নিউইয়র্ক ১১:৩৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

তিস্তার পানি বণ্টনে চুক্তির আশ্বাস মোদির : চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স শেখ হাসিনার

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:১৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫
  • / ৬২৪ বার পঠিত

ঢাকা: তিস্তা ও ফেনী নদীর পানি বণ্টনে চুক্তির আশ্বাস দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা মহাকাশ পর্যন্ত। শনিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের শাপলা হলে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে এ যুগের মহান নেতা আখ্যায়িত করে নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিস্তা ও ফেনী নদীর পানি বণ্টন চুক্তিতে সহযোগিতার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাগরেহাটে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এবং ভারতের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুই বছরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ১১শ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। রামপালে ভারতের সহায়তায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। যথাসময়ে কাজ শেষ হবে।যথাযথ আইন মেনেই সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। গত মাসে ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বিল পাস হওয়ার বিষয়ে মোদি বলেন, এতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি আরো বলেন, গতবছর পার্লামেন্টে জলসীমার অনুমোদন দেয়া হয়। এরমাধ্যমে সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে দুই জাতির সামনে যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ নিশ্চিত করবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। আজকের আলোচনা সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। কানেক্টিভিটি জোরদারে এগিয়ে যেতে দুই দেশের সামনে বড় ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সড়ক-রেল-সমুদ্র এমনকি ডিজিটাল কানেক্টিভিটিতে উভয় দেশ কাজ করবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত দুইশ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলেও ঘোষণা দেন মোদি। বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। ভারতের পক্ষ থেকে মানবপাচার ও জাল নোটের বিস্তার রোধে সহায়তার পাশাপাশি উপকূলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে উল্লেখ করেন মোদি। তিনি বলেন, এতে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ জোরদার হবে।
শেখ হাসিনার সরকারের ভিশন-২০২১ এর প্রশংসা করেন মোদি। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স: প্রধানমন্ত্রী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একই সঙ্গে সীমান্ত শান্তিপূর্ণ রাখা এবং এ বিষয়ে পারস্পারিক সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়ে আমরা আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি। শনিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে খুবই ফলপ্রসূ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আলোচনা ছিলো গঠনমূলক। স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল বিনিময়ের ফলে ৬৮ বছরের মানবিক সমস্যা সমাধান হওয়ায় আমরা আনন্দিত। তিনি জানান, দুদেশের মধ্যে ৭টি যৌথ প্রকল্পের ফলক উন্মোচন, ২২টি চুক্তি ও এমওইউ সই হয়েছে। মোদির সফর বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন আশার সঞ্চার করেছে মন্তব্য করেন তিনি।
বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারত সহযোগিতা করবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কানেকটিভিটি শুধু দুদেশের জন্যই নয়, অঞ্চলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। উপকূলীয় নৌ-চলাচল চুক্তি, বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রটোকলের স্বাক্ষর এবং এর সাথে নতুন বাস সার্ভিসগুলোর ফ্ল্যাগ অফ এ অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ প্রতিষ্ঠার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের দৃষ্টান্ত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি আমাদের দুইদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন এবং এ বিষয়ে তার সরকারের সার্বিক সহায়তার জন্য মংলা ও ভেড়ামারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আমরা সম্মত হয়েছি। তিনি বলেন, দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমাদের পারস্পারিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট। এরমধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, অবকাঠামোহত উন্নয়ন, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি, সংস্কৃতি ও ব্লু ইকোনমি। সহযোগিতার এই বিস্তৃত ক্ষেত্র আমাদের সম্পর্কের গভীরতার ব্যপ্তি এবং পরিপক্কতার নিদর্শন।
সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আজ আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা যৌথভাবে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন সম্ভাবনার যুগে ও অধিকতর উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ আগে আমরা স্থল সীমানা চুক্তি ১৯৭৪ অনুসমর্থনের পত্র বিনিময় করেছি। এর মাধ্যমে ৬৮ বছরের মানবিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভারতের জনগণ এবং ভারতের সব রাজনৈতিক দলকে এই চুক্তির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা। একইসঙ্গে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জির অবদানের কথাও স্মরণ করছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি।
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা। বৈঠক চলে পৌণে ৬টা পর্যন্ত। বৈঠকের আগে দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রটোকল স্বাক্ষর এবং সম্মতিপত্র বিনিময় করা হয়।
শনিবার বিকাল পৌণে ৪টার দিকে বৈঠকে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হন নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে স্বাগত জানান। (দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

তিস্তার পানি বণ্টনে চুক্তির আশ্বাস মোদির : চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স শেখ হাসিনার

প্রকাশের সময় : ০৭:১৬:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ জুন ২০১৫

