নিউইয়র্ক ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বিএনপির স্থায়ী ও উপদেষ্টা পরিষদসহ ৫৯২ জনের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি ঘোষিত : ফালুর পদত্যাগ: মর্যাদার প্রশ্নে অনেকের মাঝে রাগ-ক্ষোভ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০১৬
  • / ৭৩১ বার পঠিত

ঢাকা: সম্মেলনের সাড়ে চার মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করল বিএনপি। স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদসহ ৫৯২ জনের নির্বাহী কমিটিতে এবার অনেক নতুন মুখ জায়গা পেয়েছেন। আবার গুরুত্ব হারিয়েছেন অনেকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের স্ত্রী-সন্তানেরাও আছেন কমিটিতে। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কমিটিতে নতুন মুখের ছড়াছড়ি থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। বলা হচ্ছে, এটি বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কমিটি। কিন্তু কমিটিতে সে অর্থে বড় কোনো চমক নেই। কমিটি ঘোষণার পরপরই পদপদবি নিয়ে নেতাদের অনেকে রাগ, হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
বিএনপি এ কমিটিকে ‘পূর্ণাঙ্গ’ বললেও দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি এখনো অপূর্ণাঙ্গ রয়ে গেছে। ১৯ সদস্যের এ কমিটির ১৭ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। খসরু গত কমিটিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সালাহউদ্দিন আহমেদ (অনুপ্রবেশের দায়ে শিলংয়ে আটক) যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এ কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন এম শামসুল ইসলাম ও সারোয়ারী রহমান। সারোয়ারীকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রাখা হয়েছে। কিন্তু শামসুল ইসলাম কোথাও নেই। তিনি অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী।
শনিবার (৬ আগষ্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর মোট চার ধাপে এ কমিটি ঘোষণা করা হলো। তবু স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দুটি, যুববিষয়ক, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সহসম্পাদকের পাঁচটি পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ঘোষিত নতুন স্থায়ী কমিটিতে ১৭ জন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন ৭৩ জন। নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্য আছেন ৫০২ জন। এর মধ্যে ৩৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান, ৭ জন যুগ্ম মহাসচিব, ১০ জন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে আছেন ১৬১ জন কর্মকর্তা। বাকিরা সদস্য। সদস্যদের মধ্যে ১১৩ জন নতুন মুখ। আসাদুজ্জামান রিপন ও আবু নাসের মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে বিশেষ সম্পাদক করা হয়েছে। কিন্তু দায়িত্ব স্পষ্ট করা হয়নি।
নতুন কমিটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অত্যন্ত ভাইব্র্যান্ট ও ডায়নামিক কমিটি হয়েছে। আশা করি, এ কমিটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদাধিকারবলে স্থায়ী কমিটির সদস্য। গত কমিটিতে তারেক ছিলেন ১৯ নম্বরে। এবার তাঁর নাম রাখা হয়েছে খালেদা জিয়ার পরে। প্রসঙ্গত, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আর এ গণি ও খন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হয়েছে।
ক্ষোভ, পদত্যাগ: এ্ই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে কমিটি নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কমিটিতে অনেক ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা মানা হয়নি। দলে তাঁদের ‘ত্যাগের’ যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাও ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। এর মধ্যে অন্তত দুজন আছেন ভাইস চেয়ারম্যান। