নিউইয়র্ক ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনদিন ধরে ওঠা-নামা করছে না কোনো বিদেশি বিমান

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১২:০৭:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৪৭২ বার পঠিত

সিলেট: উদ্বোধনের পরই বন্ধ হয়ে গেছে ওসমানী থেকে সরাসরি বিদেশি ফ্লাইট। সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনদিন ধরে ওঠা-নামা করছে না কোনো বিদেশি বিমান। এতে বিপাকে পড়েছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। দীর্ঘ ১৭ বছর অপেক্ষা ও আন্দোলনের পর সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সম্প্রতি চালু হয়েছিল সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। উদ্বোধনের পরপরই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটবাসীর মধ্যে। তারা এটিকে সিলেট বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র বলেই আখ্যায়িত করছেন। সরাসরি ফ্লাইট অব্যাহত রাখার দাবিতে তারা ফের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে উদ্বোধনের পর হঠাৎ করে কেন সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তার কারণও খোলাসা করে বলছেন না ‘ফ্লাই দুবাই’ ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের টিকিট বিক্রি থেকে বিমান বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আয় করে থাকে। এক্ষেত্রে বিদেশি বিমানের সাথে টিকেটের তারতম্য থাকে ১০/১২ হাজার টাকা। যে কারণে দুবাই থেকে ‘ফ্লাই দুবাই’ কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোনো দেশ থেকে বিদেশি বিমান (এমিরেটস, ইত্তেহাদ, এয়ার এ্যারাবিয়া, সৌদি এয়ার লাইন্স, কাতার এয়ার লাইন্স) সরাসরি সিলেট আসলে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী সংখ্যা কমে যেতে পারে। তাই অসাধু কর্মকর্তাদের ‘বাণিজ্যও’ কমে যাবে এ আশঙ্কায় তারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করেন।
সূত্র আরো জানায়, সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট না থাকলে যাত্রীদেরকে প্রথমে সিলেট থেকে ঢাকায় যেতে হয়। সেখানে কয়েক ঘন্টা হোটেলে অবস্থানের পর বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট ধরতে হয়।
হোটেলে অবস্থানের বিষয়টিও বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে। যে কারণে হোটেল ভাড়ার একটি বড় অংশ নিজেদের পকেটে ঢুকানোর সুযোগ পান অসাধু কর্মকর্তারা। আর সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকলে তাদের সে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তারা চান না সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকুক।
ফ্লাই দুবাই’র সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল ‘ফ্লাই দুবাই’র একটি ফ্লাইট দুবাই থেকে ওসমানীতে সরাসরি অবতরণ করে। আবার ওসমানী থেকে যাত্রী নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ‘ফ্লাই দুবাই’র এ ফ্লাইটের মাধ্যমে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়।
রোববার ও বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন ওসমানী থেকে ফ্লাই দুবাইর ফ্লাইট পরিচালনার কথা থাকলেও উদ্বোধনী ফ্লাইটের পর আর কোনো ফ্লাইট ওসমানীতে নামেনি। গত শুক্র ও শনিবার ওসমানী থেকে ফ্লাই দুবাইয়ের সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার কথা থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই তা বাতিল করা হয়।
শনিবার এনা বাসে করে ফ্লাই দুবাইর ১৬৪ জন যাত্রী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। গত শুক্রবারও সিলেটের যাত্রীদের রিজেন্টের কানেকটিং ফ্লাইটে করে ওসমানী থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ফ্লাই দুবাই’র সিলেট স্টেশন ম্যানেজার মাসুম আহমদ বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার ওসমানীতে ফ্লাই দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট অবতরণ করার কথা থাকলেও দু’দিনই ওসমানীর বদলে শাহজালালে অবতরণ করেছে। কেন ওসমানীতে অবতরণ করছে না এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি শুক্রবার রিজেন্ট এয়ারওয়েজে করে এবং আজকে বাসে করে যাত্রীদের ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘ফ্লাইট বন্ধের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। এটা সম্পূর্ণ ফ্লাই দুবাই’র নিজস্ব ব্যাপার।
এদিকে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়াকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন সিলেটের বাসিন্দারা। ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কায় বিমান বাংলাদেশ ওসমানীতে ফ্লাই দুবাই’র ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সিলেটের প্রবাসীদের আবার দুর্ভোগে পড়তে হবে বলে মনে করছেন তারা।
সিলেটভিউ ট্যুরিস্ট ক্লাবের সমন্বয়ক রাশেদীন ফয়সাল বলেন, ‘ওসমানী থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। এতদিন রিফুয়েলিংয়ের অজুহাত দিয়ে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন রিফুয়েলিংয়ের কোনো সমস্যা নেই। সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অব্যাহত রাখা না হলে সিলেটের সর্বস্তরের জনতাকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে।’ (দৈনিক আমার দেশ)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনদিন ধরে ওঠা-নামা করছে না কোনো বিদেশি বিমান

প্রকাশের সময় : ১২:০৭:২৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ এপ্রিল ২০১৫

