নিউইয়র্ক ১০:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সিটি নির্বাচনের আচরণ বিধি : মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায় নিচ্ছেন না কোন প্রার্থী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৭৫৫ বার পঠিত

ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রীদের আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে অবহিত করতে দায় নিচ্ছেন না কেউ। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবকে অনুরোধ করলেও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিষয়ে জাতীয় সংসদ দায় নেয়নি। নির্বাচন কমিশন সংসদ সচিবালয় বরাবর চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও হুইপদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার জন্য অবহিত করতে। তবে সংসদ সচিবালয় স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও হুইপদের দায় নিলেও মন্ত্রীদের দায় নিতে চায় না।
এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো চিঠিতে এমপিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এ নিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গত বৃহস্প্রতিবার (৯ এপ্রিল) বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি হচ্ছে আইনগত বিষয়। চিঠি দিয়ে জানানোর কি আছে। এটা তো সবারই জানার কথা। তার পরও নির্বাচন কমিশন যখন চিঠি দিয়েছে তখন হুইপদের বিষয়টি অবহিত করা হবে। কিন্তু মন্ত্রীরা সংসদের বিষয় নয়। তারা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই সংসদ সচিবালয় থেকে মন্ত্রীদের অবহিত করা হচ্ছে না। আর চিঠিতে যেহেতু এমপিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি তাই এ বিষয়ে আমরা কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি না। তিনি বলেন, চিঠিটি দেয়া হয়েছে সংসদ সচিবকে। ওই চিঠির মাধ্যমে আমিও অবহিত হয়েছি। কারণ আমাকেও নির্বাচন আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে ইসি থেকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। অবহিত করার উপায় সম্পর্কে স্পিকার জানান, ইসির পাঠানো চিঠি নথিভুক্ত করে আইন শাখার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে। ওই চিঠি পড়লেই তো তারা অবহিত হবেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদ সচিব আশরাফুল মকবুল বৃহস্প্রতিবার বলেন, নির্বাচন কমিশনের চিঠিটি ফাইল আকারে স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই সবাইকে অবহিত করা হবে। এক প্রশ্নে তিনি জানান, অনেক দিন পরপর নির্বাচন হয় তাই সবার সব সময় নির্বাচন আচরণবিধি বা আইন-কানুন হয়তো মনে থাকে না। এটা স্মরণ করিয়ে দিতেই হয়তো ইসি চিঠি পাঠিয়েছে। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রীসহ সরকারি সুবিধাভোগীরা প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনী ‘কৌশল নির্ধারণ’ করছেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় অনেকটা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে কমিশন। তাই ভবিষতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতেই আচরণবিধি ভঙ্গ না করার জন্য রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সতর্ক করার জন্য ওই সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ সিদ্ধান্তের আলোকেই চিঠি দেয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালার ১৪(ক) উপবিধিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ এবং সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদা সম্পন্ন সরকারি সুবিধাভোগী কোন ব্যক্তি নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে তারা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে কেবল ভোটদানের জন্য এলাকায় যেতে পারবেন। আইন অনুযায়ী, কোন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে স্পিকারের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। তাই আগে থেকেই বিষয়টি স্পিকারকে অবহিত করলো ইসি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা স্থানীয় একটি হোটেলে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উপস্থিত ছিলেন। গত ৩১ মার্চের ওই বৈঠরেক কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনের কাছে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেন মেয়র পদপ্রার্থী এম মনজুর আলমের সমর্থক আবদুল ওয়াহাব। আবদুল বাতেন এ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত রোববার ইসির নির্দেশনা চান। এ বিষয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ গণমাধ্যমেক বলেন, যদি সরকারের মন্ত্রী বা তাদের পদমর্যাদার কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর বিকালেই এক বৈঠকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা তাদের পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সতর্ক করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।(দৈনিক মানবজমিন)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

সিটি নির্বাচনের আচরণ বিধি : মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের দায় নিচ্ছেন না কোন প্রার্থী