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্যপদের জন্য আলোচিত ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আবদুল আউয়াল মিন্টু। কিন্তু ৩৫ সদস্যের ভাইস চেয়ারম্যানদের তালিকায় খন্দকার মাহবুবের নাম ২৩ নম্বরে ও মিন্টুর নাম রয়েছে ৩০ নম্বরে। তবে এ ব্যাপারে তাঁরা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পরপরই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন নতুন ভাইস চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু। তাঁর মালিকানাধীন বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভিতে পদত্যাগের খবর প্রচার করা হয়। তবে, বিএনপির দপ্তর কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছে। তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে, গত রাতে নতুন কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান কমিটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার চেয়ে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীমুর রহমান বলেন, তিনি আগের কমিটিতে সাত বছর সহ দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। এবার তাঁকে তিন নম্বর সহ প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। তাঁর মতে, এটি পদাবনতি। এ ছাড়া এক নম্বর সহ প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে তাঁর কনিষ্ঠ একজনকে।
গত কমিটিতে দলের গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এবার তাঁকে প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। এতে তিনি বিরক্ত ও হতাশ হয়েছেন বলে জানা গেছে। কারণ, ছাত্রদলের যে কমিটিতে তিনি সভাপতি ছিলেন, সেখানে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। নতুন কমিটিতে তাঁকে যুগ্ম মহাসচিব করা হয়েছে। প্রচার সম্পাদক পদটি যুগ্ম মহাসচিবের তিন ধাপ পরের পদ।
আগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কাজী মাজহারুল ইসলাম। এবার তাঁকে নির্বাহী কমিটির সদস্যপদে রাখা হয়েছে। নতুন স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে ফাওয়াজ হোসেনকে। তিনি কমিটিতে নতুন মুখ।
দেখা গেছে, এবার নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক অনেক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সদস্যদের ক্রমবিন্যাসে জ্যেষ্ঠতা না মানার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাসান মামুন, নুরুল ইসলাম (নয়ন), বজলুল করিম চৌধুরীসহ অনেকের নাম রাখা হয়েছে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও সহ সভাপতি মামুনুর রশীদের পরে। এ নিয়ে কয়েকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গুরুত্ব হারিয়েছেন অনেকে: বিএনপির ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো বলছে, গত কমিটির প্রভাবশালী অনেক নেতা এবার কিছুটা গুরুত্ব হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও মিজানুর রহমান মিনু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার ও মশিউর রহমান, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ (জনি) উল্লেখযোগ্য। আব্দুল লতিফ ও নাজিম উদ্দিন আলম বাদে বাকিদের এবার চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রাখা হয়েছে। জনিকে শুধু সদস্যপদে রাখা হয়েছে। নাজিম উদ্দিনের নাম কমিটিতেই নেই। এছাড়া দলের অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরীর সাবেক সদস্যসচিব আবদুস সালামও আছেন উপদেষ্টা পরিষদে। তাঁদের অনেকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
২২ নতুন ভাইস চেয়ারম্যান: ৩৫ সদস্যের ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ২২ জন নতুন মুখ। তাঁদের বেশির ভাই উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। আগের কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন ১৫ জন। এর মধ্যে শমশের মবিন চৌধুরী রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। আর রাজিয়া ফয়েজ মারা গেছেন। পুরোনোদের মধ্যে আছেন টি এইচ খান, এম মোরশেদ খান, হারুন আল রশীদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, রাবেয়া চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও সেলিমা রহমান, শাহ মোফাজ্জল হোসেন ও আবদুস সালাম পিন্টু।
নতুন ভাইস চেয়ারম্যানরা হলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এম ওসমান ফারুক, মো. শাহজাহান, রুহুল আলম চৌধুরী, ইনাম আহমদ চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, আবদুল মান্নান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, বরকত উল্লা, শামসুজ্জামান দুদু, মীর মোহাম্মদ নাছির, মোসাদ্দেক আলী ফালু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী ও গিয়াস কাদের চৌধুরী।
কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে নব নিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘কমিটিতে তরুণদের সমন্বয় করা হয়েছে। তৃণমূলের অনেক দিনের প্রত্যাশা পূরণ করা হয়েছে। যাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আশা করি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে তা পালন করবেন।’
নেতাদের স্ত্রী-সন্তানেরা কমিটিতে: গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতার পরিবারের সদস্যরাও কমিটিতে পদ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন (সদস্য), তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম (সহ সাংগঠনিক), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে অপর্ণা রায় (সহ সম্পাদক), মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস (মহিলা বিষয়ক সহ সম্পাদক), রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রী শাহিদা রফিক (উপদেষ্টা), মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাই মির্জা ফয়সাল আলীম (সদস্য), ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল (সদস্য), নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী (উপদেষ্টা), নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আখতার (সদস্য), ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে নিপুণ রায় নতুন কমিটিতে পদ পেয়েছেন। এ ছাড়া টি এইচ খানের ছেলে আফজাল এইচ খান আগে থেকেই কমিটিতে আছেন।
কমিটিতে দুই যুদ্ধাপরাধীর ছেলে: যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত প্রয়াত আবদুল আলিমের ছেলে ফয়সাল আলিমকে বিএনপির কমিটিতে রাখা হয়েছে। দুজনই নির্বাহী কমিটির সদস্য। এ ছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুজ্জামান বাবরও কমিটিতে আছেন। পিন্টু ভাইস চেয়ারম্যান ও বাবর নির্বাহী কমিটির সদস্য। দুজনেই জেলে আছেন।
বিএনপির ইতিহাসে বড় কমিটি: গত কমিটি পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ছিল ৩৫১ সদস্যের। ষষ্ঠ সম্মেলনে নতুন করে ৫৬টি পদ বাড়ানো হয়। সে হিসাবে নির্বাহী কমিটি হওয়ার কথা ৪০৭ সদস্যের। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারপারসন চাইলে কমিটির আকার আরও ১০ শতাংশ বাড়াতে পারেন। কিন্তু শনিবার ঘোষিত নির্বাহী কমিটি ৫০২ সদস্যের। তা ওই ১০ শতাংশেরও বেশি।
বিএনপির ইতিহাসে বড় আকারের কমিটি নিয়ে ইতিমধ্যে দলে নানা রকম আলোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ এমনও বলছেন, এত ঢাউস আকারের নির্বাহী কমিটির সব সদস্যকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে সভা করা দুষ্কর হয়ে পড়বে। বড় কমিটির সমালোচনা উঠেছিল বিএনপির ষষ্ঠ সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনেও। তখন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানা বিএনপির সভাপতি খান মনিরুল বলেছিলেন, দলে এক শ্রেণির নেতা টিভিতে ছবি দেখানোর জন্য ব্যস্ত থাকেন। আরেক শ্রেণি বড় বড় পদ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু ফোন করলে পাওয়া যায় না। আর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ নির্বাহী কমিটির আকার ছোট করার দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘অনেক বড় কমিটি, কিন্তু কাজের নাম লবডঙ্কা।’
কেন এত বড় কমিটি সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের যে সামাজিক পরিস্থিতি, এটা একটা কারণ। আর বিগত দিনগুলোতে বিএনপি যে বিকাশ লাভ করেছে, বিশেষ করে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ছাত্রদল, যুবদল থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের তৈরি করার জন্য নতুন কমিটিতে আনতে হয়েছে। সে জন্য অবয়বটা বড় হয়েছে। (প্রথম আলো)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বিএনপির স্থায়ী ও উপদেষ্টা পরিষদসহ ৫৯২ জনের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি ঘোষিত : ফালুর পদত্যাগ: মর্যাদার প্রশ্নে অনেকের মাঝে রাগ-ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ০৯:২৫:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ অগাস্ট ২০১৬

