‘পলাতক’ এমপি সংসদে, হাজিরা খাতায় সই

- প্রকাশের সময় : ০৪:২৫:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০১৫
- / ৯৪৬ বার পঠিত
টাঙ্গাইল: টাঙ্গাইল-৪ (ঘাটাইল) আসন থেকে নির্বাচিত এপি আমানুর রহমান খান (রানা) পুলিশের কাছে পলাতক। বীর মুক্তিযোদ্ধা টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ তাঁকে খুঁজছে। তাঁকে ধরতে টাঙ্গাইল ও ঢাকায় পুলিশ কয়েক দফা অভিযান চালায় বলে দাবিও করেছিল। ‘পলাতক’ এই এমপি গত রোববার (৫ জুলাই) সংসদে হাজির হয়ে সদস্যপদ রক্ষার জন্য হাজিরা খাতায় সই করে চলে যান। সংশ্লিস্টরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এমপি আমানুর রানার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক আওয়ামী লীগ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, সম্প্রতি উচ্চ আদালতে এমপি রানা একটি আবেদন করেন। সেখানে তিনি ‘পুলিশি হয়রানি’ থেকে রক্ষা পেতে আদালতের আদেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে গ্রেপ্তার হতে পারেন, এ আশঙ্কায় আর যাননি।
এদিকে সংসদ সচিবালয় থেকে জানা গছে, আমানুর রহমান খান টানা ৬৫ কার্যদিবস সংসদে অনুপস্থিত ছিলেন। আইন অনুযায়ী টানা ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে সদস্যপদ বাতিল হয়ে যায়। এব্যাপারে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের হুইপ আতিকুর রহমান বলেন, গত রোববার সাংসদ আমানুরের সঙ্গে তাঁর দেখা হয়নি। তিনি বলেন, পুলিশের কাছে পলাতক হলেও তাঁকে ধরিয়ে দেওয়ার কাজ সংসদ করবে এমনটা নয়। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে যদি আগেই বিষয়টি সংসদকে জানানো হতো বা স্পিকারের দৃষ্টিতে আনা হতো, তাহলে স্পিকার এ ব্যাপারে করণীয় নির্ধারণ করতে পারতেন।
টাঙ্গাইলের প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেয়। এ হত্যা ঘটনার সঙ্গে এমপি আমানুর সরাসরি জড়িত বলে তারা জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে। হত্যাকান্ডের সময় এমপি ও তাঁর ভাই ট্ঙ্গাাইল পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান (মুক্তি) উপস্থিত ছিলেন বলে আসামিরা জানিয়েছে। এ ছাড়া হত্যার পরিকল্পনায় রানা আরও দুই ভাই টাঙ্গাইলের ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও সানিয়াত খান (বাপ্পা) যুক্ত ছিলেন বলে আসামিরা উল্লেখ করেছে। এই স্বীকারোক্তির খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে চার ভাই পলাতক। গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বরের পর থেকে আমানুরকে আর সংসদে দেখা যায়নি।
টাঙ্গাইল পুলিশের একটি সূত্র বলেছে, আমানুর ও তাঁর ভাই সহিদুল ঢাকায় আছেন বলে তারা জেনেছে। তবে ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছেন, এ জন্য কয়েকবার চেষ্টা করেও তাঁদের ধরা যায়নি। তবে অপর দুই ভাই জাহিদুর ও সানিয়াত সম্ভবত দেশে নেই।
আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম হাফিজুর রহমান বলেন, গত সোমবার সাংসদ আমানুর উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন, এমন খবরের ভিত্তিতে তাঁরা হাইকোর্ট এলাকায় নজরদারি বাড়ান। সম্ভবত পুলিশের উপস্থিতি টের পাওয়ায় আমানুর আর আদালতে যাননি। (প্রথম আলো)