নিউইয়র্ক ১১:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

লাগাতার অবরোধের ডাক খালেদা জিয়ার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৩৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৫
  • / ৭৭৩ বার পঠিত

ঢাকা: ৫ জানুয়ারী বিএনপি’র সমাবেশ আয়োজনে বাধা আর গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে দলীয় কর্মসূচীতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে দেশেব্যাপী অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কমসূচী ঘোষণা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ‘যতদিন পর্যন্ত সমাবেশ করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত আমাদের অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকায় গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের ভিতরে ৫ জানুয়ারী সোমবার বিকেলে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। ৩ জানুয়ারী শনিবার রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় থাকলেও সোমবার বিকেলে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ মূল ফটকে তালা দেয়ায় তিনি বের হতে পারেননি। অনুমতি না মিললেও বিকেলে রাজধানীতে দশম সংসদ নির্বাচনের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস উল্লেখ করে সমাবেশের কথা বলেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।এরআগে দুপুর ১২টার আগে খালেদা জিয়া একবার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কার্যালয়ের ফটকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এমনকি পকেট গেটেও তালা লাগায় পুলিশ। পরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে তিনি নিজ কক্ষ থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু বাধার মুখে ফটক পার হতে না পেরে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো গাড়িতে বসে থাকেন। এ সময় তার হাতে কালো পকাতা ছিল। পরে বিকেল পৌণে পাঁচটার দিকে তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাবেক কয়েকজন মহিলা সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা এমএ কাইয়ূম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ সংগঠনটির কয়েকজন নেতা ছিলেন। এছাড়া তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেলসহ কার্যালয়ে কর্মকর্তারা ছিলেন। খালেদা জিয়া কার্যালয় থেকে গাড়িতে ওঠার পর মহিলা কর্মীরা ফটক ধরে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন।এসময় তারা পুলিশকে কটূক্তি করেন। পরে পুলিশ পেপার স্প্রে ছুঁড়লে এর ঝাঁঝে সবাই ছোটাছুটি শুরু করে। এতে সাবেক সংসদ সদস্য আসিফা আশরাফী পাপিয়া, সাংবাদিক তুহিন, কার্যালয়ের কর্মকর্তা জসীম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে খালেদা জিয়া বক্তব্য শুরু করলে আবারো পেপার স্প্রে ছোঁড়া হয়। এ সময় খালেদা জিয়া পুলিশকে কড়া ভাষায় এসব বন্ধ করতে বলেন।
এসময় সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা শুধু আমাকে অবরুদ্ধ করেনি সারা দেশকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমাকে যদি বন্দি না করে তাহলে এতো পুলিশ কেন? আমি জানতে চাই কেন আমাকে বন্দি করা হয়েছে? কি অপরাধ আমাদের? আমি শুধু একটা সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। এর আগেও আমরা অনেক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। তাহলে একটি সমাবেশ করলে এমন কি হতো বলে তিনি জানতে চান।’
তিনি বলেন, ‘আমি যদি অবরুদ্ধ না হতাম তাহলে বি. চৌধুরী, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট এসেছিল তাকে কেন ঢুকতে দেয়া হলো না। আরো অনেকেই এসেছিল তাদেরও ঢুকতে দেয়া হয়নি।’ খালেদা বলেন, ‘আমি শুধু অবরুদ্ধ নই পুরো দেশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দেশটাকে একটি কারাগারে পরিণত করা হয়েছে।’ পুলিশের পক্ষ থেকে পেপার স্প্রে করার নিন্দা জানিয়ে খালেদা বলেন, ‘এখানে কি এমন হয়েছিল যে পেপার স্প্রে করতে হয়েছিল। সারা দেশে জনগণ শান্তিপূর্ণ হয়ে নামতে চেয়ে ছিল, সারাদেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল জনগণ কিন্তু কেন গুন্ডাপান্ডা পুলিশ দিয়ে হামলা করা হয়েছে।’
