নিউইয়র্ক ০৮:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

ফের আক্রমণের শিকার খালেদা জিয়া

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:০৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০১৫
  • / ৪৮৪ বার পঠিত

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে গণসংযোগ করতে গিয়ে আবারো আক্রমণের শিকার হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনের পলওয়েল সুপার মার্কেটে প্রচারণা শেষ করে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ফকিরাপুল মোড়ে আসে। মোড় ইউটার্ন নেয়ার সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে গাড়িবহরে অতর্কিতভাবে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় দ্রুত গাড়িবহর কাকরাইল হয়ে সরাসরি তিনি গুলশানের বাসভবনে ফিরে যান। ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা মতিঝিল থানা পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিলে ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। মতিঝিল জোনের ভারপ্রাপ্ত ডিসি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, কিছু দুর্বৃত্তরা ফকিরাপুলে জটলা পাকায়। এ সময় আমরা ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে। গাড়িবহরে থাকা বিএনপি নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় কাওরান বাজারে খালেদা গাড়িবহরে হামলা হয়। গাড়িবহরে থাকা বিএনপি নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়া শান্তিনগরের পথসভায় অভিযোগ করে বলেছেন, ‘কাওরান বাজারে হামলা চালিয়ে তারা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে। প্রাণনাশের জন্য আমার ওপর গুলি চালানো হয়েছে। আমার গাড়িতে এখনো গুলির চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু আমরা এসবে ভয় পাই না। বিএনপির প্রতি বিপুল জনসমর্থন দেখে সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে। এ কারণে আমার গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগ ভেবেছিল বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছে। তিনি বলেন,অবৈধ এ সরকারকে সরাতে হলে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অতীতের স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় বিএনপির জনপ্রিয়তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এবারে তিন সিটির নির্বাচন বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। এই ভেবে সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে।’
বেগম জিয়া তার গাড়িবহর নিয়ে বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বের হন। এ নিয়ে বেগম জিয়া চতুর্থ দিনের মতো প্রচারণায় বের হন। এ সময় তার গাড়ির পাশে ৫ মোটরসাইকেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের সদস্যরা ছিলেন। পেছনে ছিল পুলিশের পিকআপ ভ্যান। সামনে ছিল ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মোটরসাইকেল বহর। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর নতুন বাজার, বাড্ডা, খিলগাঁও ফ্লাইওভার হয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শাহজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের মগ মার্কা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। খালেদা জিয়ার বহরে ভাঙা মাইক্রোবাস নিয়েই বেরিয়েছেন তার নিরাপত্তার রক্ষীরা। খিলগাঁও ফ্লাইওভার দিয়ে শাহজাহানপুর পৌঁছলে সড়কের দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা করতালি দিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। রামপুরার কাছে পূর্ব হাজী পাড়ায় একটি সিএনজি স্টেশনে কিছু সময়ের জন্য থেমে জ্বালানি তেল নেয় বহরের গাড়িগুলো। শাহজাহানপুরে প্রচারপত্র বিলি শেষে তিনি শান্তিনগরের টুইন টাওয়ার কনকর্ড শপিং কমপ্লেক্স এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যান নয়া পল্টনে। টুইন টাওয়ারের সামনে মির্জা আব্বাসের পক্ষে পথসভায় খালেদা জিয়া সাভারে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার উল্লেখ করে বলেন,আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত। টেলিভিশনে সব খবর আসে না। ডাকাতির সময় ওই শাখার ম্যানেজারসহ ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকারীরা কারা? এরা আওয়ামী লীগের গুন্ডা। তারা গুলি করে নিরীহ মানুষদের মেরেছে। অবৈধ এ সরকারকে সরাতে হলে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সালাহউদ্দিন আহমদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তুলে নিয়ে গেছে। এর সঙ্গে সরকার জড়িত। বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও বিভিন্ন এলাকায় মা-বোনদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। ঢাকা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে, নারী নির্যাতন বেড়েছে। নিপীড়কদের বিরুদ্ধে আপনারা সতর্ক থাকুন, নইলে নিরাপদ থাকতে পারবেন না।এ সরকারের কাছে কেউই নিরাপদ নন। দেশে কারও নিরাপত্তা নেই।প্র্রতিনিয়ত গুম-খুন-সন্ত্রাস হচ্ছে। তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের পথ সুগম করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, মির্জা আব্বাস আপনাদের এলাকার ছেলে। মেয়র ও মন্ত্রী থাকাকালে এলাকায় অনেক উন্নয়ন কাজ করেছে, মেয়র নির্বাচিত হলে আরো উন্নয়ন করতে পারবে।
পলওয়েল মার্কেটেরে নিচে এক পথসভায় খালেদা জিয়া বলেন, আমি সন্তান হারিয়েছি আব্বাস আমার সন্তানতুল্য তাকে ভোট দিয়ে আমার পুত্রশোক লাঘব করবেন। গণসংযোগের তখন ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ। (দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

ফের আক্রমণের শিকার খালেদা জিয়া

প্রকাশের সময় : ০৫:০৮:০৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল ২০১৫