ঢাকা: সম্মেলনের সাড়ে চার মাস পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করল বিএনপি। স্থায়ী কমিটি, উপদেষ্টা পরিষদসহ ৫৯২ জনের নির্বাহী কমিটিতে এবার অনেক নতুন মুখ জায়গা পেয়েছেন। আবার গুরুত্ব হারিয়েছেন অনেকে। কেন্দ্রীয় নেতাদের স্ত্রী-সন্তানেরাও আছেন কমিটিতে। পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কমিটিতে নতুন মুখের ছড়াছড়ি থাকলেও গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে খুব বেশি পরিবর্তন আসেনি। বলা হচ্ছে, এটি বিএনপির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় কমিটি। কিন্তু কমিটিতে সে অর্থে বড় কোনো চমক নেই। কমিটি ঘোষণার পরপরই পদপদবি নিয়ে নেতাদের অনেকে রাগ, হতাশা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
বিএনপি এ কমিটিকে ‘পূর্ণাঙ্গ’ বললেও দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি এখনো অপূর্ণাঙ্গ রয়ে গেছে। ১৯ সদস্যের এ কমিটির ১৭ জনের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। স্থায়ী কমিটির নতুন সদস্য হয়েছেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ। খসরু গত কমিটিতে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সালাহউদ্দিন আহমেদ (অনুপ্রবেশের দায়ে শিলংয়ে আটক) যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। এ কমিটি থেকে বাদ পড়েছেন এম শামসুল ইসলাম ও সারোয়ারী রহমান। সারোয়ারীকে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রাখা হয়েছে। কিন্তু শামসুল ইসলাম কোথাও নেই। তিনি অসুস্থ এবং শয্যাশায়ী।
শনিবার (৬ আগষ্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে কমিটি ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গত ১৯ মার্চ বিএনপির ষষ্ঠ জাতীয় সম্মেলনের পর মোট চার ধাপে এ কমিটি ঘোষণা করা হলো। তবু স্থায়ী কমিটির দুটি পদ ছাড়াও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদকের দুটি, যুববিষয়ক, ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও সহসম্পাদকের পাঁচটি পদে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
ঘোষিত নতুন স্থায়ী কমিটিতে ১৭ জন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রয়েছেন ৭৩ জন। নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্য আছেন ৫০২ জন। এর মধ্যে ৩৫ জন ভাইস চেয়ারম্যান, ৭ জন যুগ্ম মহাসচিব, ১০ জন সাংগঠনিক সম্পাদকসহ বিভিন্ন সম্পাদকীয় পদে আছেন ১৬১ জন কর্মকর্তা। বাকিরা সদস্য। সদস্যদের মধ্যে ১১৩ জন নতুন মুখ। আসাদুজ্জামান রিপন ও আবু নাসের মোহাম্মদ ইয়াহইয়াকে বিশেষ সম্পাদক করা হয়েছে। কিন্তু দায়িত্ব স্পষ্ট করা হয়নি।
নতুন কমিটি সম্পর্কে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘অত্যন্ত ভাইব্র্যান্ট ও ডায়নামিক কমিটি হয়েছে। আশা করি, এ কমিটি বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।’
স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমির উদ্দিন সরকার, তরিকুল ইসলাম, মাহবুবুর রহমান, আ স ম হান্নান শাহ, এম কে আনোয়ার, রফিকুল ইসলাম মিয়া, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও নজরুল ইসলাম খান। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পদাধিকারবলে স্থায়ী কমিটির সদস্য। গত কমিটিতে তারেক ছিলেন ১৯ নম্বরে। এবার তাঁর নাম রাখা হয়েছে খালেদা জিয়ার পরে। প্রসঙ্গত, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আর এ গণি ও খন্দকার দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন। মানবতাবিরোধী অপরাধে সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ফাঁসি হয়েছে।