প্রকাশের সময় : ০৭:৫৯:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা: তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রীদের আচরণবিধি মেনে চলার ব্যাপারে অবহিত করতে দায় নিচ্ছেন না কেউ। নির্বাচন কমিশন বিষয়টি নিয়ে সংসদ সচিবকে অনুরোধ করলেও মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের বিষয়ে জাতীয় সংসদ দায় নেয়নি। নির্বাচন কমিশন সংসদ সচিবালয় বরাবর চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ, মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও হুইপদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার জন্য অবহিত করতে। তবে সংসদ সচিবালয় স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার ও হুইপদের দায় নিলেও মন্ত্রীদের দায় নিতে চায় না।
এদিকে নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো চিঠিতে এমপিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। এ নিয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী গত বৃহস্প্রতিবার (৯ এপ্রিল) বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধি হচ্ছে আইনগত বিষয়। চিঠি দিয়ে জানানোর কি আছে। এটা তো সবারই জানার কথা। তার পরও নির্বাচন কমিশন যখন চিঠি দিয়েছে তখন হুইপদের বিষয়টি অবহিত করা হবে। কিন্তু মন্ত্রীরা সংসদের বিষয় নয়। তারা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই সংসদ সচিবালয় থেকে মন্ত্রীদের অবহিত করা হচ্ছে না। আর চিঠিতে যেহেতু এমপিদের বিষয়ে কিছু বলা হয়নি তাই এ বিষয়ে আমরা কোন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি না। তিনি বলেন, চিঠিটি দেয়া হয়েছে সংসদ সচিবকে। ওই চিঠির মাধ্যমে আমিও অবহিত হয়েছি। কারণ আমাকেও নির্বাচন আচরণবিধি মেনে চলার বিষয়ে ইসি থেকে অবহিত করতে বলা হয়েছে। অবহিত করার উপায় সম্পর্কে স্পিকার জানান, ইসির পাঠানো চিঠি নথিভুক্ত করে আইন শাখার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের কাছে পাঠানো হবে। ওই চিঠি পড়লেই তো তারা অবহিত হবেন।
এ প্রসঙ্গে সংসদ সচিব আশরাফুল মকবুল বৃহস্প্রতিবার বলেন, নির্বাচন কমিশনের চিঠিটি ফাইল আকারে স্পিকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবেই সবাইকে অবহিত করা হবে। এক প্রশ্নে তিনি জানান, অনেক দিন পরপর নির্বাচন হয় তাই সবার সব সময় নির্বাচন আচরণবিধি বা আইন-কানুন হয়তো মনে থাকে না। এটা স্মরণ করিয়ে দিতেই হয়তো ইসি চিঠি পাঠিয়েছে। আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মন্ত্রীসহ সরকারি সুবিধাভোগীরা প্রার্থীদের সঙ্গে নির্বাচনী ‘কৌশল নির্ধারণ’ করছেন। বিষয়টি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় অনেকটা বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে কমিশন। তাই ভবিষতে এ ধরনের পরিস্থিতি এড়াতেই আচরণবিধি ভঙ্গ না করার জন্য রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সতর্ক করার জন্য ওই সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। এ সিদ্ধান্তের আলোকেই চিঠি দেয়া হয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচন বিধিমালার ১৪(ক) উপবিধিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, চিফ হুইপ এবং সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী বা তাদের সমপদমর্যাদা সম্পন্ন সরকারি সুবিধাভোগী কোন ব্যক্তি নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারেন না। তবে তারা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার হলে কেবল ভোটদানের জন্য এলাকায় যেতে পারবেন। আইন অনুযায়ী, কোন সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হলে স্পিকারের অনুমতির প্রয়োজন পড়ে। তাই আগে থেকেই বিষয়টি স্পিকারকে অবহিত করলো ইসি। সম্প্রতি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর নির্বাচনী কৌশল নির্ধারণে সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা স্থানীয় একটি হোটেলে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উপস্থিত ছিলেন। গত ৩১ মার্চের ওই বৈঠরেক কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনের কাছে আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগ করেন মেয়র পদপ্রার্থী এম মনজুর আলমের সমর্থক আবদুল ওয়াহাব। আবদুল বাতেন এ অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত রোববার ইসির নির্দেশনা চান। এ বিষয়ে বুধবার নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ শাহনেওয়াজ গণমাধ্যমেক বলেন, যদি সরকারের মন্ত্রী বা তাদের পদমর্যাদার কেউ আচরণবিধি লঙ্ঘন করেন, তবে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এরপর বিকালেই এক বৈঠকে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা তাদের পদমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের সতর্ক করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।(দৈনিক মানবজমিন)