ঢাকা: ঢাকা দক্ষিণের প্রার্থী মির্জা আব্বাসের পক্ষে গণসংযোগ করতে গিয়ে আবারো আক্রমণের শিকার হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নয়াপল্টনের পলওয়েল সুপার মার্কেটে প্রচারণা শেষ করে খালেদা জিয়ার গাড়িবহর ফকিরাপুল মোড়ে আসে। মোড় ইউটার্ন নেয়ার সময় রাত সাড়ে আটটার দিকে গাড়িবহরে অতর্কিতভাবে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। এ সময় দ্রুত গাড়িবহর কাকরাইল হয়ে সরাসরি তিনি গুলশানের বাসভবনে ফিরে যান। ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা মতিঝিল থানা পুলিশ তাদেরকে ধাওয়া দিলে ছত্রভঙ্গ হয়ে চলে যায়। মতিঝিল জোনের ভারপ্রাপ্ত ডিসি অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, কিছু দুর্বৃত্তরা ফকিরাপুলে জটলা পাকায়। এ সময় আমরা ধাওয়া দিলে তারা পিছু হটে। গাড়িবহরে থাকা বিএনপি নেতারা জানান, আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে। এর আগে সোমবার সন্ধ্যায় কাওরান বাজারে খালেদা গাড়িবহরে হামলা হয়। গাড়িবহরে থাকা বিএনপি নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ কর্মীরা এ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে খালেদা জিয়া শান্তিনগরের পথসভায় অভিযোগ করে বলেছেন, ‘কাওরান বাজারে হামলা চালিয়ে তারা আমার প্রাণনাশের চেষ্টা করেছে। প্রাণনাশের জন্য আমার ওপর গুলি চালানো হয়েছে। আমার গাড়িতে এখনো গুলির চিহ্ন রয়েছে। কিন্তু আমরা এসবে ভয় পাই না। বিএনপির প্রতি বিপুল জনসমর্থন দেখে সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে। এ কারণে আমার গাড়িবহরে হামলা করা হয়েছে। তারা আওয়ামী লীগ ভেবেছিল বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে না। নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেছে। তিনি বলেন,অবৈধ এ সরকারকে সরাতে হলে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। অতীতের স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় বিএনপির জনপ্রিয়তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এবারে তিন সিটির নির্বাচন বিএনপির নিরঙ্কুশ বিজয় হবে। এই ভেবে সরকার উন্মাদ হয়ে গেছে।’
বেগম জিয়া তার গাড়িবহর নিয়ে বিকেল পাঁচটা ২০ মিনিটে গুলশানের বাসভবন ফিরোজা থেকে বের হন। এ নিয়ে বেগম জিয়া চতুর্থ দিনের মতো প্রচারণায় বের হন। এ সময় তার গাড়ির পাশে ৫ মোটরসাইকেলে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশের সদস্যরা ছিলেন। পেছনে ছিল পুলিশের পিকআপ ভ্যান। সামনে ছিল ছাত্রদল নেতা-কর্মীদের মোটরসাইকেল বহর। খালেদা জিয়ার গাড়িবহর নতুন বাজার, বাড্ডা, খিলগাঁও ফ্লাইওভার হয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে শাহজাহানপুরে মির্জা আব্বাসের মগ মার্কা প্রতীকের পক্ষে প্রচারণা শুরু করেন। খালেদা জিয়ার বহরে ভাঙা মাইক্রোবাস নিয়েই বেরিয়েছেন তার নিরাপত্তার রক্ষীরা। খিলগাঁও ফ্লাইওভার দিয়ে শাহজাহানপুর পৌঁছলে সড়কের দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে বিএনপি কর্মী-সমর্থকরা করতালি দিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান। রামপুরার কাছে পূর্ব হাজী পাড়ায় একটি সিএনজি স্টেশনে কিছু সময়ের জন্য থেমে জ্বালানি তেল নেয় বহরের গাড়িগুলো। শাহজাহানপুরে প্রচারপত্র বিলি শেষে তিনি শান্তিনগরের টুইন টাওয়ার কনকর্ড শপিং কমপ্লেক্স এলাকায় প্রচারণা চালিয়ে যান নয়া পল্টনে। টুইন টাওয়ারের সামনে মির্জা আব্বাসের পক্ষে পথসভায় খালেদা জিয়া সাভারে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার উল্লেখ করে বলেন,আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ ব্যাংক ডাকাতিতে জড়িত। টেলিভিশনে সব খবর আসে না। ডাকাতির সময় ওই শাখার ম্যানেজারসহ ছয়জনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকারীরা কারা? এরা আওয়ামী লীগের গুন্ডা। তারা গুলি করে নিরীহ মানুষদের মেরেছে। অবৈধ এ সরকারকে সরাতে হলে গণ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সালাহউদ্দিন আহমদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন তুলে নিয়ে গেছে। এর সঙ্গে সরকার জড়িত। বর্ষবরণে যৌন নিপীড়নের ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি ও বিভিন্ন এলাকায় মা-বোনদের ওপর নিপীড়ন চালানো হয়েছে। ঢাকা এখন আতঙ্কের নগরীতে পরিণত হয়েছে, নারী নির্যাতন বেড়েছে। নিপীড়কদের বিরুদ্ধে আপনারা সতর্ক থাকুন, নইলে নিরাপদ থাকতে পারবেন না।এ সরকারের কাছে কেউই নিরাপদ নন। দেশে কারও নিরাপত্তা নেই।প্র্রতিনিয়ত গুম-খুন-সন্ত্রাস হচ্ছে। তিন সিটি নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দিয়ে গণতন্ত্রের পথ সুগম করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, মির্জা আব্বাস আপনাদের এলাকার ছেলে। মেয়র ও মন্ত্রী থাকাকালে এলাকায় অনেক উন্নয়ন কাজ করেছে, মেয়র নির্বাচিত হলে আরো উন্নয়ন করতে পারবে।
পলওয়েল মার্কেটেরে নিচে এক পথসভায় খালেদা জিয়া বলেন, আমি সন্তান হারিয়েছি আব্বাস আমার সন্তানতুল্য তাকে ভোট দিয়ে আমার পুত্রশোক লাঘব করবেন। গণসংযোগের তখন ছিলেন ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, শ্রমিক দল সভাপতি আনোয়ার হোসেন, ছাত্রদলের সভাপতি রাজীব আহসান প্রমুখ। (দৈনিক ইত্তেফাক)