নিউইয়র্ক ০৮:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন!

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:০৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫
  • / ৭৮৫ বার পঠিত

নিউইয়র্ক:বিশ্বব্যাপী আইএস, আল-কায়েদা’সহ বিভিন্ন ইসলামিক নামধারী জঙ্গী সংগঠনের উত্থান মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমাদের। আর এর শিকার হচ্ছেন ইউরোপ আমেরিকায় আশ্রয় প্রত্যাশী অসংখ্য সাধারণ বাংলাদেশী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশী বিভিন্ন এটর্নী ও ইমেগ্রেশন আইনজীবীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম) এর সংখ্যা বেড়ে গেছে বহুগুণ। বিশেষ করে ২০১৩ সালের পর এ সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আর এতে শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মী নয়; গণমাধ্যম ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর আবেদনও রয়েছে। কয়েকদিন আগেও বাংলাদেশী গণমাধ্যমকর্মীদের আবেদন মঞ্জুর হতো ব্যাপকহারে। কিন্তু বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান বিরোধী প্রচার-প্রপাগান্ডায় সেটাও এখন ঝুলে আছে।
আমেরিকাতে প্রবেশ বৈধ কিংবা অবৈধ হোক। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে সরকার বিরোধী হিসেবে অবস্থানকে তুলে ধরা হয় বড় করে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত বিএনপি-জামায়াতই নয়; খোদ সরকার দলীয় এবং বাম ঘরানার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই সরকার বিরোধী হিসেবে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’র আবেদন করেন। এসব আবেদনের বেশীরভাগই এখন টালমাটাল। কারণ হচ্ছে ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’র আপত্তি। বিশেষ করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে টোরোরিষ্ট কান্ট্রি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যারা বিভিন্ন উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে আশ্রয় প্রার্থনা করছেন; তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত বলে আদালতে বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য পেশ করে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। যার মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট, (বিএনপি-জামায়াত জঙ্গীবাদি দল) সরকারের স্টেটমেন্ট এবং দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গীবাদের উত্থানে বাংলাদেশ ভূখন্ডের ব্যবহার ইত্যাদি। ইমিগ্রেশন সংস্থাগুলো আদালতের সামনে এসব তথ্যকেই জোরালো ভাবে তুলে ধরে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে হাজারো রাজনৈতিক প্রত্যাশী বাংলাদেশী।
এছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কখনো উত্তাল সাগর, কখনো বা গভীর অরণ্য ভেঙে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমানো অসংখ্য বাংলাদেশী মানবেতর জীবনযাপন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রায় ২৫/৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ পথে প্রবশে করেন তারা। জীবন বাঁচাতে সহায়তা চেয়ে টেক্সাসের ‘এল পাসো’ এলাকার একটি কারাগার থেকে সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশী মাহবুব রহমান নামের এক বন্দী। তার সাথে এলাইন নম্বর’সহ আরো প্রায় ৩০ জন স্বাক্ষর করেন চিঠিতে। সেখানে তারা উল্লেখ করেন প্রায় ৯৫ জন কারাগারে বন্দী রয়েছেন। চলতি বছরের ২১ মার্চ ওই চিঠিটি লেখা হয়। যা ডাকঘরে ছাড়া হয় ২৮ মার্চ। বাংলা পত্রিকায় এ নিয়ে গেল সপ্তাহে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ সোসাইটি’সহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের ব্যাপারে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
‘ইউএস. ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টম এনফোর্সমেন্ট’-(আইসিই) এর তথ্যে জানা যায়, ‘দূর্গম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন অনেকে। গেল মে মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভাবে প্রবেশের দায়ে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার তথা কারাগারে প্রায় ২৯ হাজারের মত বিদেশী আটক ছিলেন। যাদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশীও রয়েছেন। বেশীর ভাগই এখনো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী রয়েছেন। পার করছেন মানবেতর জীবন-যাপন। অনেকে আবার ডিটেনশনে রয়েছেন। যেখান থেকে প্রায় ৭শ জনকে ডিপোর্টেশন, বিচারাধীন রয়েছেন প্রায় ৬শ জন, আর দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে প্রায় ৫শ জনের।
বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাসকারি আনডক্যুমেন্টেড ও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রবেশকারিরা তাদের প্রাপ্য আইনী সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমন দাবি করছেন আইনজীবীরা। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষে এদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিভিন্ন রেফান্সে তুলে ধরা হলে তা খন্ডানোর মতো আইনজীবী না থাকায় এ করুণ অবস্থা। কারণ বাংলাদেশ সম্পর্কে আমেরিকান বেশীর ভাগ আইনজীবীরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাই বিজ্ঞ আদালত বাধ্য হয়ে তাদের আবেদন বাতিল করে দিচ্ছে।
পরিতাপের বিষয় হচ্ছে; আমেরিকার বিভিন্ন আদালত থেকে বন্দীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আদেশ দেওয়া হলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে জঙ্গিবাদসহ নানা ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণা থাকায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ ব্যাপারে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে মাসের পর মাস তারা কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশী এসব বন্দীদের সাথে গুয়েতামালা, হুন্ডুরাস, মেক্সিকান (হেস্পানিক), আফ্রিকান অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবেশ করে। দুঃখের বিষয় আদালতে পে’রোল তাদের জন্য প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশীদের বেলা তা বাতিল করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশী ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠির সবাই পে’রোল নিয়ে কারাগার থেকে বের হতে পারছেন।’
এবষিয়ে আইন বিশেষজ্ঞ এটর্নী শেখ সেলিম বলেন, ‘এটা আসলে খুবই দুঃখজনক। আমি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোর্টে প্র্যাকটিস করছি। আমার অভিজ্ঞতায় এধরণের ঘটনা কখনো চোখে পড়েনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ ইমিগ্রেশন কোর্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের সন্ত্রাসী কমর্কান্ডের সাথে লিপ্ত বলে আখ্যায়িত করে। যার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বোমা-বাজি’সহ নানা ইস্যুতে বিএনপিকেও জড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে জামায়াত, হেফাজত, আনসারুল্লাহ বাহিনী’সহ সবক’টি ইসলামী সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে বিএনপি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এটা সত্যি খারাপ সংবাদ।’
বাংলাদেশী এই এটর্নী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে যারাই সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়ে আমেরিকাতে (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলামে)-এর আবেদন করছেন; তাদের বেশীর ভাগ আবেদনই বাতিল হয়ে যাচ্ছে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশীরা আবেদন করার পর কোর্টে যখন বিষয়টি উঠে তখন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ল’ইয়াররা বিচারকের সামনে বাংলাদেশী বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ নিয়ে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের ‘টিআইআর থ্রি’ তিন স্তরের সন্ত্রাসী(জঙ্গীবাদি) কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে। আর এ বিষয়ে আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী সঠিক তথ্য না জানায় তা খন্ডন করতে পারছে না। এতে করে আবেদনগুলো বাতিলের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে।’
এটর্নী শেখ সেলিম বলেন,‘এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো যারাই আবেদন করবেন; তাদের এমন আইনজীবীর মাধ্যমে করা উচিত যিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারও বন্ধ করতে হবে। বিরোধী মতের জন্য নয় দেশের স্বার্থে এসব বন্ধ হওয়া উচিত। অন্যথায় বিরোধী মত তথা বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক দলের কর্মীই নয়; সাধারণ বাংলাদেশী যে কারোরই অ্যাসাইলাম আবেদন বাতিলের সম্ভাবনা বেশী।’
বিভিন্ন জনের সাথে আলাপ ও তথ্যের ভিত্তিতে উঠে আসে বাংলাদেশে হেফাজত ও আনসারুল্লাহ বাহিনীকে জঙ্গীবাদি আখ্যা দিয়ে বিএনপি-জামায়াত এদের মদদ দিচ্ছে বলা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতকে জঙ্গীবাদি দল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে কয়েকজন লিখিত আবেদনও করেছে বলে অভিযোগ উঠে। বিএনপি-জামায়তের কর্মী দাবি করা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের হুমকী মনে করছে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। বিষয়টিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টও উদ্বিগ্ন। ‘টেররিজম রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ-টিআরই’এর আওতায় বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। বাংলাদেশ বিরোধী এসব প্রচারণায় কমিউনিটিতেও বইছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সূত্রে জানা যায়, শুধু বিএনপি জামায়াত’র নামেই নয়; যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারি অসংখ্য আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বাম’সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’র আবেদন করেছেন। বাংলাদেশ বিরোধী কথিত জঙ্গীবাদি অপপ্রচারের গ্যারাকলে পড়েছেন তারাও।
