খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ফালু আটক : রিমান্ডে রিজভী
- প্রকাশের সময় : ১০:৪৪:০৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ৮০৭ বার পঠিত
ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। ১ ফেব্রুয়ারী রোববার রাত ৮টার দিকে খালেদা জিয়ার গুলশান কার্যালয়ের সামনে থেকে তাকে আটক করে মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। তথ্য পাচারের অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
জানা যায়, রোববার সন্ধ্যা ৭টায় মোসাদ্দেক আলী ফালু গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে যান। দেখা করে ৭টা ৫৫ মিনিটে কার্যালয় থেকে বেরিয়ে নিজ গাড়িতে ওঠেন। এ সময় ডিবির দুই কর্মকর্তাও জোরপূর্বক ওই গাড়িতে ওঠেন। এরপরই গাড়িসহ তাকে ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। তার গাড়ির সামনে ও পেছনে পুলিশের গাড়ি ছিল। এর আগে গুলশান কার্যালয়ে মোসাদ্দেক আলীর আসার খবর পেয়েই ডিবির একটি দল সেখানে যায়। ডিবির অতিরিক্ত উপকমিশনার এমদাদ ওই দলের নেতৃত্ব দেন। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশের সঙ্গে মালায়েশিয়ায় ছিলেন মোসাদ্দেক আলী ফালু। কোকোর লাশ বহনকারী মালায়েশিয়া এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট গত ২৭ জানুয়ারী মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৩৭ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছে। কোকোর লাশের সঙ্গে দেশে আসেন ফালু। সেখান থেকে লাশ সরাসরি নেয়া হয় গুলশান কার্যালয়ে। সে সময়ও তিনি সঙ্গে ছিলেন। ওই দিন রাতেই বনানী কবরস্থানে কোকোর লাশের দাফন সম্পন্ন হয়। শোকাহত খালেদা জিয়াকে সহমর্মিতা জানাতেই রোববার সন্ধ্যায় কার্যালয়ে যান তিনি।
রিজভী তিনদিনের রিমান্ডে : ভাংচুর, হত্যাচেষ্টা ও পেট্রলবোমা মেরে গাড়িতে অগ্নিসংযোগের মামলায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের তিনদিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে।
রাজধানীর গুলশানের পার্ক রোডের একটি বাসা থেকে ৩০ জানুয়ারী শুক্রবার রাত পৌনে ৩টার দিকে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের হাতে আটক হন রিজভী। ২৬ জানুয়ারীর অনাবিল পরিবহনের ঢাকা মেট্রো-ব-১৪-৩৫৩৩ নম্বরের একটি বাসে আগুন দেয়ার ঘটনায় বাড্ডা থানার একটি মামলায় রিজভীকে গ্রেফতার দেখিয়ে রোববার আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার উপপরিদর্শক মোশাররফ হোসেন আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন রিমান্ড চান। আবেদনে বলা হয়, আসামি বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা। বিভিন্ন সময়ে জাতীয় পত্রিকাসহ টেলিভিশনে নাশকতামূলক, ধ্বংসাত্মক বক্তব্য দিয়ে তিনি নাশকতামূলক কার্যক্রম চালাচ্ছেন। তিনি দুষ্কৃতকারীদের অর্থের জোগানদাতা। তার প্রত্যক্ষ মদদে ও উস্কানিমূলক বক্তব্যে প্ররোচিত হয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় দুষ্কৃতকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়, যানবাহন ভাংচুরসহ আগুন দিয়ে নিরীহ জনগণের জানমালের ক্ষতিসাধন করে। এ মামলার পলাতক আসামিদের নাম ঠিকানা সংগ্রহ করে তাদের গ্রেফতার, অর্থের উৎস, অবৈধ পেট্রলবোমা ও ককটেল উদ্ধারের লক্ষ্যে আসামিকে রিমান্ডে নেয়া প্রয়োজন।
আদালতে রিজভীর রিমান্ড চেয়ে শুনানি করেন মহানগর পিপি আবদুল্লাহ আবু, অতিরিক্ত পিপি শাহআলম তালুকদার। অন্যদিকে রিজভীর রিমান্ড বাতিল করে জামিন আবেদনের শুনানি করেন অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মোহসীন মিয়া, মোসলেহ উদ্দিন জসিম প্রমুখ।
শুনানি শেষে ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আলমগীর কবির রাজ এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গাজীপুর থেকে যাত্রাবাড়ী সাইনবোর্ডগামী অনাবিল পরিবহনের একটি বাস ২৬ জানুয়ারী রাত সোয়া ৯টার দিকে বাড্ডা থানাধীন প্রাণ আরএফএলের প্রধান কার্যালয়ের বিপরীতে রাস্তার পূর্ব পাশে অ্যাপেক্স শোরুমের সামনে আসলে অজ্ঞাতনামা ৫০-৫৫ দুষ্কৃতকারী গতিরোধ করে থামিয়ে দেয়। তারা বাসটিতে ভাংচুর চালায়। পেছনের সিটে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় গাড়ির সুপারভাইজার জমির উদ্দিন বাদী হয়ে দন্ডবিধি এবং বিশেষ ক্ষমতা আইনে রাজধানীর বাড্ডা থানায় মামলাটি করেন। মামলার এজাহারে ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমএ কাইয়ুমসহ ৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৫৫ জনকে আসামি করা হয়।
এ মামলায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা এমকে আনোয়ার, মেজর জেনারেল (অব.) মাহাবুবুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শিমুল বিশ্বাস, মারুফ কামাল খান সোহেল, গাজী রুহুল আমিন, শওকত মাহমুদ, মিজান, শিরিন সুলতানা, শ্যামা ওবায়েদ ও শাইরুল কবিরকে এ ঘটনার প্ররোচনাদাতা, উস্কানিদাতা হিসেবে আসামি করা হয়। প্রসঙ্গত, র্যাবের হাতে আটক হওয়ার আগে দীর্ঘদিন আতœগোপনে ছিলেন রিজভী। অজ্ঞাত স্থান থেকেই তিনি ই- মেইলে গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই বিবৃতি পাঠাচ্ছিলেন। (দৈনিক যুগান্তর)