ঢাকা: টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের এমপি আমানুর রহমান খান রানা ও তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তিকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগ নেতা মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় তাদের জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এ মামলায় তাদের গ্রেফতারের জন্য পুলিশ ঢাকা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন স্থানে অভিযান শুরু করেছে বলে জেলার উর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এমপির অপর দুই ভাই ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান (কাকন) ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সানিয়াত খানও (বাপ্পা) দীর্ঘদিন আতœগোপনে।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারী টাঙ্গাইল শহরের কলেজ পাড়া এলাকায় নিজ বাসার কাছ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামী করে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। দীর্ঘ তদন্তের এক পর্যায়ে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ গত আগস্টে এমপির ঘনিষ্ঠ সহযোগী আনিসুল ইসলাম (রাজা) ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করে। রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে রিমান্ডে নিয়ে গোয়েন্দা পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে। গত ২৭ আগস্ট রাজা এবং ৫ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল বিচারিক হাকিম আদালতে এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে ফারুক আহমেদ হত্যার সঙ্গে সংসদ সদস্য আমানুর, মেয়র মুক্তি এবং তাদের অপর দুই ভাই জাহিদুর ও বাপ্পার জড়িত থাকার কথা উঠে আসে। জেলা পুলিশের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, এমপি রানা ও মেয়র মুক্তিকে গ্রেফতার করতে টাঙ্গাইল পুলিশের একাধিক দল ঢাকায় রয়েছে। তারা ঢাকা মহানগর পুলিশের সহায়তায় তাদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। ২৬ নভেম্বর বুধবার সংসদ সদস্যের ন্যাম ফ্ল্যাটের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়েছিল। টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ জানান, ১১ আগস্ট রাজাকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে। কয়েক দফায় ১৫ দিন রিমান্ডের পর ২৭ আগস্ট তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে। যথাসময়ে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে বলেও জানান অশোক সিংহ। হত্যায় জড়িত অভিযোগে মোহাম্মদ আলী নামে আরেকজনকে পুলিশ ২৪ আগস্ট গ্রেফতার করে। ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি ৫ সেপ্টেম্বর জ্যেষ্ঠ বিচারক হাকিম শেখ নাজমুন নাহারের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মোহাম্মদ আলী ও আনিসুল ইসলাম রাজা শহরের দক্ষিণ কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে রাজা জানিয়েছেন, সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা ঘটনার দিন রাতে রাজাকে দায়িত্ব দেন ফারুক আহমেদকে আওয়ামী লীগ অফিস থেকে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে ডেকে নেওয়ার জন্য। পথেই ফারুক আহমেদের সঙ্গে তার দেখা হয়। রাজা তখন নিজের রিকশা ছেড়ে দিয়ে ফারুক আহমেদের রিকশায় ওঠেন এবং তাকে গ্লোবাল ট্রেনিং সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে যাওয়ার পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হওয়া নিয়ে উপস্থিত খান ভাইদের সঙ্গে ফারুক আহমেদের কথা হয়। এ কথাবার্তা বাকবিতন্ডায় গিয়ে ঠেকে। এক পর্যায়ে খান ভাইদের একজন ফারুক আহমেদকে জানান, সাধারণ সম্পাদক পদে মেয়র (সহিদুর রহমান খান মুক্তি) প্রার্থী হবেন। সানিয়াত খান বাপ্পা ফারুক আহমেদকে এ পদে প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। ফারুক আহমেদ এ বিষয়ে রাজি হননি। এ সময় ফারুক আহমেদ বলেন, সব পদ তোমরাই দখল করে নিয়েছ। আমি মাত্র জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রার্থী হতে চেয়েছি। এতেই তোমরা