সিলেট: উদ্বোধনের পরই বন্ধ হয়ে গেছে ওসমানী থেকে সরাসরি বিদেশি ফ্লাইট। সিলেটের এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তিনদিন ধরে ওঠা-নামা করছে না কোনো বিদেশি বিমান। এতে বিপাকে পড়েছেন বিদেশগামী যাত্রীরা। দীর্ঘ ১৭ বছর অপেক্ষা ও আন্দোলনের পর সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সম্প্রতি চালু হয়েছিল সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। উদ্বোধনের পরপরই আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে সিলেটবাসীর মধ্যে। তারা এটিকে সিলেট বিদ্বেষী ষড়যন্ত্র বলেই আখ্যায়িত করছেন। সরাসরি ফ্লাইট অব্যাহত রাখার দাবিতে তারা ফের আন্দোলনে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
অন্যদিকে উদ্বোধনের পর হঠাৎ করে কেন সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে তার কারণও খোলাসা করে বলছেন না ‘ফ্লাই দুবাই’ ও সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
বিমানবন্দরের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের টিকিট বিক্রি থেকে বিমান বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি আয় করে থাকে। এক্ষেত্রে বিদেশি বিমানের সাথে টিকেটের তারতম্য থাকে ১০/১২ হাজার টাকা। যে কারণে দুবাই থেকে ‘ফ্লাই দুবাই’ কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোনো দেশ থেকে বিদেশি বিমান (এমিরেটস, ইত্তেহাদ, এয়ার এ্যারাবিয়া, সৌদি এয়ার লাইন্স, কাতার এয়ার লাইন্স) সরাসরি সিলেট আসলে বাংলাদেশ বিমানের যাত্রী সংখ্যা কমে যেতে পারে। তাই অসাধু কর্মকর্তাদের ‘বাণিজ্যও’ কমে যাবে এ আশঙ্কায় তারা বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরির চেষ্টা করেন।
সূত্র আরো জানায়, সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট না থাকলে যাত্রীদেরকে প্রথমে সিলেট থেকে ঢাকায় যেতে হয়। সেখানে কয়েক ঘন্টা হোটেলে অবস্থানের পর বিভিন্ন দেশের ফ্লাইট ধরতে হয়।
হোটেলে অবস্থানের বিষয়টিও বাংলাদেশ বিমান কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে। যে কারণে হোটেল ভাড়ার একটি বড় অংশ নিজেদের পকেটে ঢুকানোর সুযোগ পান অসাধু কর্মকর্তারা। আর সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকলে তাদের সে অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তারা চান না সিলেট থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু থাকুক।
ফ্লাই দুবাই’র সিলেট অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল ‘ফ্লাই দুবাই’র একটি ফ্লাইট দুবাই থেকে ওসমানীতে সরাসরি অবতরণ করে। আবার ওসমানী থেকে যাত্রী নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ‘ফ্লাই দুবাই’র এ ফ্লাইটের মাধ্যমে ওসমানী বিমানবন্দর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়।
রোববার ও বৃহস্পতিবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৫ দিন ওসমানী থেকে ফ্লাই দুবাইর ফ্লাইট পরিচালনার কথা থাকলেও উদ্বোধনী ফ্লাইটের পর আর কোনো ফ্লাইট ওসমানীতে নামেনি। গত শুক্র ও শনিবার ওসমানী থেকে ফ্লাই দুবাইয়ের সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনার কথা থাকলেও কোনো কারণ ছাড়াই তা বাতিল করা হয়।
শনিবার এনা বাসে করে ফ্লাই দুবাইর ১৬৪ জন যাত্রী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যাওয়া হয়। গত শুক্রবারও সিলেটের যাত্রীদের রিজেন্টের কানেকটিং ফ্লাইটে করে ওসমানী থেকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।
ফ্লাই দুবাই’র সিলেট স্টেশন ম্যানেজার মাসুম আহমদ বলেন, ‘শুক্র ও শনিবার ওসমানীতে ফ্লাই দুবাইয়ের দুটি ফ্লাইট অবতরণ করার কথা থাকলেও দু’দিনই ওসমানীর বদলে শাহজালালে অবতরণ করেছে। কেন ওসমানীতে অবতরণ করছে না এ ব্যাপারে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। আমি শুক্রবার রিজেন্ট এয়ারওয়েজে করে এবং আজকে বাসে করে যাত্রীদের ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি।’
এ ব্যাপারে সিলেট এমএজি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক হাফিজ আহমদ বলেন, ‘ফ্লাইট বন্ধের ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। এটা সম্পূর্ণ ফ্লাই দুবাই’র নিজস্ব ব্যাপার।
এদিকে, কোনো কারণ ছাড়াই হঠাৎ করে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়াকে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেখছেন সিলেটের বাসিন্দারা। ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কায় বিমান বাংলাদেশ ওসমানীতে ফ্লাই দুবাই’র ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে। সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ করে দেওয়ার ফলে সিলেটের প্রবাসীদের আবার দুর্ভোগে পড়তে হবে বলে মনে করছেন তারা।
সিলেটভিউ ট্যুরিস্ট ক্লাবের সমন্বয়ক রাশেদীন ফয়সাল বলেন, ‘ওসমানী থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ষড়যন্ত্র চলছে। এতদিন রিফুয়েলিংয়ের অজুহাত দিয়ে সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ রাখা হয়েছিল। এখন রিফুয়েলিংয়ের কোনো সমস্যা নেই। সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অব্যাহত রাখা না হলে সিলেটের সর্বস্তরের জনতাকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন শুরু হবে।’ (দৈনিক আমার দেশ)