নিরাপত্তার জন্য কার্যালয়ের বাইরে পুলিশ মোতায়েন সরকারী দলের নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমার নাকি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে এটা কোন ধরনের নিরাপত্তা। আমি পল্টনে যেতে চেয়ে ছিলাম তারা নিরাপত্তা দিয়ে আমাকে পল্টনে দিয়ে আসতো। এটা কোন ধরণের নিরাপত্তা এর আগেও তারা এমনটি করেছে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করেছে।’ তিনি সরকারের কাছে জানতে চান আজকে কি দেশে যুদ্ধ অবস্থা বিরাজ করছে? যদি তাই না হবে তাহলে এখানে এতো পুলিশ কেন।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘তাদের এত ভয় কিসের নির্বাচন দিতে তারা ভয় পায় কেন? কারণ তারা যানে তাদের পায়ের নিচের মাটি নেই। তাই তারা পুলিশ দিয়ে, টিয়ারসেল মেরে মামলা দিয়ে পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করেছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশে খুনি গুম প্রতিদিন হচ্ছে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে না। দেশের মানুষ চায় নির্বাচন।’ তিনি বলেন, ‘শুনেছি একুশে টেলিভিশন নাকি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারা কথা বললে সেটা প্রচার করা যাবে আর অন্য কেউ বললে তা প্রচার করলে বন্ধ করে দেয়া হবে। এদের পায়ের নিচে মাটি নাই। এরা ভোট দিতে ভয় পায়। এরা গুলি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।’ অনেক দেশেই এভাবে চলেছে কেউ টিকে থাকতে পারেনি এরাও পারবে না বলেও মন্তব্য করেন খালেদা।
বক্তব্য চলাকালীন পেপার স্প্রে করলে পুলিশের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কেন? স্প্রে করছেন আমরা তো শান্তিপূর্ণ বক্তব্য রাখছি।’ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। এর পরিণাম ভালো হবে না। এর জন্য আপনাদের ভুগতে হবে।’ দশম সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারী যে ভোট হয়েছে তা জনগণ দেখেছে। অনেক কেন্দ্রে কুকুর পাহারা দিয়েছে। ভোটবিহীন সরকার কিভাবে জনগণের টাকা খরচ করে আইন পাস করছে। তাই আমরা চাই জনগণেনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে।’
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে টিয়ারসেল, গুলি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) যদি মিছিল করতে পারে, আমরা কেন মিছিল করতে পারব না। এভাবে দেশ চলতে পারে না। তারা (আওয়ামী লীগ) জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। তাই তারা সমাবেশ বন্ধ করতে ১৪৪ ধারা দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অবরোধ ছিল না কিন্তু অবরোধ হয়ে গেছে তাই অবরোধ অব্যাহত থাকবে। এই সরকার দুর্নীতিবাজ সরকার। তাই এরা কাউকে আটকাতে পারছে না। এদের মাথায় পচন এরা নিজেরাই দুর্নীতিবাজ তাই কাউকে আটকাতে পারছে না।’
দেশে সুশাসন আইনের অধিকার ফিরে না আসে তাহলে শান্তি আসবে না এমন মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য চাই নির্বাচন। কিন্তু সরকার দুর্বল ও ভীতু হয়ে নিজেদের গদি রক্ষার্থে মানুষের রক্ত নিচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ৩ জানুয়ারী শনিবার রাতে পুলিশ চারটি ট্রাক খালেদার কার্যালয়ের বাইরে আড়াআড়িভাবে রাখলেও রোববার রাতে তার সংখ্যা বাড়ানো হয়। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ১১টি বালু ও ইটবোঝাই ট্রাক দিয়ে কার্যালয়ের সামনের রাস্তার দুই দিকে গাড়ি চলাচাল আটকে দেয়া হয়। এমনকি জনসাধারণের চলাচলও সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এদিকে খালেদা জিয়া বক্তব্য দিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে চলে যাওয়ার পর পুলিশের সংখ্যা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। তবে ট্রাকগুলোর আগের অবস্থায় রেখে দেয়া হয়।কখন নাগাদ পুলিশ প্রত্যাহার করা হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত পুলিশের গুলশান জোনের উপ-কমিশনার লুৎফর কবির বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকবেন ততক্ষণ পুলিশ থাকবে। তবে তিনি বাসায় যেতে চাইলে আমরা সবধরনের সহায়তা করবো।’ (নতুন বার্তা ডটকম)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

