নিউইয়র্ক ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

অবশেষে ১৫ পদে ৩১ প্রার্থী ॥ কোষাধ্যক্ষ পদে মনিরের মনোনয়নপত্র বৈধ ॥ মেশিনে নয়, ব্যালটে ভোট

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫
  • / ৫২৭ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) অব নিউইয়র্ক ইন্কের কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক (২০১৬-২০১৭) নির্বাচন আগামী ২০ ডিসেম্বর রোববার। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের প্রচারণা এখন তুঙ্গে। এদিকে জেবিবিএ’র গঠনতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে আহ্বায়ক/নির্বাচন কমিশন, আর প্রার্থীদের মধ্যকার নতুন সমঝোতায় ইতিপূর্বে কোষাধ্যক্ষ পদে বাতিল হওয়া মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বৈধ রাখা হয়েছে। ফলে রোববারের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। এ নিয়ে জেবিবিএ’র কার্যকরী পরিষদের ১৫ পদে ৩১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হলেও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী তিনজন। অপরদিকে জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে দুই প্যানেলের প্রচার-প্রচারণা সহ নির্বাচনী ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় অর্ধ লক্ষ ডলার বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবারের নির্বাচনে মেশিনে ভোট গ্রহণ নয়, ভোট হবে ম্যানুয়ারী ব্যালটে। উল্লেখ্য, জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন ২৫৭জন। খবর ইউএনএ’র।
জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ এই দুই প্যানেলে ১৫টি পদের জন্য ৩১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী দু’জনের মধ্যে প্রথমে ‘জিকো-তারেক প্যানেলের প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও গেলো সপ্তাহে নতুন গঠনতন্ত্রের প্রেক্ষিতে এবং বৃহত্তর স্বার্থে কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মনির সহ তার প্যানেলের দাবীতে অবশেষে তার মনোনয়নপত্র বহাল রাখা হয়েছে। ফলে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম হারুন-এর আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়া হলো না। ইতিপূর্বে ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের পক্ষ থেকে জেবিবিএ’র ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের সকল পদেই প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে এককভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাহবুবুর রহমান টুকু।
এদিকে শনিবার রাতে জেবিবিএ/নির্বাচন কমিশন থেকে প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, ‘২০ ডিসেম্বর জেবিবিএ অব নিউইয়র্ক ইনকের ২০১৬-২০১৭ সাল মেয়াদী এক্সিকিউটিভ কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের সিদ্বান্ত নিয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কনভেনিং কমিটি তথা নির্বাচন কমিশন। বিশেষ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট গণনার মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে না বলে এবং ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে আমরা পূর্ব নির্ধারিত বাংলাদেশ প্লাজাকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্বান্ত বহাল রেখেছি। ইতিমধ্যে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নান্দুস ব্যাংকুয়েট হলকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলাম। সবদিক বিবেচনা করে নান্দুস ব্যংকুয়েট হলের পরিবর্তে পূর্ব নির্ধারিত ৭৩নং স্ট্রিটের বাংলাদেশ প্লাজাই ভোট কেন্দ্র থাকবে’।
নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য এম এম রহমান শনিবার রাতে বলেন, জেবিবিএ’র আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশনের এক সভা হয়েছে। সভায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, জেবিবিএ’র নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণ হবে ম্যানুয়ালী ব্যালটে। কোন মেশিন ব্যবহার করা হবে না। