নিউইয়র্ক ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‌লোকাল‌য়ে বানর, বিপা‌কে সাধারণ মানুষ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:২১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪
  • / ২৭ বার পঠিত

অপ‌রিক‌ল্পিতভা‌বে উজাড় হচ্ছে বনভূ‌মি, পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চল। এ কারণে বানরগুলো আবাস হারাচ্ছে, পাচ্ছে না খাবার। তাই খাবারের খোঁজে লোকালয়ে প্রায়ই এসব বানরের আনাগোনা দেখা যায়। সড়কের পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়ে বানরের দল। খাগড়াছ‌ড়ির বি‌ভিন্ন উপ‌জেলায় বান‌রের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

প‌রিক‌ল্পিত বনানয়ন করার না‌মে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস, জনসংখ‌্যা বৃদ্ধির ফ‌লে বা‌ড়িঘর নির্মাণ ও ইটভাটার চু‌ল্লি‌তে জ্বালানি হিসে‌বে কা‌ঠের ব‌্যবহার করতে গিয়ে নি‌র্বিচা‌রে বনভূ‌মি নিধন করা হচ্ছে। পাহাড় কাটার কার‌ণে বনজ প্রাণীকুল হারা‌চ্ছে তা‌দের আবাসস্থল। অন‌্যদি‌কে দেখা দি‌য়ে‌ছে চরম খাদ‌্য সংকট। ফ‌লে জীবন বাঁচা‌নোর তা‌গি‌দে জীব‌নের ঝুঁকি নি‌য়ে খা‌দ্যের সন্ধা‌নে লোকাল‌য়ে এসে নষ্ট সাধন ক‌রে বান‌রের দল। বিশেষ করে ফলদ বাগান ও ক্ষুদ্র সবজি চাষিরা আছেন বিপাকে। দলবেঁধে শত শত বানর খাবারের জন্য বাসাবাড়িতে দেখা যায়। প্রাকৃতিক খাবারের অভাবে কখনো কখনো মানুষের ঘরে প্রবেশ করে রান্না করা খাবারও খেয়ে ফেলে। গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার দেশি মুরগি পালন করে। কিন্তু সুযোগ পেলেই ডিম খেয়ে ও নষ্ট করে অবর্ণনীয় ক্ষতি করছে বানরের দল।

সরেজমিন দেখা যায়, বি‌ভিন্ন বা‌ণি‌জ্যিক ও বাসভবনের ছাদের ওপর, আশেপাশে সীমানা দেয়ালে বানর দলবেঁধে লাফালাফি কর‌ে। মানুষের উপ‌স্থি‌তি ‌টের পে‌লে তারা দ্রুত পা‌‌লি‌য়ে যায়। বি‌শেষ ক‌রে উপজা‌তি সম্প্রদা‌য়ের লোক‌দের চিন‌তে ভুল করে না। তা‌দের দেখ‌লে অতিদ্রুত পা‌লি‌য়ে যায়। কারণ উপজাতিরা শিকা‌রের জন‌্য ‘গুলাইল’ না‌মে এক ধর‌নের অস্ত্র ব‌্যবহার ক‌রে। তা‌রা একসময় টেঁটা, বল্লম ও বন্দু‌ক ব‌্যবহার করত‌ো। আইনি জটিলতার কারণে এখন প্রকা‌শ্যে তা ব‌্যবহার হয় না।

স্থানীয় সবজি চাষি ওয়ালিউল্লা বলেন, আমি সব সময় শাক-সবজি, ফল ফলাদি চাষাবাদ করি। কিন্তু বানরের উপদ্রবে চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মতো আরো অনেকে চাষাবাদ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বানরের জন্য সরকারিভাবে খাদ্যের ব্যবস্থা করা দরকার। কখনো কখনো গ্রামের মানুষ বানর পিটিয়ে মারতে বাধ্য হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীর কোনো বিকল্প নেই।

‌জেলার মা‌টিরাঙ্গা পৌর এলাকা চেয়ারম‌্যান পাড়ার বা‌সিন্দা আলী হো‌সেন বলেন, বানরের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। কিছুক্ষণ পরপর বানর এসে ফলমূল নষ্ট করে ফেলছে। হাঁস-মুরগি‌কে খাবার দি‌লে তা নি‌য়ে যায়। রান্নাঘরের চালের টিন বানর যাতায়াত করতে সব নষ্ট করে ফেলেছে। ব‌্যবসায়ী আব্দুর র‌হিম বলেন, বানর এলাকাবা‌সী‌কে অতিষ্ঠ করে তু‌লে‌ছে। সব ফলমূল সাবাড় করছে। বন্যপ্রাণী বনে না থেকে লোকালয়ে এসে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

খাগড়াছড়ি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আতাউর রহমান লস্কর বলেন, বন্যপ্রাণী হলো আমাদের বনজসম্পদ, আমাদের ঐতিহ্য। এরা বন হতে লোকালয়ে আসছে খাদ্য সংকটের ফলে। বন্যপ্রাণীকে হত্যা, অতিষ্ঠ করা বা আহত করা যাবে না। বন্যপ্রাণী দ্বারা কোনো মানুষ হত্যা, আহত হওয়া বা কোনো ধরনের ঘরবাড়ি বিনষ্ট হলে সরকার তা পুষিয়ে দেয়ার বিধান রয়েছে। সূত্র : ডেইলি-বাংলাদেশ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

‌লোকাল‌য়ে বানর, বিপা‌কে সাধারণ মানুষ

প্রকাশের সময় : ১১:২১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ মার্চ ২০২৪

