’-কে নো শ্লোগানে মুখর ম্যানহাটান
- প্রকাশের সময় : ০৬:৫৪:২৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অক্টোবর ২০১৫
- / ১৮৩৪ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে ‘অবৈধ সরকার’ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ আখ্যায়িত করে ‘শেখ হাসিনা-কে নো’ শ্লোগানের পাশাপাশি অবিলম্বে জাতীয় র্বিাচন দাবী করেছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও বিএনপি সমমনারা। ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার দুুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘ সদর দপ্তরে কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন তখন জাতিসংঘ ভবনের বাইরে (৪৭ স্ট্রীট এন্ড ফাস্ট এভিনউর কর্ণার) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এসময় তারা বিভিন্ন শ্লোগান সম্বলিত প্লাকার্ড বহন ও কালো পতাকা প্রদর্শন করে সরকার বিরোধী ব্যাপক শ্লোগান দেয়। অপরদিকে একইদিন অপরাহ্নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ম্যানহাটানের হিলটন হিটেলের বলরুমে তাঁর সম্মানে আয়োজিত ‘সর্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনা’ সভায় যোদ দেন তখন হোটেলের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের সাথে সমমনারা যোগ দিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। এসময়ও তারা সরবকার বিরোধী নানা শ্লোগান দেয়।
উল্লেখ্য, ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার সকালে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ২০১৫ পরবর্তী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক শীর্ষ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন শেখ হাসিনা। লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে এক বৈঠকেও যোগ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী ওই সব কর্মসূচিতে যোগ দিতে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে প্রবেশ করার পর যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন ব্যানার, প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে বাইরে অবস্থান নেন। শ্লোগান শ্লোগানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, ভোটারবিহীন নির্বাচনে গঠিত ‘আওয়ামী লীগ সরকার অবৈধ, এই সরকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অবৈধ’। তারা শেখ হাসিনার প্রতি ‘নো’ শ্লোগান তুলেন এবং অবিলম্বে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে শেখ হাসিনার প্রতি আহ্বান জানান। এসময় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মজিবুর রহমান মজুদার, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি গিয়াস আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও সরাফত হোসেন বাবু, সহ সভাপতি আলহাজ্ব সোলাইমান ভূইয়া, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, সাবেক কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূইয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম এ বাতেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
জাতিসংঘ ভবনের সামনে বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া বিক্ষোভ সমাবেশ চলে ঘণ্টাব্যাপী। বিক্ষোভকারীদের হাতে ধরা ব্যানারে লেখা ছিল- ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করুন’, ‘শেখ হাসিনাকে না বলুন’ ইত্যাদি।
এরপর দুপুর বেলা দু’টায় ম্যানহাটনের হোটেল হিলটনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সর্বজনিন নাগরিক সংবর্ধণা সভায় যখন প্রধানমন্ত্রী যোগ দেন তখন সিক্সথ এভিনিউর ফিফটি থার্ড স্ট্রীটের ওপর অবস্থিত এই হোটেলে বাইরেও ব্যাপক বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। তাদের সাথে যোগ দেয় হিউম্যাস রাইটস ডেভলেপমেন্ট অব বাংলাদেশ (এইচআরডিবি), কোয়ালিশন অব বাংলাদেশী আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন এবং বাংলাদেশ আমেরিকান প্রোগ্রেসিভ ফোরাম নামের প্রভৃতি সংগঠন।