আমার ওপর ক্ষেপে গেলে। যাক তোমরাই সব গিলে খাও। এ কথা বলেই ফারুক আহমেদ ওই ট্রেনিং সেন্টার থেকে বের হতে শুরু করেন। সঙ্গে সঙ্গে সন্ত্রাসী কবির পেছন থেকে তাকে গুলি করে। গুলি ফারুকের পিঠে লাগে। অন্যরা ফারুক আহমেদের মুখ চেপে ধরে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে একটি অটোরিকশায় লাশ বসিয়ে রাজাসহ দুজন দুই পাশে বসেন এবং ফারুক আহমেদের বাসার কাছে তাকে ফেলে রেখে আসেন। তদন্ত কর্মকর্তা অশোক কুমার সিংহ জানান, হত্যায় জড়িত রানা এমপির ঘনিষ্ঠ আরও কয়েকজনের নামও আদালতকে বলেছেন মোহাম্মদ আলী। গ্রেফতারের স্বার্থে এদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না। টাঙ্গাইল পুলিশ সুপার সালেহ মোহাম্মদ তানভীরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ফারুক হত্যা মামলার রহস্য উদ্ঘাটিত হয়েছে। ২০১২ সালের উপনির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন আমানুর রহমান খান রানা। এ কারণে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি আবার আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারীর নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় এমপি হন রানা। পুলিশের হিসাবে, তার নামে তিনটি হত্যাসহ ৪৬টি মামলা রয়েছে। তবে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে বলে দাবি করে আসছে খান পরিবার। তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার মেয়র সহিদুর রহমান মুক্তি ২০১১ সালের পৌর নির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন। তার নামে পাঁচটি হত্যাসহ ৩৬টি মামলা হয়েছে। এসব মামলা কিছু নিষ্পত্তি ও কিছু রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রত্যাহার করা হয়েছে। অপর দুই ভাই জাহিদুর রহমান কাকন ও সানিয়াত খান বাপ্পার বিরুদ্ধে কয়টি মামলা আছে পুলিশ তা নিশ্চিত বলতে পারেনি। ফারুক হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নেতা বলেন, মামলাটি এতদিন অন্ধকারে ছিল। পুলিশের তদন্তে রহস্য উন্মোচিত হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন তারা। এখন আমরা আরও খুশি হব যদি এমপি রানা ও তার ভাইদের গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে গ্রেফতার এড়াতে এমপি রানা ও তার সহযোগীরা পালিয়ে বেড়ানোর খবরে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। খোদ আওয়ামী লীগের কোণঠাসা তৃণমূল নেতাকর্মীরা স্বস্তিতে আছেন। তাদের আর প্রকাশ্যে দেখা না যাওয়ার ঘটনাটি এখন ‘টক অব দ্য টাউন’-এ পরিণত হয়েছে।
রানার সা¤্রাজ্য : টাঙ্গাইলের নতুন সা¤্রাজ্যের অধিপতি আওয়ামী লীগের এই এমপি। বিরোধী দল থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ, এমনকি খোদ নিজ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা এমপি ও তার ভাইদের কাছে জিম্মি। তাদের ভয়ে এখানকার মানুষের মুখ খোলা বারণ। স্থানীয় সাংবাদিকরা ভয়ে কিছু লেখেন না। অঘোষিতভাবেই টাঙ্গাইল জেলার সব কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন এমপি রানা এবং তার তিন ভাই। পৌরসভার মেয়র মুক্তি, সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি বাপ্পা ও স্থানীয় পরিবহন শ্রমিক নেতা কাকন। ছোট তিন ভাই এমপি সা¤্রাজ্যের মূল সেনাপতি হিসেবে এলাকায় পরিচিত। মাদক ব্যবসা, জুয়া, হাউজি, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, দখলবাণিজ্য, উন্নয়নের নামে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি অবৈধ অস্ত্র ও সন্ত্রাসী বাহিনীর মাধ্যমে টাঙ্গাইলবাসীকে জিম্মি করে রেখেছে এই পরিবারটি। ঠিকাদারি থেকে শুরু করে পরিবহন খাত সর্বত্র প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে চাঁদার ভাগবাটোয়ার নিয়ন্ত্রণ করছেন এই চার ভাই। এক সময়ে এ পরিবারের সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ করতেন শহরের যৌনপল্লী। এখানে মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি থেকে শুরু করে সব অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিল তাদের নাম। চার ভাই-ই এখন গাড়ি, বাড়ি আর কাড়ি কাড়ি টাকায় ব্যাপক ক্ষমতাবান। এমপি রানা ও মেয়র মুক্তিরা চার ভাই জেলাজুড়ে গড়ে তুলেছেন একক আধিপত্য। তাদের এই আধিপত্য থেকে রেহাই পায়নি রিকশাওয়ালা, বাসের শ্রমিক, নির্মাণ শ্রমিক, সাধারণ ব্যবসায়ীসহ কেউই। এমপি পরিবারের এসব অপকর্মের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। দলীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে অসন্তোষ।