বিষয়টির সতত্য স্বীকার করে ইমেগ্রেশন রাইটস নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশী আইনজীবী মোহাম্মদ এন. মজুমদার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনে কেউ যদিও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেন তাহলে তার দায়িত্ব নেয় এদেশের সরকার। এটাই এখানকার সংবিধান স্বীকৃত ইমেগ্রেশন রাইটস। এছাড়াও বৈধ পথে এসেও যারা রাজনৈতিক আশ্রয় চান; তাদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের আবেদনও গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ক করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণায় এর থেকে সরে এসেছে ইমেগ্রেশন বিভাগ। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমেগ্রেশন বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত এজেন্সিগুলো বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান নিয়ে সরকারের বিভিন্ন স্টেটমেন্টকে গুরুত্বসহকারে আদালতে পেশ করে। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির কলাম, জর্নালে নিবন্ধ প্রকাশ ইত্যাদি তো রয়েছেই। যা বলতেও খারাপ লাগছে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নেয়া কিছু মানুষের মিথ্যা প্রচারণায় আজকের এই অবস্থা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নেয়া কিছু মানুষের মিথ্যা প্রচারণায় আজকের এই অবস্থা।’ কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘একদিকে বাংলাদেশ সরকার বার বার বলছে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। অভিজিৎসহ বেশ কয়েকজন ব্লগার হত্যাকান্ড ঘটছে। হেফাজতের উত্থান, আনসারুল্লাহ বাহিনী ইত্যাদি।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বহুজাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপকে প্রতিহত করতে একযোগে কাজ করে যাবে। সন্ত্রাস দমনে দ্বিপাক্ষিক স্বাক্ষরিত ঐ চুক্তিতে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইন্ডিয়া তথা দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলে অবস্থানকারি আল-কায়েদা, তালেবানরা যাতে বাংলাদেশে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাস দমন ব্যুরোর ‘ব্যুরো অব কাউন্টার টেরোরিসম’ কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিসম’২০১৩ নামের ঐ প্রতিবেদনের চাপ্টার-২ সাউথ এন্ড সেন্ট্রাল এশিয়ার ওভারভিউ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নায়ন না হওয়া এখনো উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।
লিংক: http://www.state.gov/j/ct/rls/crt/2013/224824.htm
অন্যদিকে, ‘টেরোরিজম রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ’ (টিআরআই) নামের একটি জার্নালে বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম সন্ত্রাসবাদের একটি উঠতি মাধ্যম বলে দাবি করা হয়। ২০১৪ সালে বিশ্লেষণধর্মী ওই নিবন্ধনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ‘স্বজন এম গুহেল’। ‘বাংলাদেশ এন ইমারজিং সেন্টার ফর টেরোরিজম ইন এশিয়া’ নামের ঐ জার্নালের বেশীরভাগই ইংরেজী দৈনিক ডেইলী স্টারের লিংক’র ব্যবহার করেন তিনি। ‘সন্ত্রাসবাদ রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ এবং সন্ত্রাসবাদ ও নিরাপত্তা স্টাডিজ সেন্টারের প্রকাশিত ওই জার্নালের গবেষণায় তুলে ধরা হয়: ২০১৩ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় জঙ্গীবাদের উত্থান সবচে বেশী ঘটেছে। দেশটির চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে আরো বেশী উস্কে দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশী মুক্তমনা আমেরিকান ও ব্রিটিশ নাগরিকরা দেশটিতে হুমকীর শিকার। যাদের ওপর আক্রমনে আল-কায়দার যোগসাজোস রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
জর্নালের কী ওয়ার্ড হিসেবে তুলে ধরা হয়: “সন্ত্রাসবাদ বাংলাদেশ ঃ জামায়াতে ইসলামী, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হেফাজতে ইসলাম”। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং সবচেয়ে বড় ধর্মীয় রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামের অস্পষ্ট ভূমিকা বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ উত্থানের মূল অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যার ফলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ফুটে উঠছে জঙ্গীবাদি ও চরমপন্থি সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান ঘটেছে বাংলাদেশে। আর জামায়াত সহ বেশ কয়েকটি ইসলামিক সংগঠন বিএনপির জোটের সাথে সম্পৃক্ত।
