নিউইয়র্ক ১০:২৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৪, ১৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাতীয় ৪ নেতা হত্যায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি কিসমতের কানাডায় মৃত্যু

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ ২০১৫
  • / ৫৯২ বার পঠিত

ঢাকা: কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেম (৬৫) মারা গেছেন। ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কানাডাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। কিসমত হাশেম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছিলেন।
কিসমত হাশেমের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত হাশেম শকু জানান, ভোর পৌনে ৬টায় কানাডার মন্ট্রিয়লে কিসমত হাশেম মারা যান। শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাযা শেষে তাকে মন্ট্রিয়লে দাফন করা হবে। কিসমতের স্ত্রীর নাম পারভীন হাসেম। কোনো ছেলে-মেয়ে নেই তাদের।
২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে কিসমত হাশেমকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর ওইদিন দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায় কিসমত হাশেমের বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ২০০৯ সালের নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রায়ে তিনি খালাস পান। তবে ওই সময়েই তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা (ইন্টারপোল) রেড ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই ওয়ারন্টে জারি রয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর একাংশ। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ বিচার শুরু হয়। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মতিউর রহমান তিন সেনা কর্মকর্তা রিসালদার (অব.) মুসলেমউদ্দিন, দফাদার (বহিষ্কৃত) মারফরত আলী শাহ ও দফাদার (বহিষ্কৃত) আব্দুল হাসেম মৃধাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন।
সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাপ্টেন কিসমত হাসেমসহ ১২ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় আদালত। তাদের তিনজনকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। পরে হাই কোর্ট হয়ে মামলাটি আপিল বিভাগে এলে চূড়ান্ত রায়েও কিসমত হাসেমের দল বহাল থাকে।
পাঁচত্তরের ৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর পরই দেশ ত্যাগ করেন কিসমত হাসেম। পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে গোপনে কয়েকবার দেশে আসা- যাওয়া করেন তিনি। তবে নব্বইয়ে সামরিক শাসনের অবসানের পর কিসমতকে আর দেশে দেখা যায়নি। তার পৈতৃক বাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায়।(দৈনিক ইত্তেফাক)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জাতীয় ৪ নেতা হত্যায় দন্ডপ্রাপ্ত আসামি কিসমতের কানাডায় মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১০:০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ মার্চ ২০১৫

ঢাকা: কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামি সেনাবাহিনীর বরখাস্তকৃত ক্যাপ্টেন কিসমত হাশেম (৬৫) মারা গেছেন। ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার সকালে কানাডাতে তিনি ইন্তেকাল করেন। কিসমত হাশেম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় খালাস পেয়েছিলেন।
কিসমত হাশেমের ছোট ভাই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও নগর বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শওকত হাশেম শকু জানান, ভোর পৌনে ৬টায় কানাডার মন্ট্রিয়লে কিসমত হাশেম মারা যান। শুক্রবার জুমার নামাজের পর জানাযা শেষে তাকে মন্ট্রিয়লে দাফন করা হবে। কিসমতের স্ত্রীর নাম পারভীন হাসেম। কোনো ছেলে-মেয়ে নেই তাদের।
২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায়ে কিসমত হাশেমকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার পর ওইদিন দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায় কিসমত হাশেমের বাড়ি ভাংচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ২০০৯ সালের নভেম্বর বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা রায়ে তিনি খালাস পান। তবে ওই সময়েই তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা (ইন্টারপোল) রেড ওয়ারেন্ট জারি করা হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ওই ওয়ারন্টে জারি রয়েছে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের ক্ষমতা দখল করে সেনাবাহিনীর একাংশ। এরপর বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান চার নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় জাতীয় চার নেতাকে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এ বিচার শুরু হয়। ২০০৪ সালের অক্টোবরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মতিউর রহমান তিন সেনা কর্মকর্তা রিসালদার (অব.) মুসলেমউদ্দিন, দফাদার (বহিষ্কৃত) মারফরত আলী শাহ ও দফাদার (বহিষ্কৃত) আব্দুল হাসেম মৃধাকে মৃত্যুদন্ডাদেশ দেন।
সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি পাওয়া ক্যাপ্টেন কিসমত হাসেমসহ ১২ কর্মকর্তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয় আদালত। তাদের তিনজনকে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। পরে হাই কোর্ট হয়ে মামলাটি আপিল বিভাগে এলে চূড়ান্ত রায়েও কিসমত হাসেমের দল বহাল থাকে।
পাঁচত্তরের ৩ নভেম্বর চার নেতাকে হত্যার পর পরই দেশ ত্যাগ করেন কিসমত হাসেম। পরবর্তীতে সামরিক শাসক জিয়াউর রহমান ও এরশাদের শাসনামলে গোপনে কয়েকবার দেশে আসা- যাওয়া করেন তিনি। তবে নব্বইয়ে সামরিক শাসনের অবসানের পর কিসমতকে আর দেশে দেখা যায়নি। তার পৈতৃক বাড়ি নারায়ণগঞ্জ শহরের ডনচেম্বার এলাকায়।(দৈনিক ইত্তেফাক)