ক্ষোভ, পদত্যাগ: এ্ই প্রতিবেদকের সাথে আলাপকালে কমিটি নিয়ে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের অভিযোগ, কমিটিতে অনেক ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা মানা হয়নি। দলে তাঁদের ‘ত্যাগের’ যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। অনেক জ্যেষ্ঠ নেতাও ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। এর মধ্যে অন্তত দুজন আছেন ভাইস চেয়ারম্যান। এ ছাড়া স্থায়ী কমিটির সদস্যপদের জন্য আলোচিত ছিলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আবদুল আউয়াল মিন্টু। কিন্তু ৩৫ সদস্যের ভাইস চেয়ারম্যানদের তালিকায় খন্দকার মাহবুবের নাম ২৩ নম্বরে ও মিন্টুর নাম রয়েছে ৩০ নম্বরে। তবে এ ব্যাপারে তাঁরা মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এদিকে কমিটি ঘোষণার পরপরই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছেন নতুন ভাইস চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক আলী ফালু। তাঁর মালিকানাধীন বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভিতে পদত্যাগের খবর প্রচার করা হয়। তবে, বিএনপির দপ্তর কোনো চিঠি পায়নি বলে জানিয়েছে। তিনি এখন দেশের বাইরে আছেন বলে জানা গেছে। জানা গেছে, গত রাতে নতুন কমিটির সহ প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান কমিটি থেকে নিজের নাম প্রত্যাহার চেয়ে দলের কেন্দ্রীয় দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শামীমুর রহমান বলেন, তিনি আগের কমিটিতে সাত বছর সহ দপ্তর সম্পাদক ছিলেন। এবার তাঁকে তিন নম্বর সহ প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। তাঁর মতে, এটি পদাবনতি। এ ছাড়া এক নম্বর সহ প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে তাঁর কনিষ্ঠ একজনকে।
গত কমিটিতে দলের গুরুত্বপূর্ণ ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি। এবার তাঁকে প্রচার সম্পাদক করা হয়েছে। এতে তিনি বিরক্ত ও হতাশ হয়েছেন বলে জানা গেছে। কারণ, ছাত্রদলের যে কমিটিতে তিনি সভাপতি ছিলেন, সেখানে সাধারণ সম্পাদক ছিলেন হাবিব-উন-নবী খান সোহেল। নতুন কমিটিতে তাঁকে যুগ্ম মহাসচিব করা হয়েছে। প্রচার সম্পাদক পদটি যুগ্ম মহাসচিবের তিন ধাপ পরের পদ।
আগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন কাজী মাজহারুল ইসলাম। এবার তাঁকে নির্বাহী কমিটির সদস্যপদে রাখা হয়েছে। নতুন স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক করা হয়েছে ফাওয়াজ হোসেনকে। তিনি কমিটিতে নতুন মুখ।
দেখা গেছে, এবার নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক অনেক নেতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু সদস্যদের ক্রমবিন্যাসে জ্যেষ্ঠতা না মানার অভিযোগ উঠেছে। নির্বাহী কমিটিতে ছাত্রদলের সাবেক নেতা হাসান মামুন, নুরুল ইসলাম (নয়ন), বজলুল করিম চৌধুরীসহ অনেকের নাম রাখা হয়েছে ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসান ও সহ সভাপতি মামুনুর রশীদের পরে। এ নিয়ে কয়েকজন ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
গুরুত্ব হারিয়েছেন অনেকে: বিএনপির ওয়াকিবহাল সূত্রগুলো বলছে, গত কমিটির প্রভাবশালী অনেক নেতা এবার কিছুটা গুরুত্ব হারিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান ও মিজানুর রহমান মিনু, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আকবর খোন্দকার ও মশিউর রহমান, প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদীন ফারুক, সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ (জনি) উল্লেখযোগ্য। আব্দুল লতিফ ও নাজিম উদ্দিন আলম বাদে বাকিদের এবার চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদে রাখা হয়েছে। জনিকে শুধু সদস্যপদে রাখা হয়েছে। নাজিম উদ্দিনের নাম কমিটিতেই নেই। এছাড়া দলের অর্থনৈতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরীর সাবেক সদস্যসচিব আবদুস সালামও আছেন উপদেষ্টা পরিষদে। তাঁদের অনেকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ।
২২ নতুন ভাইস চেয়ারম্যান: ৩৫ সদস্যের ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে ২২ জন নতুন মুখ। তাঁদের বেশির ভাই উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। আগের কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন ১৫ জন। এর মধ্যে শমশের মবিন চৌধুরী রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। আর রাজিয়া ফয়েজ মারা গেছেন। পুরোনোদের মধ্যে আছেন টি এইচ খান, এম মোরশেদ খান, হারুন আল রশীদ, শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আবদুল্লাহ আল নোমান, সাদেক হোসেন খোকা, রাবেয়া চৌধুরী, হাফিজ উদ্দিন আহম্মদ, চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী ও সেলিমা রহমান, শাহ মোফাজ্জল হোসেন ও আবদুস সালাম পিন্টু।