ঢাকা: তিস্তা ও ফেনী নদীর পানি বণ্টনে চুক্তির আশ্বাস দিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সহযোগিতা মহাকাশ পর্যন্ত। শনিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ের শাপলা হলে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। এর আগে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সাংবাদিক সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুকে এ যুগের মহান নেতা আখ্যায়িত করে নরেন্দ্র মোদি দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিস্তা ও ফেনী নদীর পানি বণ্টন চুক্তিতে সহযোগিতার কথা জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদি বাগরেহাটে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে এবং ভারতের সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামী দুই বছরে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের পরিমাণ ১১শ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে। রামপালে ভারতের সহায়তায় বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। যথাসময়ে কাজ শেষ হবে।যথাযথ আইন মেনেই সেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হবে। গত মাসে ভারতীয় পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত বিল পাস হওয়ার বিষয়ে মোদি বলেন, এতে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গভীরভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি আরো বলেন, গতবছর পার্লামেন্টে জলসীমার অনুমোদন দেয়া হয়। এরমাধ্যমে সমুদ্র অর্থনীতির উন্নয়নে দুই জাতির সামনে যথেষ্ট সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ নিশ্চিত করবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে অভিন্ন সীমান্ত রয়েছে। আজকের আলোচনা সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। কানেক্টিভিটি জোরদারে এগিয়ে যেতে দুই দেশের সামনে বড় ধরনের সুযোগ তৈরি হয়েছে। সড়ক-রেল-সমুদ্র এমনকি ডিজিটাল কানেক্টিভিটিতে উভয় দেশ কাজ করবে।
বাংলাদেশের উন্নয়নে ভারত দুইশ মিলিয়ন ডলার ঋণ দেবে বলেও ঘোষণা দেন মোদি। বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত-নেপাল-ভুটানের মধ্যে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। ভারতের পক্ষ থেকে মানবপাচার ও জাল নোটের বিস্তার রোধে সহায়তার পাশাপাশি উপকূলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে বলে উল্লেখ করেন মোদি। তিনি বলেন, এতে দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থ জোরদার হবে।
শেখ হাসিনার সরকারের ভিশন-২০২১ এর প্রশংসা করেন মোদি। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।
চরমপন্থার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স: প্রধানমন্ত্রী
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সন্ত্রাসবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়ে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। একই সঙ্গে সীমান্ত শান্তিপূর্ণ রাখা এবং এ বিষয়ে পারস্পারিক সহযোগিতা বজায় রাখার বিষয়ে আমরা আমাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছি। শনিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মোদির সঙ্গে বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে খুবই ফলপ্রসূ দ্বিপাক্ষিক আলোচনা হয়েছে। আমাদের আলোচনা ছিলো গঠনমূলক। স্থল সীমান্ত চুক্তি অনুসমর্থনের দলিল বিনিময়ের ফলে ৬৮ বছরের মানবিক সমস্যা সমাধান হওয়ায় আমরা আনন্দিত। তিনি জানান, দুদেশের মধ্যে ৭টি যৌথ প্রকল্পের ফলক উন্মোচন, ২২টি চুক্তি ও এমওইউ সই হয়েছে। মোদির সফর বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে নতুন আশার সঞ্চার করেছে মন্তব্য করেন তিনি।
বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ভারত সহযোগিতা করবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কানেকটিভিটি শুধু দুদেশের জন্যই নয়, অঞ্চলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। উপকূলীয় নৌ-চলাচল চুক্তি, বাণিজ্য চুক্তির নবায়ন, অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রটোকলের স্বাক্ষর এবং এর সাথে নতুন বাস সার্ভিসগুলোর ফ্ল্যাগ অফ এ অঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ প্রতিষ্ঠার প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের দৃষ্টান্ত।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদি আমাদের দুইদেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ঘাটতির বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন এবং এ বিষয়ে তার সরকারের সার্বিক সহায়তার জন্য মংলা ও ভেড়ামারায় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আমরা সম্মত হয়েছি। তিনি বলেন, দ্বি-পাক্ষিক বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে আমাদের পারস্পারিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রের সাথে সংশ্লিষ্ট। এরমধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সহযোগিতা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, অবকাঠামোহত উন্নয়ন, শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, তথ্য প্রযুক্তি, সংস্কৃতি ও ব্লু ইকোনমি। সহযোগিতার এই বিস্তৃত ক্ষেত্র আমাদের সম্পর্কের গভীরতার ব্যপ্তি এবং পরিপক্কতার নিদর্শন।
সাংবাদিক সম্মেলনের শুরুতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আজ আমাদের মাঝে পেয়ে আমরা আনন্দিত ও গর্বিত। এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা যৌথভাবে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নতুন সম্ভাবনার যুগে ও অধিকতর উচ্চতায় নিয়ে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ আগে আমরা স্থল সীমানা চুক্তি ১৯৭৪ অনুসমর্থনের পত্র বিনিময় করেছি। এর মাধ্যমে ৬৮ বছরের মানবিক সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান হওয়ায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মোদির নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করছি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ভারতের জনগণ এবং ভারতের সব রাজনৈতিক দলকে এই চুক্তির প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানানোর জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে আমি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা। একইসঙ্গে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখার্জির অবদানের কথাও স্মরণ করছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অপরিসীম অবদানের কথা আমরা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি।
এর আগে বিকাল ৪টার দিকে মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বসেন শেখ হাসিনা। বৈঠক চলে পৌণে ৬টা পর্যন্ত। বৈঠকের আগে দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে স্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের প্রটোকল স্বাক্ষর এবং সম্মতিপত্র বিনিময় করা হয়।
শনিবার বিকাল পৌণে ৪টার দিকে বৈঠকে অংশ নিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উপস্থিত হন নরেন্দ্র মোদি ও মমতা বন্দোপাধ্যায়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদেরকে স্বাগত জানান। (দৈনিক যুগান্তর)