অপ‌রিক‌ল্পিতভা‌বে উজাড় হচ্ছে বনভূ‌মি, পাহাড়, টিলা ও বনাঞ্চল। এ কারণে বানরগুলো আবাস হারাচ্ছে, পাচ্ছে না খাবার। তাই খাবারের খোঁজে লোকালয়ে প্রায়ই এসব বানরের আনাগোনা দেখা যায়। সড়কের পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও খাবারের সন্ধানে ঢুকে পড়ে বানরের দল। খাগড়াছ‌ড়ির বি‌ভিন্ন উপ‌জেলায় বান‌রের যন্ত্রনায় অতিষ্ঠ প্রায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষ।

প‌রিক‌ল্পিত বনানয়ন করার না‌মে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস, জনসংখ‌্যা বৃদ্ধির ফ‌লে বা‌ড়িঘর নির্মাণ ও ইটভাটার চু‌ল্লি‌তে জ্বালানি হিসে‌বে কা‌ঠের ব‌্যবহার করতে গিয়ে নি‌র্বিচা‌রে বনভূ‌মি নিধন করা হচ্ছে। পাহাড় কাটার কার‌ণে বনজ প্রাণীকুল হারা‌চ্ছে তা‌দের আবাসস্থল। অন‌্যদি‌কে দেখা দি‌য়ে‌ছে চরম খাদ‌্য সংকট। ফ‌লে জীবন বাঁচা‌নোর তা‌গি‌দে জীব‌নের ঝুঁকি নি‌য়ে খা‌দ্যের সন্ধা‌নে লোকাল‌য়ে এসে নষ্ট সাধন ক‌রে বান‌রের দল। বিশেষ করে ফলদ বাগান ও ক্ষুদ্র সবজি চাষিরা আছেন বিপাকে। দলবেঁধে শত শত বানর খাবারের জন্য বাসাবাড়িতে দেখা যায়। প্রাকৃতিক খাবারের অভাবে কখনো কখনো মানুষের ঘরে প্রবেশ করে রান্না করা খাবারও খেয়ে ফেলে। গ্রামের বেশিরভাগ পরিবার দেশি মুরগি পালন করে। কিন্তু সুযোগ পেলেই ডিম খেয়ে ও নষ্ট করে অবর্ণনীয় ক্ষতি করছে বানরের দল।

সরেজমিন দেখা যায়, বি‌ভিন্ন বা‌ণি‌জ্যিক ও বাসভবনের ছাদের ওপর, আশেপাশে সীমানা দেয়ালে বানর দলবেঁধে লাফালাফি কর‌ে। মানুষের উপ‌স্থি‌তি ‌টের পে‌লে তারা দ্রুত পা‌‌লি‌য়ে যায়। বি‌শেষ ক‌রে উপজা‌তি সম্প্রদা‌য়ের লোক‌দের চিন‌তে ভুল করে না। তা‌দের দেখ‌লে অতিদ্রুত পা‌লি‌য়ে যায়। কারণ উপজাতিরা শিকা‌রের জন‌্য ‘গুলাইল’ না‌মে এক ধর‌নের অস্ত্র ব‌্যবহার ক‌রে। তা‌রা একসময় টেঁটা, বল্লম ও বন্দু‌ক ব‌্যবহার করত‌ো। আইনি জটিলতার কারণে এখন প্রকা‌শ্যে তা ব‌্যবহার হয় না।

স্থানীয় সবজি চাষি ওয়ালিউল্লা বলেন, আমি সব সময় শাক-সবজি, ফল ফলাদি চাষাবাদ করি। কিন্তু বানরের উপদ্রবে চাষাবাদ বন্ধ করে দিয়েছি। আমার মতো আরো অনেকে চাষাবাদ বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছে। বানরের জন্য সরকারিভাবে খাদ্যের ব্যবস্থা করা দরকার। কখনো কখনো গ্রামের মানুষ বানর পিটিয়ে মারতে বাধ্য হচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় বন্যপ্রাণীর কোনো বিকল্প নেই।

‌জেলার মা‌টিরাঙ্গা পৌর এলাকা চেয়ারম‌্যান পাড়ার বা‌সিন্দা আলী হো‌সেন বলেন, বানরের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। কিছুক্ষণ পরপর বানর এসে ফলমূল নষ্ট করে ফেলছে। হাঁস-মুরগি‌কে খাবার দি‌লে তা নি‌য়ে যায়। রান্নাঘরের চালের টিন বানর যাতায়াত করতে সব নষ্ট করে ফেলেছে। ব‌্যবসায়ী আব্দুর র‌হিম বলেন, বানর এলাকাবা‌সী‌কে অতিষ্ঠ করে তু‌লে‌ছে। সব ফলমূল সাবাড় করছে। বন্যপ্রাণী বনে না থেকে লোকালয়ে এসে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।

খাগড়াছড়ি বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আতাউর রহমান লস্কর বলেন, বন্যপ্রাণী হলো আমাদের বনজসম্পদ, আমাদের ঐতিহ্য। এরা বন হতে লোকালয়ে আসছে খাদ্য সংকটের ফলে। বন্যপ্রাণীকে হত্যা, অতিষ্ঠ করা বা আহত করা যাবে না। বন্যপ্রাণী দ্বারা কোনো মানুষ হত্যা, আহত হওয়া বা কোনো ধরনের ঘরবাড়ি বিনষ্ট হলে সরকার তা পুষিয়ে দেয়ার বিধান রয়েছে। সূত্র : ডেইলি-বাংলাদেশ।