নিউইয়র্ক ১১:৫৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্যে ‘বিব্রত’ প্রধানমন্ত্রী : মন্ত্রী কামরুল-মোজাম্মেলকে আপিল বিভাগে তলব

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬
  • / ১৪২৪ বার পঠিত

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিব্রত’ হয়েছেন। অপরদিকে বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় এর ব্যাখ্যা চেয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিব্রত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ৭ মার্চ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, ‘বিচার বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, এটি সরকারের অবস্থান নয়।’ এ সময় প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্যকারী খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচ্য সূচি শেষে বিচার বিভাগ সম্পর্কে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দু’জন মন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন, এতে মনে হয় যেন ওই সংগঠনটি সরকারের কোনো সংগঠন এবং এই বক্তব্য যেন সরকারের বক্তব্য। সভায় তিনি জানান, বিচার বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে তিনি ও তার সরকার বিব্রত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, যদি কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে চান, তাহলে রাস্তায় গিয়ে দেন। মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেলেই যা খুশি বলবেন এবং যে কোনো সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলবেন, এটা ঠিক নয়।
Minister_Kamrul-Mozammel Picদুই মন্ত্রীকে আপিল বিভাগে তলব: বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় এর ব্যাখ্যা চেয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে। ৮ মার্চ মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে নয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, সম্প্রতি আপিল বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রী অশুভ ও আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন। এটি বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। তাই ১৫ মার্চ সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে। এর আগে ৭ মার্চ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে ভর্ৎসনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের এ বক্তব্য সরকারের নয়। বরং এ দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে সরকার বিব্রত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, কোন লোভে পড়ে আপনারা এমন বক্তব্য দেন? ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মীর কাসেম আলীর রায় ঘোষণার আগে ৫ মার্চ শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় সরকারের ওই দুই মন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম প্রধান বিচারপতির একটি বক্তব্য উল্লেখ করে বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানি আবার করা উচিত। আর মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি যদি উন্মুক্ত আদালতে এমন কথা বলে থাকেন তাহলে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তার এটা বোঝা উচিত। এটা করে থাকলে এটার প্রতিকার কী- এটা তিনি নিশ্চয় জানেন। হয় তিনি এটা প্রত্যাহার করে নেবেন। আর না হয় প্রধান বিচারপতির আসনে থাকার সুযোগ কতটুকু আছে, তা তার ওপরই রাখতে চাই।’
Minister_Kamrul-Mozammel...আরো উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে, এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গত ৫ মার্চ রাজধানীতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সেমিনারে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মীর কাসেমের মামলা থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরে যাওয়া এবং এই আপিল মামলা পুনরায় শুনানির দাবি জানান।(সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্ত্রীদের বক্তব্যে ‘বিব্রত’ প্রধানমন্ত্রী : মন্ত্রী কামরুল-মোজাম্মেলকে আপিল বিভাগে তলব

প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:৫১ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ মার্চ ২০১৬

ঢাকা: প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিব্রত’ হয়েছেন। অপরদিকে বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় এর ব্যাখ্যা চেয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহাকে নিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘বিব্রত’ হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। ৭ মার্চ সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নিজেই এ কথা জানিয়েছেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করেছেন, ‘বিচার বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য ব্যক্তিগত, এটি সরকারের অবস্থান নয়।’ এ সময় প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে মন্তব্যকারী খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রিসভার বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিসভার নির্ধারিত আলোচ্য সূচি শেষে বিচার বিভাগ সম্পর্কে দুই মন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি সংগঠনের অনুষ্ঠানে গিয়ে দু’জন মন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন, এতে মনে হয় যেন ওই সংগঠনটি সরকারের কোনো সংগঠন এবং এই বক্তব্য যেন সরকারের বক্তব্য। সভায় তিনি জানান, বিচার বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে তিনি ও তার সরকার বিব্রত হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, যদি কেউ এ ধরনের বক্তব্য দিতে চান, তাহলে রাস্তায় গিয়ে দেন। মন্ত্রিসভার সদস্য হয়ে বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পেলেই যা খুশি বলবেন এবং যে কোনো সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানে গিয়ে কথা বলবেন, এটা ঠিক নয়।
Minister_Kamrul-Mozammel Picদুই মন্ত্রীকে আপিল বিভাগে তলব: বিচার বিভাগ নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় এর ব্যাখ্যা চেয়ে খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ১৫ মার্চ সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে। ৮ মার্চ মঙ্গলবার সকালে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে নয় সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, সম্প্রতি আপিল বিভাগ নিয়ে দুই মন্ত্রী অশুভ ও আদালত অবমাননাকর বক্তব্য দিয়েছেন। এটি বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। তাই ১৫ মার্চ সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানাতে বলা হয়েছে। এর আগে ৭ মার্চ সোমবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাকে নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করায় খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হককে ভর্ৎসনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন তাদের এ বক্তব্য সরকারের নয়। বরং এ দুই মন্ত্রীর বক্তব্যে সরকার বিব্রত হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে অনির্ধারিত আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে দুই মন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, কোন লোভে পড়ে আপনারা এমন বক্তব্য দেন? ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দেয়া থেকে বিরত থাকারও নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। মীর কাসেম আলীর রায় ঘোষণার আগে ৫ মার্চ শনিবার একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির আলোচনা সভায় সরকারের ওই দুই মন্ত্রী প্রধান বিচারপতিকে জড়িয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। ওই অনুষ্ঠানে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম প্রধান বিচারপতির একটি বক্তব্য উল্লেখ করে বলেছেন, প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে নতুন বেঞ্চ গঠন করে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় মীর কাসেম আলীর আপিল শুনানি আবার করা উচিত। আর মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আকম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি যদি উন্মুক্ত আদালতে এমন কথা বলে থাকেন তাহলে দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে তার এটা বোঝা উচিত। এটা করে থাকলে এটার প্রতিকার কী- এটা তিনি নিশ্চয় জানেন। হয় তিনি এটা প্রত্যাহার করে নেবেন। আর না হয় প্রধান বিচারপতির আসনে থাকার সুযোগ কতটুকু আছে, তা তার ওপরই রাখতে চাই।’
Minister_Kamrul-Mozammel...আরো উল্লেখ্য, গত ২৪ ফেব্রুয়ারী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর আপিল মামলা শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি বলেছিলেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবং তদন্ত সংস্থা যে গাফিলতি করেছে, এজন্য তাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো উচিত। প্রধান বিচারপতির এ বক্তব্যকে কেন্দ্র করে গত ৫ মার্চ রাজধানীতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সেমিনারে খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক মীর কাসেমের মামলা থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরে যাওয়া এবং এই আপিল মামলা পুনরায় শুনানির দাবি জানান।(সূত্র: দৈনিক যুগান্তর)