নিউইয়র্ক ১১:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

সর্বশেষ খবর : অফিস ক্লোজ করে অন্য সংস্থার কাছে হস্তান্তর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৪:০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৮২৪ বার পঠিত

টরেন্টো (কানাডা): গত কয়েক বছর ধরে বহু বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক-ঢাকা ফ্লাইট চালু করতে পারেনি। তারপরও হাস্যকর ঘোষণা দেয়া হয়েছে- কানাডায় বাংলাদেশ বিমান চালু হবে বলে।
এদিকে ইত্তেকাক ক’মাস আগে টরন্টোস্থ বিমান অফিস সরেজমিনে রিপোর্ট করে। টরন্টোতে বাংলাদেশ বিমান নেই, কিন্তু আছে বিলাস বহুল অফিস। কাজ নেই কিন্তু খরচ হচ্ছে হাজার হাজার ডলার! শহরের ডাউন টাউনের ব্যয় বহুল এবং আভিজাত্য এলাকা ২০৮ ব্লোর স্ট্রিটের আট তলায় তিন কক্ষ বিশিষ্ট বিশাল অফিস। খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেছে, অফিসটা একটা নামাজের ঘর। ১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে টরন্টোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের এই অফিসের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু কানাডা থেকে কোনো রুটেই বিমানের ফ্লাইট নেই। প্রথমে ঢাকা থেকে ২/৩ জন ম্যানেজার আসার পর এখন শুধু একজন স্থানীয়ভাবে ১৩ বছর ধরে টানা ‘রিজার্ভেশন এন্ড টিকেটিং’ পদে নিয়োজিত আছেন। ‘ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সরদার’ হয়ে এক যুগ ধরে একক রাজত্ব করে যাচ্ছেন। তার বেতনভাতা, অফিস ভাড়া, আনুষাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রতি মাসে অযথা সরকারকে গচ্চা দিতে হচ্ছে ৬/৭ হাজার ডলার। ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয় ‘কানাডার টরন্টো থেকে আজ পর্যন্ত ফ্লাইট চালু করা সম্ভব না হলেও একজন কর্মকর্তা সেখানে বছরের পর বছর অবস্থান করছেন। বছরে এই কর্মকর্তা ও টরন্টো অফিসের পেছনে ব্যয় হয় ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা’।
ব্যয় বহুল এই অফিস টরন্টোতে দু’টি আর মন্ট্রিয়লে একটি ট্রাভল এজেন্সির বিক্রিত অর্থ জমা দেয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। টরন্টোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের একটি অফিস আছে তা নিরান্নবই ভাগ প্রবাসী বাঙালীরা অবগত নন। এমন কি অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হাই কমিশনার কামরুল হাসানও অবাক হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেন- কি বলেন? তাই নাকি! এখানে বিমানের অফিস আছে? আমরা তো কিছুই জানিনা। ক’মাস আগে আমরা কানাডার সাথে বিমানের ফ্লাইট চালুর চুক্তি করলাম। ঢাকা থেকে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এলেন। অথচ স্থানীয় বিমান অফিসের পাত্তাও নেই’।
আসলে এটি আন্ডার গ্রাউন অফিস। কোনো প্রচার নেই। অথচ এই অফিসটি ড্যানফোর্থস্থ বাঙালী পাড়ায় স্থানান্তরিত করা হলে প্রথমতঃ অফিস ভাড়া তিন ভাগের দুই ভাগ সাশ্রয় হবে। দ্বিতীয়তঃ বিমানের প্রচার হবে, বাড়বে বিমানের টিকেট বিক্রি। তৃতীয়তঃ নানাভাবে স্বদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে গর্বের সাথে। কারণ, একমাত্র দূতাবাসের পর বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের অফিসই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।
কিন্তু মাহমুদুর আর খান বিটু (রিজাভেশন এন্ড টিকেটিং) বলেন, এয়ার লাইন্স বিজনেস হচ্ছে- শো বিজনেস। তাই এর অফিস পশ এলাকায় থাকে। আর ড্যানফোর্থ বাংলা পাড়ায় গেলে বেইজমেন্ট থেকে ইলিশ মাছের গন্ধ আসবে আর লোকজন ইলিশ মাছ বাজার করে অফিসে ঢুকবে। বিমানের ভাবমূর্তি কি থাকবে? আমাদের প্রচারের দরকার নেই। কারণ, আমরা ট্যাকনিক্যালি সরাসরি টিকিট বিক্রি করতে পারিনা, তবু আমি বিক্রি করি।
তিনি জানান, আমাদের সরাসরি ফ্লাইট নেই বলে এয়ার কানাডার সাথে চুক্তি আছে। যাত্রী না থাকায় ২০০৮ সালে এয়ার কানাডা আমাদের সার্ভিস দেয়নি। পরে তা আমি অনুরোধ করে পুনরায় ব্যবস্থা করি। যাত্রীদের টিকিটের ঝামেলা হলে তা সমাধান করি। যাত্রীদের মালামাল হারিয়ে গেলে তা ফলোআপ করি। এজেন্টদের বিক্রিত টাকা সংগ্রহ করে তা জমা দেই।
মাহমুদুর আর খান বিটু আরো জানান, আমি আমাদের অফিসের লাভ-লোকসানের কথা বলতে পারবো না। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স এখন ‘অফ’ লাইনে আছে। অন লাইন চালু হলেও তা অবশ্যই লাভজনক হবে।
টরন্টোর আভিজাত্য এলাকায় অফিস থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়া বিদেশি কোনো বিমানের যাত্রী নেই। তাছাড়া এখানে ক্যাশ ব্যতীত কোনো ব্যাংক কার্ড, ভিসা বা মাস্টার কার্ডও নেয়া হয় না। এ সম্পর্কে তিনি জানান, এখনো আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই। তাই কোনো ব্যাংক কার্ড নেয়া হয় না।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমান অফিস ক্লোজ করে অবশেষে তা অন্য একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।(দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