লাগাতার অবরোধের ডাক খালেদা জিয়ার

প্রকাশের সময় : ১০:৩৭:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ জানুয়ারী ২০১৫

ঢাকা: ৫ জানুয়ারী বিএনপি’র সমাবেশ আয়োজনে বাধা আর গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে দলীয় কর্মসূচীতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে দেশেব্যাপী অনির্দিষ্টকালের অবরোধ কমসূচী ঘোষণা করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বলেছেন, ‘যতদিন পর্যন্ত সমাবেশ করতে না পারব ততদিন পর্যন্ত আমাদের অবরোধ কর্মসূচী অব্যাহত থাকবে।’
ঢাকায় গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের ভিতরে ৫ জানুয়ারী সোমবার বিকেলে খালেদা জিয়া এসব কথা বলেন। ৩ জানুয়ারী শনিবার রাত থেকে গুলশান কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থায় থাকলেও সোমবার বিকেলে কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ মূল ফটকে তালা দেয়ায় তিনি বের হতে পারেননি। অনুমতি না মিললেও বিকেলে রাজধানীতে দশম সংসদ নির্বাচনের দিনটিকে ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস উল্লেখ করে সমাবেশের কথা বলেছিল বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট।এরআগে দুপুর ১২টার আগে খালেদা জিয়া একবার কার্যালয় থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু কার্যালয়ের ফটকে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে তালা লাগিয়ে দেয়া হয়। এমনকি পকেট গেটেও তালা লাগায় পুলিশ। পরে বিকেল পৌনে চারটার দিকে তিনি নিজ কক্ষ থেকে বের হয়ে গাড়িতে ওঠেন। কিন্তু বাধার মুখে ফটক পার হতে না পেরে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো গাড়িতে বসে থাকেন। এ সময় তার হাতে কালো পকাতা ছিল। পরে বিকেল পৌণে পাঁচটার দিকে তিনি গাড়ি থেকে বের হয়ে পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে বক্তব্য দেন।
এ সময় খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাবেক কয়েকজন মহিলা সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা এমএ কাইয়ূম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানাসহ সংগঠনটির কয়েকজন নেতা ছিলেন। এছাড়া তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেলসহ কার্যালয়ে কর্মকর্তারা ছিলেন। খালেদা জিয়া কার্যালয় থেকে গাড়িতে ওঠার পর মহিলা কর্মীরা ফটক ধরে ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন।এসময় তারা পুলিশকে কটূক্তি করেন। পরে পুলিশ পেপার স্প্রে ছুঁড়লে এর ঝাঁঝে সবাই ছোটাছুটি শুরু করে। এতে সাবেক সংসদ সদস্য আসিফা আশরাফী পাপিয়া, সাংবাদিক তুহিন, কার্যালয়ের কর্মকর্তা জসীম উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন অজ্ঞান হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে খালেদা জিয়া বক্তব্য শুরু করলে আবারো পেপার স্প্রে ছোঁড়া হয়। এ সময় খালেদা জিয়া পুলিশকে কড়া ভাষায় এসব বন্ধ করতে বলেন।
এসময় সরকারের সমালোচনা করে খালেদা জিয়া বলেন, ‘তারা শুধু আমাকে অবরুদ্ধ করেনি সারা দেশকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। আমাকে যদি বন্দি না করে তাহলে এতো পুলিশ কেন? আমি জানতে চাই কেন আমাকে বন্দি করা হয়েছে? কি অপরাধ আমাদের? আমি শুধু একটা সমাবেশ করতে চেয়েছিলাম। এর আগেও আমরা অনেক শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেছি। তাহলে একটি সমাবেশ করলে এমন কি হতো বলে তিনি জানতে চান।’
তিনি বলেন, ‘আমি যদি অবরুদ্ধ না হতাম তাহলে বি. চৌধুরী, তিনি সাবেক প্রেসিডেন্ট এসেছিল তাকে কেন ঢুকতে দেয়া হলো না। আরো অনেকেই এসেছিল তাদেরও ঢুকতে দেয়া হয়নি।’ খালেদা বলেন, ‘আমি শুধু অবরুদ্ধ নই পুরো দেশকে অবরুদ্ধ করা হয়েছে। দেশটাকে একটি কারাগারে পরিণত করা হয়েছে।’ পুলিশের পক্ষ থেকে পেপার স্প্রে করার নিন্দা জানিয়ে খালেদা বলেন, ‘এখানে কি এমন হয়েছিল যে পেপার স্প্রে করতে হয়েছিল। সারা দেশে জনগণ শান্তিপূর্ণ হয়ে নামতে চেয়ে ছিল, সারাদেশে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করছিল জনগণ কিন্তু কেন গুন্ডাপান্ডা পুলিশ দিয়ে হামলা করা হয়েছে।’
