নিউইয়র্ক ১১:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

লক্ষ কোটি টাকার মালিক মুসা

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:২১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫
  • / ৩৬৪ বার পঠিত

ঢাকা: বিতর্কিত ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা জব্দ রয়েছে সুইস ব্যাংকে। একই ব্যাংকের ভল্টে রাখা আছে প্রায় ৯০ কোটি টাকার হীরা-জহরত-মনি-মুক্তা, স্বর্ণালংকারও। এর সঙ্গে বাড়ি ও জমি মিলিয়ে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ রয়েছে তার। এ তথ্য মুসা দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে। মুসার নিজের দেয়া হিসাব অনুসারে তিনি বাংলাদেশের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থের মালিক।
গত রোববার (৭ জুন) তিনি ১৬ পৃষ্ঠার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন মুসা। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; সোমবারের দর অনুসারে প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) জব্দ রয়েছে। জব্দ রয়েছে তার মূল্যবান হীরকখচিত কলমসহ ৯০ কোটি টাকার ব্যবহার্য জুয়েলারি। দুদক এখন এসব সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখবে।
দুদক সূত্র জানায়, মুসা বিন শমসেরের বিলাসী জীবন এবং অর্থ-সম্পদ সম্পর্কে অবিশ্বাস্য সব তথ্য প্রচলিত রয়েছে। তিন দশক ধরে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে এসব তথ্য চাউর হলেও এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ ছিলো না। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর মাধ্যমে মুসা বিন শমসের নিজেই তার প্রমাণ দিলেন। বিবরণীটি ইতিমধ্যে কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে পৌছেছে।
মুসা তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নির্ধারিত ১২টি কলামের অধিকাংশই পূরণ করেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সুইস ব্যাংকে সাময়িক জব্দ অবস্থায় রয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলার। ওই ব্যাংকের ভল্টে অলংকার রয়েছে ৯০ কোটি টাকার। স্থাবর সম্পত্তি বলতে দেশে রয়েছে গুলশান ও বনানীতে দু’টি বাড়ি। সাভার ও গাজীপুরে ১ হাজার ২০০ বিঘা জমি। অধিকাংশই তার দখলে নেই এবং এখন দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ফরিদপুর শহরে গোয়ালচামট এলাকায় রয়েছে মুসার তিন তলা পৈত্রিক বাড়ি। রাজধানীর গুলশানে পদ্য প্যালেস নামের প্রাসাদতুল্য বাড়িটি তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা চৌধুরীর নামে, যা বর্তমানে একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে উন্নয়নের জন্য। বনানীতে মেসার্স ডেটকো লিমিটেড নামে একটি জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মুসা বিন শমসের। এ প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন অংশীদার রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির নামে ঢাকায় দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে দেশে নিজের কোন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার কথা সম্পদ বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেননি।
মুসার সম্পদ বিবরণী সম্পর্কে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সোমবার বলেন, সম্পদ বিবরণীতে মুসা বিন শমসের সুইস ব্যাংকে ১২ বিলিয়ন ডলারের যে হিসাব দিয়েছেন তা দুদকের কাছে একটি দালিলিক তথ্য। দুদক এখন তা খতিয়ে দেখবে। এর মধ্যে মিথ্যা তথ্য রয়েছে কি না সেটিও যাচাই করা হবে। সম্পদ বিবরণীতে সুইস ব্যাংকে জমা অর্থের বিষয়ে মুসা জানিয়েছেন, সুইস ব্যাংকে তার জব্দ ১২ বিলিয়ন ডলার তিনি আয় করেছেন অস্ত্র এবং ক্রুড অয়েল ব্যবসা থেকে। ওই ব্যাংকে তার যে হিসাবটি রয়েছে সেটি যৌথ অ্যাকাউন্ট বলে তিনি সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। এদিকে দুদকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সম্পদ বিবরণীতে সুইস ব্যাংকে জমা থাকা অর্থের বিষয়টি উল্লেখ করায় দুদক নিশ্চিত হলো যে, সুইস ব্যাংকে আসলেই মুসার অর্থ রয়েছে। আদৌ তার এত অর্থ রয়েছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ ছিলো। (দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