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ সুন্দর রাখতে ৮জন সিকিউরিটি নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় প্রিসিংক্টের পুলিশ অফিসার রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে সভায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বিধা বিভক্ত জেবিবিএ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর নতুন গঠনতন্ত্রের আলোকে নির্বাচন করতে গিয়ে অনেক কিছুই ‘আপোষ-মিমাংসা’ আর ‘আলাপ-আলোচনা’র ভিত্তিতে করতে গিয়ে আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশনকে সমঝোতার পথ নিতে হয়। সূত্র মতে, ইতিপূর্বে বাতিল করা কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বহাল রাখা না হলে আরো নতুন নতুন সঙ্কট দেখা দেয় এবং আরো অনেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না বলে অবশেষে দুই প্যানেলের সাথে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে জেবিবিএ’র নির্বাচনী কর্মকান্ডের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন না করার কথা ঘোষণা দিলেও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে দৃশ্যত ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে প্রার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে জেবিবিএ’র আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশন প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন করার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন।
ঐক্যবদ্ধ জেবিবিএ’র আলোচিত এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী সহ কমিউনিটিতে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু চলছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের হোটেল-রেস্তোরার আড্ডায় এখন একই আলাপ- জেবিবিএ’র নির্বাচন। দিন-রাত চলছে গণ সংযোগ আর ভোট প্রার্থনা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এসব কর্মকান্ড। ভোটের জন্য ‘ডোর টু ডোর’ গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ইতিপূর্বে বিভক্ত জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুল জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। অপরদিকে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া মাসুদ জিকো জেবিবিএ’র অপরাংশের সভাপতি আর তারেক হাসান খান একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। জানা গেছে, এবারে নির্বাচনে উভয় প্যানেল থেকে অপেক্ষাকৃত ইয়ং নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই কমিউনিটির খুবই পরিচিত মুখ। ফলে লড়াই হবে হাড্ডা-হাড্ডি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উভয় প্যানেলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে ২৫৭ জন ভোটারের মধ্যে যে বা যারা ১২৯ ভোট পাবেন তিনি বা তারাই নির্বাচিত হবেন।
‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের শ্লোগান হচ্ছে ‘যোগ্য নেতৃত্ব সংগঠনকে গতিশীল করে, গতিশীল সংগঠন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে’। এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, সহ সভাপতি- শাহ নেওয়াজ ও মনসুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- কামরুজ্জামান কামরুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- ফাহাদ সোলায়মান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ সেলিম হারুন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), সাংগঠনিক সম্পাদক- শাকিল মিয়া, দপ্তর সম্পাদক- মাহমুদ হোসেন বাদশা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- সাজ্জাদ হোসাইন, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- রাসেদ আহমেদ। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ আলম, সেবুল দেবনাথ, বাচ্চু ও মোহাম্মদ হাসান।
অপরদিকে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের শ্লোগান হচ্ছে জেবিবিএ’র ‘অতীত এতিহ্য ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য’। এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- জাকারিয়া মাসুদ জিকো, সহ সভাপতি- মোহাম্মদ সুরুজ্জামান ও মোল্লা মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক- তারেক হাসান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- আব্দুল কাইয়ুম খান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ হোসেন মনিরের, সাংগঠনিক সম্পাদক- আতিকুল ইসলাম জাকির, দপ্তর সম্পাদক- শেখ আলী হাসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাফিজ, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- হাসান জিলানী। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- জাকির মিয়া, আব্দুল আলীম, ঋশীধাম চৌধুরী, এম এ হক ও মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহববুর রহমান টুকু’র নির্বাচনী শ্লোগান হচ্ছে ‘আমরা জেবিবিএ-তে সৎ ও স্বচ্ছ নেতৃত্ব চাই। আমরা পরিবর্তন চাই’।
উল্লেখ্য, ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচন কমিশনেরও দায়িত্ব পালন করছেন। কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সাঈদ রহমান মান্নান, এম এম রহমান, কাজী পারভেজ, মাহবুব চৌধুরী এবং কাজী মন্টু।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

অবশেষে ১৫ পদে ৩১ প্রার্থী ॥ কোষাধ্যক্ষ পদে মনিরের মনোনয়নপত্র বৈধ ॥ মেশিনে নয়, ব্যালটে ভোট

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৮:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০১৫