নিবন্ধনে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থতম বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ উল্লেখ করে ১৯৯০ সালের পর দেশটিতে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে এলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ না থাকা তা ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি বিচারবহির্ভুত হত্যাকন্ড, বোমাবাজি এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক অস্থিরতায় জঙ্গীবাদের উত্থান আরো প্রসারিত হচ্ছে বলে নিবন্ধনে উল্লেখ করা হয়।
লিংক: http://www.terrorismanalysts.com/pt/index.php/pot/article/view/348/html
আর এসব প্রকাশিত নিবন্ধন, রিপোর্ট এবং তথ্য-উপাত্তকে রেফারেন্স হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। তাই বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশ থেকে আগত সাধারণ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম কেইস’ বাতিল করে দিচ্ছে বিচারকরা।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল লতীফ স¤্রাট’র। তিনি বলেন, ‘দেখুন বর্তমানে বাংলাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা সবার জানা। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশ বিরোধী অপপ্রচার নয়; মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে সাজানো জঙ্গীবাদি নাটকও করে চলেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হেন কোন কাজ নেই তারা করে নি। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গীবাদি রাষ্ট্রে পরিণত করে বাকশালী কায়দা আজীবন ক্ষমতা পাকাপোক্তের অপচেষ্টায়ও লিপ্ত তারা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি কোন জঙ্গী সংগঠন নয়। দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দল। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্র্তি বিএনপি কখনোই নষ্ট করে নাই। এরপরও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে। বিনিময়ে দলীয় নেতাকর্মীরা শিকার হচ্ছে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে। শীর্ষ নেতারা কারাগারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।’ এই নেতা আরো বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান আওয়ামী স্বৈরাচারি কায়দা দেশে একনায়কতন্ত্র ও বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। যখন এই অগণতান্ত্রিক আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ও নিন্দা উঠতে শুরু করেছে; তখনই তারা একটি কূট-কৌশল হাতে নিয়েছে। নিজেরাই ব্লগার হত্যা, ও বোমাবাজি করে বিশ্বকে বোঝাতে চাইছে বিএনপি একটি জঙ্গীবাদি দল। এটা সত্যিই দুঃখজনক। এতে করে বিএনপির চেয়ে দেশের ক্ষতিই হচ্ছে সবেচেয়ে বেশী।’
তিনি দাবি করেন, ‘বাংলাদেশে কোন জঙ্গীবাদ নেই। তবে অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থায় কেউ কেউ সুযোগ নিতে পারে। আর এ জন্য দরকার সরকারকে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা।’
ইউরোপ আমেরিকাতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের বিষয়ে বিএনপির এই প্রবাসী নেতা বলেন, ‘আপনি দেখুন পুরো দেশে মানুষের কোন জীবনের নিরাপত্তা নেই। সরকারী বাহিনী দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে। সেখানে সরকার বিরোধীরা জীবন বাঁচাতে ও ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে এসব দেশে আসেন; আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এটাই স্বাভাবিক এখানকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমিগ্রেশন বিভাগের বিভিন্ন সংগঠন চাইবে যাতে করে এদের আশ্রয় প্রার্থণা গ্র্যান্ট না হয়। তাই তারা সরকারের এসব অপপ্রচার ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তকে রেফারেন্স হিসেবে ইমিগ্রেশন আদালতে পেশ করছে। এসব বাংলাদেশীদের সহায়তার পরিবর্তে বেকায়দা ফেলছে খোদ সরকার। যা সত্যিই দেশের জন্য লজ্জাজনক এবং দূর্ভাগ্য।’
আবদুল লতীফ স¤্রাট আরো বলেন, ‘আপনি খেয়াল করলে দেখবেন সরকার একদিকে বলছে দেশে সব জঙ্গীবাদ নির্মূল করেছি আমরা। আবার অন্যদিকে বলছে বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে তা আরো বেড়ে যাবে। আমাদের সবাইকে জঙ্গী জঙ্গী বলে একটা রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নিচ্ছে সরকার। তারা মনে করে এসব করে আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকবে। বরং একদিন তাদের জন্য তা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। দেশকে ছোট করে; দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তারা ভুল করছে।’
রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই থাকুক না কেন; অবিলম্বে সরকার এসব দেশ বিরোধী এসব মিথ্যা প্রপাগান্ডা বন্ধের দাবি সবার। বর্তমান সরকার বাংলাদেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে বলেও প্রত্যাশা করেন প্রবাসী বাংলাদেশী, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও বিশিষ্টজনেরা। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বিএনপি-জামায়াত সন্ত্রাসী সংগঠন!