নতুন ভাইস চেয়ারম্যানরা হলেন খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এম ওসমান ফারুক, মো. শাহজাহান, রুহুল আলম চৌধুরী, ইনাম আহমদ চৌধুরী, শওকত মাহমুদ, আবদুল মান্নান, ইকবাল হাসান মাহমুদ, বরকত উল্লা, শামসুজ্জামান দুদু, মীর মোহাম্মদ নাছির, মোসাদ্দেক আলী ফালু, এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, জয়নাল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী ও গিয়াস কাদের চৌধুরী।
কমিটি সম্পর্কে জানতে চাইলে নব নিযুক্ত ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘কমিটিতে তরুণদের সমন্বয় করা হয়েছে। তৃণমূলের অনেক দিনের প্রত্যাশা পূরণ করা হয়েছে। যাঁকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, আশা করি সবাই নিজ নিজ অবস্থান থেকে তা পালন করবেন।’
নেতাদের স্ত্রী-সন্তানেরা কমিটিতে: গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতার পরিবারের সদস্যরাও কমিটিতে পদ পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ছেলে খন্দকার মারুফ হোসেন (সদস্য), তরিকুল ইসলামের ছেলে অনিন্দ্য ইসলাম (সহ সাংগঠনিক), গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে অপর্ণা রায় (সহ সম্পাদক), মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস (মহিলা বিষয়ক সহ সম্পাদক), রফিকুল ইসলাম মিয়ার স্ত্রী শাহিদা রফিক (উপদেষ্টা), মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ভাই মির্জা ফয়সাল আলীম (সদস্য), ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টুর ছেলে তাবিথ আউয়াল (সদস্য), নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী (উপদেষ্টা), নাসিরউদ্দিন আহাম্মেদ পিন্টুর স্ত্রী নাসিমা আখতার (সদস্য), ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরীর মেয়ে নিপুণ রায় নতুন কমিটিতে পদ পেয়েছেন। এ ছাড়া টি এইচ খানের ছেলে আফজাল এইচ খান আগে থেকেই কমিটিতে আছেন।
কমিটিতে দুই যুদ্ধাপরাধীর ছেলে: যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর হওয়া সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী ও যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত প্রয়াত আবদুল আলিমের ছেলে ফয়সাল আলিমকে বিএনপির কমিটিতে রাখা হয়েছে। দুজনই নির্বাহী কমিটির সদস্য। এ ছাড়া ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আসামি আবদুস সালাম পিন্টু ও লুৎফুজ্জামান বাবরও কমিটিতে আছেন। পিন্টু ভাইস চেয়ারম্যান ও বাবর নির্বাহী কমিটির সদস্য। দুজনেই জেলে আছেন।
বিএনপির ইতিহাসে বড় কমিটি: গত কমিটি পর্যন্ত বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি ছিল ৩৫১ সদস্যের। ষষ্ঠ সম্মেলনে নতুন করে ৫৬টি পদ বাড়ানো হয়। সে হিসাবে নির্বাহী কমিটি হওয়ার কথা ৪০৭ সদস্যের। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের চেয়ারপারসন চাইলে কমিটির আকার আরও ১০ শতাংশ বাড়াতে পারেন। কিন্তু শনিবার ঘোষিত নির্বাহী কমিটি ৫০২ সদস্যের। তা ওই ১০ শতাংশেরও বেশি।
বিএনপির ইতিহাসে বড় আকারের কমিটি নিয়ে ইতিমধ্যে দলে নানা রকম আলোচনা হচ্ছে। কেউ কেউ এমনও বলছেন, এত ঢাউস আকারের নির্বাহী কমিটির সব সদস্যকে নিয়ে দলীয় কার্যালয়ে সভা করা দুষ্কর হয়ে পড়বে। বড় কমিটির সমালোচনা উঠেছিল বিএনপির ষষ্ঠ সম্মেলনের কাউন্সিল অধিবেশনেও। তখন মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী থানা বিএনপির সভাপতি খান মনিরুল বলেছিলেন, দলে এক শ্রেণির নেতা টিভিতে ছবি দেখানোর জন্য ব্যস্ত থাকেন। আরেক শ্রেণি বড় বড় পদ নিয়ে বসে আছেন। কিন্তু ফোন করলে পাওয়া যায় না। আর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার সভাপতি গোলাম মোহাম্মদ নির্বাহী কমিটির আকার ছোট করার দাবি জানিয়ে বলেছিলেন, ‘অনেক বড় কমিটি, কিন্তু কাজের নাম লবডঙ্কা।’
কেন এত বড় কমিটি সাংবাদিক সম্মেলনে এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের যে সামাজিক পরিস্থিতি, এটা একটা কারণ। আর বিগত দিনগুলোতে বিএনপি যে বিকাশ লাভ করেছে, বিশেষ করে রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী নেতা-কর্মীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। ছাত্রদল, যুবদল থেকে যাঁরা আসছেন, তাঁদের তৈরি করার জন্য নতুন কমিটিতে আনতে হয়েছে। সে জন্য অবয়বটা বড় হয়েছে। (প্রথম আলো)