নিউইয়র্ক ০৮:৩৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

রিজার্ভ থেকে চুরি: ১২ টেরাবাইট ডাটায় রহস্যের খোঁজ!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০২:২০:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০১৬
  • / ৭০৬ বার পঠিত

ঢাকা:বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ লুটের ঘটনা তদন্তে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলোর কম্পিউটারের তথ্য বিশ্লেষণ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক পরীক্ষার আবেদন করেন। আদালত এই পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ শাখা, বিএফআইইউ শাখা, পেমেন্ট শাখা, একাউন্টস ও বাজেটিং শাখাসহ কয়েকটি শাখা থেকে আলামত জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ টেরাবাইট কম্পিউটার ডাটা রয়েছে। আরো দুই-তিন দিনে অন্তত দুই টেরাবাইট ডাটা জব্দ করবেন তদন্তকারীরা। এসব ডাটা থেকে রিজার্ভ লেনদেনের এক টেরাবাইট ডাটা আলাদা করবেন তারা। এরপর বিশ্লেষণ করে সূত্র খুঁজবেন। এর ফলে রিজার্ভ স্থানান্তর বিষয়ক যোগাযোগ বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
গত ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলা দায়েরের পর ১৬ মার্চ থেকে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করছেন সিআইডির তদন্তকারীরা। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যায় একটি তদন্ত দল। তারা বেশ কয়েকটি কম্পিউটারের ডাটা সংগ্রহ করেন। তদন্তকারীরা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেও একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে যাচ্ছেন।
সিআইডির বিশেষ সুপার (সংগঠিত অপরাধ) মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী বলেন, ‘বিভিন্নভাবে আলামত সংগ্রহ করছি আমরা। ডাটা সংগ্রহ করতে আরো দুই-তিন দিন লাগবে। সব মিলে ১০-১২ টেরাবাইট ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এগুলো এনালাইসিস করার জন্য আমরা আদালতের অনুমতি পেয়েছি। এনালাইসিস করেই আমরা সূত্র খুঁজব।’তিনি আরো বলেন, ‘আলামত ধরে তদন্তের পাশাপাশি আমরা অর্গানাইজড ক্রাইমের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ চলছে।’
সূত্র জানায়, তদন্তকারীরা টিম ফরেক্স রিভার্জ সার্ভারে শত শত স্ক্রীন শট (ইমেজ) সংগ্রহ করেছেন। তারা অন্তত ৬০টি কম্পিউটারের ডাটা ক্লোন করেছেন। এগুলোর মধ্যে ১০ টেরাবাইট ডাটা আছে। বিভিন্ন শাখায় স্থাপন করা ২০০ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে সিআইডি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, তারা গত আড়াই মাসে রিজার্ভ স্থানান্তর সংক্রান্ত ডাটা খুঁজছেন। এর পরিমাণ এক টেরাবাইটের বেশি নয়। এটি শনাক্ত করে ভালভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
বুধবার কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ডাটা পরীক্ষার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা, অতিরিক্ত বিশেষ সুপার রায়হান উদ্দিন খান। ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান হার্ডডিস্ক পরীক্ষার অনুমতি দেন।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে ‘সুইফট মেসেজ হ্যাকিংয়ের’ মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০০ কোটি টাকা অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ফিলিপাইনে আট কোটি ১০ লাখ ডলার এবং বাকি অর্থ শ্রীলঙ্কায় পাচার হয়। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় পাচার করা অর্থ তারা ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছেন। ফেব্র“য়ারির শেষ দিকে ফিলিপাইনের স্থানীয় গণমাধ্যম ইনকোয়েরারে এ ঘটনা প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তা বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এতে ব্যাপক তোলপাড় হয়। এরই জেরে গত ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

রিজার্ভ থেকে চুরি: ১২ টেরাবাইট ডাটায় রহস্যের খোঁজ!