সর্বশেষ খবর : অফিস ক্লোজ করে অন্য সংস্থার কাছে হস্তান্তর

প্রকাশের সময় : ০৪:০৯:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ এপ্রিল ২০১৫

টরেন্টো (কানাডা): গত কয়েক বছর ধরে বহু বার প্রতিশ্রুতি দিয়েও বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক-ঢাকা ফ্লাইট চালু করতে পারেনি। তারপরও হাস্যকর ঘোষণা দেয়া হয়েছে- কানাডায় বাংলাদেশ বিমান চালু হবে বলে।
এদিকে ইত্তেকাক ক’মাস আগে টরন্টোস্থ বিমান অফিস সরেজমিনে রিপোর্ট করে। টরন্টোতে বাংলাদেশ বিমান নেই, কিন্তু আছে বিলাস বহুল অফিস। কাজ নেই কিন্তু খরচ হচ্ছে হাজার হাজার ডলার! শহরের ডাউন টাউনের ব্যয় বহুল এবং আভিজাত্য এলাকা ২০৮ ব্লোর স্ট্রিটের আট তলায় তিন কক্ষ বিশিষ্ট বিশাল অফিস। খোঁজ খবর নিয়ে দেখা গেছে, অফিসটা একটা নামাজের ঘর। ১৯৯৯ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে টরন্টোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের এই অফিসের যাত্রা শুরু হয়। কিন্তু কানাডা থেকে কোনো রুটেই বিমানের ফ্লাইট নেই। প্রথমে ঢাকা থেকে ২/৩ জন ম্যানেজার আসার পর এখন শুধু একজন স্থানীয়ভাবে ১৩ বছর ধরে টানা ‘রিজার্ভেশন এন্ড টিকেটিং’ পদে নিয়োজিত আছেন। ‘ঢাল নেই, তলোয়ার নেই, নিধিরাম সরদার’ হয়ে এক যুগ ধরে একক রাজত্ব করে যাচ্ছেন। তার বেতনভাতা, অফিস ভাড়া, আনুষাঙ্গিক খরচ মিলিয়ে প্রতি মাসে অযথা সরকারকে গচ্চা দিতে হচ্ছে ৬/৭ হাজার ডলার। ঢাকার একটি দৈনিক পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয় ‘কানাডার টরন্টো থেকে আজ পর্যন্ত ফ্লাইট চালু করা সম্ভব না হলেও একজন কর্মকর্তা সেখানে বছরের পর বছর অবস্থান করছেন। বছরে এই কর্মকর্তা ও টরন্টো অফিসের পেছনে ব্যয় হয় ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা’।
ব্যয় বহুল এই অফিস টরন্টোতে দু’টি আর মন্ট্রিয়লে একটি ট্রাভল এজেন্সির বিক্রিত অর্থ জমা দেয়া ছাড়া আর কোনো কাজ নেই। টরন্টোতে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের একটি অফিস আছে তা নিরান্নবই ভাগ প্রবাসী বাঙালীরা অবগত নন। এমন কি অটোয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের হাই কমিশনার কামরুল হাসানও অবাক হয়ে পাল্টা প্রশ্ন করেন- কি বলেন? তাই নাকি! এখানে বিমানের অফিস আছে? আমরা তো কিছুই জানিনা। ক’মাস আগে আমরা কানাডার সাথে বিমানের ফ্লাইট চালুর চুক্তি করলাম। ঢাকা থেকে বিমানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এলেন। অথচ স্থানীয় বিমান অফিসের পাত্তাও নেই’।