লক্ষ কোটি টাকার মালিক মুসা

প্রকাশের সময় : ১০:২১:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫

ঢাকা: বিতর্কিত ধনকুবের মুসা বিন শমসেরের ৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা জব্দ রয়েছে সুইস ব্যাংকে। একই ব্যাংকের ভল্টে রাখা আছে প্রায় ৯০ কোটি টাকার হীরা-জহরত-মনি-মুক্তা, স্বর্ণালংকারও। এর সঙ্গে বাড়ি ও জমি মিলিয়ে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি সম্পদ রয়েছে তার। এ তথ্য মুসা দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে। মুসার নিজের দেয়া হিসাব অনুসারে তিনি বাংলাদেশের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থের মালিক।
গত রোববার (৭ জুন) তিনি ১৬ পৃষ্ঠার সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন মুসা। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সুইস ব্যাংকে তার ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার (৯৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা; সোমবারের দর অনুসারে প্রতি ডলার ৭৮ টাকা হিসাবে) জব্দ রয়েছে। জব্দ রয়েছে তার মূল্যবান হীরকখচিত কলমসহ ৯০ কোটি টাকার ব্যবহার্য জুয়েলারি। দুদক এখন এসব সম্পদের উৎস খতিয়ে দেখবে।
দুদক সূত্র জানায়, মুসা বিন শমসেরের বিলাসী জীবন এবং অর্থ-সম্পদ সম্পর্কে অবিশ্বাস্য সব তথ্য প্রচলিত রয়েছে। তিন দশক ধরে দেশ-বিদেশের গণমাধ্যমে এসব তথ্য চাউর হলেও এ সংক্রান্ত কোনো দালিলিক প্রমাণ ছিলো না। দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীর মাধ্যমে মুসা বিন শমসের নিজেই তার প্রমাণ দিলেন। বিবরণীটি ইতিমধ্যে কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের হাতে পৌছেছে।
মুসা তার দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে নির্ধারিত ১২টি কলামের অধিকাংশই পূরণ করেছেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সুইস ব্যাংকে সাময়িক জব্দ অবস্থায় রয়েছে ১২ বিলিয়ন ডলার। ওই ব্যাংকের ভল্টে অলংকার রয়েছে ৯০ কোটি টাকার। স্থাবর সম্পত্তি বলতে দেশে রয়েছে গুলশান ও বনানীতে দু’টি বাড়ি। সাভার ও গাজীপুরে ১ হাজার ২০০ বিঘা জমি। অধিকাংশই তার দখলে নেই এবং এখন দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ফরিদপুর শহরে গোয়ালচামট এলাকায় রয়েছে মুসার তিন তলা পৈত্রিক বাড়ি। রাজধানীর গুলশানে পদ্য প্যালেস নামের প্রাসাদতুল্য বাড়িটি তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা চৌধুরীর নামে, যা বর্তমানে একটি ডেভেলপার কোম্পানিকে দেয়া হয়েছে উন্নয়নের জন্য। বনানীতে মেসার্স ডেটকো লিমিটেড নামে একটি জনশক্তি রপ্তানি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান মুসা বিন শমসের। এ প্রতিষ্ঠানের আরও কয়েকজন অংশীদার রয়েছেন। প্রতিষ্ঠানটির নামে ঢাকায় দুটি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে দেশে নিজের কোন ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকার কথা সম্পদ বিবরণীতে তিনি উল্লেখ করেননি।
মুসার সম্পদ বিবরণী সম্পর্কে দুদক কমিশনার (তদন্ত) মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু সোমবার বলেন, সম্পদ বিবরণীতে মুসা বিন শমসের সুইস ব্যাংকে ১২ বিলিয়ন ডলারের যে হিসাব দিয়েছেন তা দুদকের কাছে একটি দালিলিক তথ্য। দুদক এখন তা খতিয়ে দেখবে। এর মধ্যে মিথ্যা তথ্য রয়েছে কি না সেটিও যাচাই করা হবে। সম্পদ বিবরণীতে সুইস ব্যাংকে জমা অর্থের বিষয়ে মুসা জানিয়েছেন, সুইস ব্যাংকে তার জব্দ ১২ বিলিয়ন ডলার তিনি আয় করেছেন অস্ত্র এবং ক্রুড অয়েল ব্যবসা থেকে। ওই ব্যাংকে তার যে হিসাবটি রয়েছে সেটি যৌথ অ্যাকাউন্ট বলে তিনি সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেছেন। এদিকে দুদকের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, সম্পদ বিবরণীতে সুইস ব্যাংকে জমা থাকা অর্থের বিষয়টি উল্লেখ করায় দুদক নিশ্চিত হলো যে, সুইস ব্যাংকে আসলেই মুসার অর্থ রয়েছে। আদৌ তার এত অর্থ রয়েছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ ছিলো। (দৈনিক যুগান্তর)