নিরাপত্তার জন্য কার্যালয়ের বাইরে পুলিশ মোতায়েন সরকারী দলের নেতাদের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘আমার নাকি নিরাপত্তা দেয়া হচ্ছে এটা কোন ধরনের নিরাপত্তা। আমি পল্টনে যেতে চেয়ে ছিলাম তারা নিরাপত্তা দিয়ে আমাকে পল্টনে দিয়ে আসতো। এটা কোন ধরণের নিরাপত্তা এর আগেও তারা এমনটি করেছে। তারা রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছে। পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করেছে।’ তিনি সরকারের কাছে জানতে চান আজকে কি দেশে যুদ্ধ অবস্থা বিরাজ করছে? যদি তাই না হবে তাহলে এখানে এতো পুলিশ কেন।’
খালেদা জিয়া বলেন, ‘তাদের এত ভয় কিসের নির্বাচন দিতে তারা ভয় পায় কেন? কারণ তারা যানে তাদের পায়ের নিচের মাটি নেই। তাই তারা পুলিশ দিয়ে, টিয়ারসেল মেরে মামলা দিয়ে পুলিশি রাষ্ট্র কায়েম করেছে।’ তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘দেশে খুনি গুম প্রতিদিন হচ্ছে শান্তিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে না। দেশের মানুষ চায় নির্বাচন।’ তিনি বলেন, ‘শুনেছি একুশে টেলিভিশন নাকি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তারা কথা বললে সেটা প্রচার করা যাবে আর অন্য কেউ বললে তা প্রচার করলে বন্ধ করে দেয়া হবে। এদের পায়ের নিচে মাটি নাই। এরা ভোট দিতে ভয় পায়। এরা গুলি করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।’ অনেক দেশেই এভাবে চলেছে কেউ টিকে থাকতে পারেনি এরাও পারবে না বলেও মন্তব্য করেন খালেদা।
বক্তব্য চলাকালীন পেপার স্প্রে করলে পুলিশের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, ‘কেন? স্প্রে করছেন আমরা তো শান্তিপূর্ণ বক্তব্য রাখছি।’ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বেশি বাড়াবাড়ি করবেন না। এর পরিণাম ভালো হবে না। এর জন্য আপনাদের ভুগতে হবে।’ দশম সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘৫ জানুয়ারী যে ভোট হয়েছে তা জনগণ দেখেছে। অনেক কেন্দ্রে কুকুর পাহারা দিয়েছে। ভোটবিহীন সরকার কিভাবে জনগণের টাকা খরচ করে আইন পাস করছে। তাই আমরা চাই জনগণেনের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে।’
শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীতে টিয়ারসেল, গুলি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তারা (আওয়ামী লীগ) যদি মিছিল করতে পারে, আমরা কেন মিছিল করতে পারব না। এভাবে দেশ চলতে পারে না। তারা (আওয়ামী লীগ) জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। জনগণ তাদের সঙ্গে নেই। তাই তারা সমাবেশ বন্ধ করতে ১৪৪ ধারা দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আজ আমাদের অবরোধ ছিল না কিন্তু অবরোধ হয়ে গেছে তাই অবরোধ অব্যাহত থাকবে। এই সরকার দুর্নীতিবাজ সরকার। তাই এরা কাউকে আটকাতে পারছে না। এদের মাথায় পচন এরা নিজেরাই দুর্নীতিবাজ তাই কাউকে আটকাতে পারছে না।’
দেশে সুশাসন আইনের অধিকার ফিরে না আসে তাহলে শান্তি আসবে না এমন মন্তব্য করে বিএনপির চেয়ারপারসন বলেন, ‘দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য চাই নির্বাচন। কিন্তু সরকার দুর্বল ও ভীতু হয়ে নিজেদের গদি রক্ষার্থে মানুষের রক্ত নিচ্ছে।’
উল্লেখ্য, ৩ জানুয়ারী শনিবার রাতে পুলিশ চারটি ট্রাক খালেদার কার্যালয়ের বাইরে আড়াআড়িভাবে রাখলেও রোববার রাতে তার সংখ্যা বাড়ানো হয়। ঢাকার বিভিন্ন স্থান থেকে ১১টি বালু ও ইটবোঝাই ট্রাক দিয়ে কার্যালয়ের সামনের রাস্তার দুই দিকে গাড়ি চলাচাল আটকে দেয়া হয়। এমনকি জনসাধারণের চলাচলও সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়।
এদিকে খালেদা জিয়া বক্তব্য দিয়ে কার্যালয়ের ভেতরে চলে যাওয়ার পর পুলিশের সংখ্যা কিছুটা কমতে দেখা গেছে। তবে ট্রাকগুলোর আগের অবস্থায় রেখে দেয়া হয়।কখন নাগাদ পুলিশ প্রত্যাহার করা হবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সেখানে উপস্থিত পুলিশের গুলশান জোনের উপ-কমিশনার লুৎফর কবির বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত বিএনপি চেয়ারপারসন নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকবেন ততক্ষণ পুলিশ থাকবে। তবে তিনি বাসায় যেতে চাইলে আমরা সবধরনের সহায়তা করবো।’ (নতুন বার্তা ডটকম)