হোটেল হিলটনের সামনের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে, ‘অনির্বাচিত এবং অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ উল্লেখ করে, যুক্তরাষ্ট্রে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষনার আহ্বান জানানো হয়। দেশে বর্তমানে খুন, গুম, নির্যাতন, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, মানবাধিকার লংঘনের জন্য সরকারকে দায়ী করেন বিক্ষোভকারীরা। সমাবেশে বক্তারা ৫ জানুয়ারীর অগণতান্ত্রিক ও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হয়েছেন উল্লেখ করে জাতিসংঘে তার ভাষণ দেয়ার কোনো অধিকার নেই বলেও দাবী করেন। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সব জায়গায় শেখ হাসিনাকে প্রতিহত করার হুমকি দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, কমিটিহীন দ্বিধা-বিভক্ত বিএনপির কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ডা. মুজিবুর রহমান, সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ স¤্রাট, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি গিয়াস আহমেদ, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন ও শরাফত হোসেন বাবু, সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, কোষাধ্যক্ষ জসিম ভূঁইয়া, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সভাপতি জাকির এইচ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ আহমেদ, কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এম বাতেন ও যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের সভাপতি আতাউর রহমান আতা।
বিক্ষোভ সমাবেশে নিউইয়র্কে সফররত কেন্দ্রীয় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য ডা. রফিকুল ইসলাম ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিক দল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জাসাস সহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর উল্লেখযোগ্য নেতা-কর্মীদের মধ্যে অংশ নেন বিএনপি’র সাবেক সহ সভাপতি ইলিয়াস মাস্টার, আলহাজ্ব সোলাইমান ভূইয়া, মনজুর আহমেদ চৌধুরী ও সামসুল ইসলাম মজনু, বিএনপি নেতা মাহমুদুর রহমান চৌধুরী, হেলাল উদ্দীন, ফিরোজ আহমেদ, কাজী শাখাওয়াত হোসেন আজম, আজাদ বাকের, এমলাক হোসেন ফয়সল, শরীফ লস্কর, এম বাসেদ রহমান, আব্দুর রহিম, ড. তারেক জামান, এবাদ চৌধুরী, সাজ্জাদ পারভেজ, নুরুল আমিন পলাশ, আব্দুল খালেক আকন্দ, দেলোয়ার হোসেন, নূর মোহাম্মদ, ফিরোজুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট কাইয়্যুম চৌধুরী, মাওলানা অলিউল্যা আতিকুর রহমান, রাফেল তালুকদার, রফিকুল ইসলাম ডালিম, যুবদল নেতা জহিরুল ইসলাম মোল্লা, সারওয়ার খান বাবু, ফারুক মজুমদার, সরোয়ার খান বাবু,মহিদুল ইসলাম মুহিত, কাজী আমিনুল ইসলাম স্বপন, রেজাউল আজাদ ভুঞা, শামীম মাহমুদ, শেখ হায়দার আলী, সৈয়দ এনাম আহমদ, আব্দুল করিম, মোহাম্মদ ইউসুফ আলী, এডভোকেট মোত্তাসিম বিল্লাহ লোটাস, ইঞ্জিনিয়ার এম রহমান সায়েম, ফয়েজ আহমদ চৌধুরী, জাসাস নেতা গোলাম ফারুক শাহী, ও আবু তাহের, যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের একাংশের সভাপতি এম এ বাসিত, অপরাংেশের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জনি, ছাত্রদল নেতা সোহেব আহমেদ চৌধুরী সহ ছাইদুর খান ডিউক, মোহাম্মদ আরশাদ খান, নাজিম চৌধুরী রিংকু, ফেরদৌস আলম, মোহাম্মদ হিমু, মোহাম্মদ খান মিশু, এ. জসিম উদ্দীন, কামরুল হাসান জিন্নাহ, কাজী মুজিবুর রহমান, মোহাম্মদ আলী, মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, মনজুরুল করিম তুহিন, সৈয়দ আজিজুর রহমান, সাইফ চৌধুরী, শামসুল হক রিপন প্রমুুখ।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ জাতিসংঘের সামনে আবার কাউকে কাউকে হিলটন হোটেলের সামনে যোগ দিতে দেখা যায়। তবে অধিকাংশ নেতা-কর্মী উভয় সমাবেশেই যোদ দেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র জাগপা সভাপতি এএসএম রহমতউল্লাহ সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে মাহাতাব উদ্দিন, মাহবুবুর রহমান প্রমুখ অংশ নেন।