প্রকাশের সময় : ০৯:০৪:৪২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫

নিউইয়র্ক:বিশ্বব্যাপী আইএস, আল-কায়েদা’সহ বিভিন্ন ইসলামিক নামধারী জঙ্গী সংগঠনের উত্থান মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পশ্চিমাদের। আর এর শিকার হচ্ছেন ইউরোপ আমেরিকায় আশ্রয় প্রত্যাশী অসংখ্য সাধারণ বাংলাদেশী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মী। বাংলাদেশী বিভিন্ন এটর্নী ও ইমেগ্রেশন আইনজীবীদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশীদের রাজনৈতিক আশ্রয় (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম) এর সংখ্যা বেড়ে গেছে বহুগুণ। বিশেষ করে ২০১৩ সালের পর এ সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আর এতে শুধু রাজনৈতিক নেতাকর্মী নয়; গণমাধ্যম ও বিভিন্ন ক্যাটাগরীর আবেদনও রয়েছে। কয়েকদিন আগেও বাংলাদেশী গণমাধ্যমকর্মীদের আবেদন মঞ্জুর হতো ব্যাপকহারে। কিন্তু বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান বিরোধী প্রচার-প্রপাগান্ডায় সেটাও এখন ঝুলে আছে।
আমেরিকাতে প্রবেশ বৈধ কিংবা অবৈধ হোক। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনার ক্ষেত্রে সরকার বিরোধী হিসেবে অবস্থানকে তুলে ধরা হয় বড় করে। এ ক্ষেত্রে প্রকৃত বিএনপি-জামায়াতই নয়; খোদ সরকার দলীয় এবং বাম ঘরানার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত অনেকেই সরকার বিরোধী হিসেবে পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’র আবেদন করেন। এসব আবেদনের বেশীরভাগই এখন টালমাটাল। কারণ হচ্ছে ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’র আপত্তি। বিশেষ করে সংস্থাটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে টোরোরিষ্ট কান্ট্রি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যারা বিভিন্ন উপায়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করে আশ্রয় প্রার্থনা করছেন; তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ত বলে আদালতে বিভিন্ন সোর্স ও তথ্য পেশ করে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। যার মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমের রিপোর্ট, (বিএনপি-জামায়াত জঙ্গীবাদি দল) সরকারের স্টেটমেন্ট এবং দক্ষিণ এশিয়ায় জঙ্গীবাদের উত্থানে বাংলাদেশ ভূখন্ডের ব্যবহার ইত্যাদি। ইমিগ্রেশন সংস্থাগুলো আদালতের সামনে এসব তথ্যকেই জোরালো ভাবে তুলে ধরে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে হাজারো রাজনৈতিক প্রত্যাশী বাংলাদেশী।
এছাড়াও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কখনো উত্তাল সাগর, কখনো বা গভীর অরণ্য ভেঙে স্বপ্নের দেশে পাড়ি জমানো অসংখ্য বাংলাদেশী মানবেতর জীবনযাপন করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে। দালালের খপ্পরে পড়ে প্রায় ২৫/৩০ লাখ টাকা ব্যয় করে যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ পথে প্রবশে করেন তারা। জীবন বাঁচাতে সহায়তা চেয়ে টেক্সাসের ‘এল পাসো’ এলাকার একটি কারাগার থেকে সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকার সম্পাদক বরাবর চিঠি লিখেছেন বাংলাদেশী মাহবুব রহমান নামের এক বন্দী। তার সাথে এলাইন নম্বর’সহ আরো প্রায় ৩০ জন স্বাক্ষর করেন চিঠিতে। সেখানে তারা উল্লেখ করেন প্রায় ৯৫ জন কারাগারে বন্দী রয়েছেন। চলতি বছরের ২১ মার্চ ওই চিঠিটি লেখা হয়। যা ডাকঘরে ছাড়া হয় ২৮ মার্চ। বাংলা পত্রিকায় এ নিয়ে গেল সপ্তাহে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বাংলাদেশ সোসাইটি’সহ বিভিন্ন সংগঠন তাদের ব্যাপারে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করে।
‘ইউএস. ইমিগ্রেশন এন্ড কাস্টম এনফোর্সমেন্ট’-(আইসিই) এর তথ্যে জানা যায়, ‘দূর্গম সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেন অনেকে। গেল মে মাস পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ ভাবে প্রবেশের দায়ে বিভিন্ন ডিটেনশন সেন্টার তথা কারাগারে প্রায় ২৯ হাজারের মত বিদেশী আটক ছিলেন। যাদের মধ্যে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশীও রয়েছেন। বেশীর ভাগই এখনো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কারাগারে বন্দী রয়েছেন। পার করছেন মানবেতর জীবন-যাপন। অনেকে আবার ডিটেনশনে রয়েছেন। যেখান থেকে প্রায় ৭শ জনকে ডিপোর্টেশন, বিচারাধীন রয়েছেন প্রায় ৬শ জন, আর দেশে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে প্রায় ৫শ জনের।
বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার ফলে দীর্ঘদিন ধরে এখানে বসবাসকারি আনডক্যুমেন্টেড ও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে প্রবেশকারিরা তাদের প্রাপ্য আইনী সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এমন দাবি করছেন আইনজীবীরা। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তারা বলেন, ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির পক্ষে এদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিভিন্ন রেফান্সে তুলে ধরা হলে তা খন্ডানোর মতো আইনজীবী না থাকায় এ করুণ অবস্থা। কারণ বাংলাদেশ সম্পর্কে আমেরিকান বেশীর ভাগ আইনজীবীরই স্বচ্ছ ধারণা নেই। তাই বিজ্ঞ আদালত বাধ্য হয়ে তাদের আবেদন বাতিল করে দিচ্ছে।
পরিতাপের বিষয় হচ্ছে; আমেরিকার বিভিন্ন আদালত থেকে বন্দীদের রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আদেশ দেওয়া হলেও বাংলাদেশ সম্পর্কে জঙ্গিবাদসহ নানা ইস্যুতে নেতিবাচক প্রচারণা থাকায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার এ ব্যাপারে এখনো কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে মাসের পর মাস তারা কারাগারে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশী এসব বন্দীদের সাথে গুয়েতামালা, হুন্ডুরাস, মেক্সিকান (হেস্পানিক), আফ্রিকান অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে প্রবেশ করে। দুঃখের বিষয় আদালতে পে’রোল তাদের জন্য প্রযোজ্য হলেও বাংলাদেশীদের বেলা তা বাতিল করা হচ্ছে। একমাত্র বাংলাদেশী ছাড়া অন্য জাতিগোষ্ঠির সবাই পে’রোল নিয়ে কারাগার থেকে বের হতে পারছেন।’
এবষিয়ে আইন বিশেষজ্ঞ এটর্নী শেখ সেলিম বলেন, ‘এটা আসলে খুবই দুঃখজনক। আমি দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন কোর্টে প্র্যাকটিস করছি। আমার অভিজ্ঞতায় এধরণের ঘটনা কখনো চোখে পড়েনি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’ ইমিগ্রেশন কোর্টে বাংলাদেশের রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের সন্ত্রাসী কমর্কান্ডের সাথে লিপ্ত বলে আখ্যায়িত করে। যার মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা, বোমা-বাজি’সহ নানা ইস্যুতে বিএনপিকেও জড়ানো হচ্ছে। বলা হচ্ছে জামায়াত, হেফাজত, আনসারুল্লাহ বাহিনী’সহ সবক’টি ইসলামী সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে বিএনপি আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে। এটা সত্যি খারাপ সংবাদ।’
বাংলাদেশী এই এটর্নী বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে যারাই সরকার বিরোধী অবস্থান নিয়ে আমেরিকাতে (পলিটিক্যাল অ্যাসাইলামে)-এর আবেদন করছেন; তাদের বেশীর ভাগ আবেদনই বাতিল হয়ে যাচ্ছে।’ কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে বাংলাদেশীরা আবেদন করার পর কোর্টে যখন বিষয়টি উঠে তখন হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ল’ইয়াররা বিচারকের সামনে বাংলাদেশী বিএনপি-জামায়াতের পক্ষ নিয়ে অ্যাসাইলাম আবেদনকারীদের ‘টিআইআর থ্রি’ তিন স্তরের সন্ত্রাসী(জঙ্গীবাদি) কর্মকান্ডের সাথে সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনে। আর এ বিষয়ে আবেদনকারীর পক্ষের আইনজীবী সঠিক তথ্য না জানায় তা খন্ডন করতে পারছে না। এতে করে আবেদনগুলো বাতিলের পাশাপাশি বিএনপি-জামায়াতকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে দাঁড় করানো হচ্ছে।’
এটর্নী শেখ সেলিম বলেন,‘এর থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো যারাই আবেদন করবেন; তাদের এমন আইনজীবীর মাধ্যমে করা উচিত যিনি বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ বিরোধী অপপ্রচারও বন্ধ করতে হবে। বিরোধী মতের জন্য নয় দেশের স্বার্থে এসব বন্ধ হওয়া উচিত। অন্যথায় বিরোধী মত তথা বিএনপি-জামায়াত রাজনৈতিক দলের কর্মীই নয়; সাধারণ বাংলাদেশী যে কারোরই অ্যাসাইলাম আবেদন বাতিলের সম্ভাবনা বেশী।’
বিভিন্ন জনের সাথে আলাপ ও তথ্যের ভিত্তিতে উঠে আসে বাংলাদেশে হেফাজত ও আনসারুল্লাহ বাহিনীকে জঙ্গীবাদি আখ্যা দিয়ে বিএনপি-জামায়াত এদের মদদ দিচ্ছে বলা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতকে জঙ্গীবাদি দল হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টে কয়েকজন লিখিত আবেদনও করেছে বলে অভিযোগ উঠে। বিএনপি-জামায়তের কর্মী দাবি করা রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের হুমকী মনে করছে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। বিষয়টিতে স্টেট ডিপার্টমেন্টও উদ্বিগ্ন। ‘টেররিজম রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ-টিআরই’এর আওতায় বাংলাদেশের অবস্থান তুলে ধরে ‘হোমল্যান্ড সিকিউরিটি’। বাংলাদেশ বিরোধী এসব প্রচারণায় কমিউনিটিতেও বইছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।
সূত্রে জানা যায়, শুধু বিএনপি জামায়াত’র নামেই নয়; যুক্তরাষ্ট্রে দীর্ঘদিন ধরে বসবাসকারি অসংখ্য আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও বাম’সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম’র আবেদন করেছেন। বাংলাদেশ বিরোধী কথিত জঙ্গীবাদি অপপ্রচারের গ্যারাকলে পড়েছেন তারাও।