প্রকাশের সময় : ০২:২০:৩০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ মার্চ ২০১৬

ঢাকা:বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ লুটের ঘটনা তদন্তে ব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ শাখাগুলোর কম্পিউটারের তথ্য বিশ্লেষণ শুরু করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। বুধবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক পরীক্ষার আবেদন করেন। আদালত এই পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ শাখা, বিএফআইইউ শাখা, পেমেন্ট শাখা, একাউন্টস ও বাজেটিং শাখাসহ কয়েকটি শাখা থেকে আলামত জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১০ টেরাবাইট কম্পিউটার ডাটা রয়েছে। আরো দুই-তিন দিনে অন্তত দুই টেরাবাইট ডাটা জব্দ করবেন তদন্তকারীরা। এসব ডাটা থেকে রিজার্ভ লেনদেনের এক টেরাবাইট ডাটা আলাদা করবেন তারা। এরপর বিশ্লেষণ করে সূত্র খুঁজবেন। এর ফলে রিজার্ভ স্থানান্তর বিষয়ক যোগাযোগ বেরিয়ে আসবে বলে জানিয়েছে সূত্র।
গত ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলা দায়েরের পর ১৬ মার্চ থেকে প্রতিদিনই বাংলাদেশ ব্যাংকে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করছেন সিআইডির তদন্তকারীরা। বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যায় একটি তদন্ত দল। তারা বেশ কয়েকটি কম্পিউটারের ডাটা সংগ্রহ করেন। তদন্তকারীরা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গেও কথা বলেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরেও একটি দল বাংলাদেশ ব্যাংকে যাচ্ছেন।
সিআইডির বিশেষ সুপার (সংগঠিত অপরাধ) মীর্জা আবদুল্লাহেল বাকী বলেন, ‘বিভিন্নভাবে আলামত সংগ্রহ করছি আমরা। ডাটা সংগ্রহ করতে আরো দুই-তিন দিন লাগবে। সব মিলে ১০-১২ টেরাবাইট ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এগুলো এনালাইসিস করার জন্য আমরা আদালতের অনুমতি পেয়েছি। এনালাইসিস করেই আমরা সূত্র খুঁজব।’তিনি আরো বলেন, ‘আলামত ধরে তদন্তের পাশাপাশি আমরা অর্গানাইজড ক্রাইমের তদন্ত করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাচ্ছি। সংশ্লিষ্ট দেশে ইন্টারপোলের মাধ্যমে যোগাযোগ চলছে।’
সূত্র জানায়, তদন্তকারীরা টিম ফরেক্স রিভার্জ সার্ভারে শত শত স্ক্রীন শট (ইমেজ) সংগ্রহ করেছেন। তারা অন্তত ৬০টি কম্পিউটারের ডাটা ক্লোন করেছেন। এগুলোর মধ্যে ১০ টেরাবাইট ডাটা আছে। বিভিন্ন শাখায় স্থাপন করা ২০০ সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ জব্দ করেছে সিআইডি।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, তারা গত আড়াই মাসে রিজার্ভ স্থানান্তর সংক্রান্ত ডাটা খুঁজছেন। এর পরিমাণ এক টেরাবাইটের বেশি নয়। এটি শনাক্ত করে ভালভাবে বিশ্লেষণ করা হবে।
বুধবার কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ডাটা পরীক্ষার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা, অতিরিক্ত বিশেষ সুপার রায়হান উদ্দিন খান। ঢাকা মহানগর হাকিম মাহবুবুর রহমান হার্ডডিস্ক পরীক্ষার অনুমতি দেন।
প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারির শুরুতে ‘সুইফট মেসেজ হ্যাকিংয়ের’ মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ১০০ মিলিয়ন ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮০০ কোটি টাকা অর্থ লোপাটের ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ফিলিপাইনে আট কোটি ১০ লাখ ডলার এবং বাকি অর্থ শ্রীলঙ্কায় পাচার হয়। অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, শ্রীলঙ্কায় পাচার করা অর্থ তারা ফেরত আনতে সক্ষম হয়েছেন। ফেব্র“য়ারির শেষ দিকে ফিলিপাইনের স্থানীয় গণমাধ্যম ইনকোয়েরারে এ ঘটনা প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে তা বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে এতে ব্যাপক তোলপাড় হয়। এরই জেরে গত ১৫ মার্চ পদত্যাগ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।