মিনি আদালত: এমপি রানা ও তার অন্য ভাইদের টাঙ্গাইল শহরে একটি ‘মিনি আদালত’ রয়েছে। প্রচলিত আদালতের সমান্তরালে স্বঘোষিত ওই আদালতের কাজ হচ্ছে, জেলার বিভিন্ন এলাকার জমিজমা বা অন্য কোনো সমস্যার সমাধানে টাকার বিনিময়ে সুরাহা করা। এ ছাড়া দু’পক্ষের মধ্যে অযথা ঝামেলা পাকিয়ে কারও জমির মালিককে এ আদালতে ডেকে এনে মীমাংসার জন্য টাকা আদায়। মিনি আদালতের রায় দেন এমপি রানা। অনেক সময় জায়গাগুলো এমপি রানার লোকজনই রেজিস্ট্রি করে নেয়। এক সময় রানা ওই জায়গা বিক্রি করে প্রাপ্য টাকা নিজেই নিয়ে নেন।
টর্চার সেল: জেলা শহরে টর্চার সেল নামে দুটি সেল রয়েছে। যেখানে এমপি রানা ও তার অন্য ভাইদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যক্তি অবস্থান নিলে বা কোনো কথা বা মন্তব্য করলেই এই সেলে নিয়ে টর্চারিং করা হয়। কথিত রয়েছে এই টর্চারসেলগুলোতে যারাই গেছেন কেউ অক্ষত অবস্থায় ফিরতে পারেননি। কারও হাত, পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এমনকি অনেককে জীবন দিতে হয়েছে। এই টর্চার সেলের দায়িত্বে রয়েছেন এমপি রানা ও মেয়র মুক্তির অত্যন্ত বিশ্বস্থ অর্ধশতাধিক কর্মী বাহিনী। যারা এতই বিশ্বস্থ যে, যত বিপদই আসুক, তাদের বিরুদ্ধে কখনো মুখ খুলবে না কেউ।
খুনের চিত্র: গত তিন বছরে জানামতে খান পরিবারের ক্যাডাররা অন্তত ছয়টি হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। বিগত ২০১১ সালের ১ নভেম্বর টাঙ্গাইল শহরের ভিক্টোরিয়া রোডে সাদিকুর রহমান দিপু নামক এক ইলেক্টনিক ব্যবসায়ী খুন হন। দিপু ইলেক্টনিক ব্যবসার পাশাপাশি খান পরিবারের মেঝ ছেলে কাকনের হয়ে ইয়াবা ব্যবসা করত। এক পর্যায়ে দিপুর সঙ্গে এই ব্যবসার ভাগবাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্ধ হলে দিপুকে খান পরিবারের সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। পরে খান পরিবারের সঙ্গে দ্বন্ধ আছে এমন ব্যক্তিদের নামে মামলা করতে খান পরিবার দিপুর বাবাকে বাধ্য করে।
২০১২ সালের ২৪ অক্টোবর শহরের নতুন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ওষুধ ব্যবসায়ী শাহীন শিকদারকে খান পরিবারের ক্যাডার কোয়ার্টার রনির নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গুলি করে হত্যা করে। ২০১৩ সালের ২৪ জুলাই একই সন্ত্রাসীরা জেনারেল হাসপাতালের সামনে আরেক ওষুধ ব্যবসায়ী কবীর হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে। একাধিক সূত্র জানায়, শহরের উত্তর এলাকায় খান পরিবারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্যই এ হত্যাকান্ড চালানো হয়।
২০১৩ সালের মে মাসে শহরের সুপারি বাগান রোডে তুহিন নামের এক যুবককে খান পরিবারের ক্যাডার মোর্শেদ প্রকাশ্য দিবালোকে পিটিয়ে হত্যা করে। তুহিন ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিল। সে খান পরিবারের নিয়ন্ত্রিত ইয়াবা সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ইয়াবা না নিয়ে ঢাকার অন্য সিন্ডিকেটের কাছ থেকে ইয়াবা এনে বিক্রি করত। এটাই কাল হয় তার।
২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারী রাতে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা গুলি করে হত্যা করে। এ হত্যাকান্ডের পর ফারুক আহমেদের পরিবার এর জন্য খান পরিবারকে দায়ী করে। কিন্তু চাপের মুখে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করতে বাধ্য হন।
চলতি বছর ১ এপ্রিল শহরের ঘারিন্দা রেলস্টেশন রোডে আজম নামের এক অটোরিকশা শ্রমিক নেতাকে খান পরিবারের ক্যাডার ডন সোহেলের নেতৃত্বে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে হত্যা করা হয়। আজমের ঘনিষ্ঠদের অভিযোগ, ওই এলাকার আধিপত্য বিস্তার করতেই খান পরিবার তাদের সন্ত্রাসী দিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটায়।