বিষয়টির সতত্য স্বীকার করে ইমেগ্রেশন রাইটস নিয়ে কাজ করা বাংলাদেশী আইনজীবী মোহাম্মদ এন. মজুমদার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন আইনে কেউ যদিও সীমান্ত পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেন তাহলে তার দায়িত্ব নেয় এদেশের সরকার। এটাই এখানকার সংবিধান স্বীকৃত ইমেগ্রেশন রাইটস। এছাড়াও বৈধ পথে এসেও যারা রাজনৈতিক আশ্রয় চান; তাদের জীবনের নিরাপত্তার কথা ভেবে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাদের আবেদনও গুরুত্ব সহকারে মূল্যায়ক করা হয়। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ বিরোধী মিথ্যা প্রচারণায় এর থেকে সরে এসেছে ইমেগ্রেশন বিভাগ। ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমেগ্রেশন বিভাগের সাথে সম্পৃক্ত এজেন্সিগুলো বাংলাদেশে জঙ্গীবাদের উত্থান নিয়ে সরকারের বিভিন্ন স্টেটমেন্টকে গুরুত্বসহকারে আদালতে পেশ করে। পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ব্যক্তির কলাম, জর্নালে নিবন্ধ প্রকাশ ইত্যাদি তো রয়েছেই। যা বলতেও খারাপ লাগছে। আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নেয়া কিছু মানুষের মিথ্যা প্রচারণায় আজকের এই অবস্থা।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নেয়া কিছু মানুষের মিথ্যা প্রচারণায় আজকের এই অবস্থা।’ কারণ জানতে চাইলে বলেন, ‘একদিকে বাংলাদেশ সরকার বার বার বলছে দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছে। অভিজিৎসহ বেশ কয়েকজন ব্লগার হত্যাকান্ড ঘটছে। হেফাজতের উত্থান, আনসারুল্লাহ বাহিনী ইত্যাদি।’
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের এক প্রতিবেদনে দেখা যায় ২০১৩ সালের ২২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে তুলে ধরা হয় বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র বহুজাতিক সন্ত্রাসী গ্রুপকে প্রতিহত করতে একযোগে কাজ করে যাবে। সন্ত্রাস দমনে দ্বিপাক্ষিক স্বাক্ষরিত ঐ চুক্তিতে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ইন্ডিয়া তথা দক্ষিণ এশিয় অঞ্চলে অবস্থানকারি আল-কায়েদা, তালেবানরা যাতে বাংলাদেশে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে না পারে। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের সন্ত্রাস দমন ব্যুরোর ‘ব্যুরো অব কাউন্টার টেরোরিসম’ কান্ট্রি রিপোর্ট অন টেরোরিসম’২০১৩ নামের ঐ প্রতিবেদনের চাপ্টার-২ সাউথ এন্ড সেন্ট্রাল এশিয়ার ওভারভিউ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উন্নায়ন না হওয়া এখনো উদ্বিগ্ন যুক্তরাষ্ট্র।
লিংক: http://www.state.gov/j/ct/rls/crt/2013/224824.htm
অন্যদিকে, ‘টেরোরিজম রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ’ (টিআরআই) নামের একটি জার্নালে বাংলাদেশকে এশিয়ার অন্যতম সন্ত্রাসবাদের একটি উঠতি মাধ্যম বলে দাবি করা হয়। ২০১৪ সালে বিশ্লেষণধর্মী ওই নিবন্ধনে বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তিনি প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ‘স্বজন এম গুহেল’। ‘বাংলাদেশ এন ইমারজিং সেন্টার ফর টেরোরিজম ইন এশিয়া’ নামের ঐ জার্নালের বেশীরভাগই ইংরেজী দৈনিক ডেইলী স্টারের লিংক’র ব্যবহার করেন তিনি। ‘সন্ত্রাসবাদ রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ এবং সন্ত্রাসবাদ ও নিরাপত্তা স্টাডিজ সেন্টারের প্রকাশিত ওই জার্নালের গবেষণায় তুলে ধরা হয়: ২০১৩ সালে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও ধর্মীয় জঙ্গীবাদের উত্থান সবচে বেশী ঘটেছে। দেশটির চলমান রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে আরো বেশী উস্কে দিয়েছে। যার ফলে বাংলাদেশী মুক্তমনা আমেরিকান ও ব্রিটিশ নাগরিকরা দেশটিতে হুমকীর শিকার। যাদের ওপর আক্রমনে আল-কায়দার যোগসাজোস রয়েছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
জর্নালের কী ওয়ার্ড হিসেবে তুলে ধরা হয়: “সন্ত্রাসবাদ বাংলাদেশ ঃ জামায়াতে ইসলামী, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম, হেফাজতে ইসলাম”। চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায়, যুদ্ধাপরাধের বিচার এবং সবচেয়ে বড় ধর্মীয় রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামের অস্পষ্ট ভূমিকা বাংলাদেশে জঙ্গীবাদ উত্থানের মূল অন্তরায় হিসেবে উল্লেখ করা হয়। যার ফলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে ফুটে উঠছে জঙ্গীবাদি ও চরমপন্থি সন্ত্রাসী সংগঠনের উত্থান ঘটেছে বাংলাদেশে। আর জামায়াত সহ বেশ কয়েকটি ইসলামিক সংগঠন বিএনপির জোটের সাথে সম্পৃক্ত।