আসলে এটি আন্ডার গ্রাউন অফিস। কোনো প্রচার নেই। অথচ এই অফিসটি ড্যানফোর্থস্থ বাঙালী পাড়ায় স্থানান্তরিত করা হলে প্রথমতঃ অফিস ভাড়া তিন ভাগের দুই ভাগ সাশ্রয় হবে। দ্বিতীয়তঃ বিমানের প্রচার হবে, বাড়বে বিমানের টিকেট বিক্রি। তৃতীয়তঃ নানাভাবে স্বদেশের ঐতিহ্য তুলে ধরা হবে গর্বের সাথে। কারণ, একমাত্র দূতাবাসের পর বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্সের অফিসই বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।
কিন্তু মাহমুদুর আর খান বিটু (রিজাভেশন এন্ড টিকেটিং) বলেন, এয়ার লাইন্স বিজনেস হচ্ছে- শো বিজনেস। তাই এর অফিস পশ এলাকায় থাকে। আর ড্যানফোর্থ বাংলা পাড়ায় গেলে বেইজমেন্ট থেকে ইলিশ মাছের গন্ধ আসবে আর লোকজন ইলিশ মাছ বাজার করে অফিসে ঢুকবে। বিমানের ভাবমূর্তি কি থাকবে? আমাদের প্রচারের দরকার নেই। কারণ, আমরা ট্যাকনিক্যালি সরাসরি টিকিট বিক্রি করতে পারিনা, তবু আমি বিক্রি করি।
তিনি জানান, আমাদের সরাসরি ফ্লাইট নেই বলে এয়ার কানাডার সাথে চুক্তি আছে। যাত্রী না থাকায় ২০০৮ সালে এয়ার কানাডা আমাদের সার্ভিস দেয়নি। পরে তা আমি অনুরোধ করে পুনরায় ব্যবস্থা করি। যাত্রীদের টিকিটের ঝামেলা হলে তা সমাধান করি। যাত্রীদের মালামাল হারিয়ে গেলে তা ফলোআপ করি। এজেন্টদের বিক্রিত টাকা সংগ্রহ করে তা জমা দেই।
মাহমুদুর আর খান বিটু আরো জানান, আমি আমাদের অফিসের লাভ-লোকসানের কথা বলতে পারবো না। তবে বিমান বাংলাদেশ এয়ার লাইন্স এখন ‘অফ’ লাইনে আছে। অন লাইন চালু হলেও তা অবশ্যই লাভজনক হবে।
টরন্টোর আভিজাত্য এলাকায় অফিস থাকা সত্ত্বেও কোনো প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়া বিদেশি কোনো বিমানের যাত্রী নেই। তাছাড়া এখানে ক্যাশ ব্যতীত কোনো ব্যাংক কার্ড, ভিসা বা মাস্টার কার্ডও নেয়া হয় না। এ সম্পর্কে তিনি জানান, এখনো আমাদের সেই ব্যবস্থা নেই। তাই কোনো ব্যাংক কার্ড নেয়া হয় না।
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, সম্প্রতি বাংলাদেশ বিমান অফিস ক্লোজ করে অবশেষে তা অন্য একটি সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।(দৈনিক ইত্তেফাক)