নিউইয়র্ক: প্রবাসী বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের সর্ববৃহৎ সংগঠন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) অব নিউইয়র্ক ইন্কের কার্যকরী পরিষদের দ্বি-বার্ষিক (২০১৬-২০১৭) নির্বাচন আগামী ২০ ডিসেম্বর রোববার। সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোট গ্রহণ চলবে। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের প্রচারণা এখন তুঙ্গে। এদিকে জেবিবিএ’র গঠনতন্ত্র রক্ষা করতে গিয়ে আহ্বায়ক/নির্বাচন কমিশন, আর প্রার্থীদের মধ্যকার নতুন সমঝোতায় ইতিপূর্বে কোষাধ্যক্ষ পদে বাতিল হওয়া মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বৈধ রাখা হয়েছে। ফলে রোববারের নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। এ নিয়ে জেবিবিএ’র কার্যকরী পরিষদের ১৫ পদে ৩১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীরা ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হলেও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী তিনজন। অপরদিকে জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে দুই প্যানেলের প্রচার-প্রচারণা সহ নির্বাচনী ব্যয় দাঁড়াচ্ছে প্রায় অর্ধ লক্ষ ডলার বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এবারের নির্বাচনে মেশিনে ভোট গ্রহণ নয়, ভোট হবে ম্যানুয়ারী ব্যালটে। উল্লেখ্য, জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ভোটার হচ্ছেন ২৫৭জন। খবর ইউএনএ’র।
জেবিবিএ’র এবারের নির্বাচনে ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ এই দুই প্যানেলে ১৫টি পদের জন্য ৩১জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রার্থীদের মধ্যে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিনজন। কোষাধ্যক্ষ পদে মনোনয়নপত্র দাখিলকারী দু’জনের মধ্যে প্রথমে ‘জিকো-তারেক প্যানেলের প্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হলেও গেলো সপ্তাহে নতুন গঠনতন্ত্রের প্রেক্ষিতে এবং বৃহত্তর স্বার্থে কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মনির সহ তার প্যানেলের দাবীতে অবশেষে তার মনোনয়নপত্র বহাল রাখা হয়েছে। ফলে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মোহাম্মদ সেলিম হারুন-এর আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হওয়া হলো না। ইতিপূর্বে ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের পক্ষ থেকে জেবিবিএ’র ১৫ সদস্যের কার্যকরী পরিষদের সকল পদেই প্রার্থীতা ঘোষণা করেন। অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে এককভাবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন মাহবুবুর রহমান টুকু।
এদিকে শনিবার রাতে জেবিবিএ/নির্বাচন কমিশন থেকে প্রেরীত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, ‘২০ ডিসেম্বর জেবিবিএ অব নিউইয়র্ক ইনকের ২০১৬-২০১৭ সাল মেয়াদী এক্সিকিউটিভ কমিটির নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ভোট কেন্দ্র পরিবর্তনের সিদ্বান্ত নিয়েছে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কনভেনিং কমিটি তথা নির্বাচন কমিশন। বিশেষ পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভোট গণনার মেশিন ব্যবহৃত হচ্ছে না বলে এবং ব্যয় সংকোচনের লক্ষ্যে আমরা পূর্ব নির্ধারিত বাংলাদেশ প্লাজাকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্বান্ত বহাল রেখেছি। ইতিমধ্যে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নান্দুস ব্যাংকুয়েট হলকে ভোট কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলাম। সবদিক বিবেচনা করে নান্দুস ব্যংকুয়েট হলের পরিবর্তে পূর্ব নির্ধারিত ৭৩নং স্ট্রিটের বাংলাদেশ প্লাজাই ভোট কেন্দ্র থাকবে’।
নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য এম এম রহমান শনিবার রাতে বলেন, জেবিবিএ’র আসন্ন নির্বাচন বিষয়ে আজ (শনিবার) সন্ধ্যায় আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশনের এক সভা হয়েছে। সভায় নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তিনি বলেন, জেবিবিএ’র নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণ হবে ম্যানুয়ালী ব্যালটে। কোন মেশিন ব্যবহার করা হবে না। ভোট কেন্দ্রের পরিবেশ সুন্দর রাখতে ৮জন সিকিউরিটি নিয়োগ দেয়া হবে। পাশাপাশি নিরাপত্তার স্বার্থে স্থানীয় প্রিসিংক্টের পুলিশ অফিসার রাখার ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে সভায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দ্বিধা বিভক্ত জেবিবিএ ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পর নতুন গঠনতন্ত্রের আলোকে নির্বাচন করতে গিয়ে অনেক কিছুই ‘আপোষ-মিমাংসা’ আর ‘আলাপ-আলোচনা’র ভিত্তিতে করতে গিয়ে আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশনকে সমঝোতার পথ নিতে হয়। সূত্র মতে, ইতিপূর্বে বাতিল করা কোষাধ্যক্ষ পদপ্রার্থী মোহাম্মদ হোসেন মনিরের মনোনয়নপত্র বহাল রাখা না হলে আরো নতুন নতুন সঙ্কট দেখা দেয় এবং আরো অনেকেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন না বলে অবশেষে দুই প্যানেলের সাথে আলোচনা ও সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর আগে জেবিবিএ’র নির্বাচনী কর্মকান্ডের শুরুতেই নির্বাচন কমিশন প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন না করার কথা ঘোষণা দিলেও প্রার্থীদের পক্ষ থেকে দৃশ্যত ‘দিদার-কামরুল’ ও ‘জিকো-তারেক’ দুই প্যানেলে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হন এবং পরবর্তীতে প্রার্থীদের দাবীর প্রেক্ষিতে জেবিবিএ’র আহ্বায়ক কমিটি/নির্বাচন কমিশন প্যানেল ভিত্তিক নির্বাচন করার পক্ষে সিদ্ধান্ত দেন।
ঐক্যবদ্ধ জেবিবিএ’র আলোচিত এবারের নির্বাচন নিয়ে প্রবাসী বাংলাদেশী সহ কমিউনিটিতে নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু চলছে। বিশেষ করে জ্যাকসন হাইটসের হোটেল-রেস্তোরার আড্ডায় এখন একই আলাপ- জেবিবিএ’র নির্বাচন। দিন-রাত চলছে গণ সংযোগ আর ভোট প্রার্থনা। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলছে এসব কর্মকান্ড। ভোটের জন্য ‘ডোর টু ডোর’ গিয়ে ভোট প্রার্থনা করছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের মধ্যে ‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম ইতিপূর্বে বিভক্ত জেবিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এই প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী কামরুজ্জামান কামরুল জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। অপরদিকে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী জাকারিয়া মাসুদ জিকো জেবিবিএ’র অপরাংশের সভাপতি আর তারেক হাসান খান একই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। স্বতন্ত্র সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহবুবুর রহমান টুকু জেবিবিএ’র সাবেক কর্মকর্তা। জানা গেছে, এবারে নির্বাচনে উভয় প্যানেল থেকে অপেক্ষাকৃত ইয়ং নেতৃত্ব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে অনেকেই কমিউনিটির খুবই পরিচিত মুখ। ফলে লড়াই হবে হাড্ডা-হাড্ডি। নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী উভয় প্যানেলই জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে ২৫৭ জন ভোটারের মধ্যে যে বা যারা ১২৯ ভোট পাবেন তিনি বা তারাই নির্বাচিত হবেন।
‘দিদার-কামরুল’ প্যানেলের শ্লোগান হচ্ছে ‘যোগ্য নেতৃত্ব সংগঠনকে গতিশীল করে, গতিশীল সংগঠন নেতৃত্ব সৃষ্টি করে’। এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, সহ সভাপতি- শাহ নেওয়াজ ও মনসুর চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক- কামরুজ্জামান কামরুল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- ফাহাদ সোলায়মান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ সেলিম হারুন (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত), সাংগঠনিক সম্পাদক- শাকিল মিয়া, দপ্তর সম্পাদক- মাহমুদ হোসেন বাদশা, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- সাজ্জাদ হোসাইন, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- রাসেদ আহমেদ। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- মোশাররফ হোসেন, মোহাম্মদ আলম, সেবুল দেবনাথ, বাচ্চু ও মোহাম্মদ হাসান।
অপরদিকে ‘জিকো-তারেক’ প্যানেলের শ্লোগান হচ্ছে জেবিবিএ’র ‘অতীত এতিহ্য ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের প্রধান লক্ষ্য’। এই প্যানেলের প্রার্থীরা হলেন: সভাপতি- জাকারিয়া মাসুদ জিকো, সহ সভাপতি- মোহাম্মদ সুরুজ্জামান ও মোল্লা মাসুদ, সাধারণ সম্পাদক- তারেক হাসান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- আব্দুল কাইয়ুম খান, কোষাধ্যক্ষ- মোহাম্মদ হোসেন মনিরের, সাংগঠনিক সম্পাদক- আতিকুল ইসলাম জাকির, দপ্তর সম্পাদক- শেখ আলী হাসান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- মোস্তাফিজুর রহমান মুস্তাফিজ, সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক- হাসান জিলানী। কার্যকরী পরিষদ সদস্য- জাকির মিয়া, আব্দুল আলীম, ঋশীধাম চৌধুরী, এম এ হক ও মোহাম্মদ লিয়াকত আলী।
এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহববুর রহমান টুকু’র নির্বাচনী শ্লোগান হচ্ছে ‘আমরা জেবিবিএ-তে সৎ ও স্বচ্ছ নেতৃত্ব চাই। আমরা পরিবর্তন চাই’।
উল্লেখ্য, ৫ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি নির্বাচন কমিশনেরও দায়িত্ব পালন করছেন। কমিটির কর্মকর্তারা হচ্ছেন- সাঈদ রহমান মান্নান, এম এম রহমান, কাজী পারভেজ, মাহবুব চৌধুরী এবং কাজী মন্টু।