নিবন্ধনে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের পর দক্ষিণ এশিয়ার চতুর্থতম বৃহৎ মুসলিম রাষ্ট্র বাংলাদেশ উল্লেখ করে ১৯৯০ সালের পর দেশটিতে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরে এলেও ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে বিএনপি’র অংশগ্রহণ না থাকা তা ব্যাহত হয়েছে। পাশাপাশি বিচারবহির্ভুত হত্যাকন্ড, বোমাবাজি এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক অস্থিরতায় জঙ্গীবাদের উত্থান আরো প্রসারিত হচ্ছে বলে নিবন্ধনে উল্লেখ করা হয়।
লিংক: http://www.terrorismanalysts.com/pt/index.php/pot/article/view/348/html
আর এসব প্রকাশিত নিবন্ধন, রিপোর্ট এবং তথ্য-উপাত্তকে রেফারেন্স হিসেবে দাঁড় করাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। তাই বৈধ কিংবা অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশ থেকে আগত সাধারণ ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ‘পলিটিক্যাল অ্যাসাইলাম কেইস’ বাতিল করে দিচ্ছে বিচারকরা।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল লতীফ স¤্রাট’র। তিনি বলেন, ‘দেখুন বর্তমানে বাংলাদেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে তা সবার জানা। এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশ বিরোধী অপপ্রচার নয়; মানুষ হত্যা থেকে শুরু করে সাজানো জঙ্গীবাদি নাটকও করে চলেছে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হেন কোন কাজ নেই তারা করে নি। বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গীবাদি রাষ্ট্রে পরিণত করে বাকশালী কায়দা আজীবন ক্ষমতা পাকাপোক্তের অপচেষ্টায়ও লিপ্ত তারা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বিএনপি কোন জঙ্গী সংগঠন নয়। দেশের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক দল। ১৯৯০ সালে গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনে ক্ষমতায় আসে বিএনপি। বিশ্ব দরবারে দেশের ভাবমূর্র্তি বিএনপি কখনোই নষ্ট করে নাই। এরপরও দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে। বিনিময়ে দলীয় নেতাকর্মীরা শিকার হচ্ছে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডে। শীর্ষ নেতারা কারাগারে মানবেতর জীবন-যাপন করছে।’ এই নেতা আরো বলেন, ‘ভাগ্যের নির্মম পরিহাস। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারী প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বর্তমান আওয়ামী স্বৈরাচারি কায়দা দেশে একনায়কতন্ত্র ও বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। যখন এই অগণতান্ত্রিক আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী প্রতিবাদের ঝড় ও নিন্দা উঠতে শুরু করেছে; তখনই তারা একটি কূট-কৌশল হাতে নিয়েছে। নিজেরাই ব্লগার হত্যা, ও বোমাবাজি করে বিশ্বকে বোঝাতে চাইছে বিএনপি একটি জঙ্গীবাদি দল। এটা সত্যিই দুঃখজনক। এতে করে বিএনপির চেয়ে দেশের ক্ষতিই হচ্ছে সবেচেয়ে বেশী।’
তিনি দাবি করেন, ‘বাংলাদেশে কোন জঙ্গীবাদ নেই। তবে অগণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সরকার ব্যবস্থায় কেউ কেউ সুযোগ নিতে পারে। আর এ জন্য দরকার সরকারকে গণতান্ত্রিক ধারা ফিরিয়ে আনা।’
ইউরোপ আমেরিকাতে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাশীদের বিষয়ে বিএনপির এই প্রবাসী নেতা বলেন, ‘আপনি দেখুন পুরো দেশে মানুষের কোন জীবনের নিরাপত্তা নেই। সরকারী বাহিনী দেশটাকে লুটেপুটে খাচ্ছে। সেখানে সরকার বিরোধীরা জীবন বাঁচাতে ও ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে এসব দেশে আসেন; আশ্রয় প্রার্থনা করেন। এটাই স্বাভাবিক এখানকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও ইমিগ্রেশন বিভাগের বিভিন্ন সংগঠন চাইবে যাতে করে এদের আশ্রয় প্রার্থণা গ্র্যান্ট না হয়। তাই তারা সরকারের এসব অপপ্রচার ও বিভিন্ন তথ্য-উপাত্তকে রেফারেন্স হিসেবে ইমিগ্রেশন আদালতে পেশ করছে। এসব বাংলাদেশীদের সহায়তার পরিবর্তে বেকায়দা ফেলছে খোদ সরকার। যা সত্যিই দেশের জন্য লজ্জাজনক এবং দূর্ভাগ্য।’
আবদুল লতীফ স¤্রাট আরো বলেন, ‘আপনি খেয়াল করলে দেখবেন সরকার একদিকে বলছে দেশে সব জঙ্গীবাদ নির্মূল করেছি আমরা। আবার অন্যদিকে বলছে বাংলাদেশ জঙ্গীবাদের উত্থান ঘটেছে। বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় আসলে তা আরো বেড়ে যাবে। আমাদের সবাইকে জঙ্গী জঙ্গী বলে একটা রাজনৈতিক ফায়দা লুফে নিচ্ছে সরকার। তারা মনে করে এসব করে আজীবন ক্ষমতায় টিকে থাকবে। বরং একদিন তাদের জন্য তা বুমেরাং হয়ে দাঁড়াবে। দেশকে ছোট করে; দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে তারা ভুল করছে।’
রাজনৈতিক মতাদর্শ যাই থাকুক না কেন; অবিলম্বে সরকার এসব দেশ বিরোধী এসব মিথ্যা প্রপাগান্ডা বন্ধের দাবি সবার। বর্তমান সরকার বাংলাদেশে সুষ্ঠু রাজনৈতিক ধারা প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসবে বলেও প্রত্যাশা করেন প্রবাসী বাংলাদেশী, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী ও বিশিষ্টজনেরা। (সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা)