নিউইয়র্ক ০২:১৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কক্সবাজারে বন্যায় মৃত ৭ : পানিবন্দী তিন লাখ মানুষ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:৫৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০১৫
  • / ১১৫১ বার পঠিত

কক্সবাজার: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৬ জুন) জেলার রামু উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে এবং বাড়ির দেয়াল ধসে মারা গেছেন পাঁচজন। অপরদিকে সেন্টমার্টিনে নারকেলগাছ চাপায় মারা গেছেন এক মা ও শিশু। পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, পেকুয়াসহ আট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এসব উপজেলার ৪০ ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন অন্তত তিন লাখ মানুষ।
রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লোল বিশ্বাস জানিয়েছেন, উপজেলার কচ্ছপিয়া, উখিয়ার ঘোনা, কাউয়াখোপ ও জোয়ারিয়া নালা এলাকায় ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- খতিজা বেগম (৩৫), হালিমা বেগম (২৭), মোহাম্মদ রিদুয়ান (৬) ও জুনু মিয়া (৬০)। বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’জন এবং শুক্রবার সকালে দু’জন পানিতে ভেসে যান। দুপুরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শুক্রবার সকালে রামু উপজেলার কাউয়াখোপ এলাকায় মাটির দেয়াল ধসে আমির হোসেন (৪০) নামে একজন মারা যান।
অপরদিকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সকালে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় অসংখ্য গাছপালা ও ঘরবাড়ি উপড়ে গেছে। ঝড়ে নারকেল গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন এক মা ও শিশু। তারা হলেন- সেন্টমার্টিনের কোনারপাড়ার নূর মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তাদের শিশুপুত্র মোহাম্মদ জিশান (৪)।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার সকালে সেন্টমার্টিনে ঝড়ো হাওয়ায় নারকেলগাছের নিচে চাপা পড়ে মা ও শিশু মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন। দ্বীপের হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক না থাকায় আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
Dr. Ripon_BNPবন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ দেয়ার দাবি বিএনপি’র: এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় অবিলম্বে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি জানান। অনতিবিলম্বে দুর্গত মানুষদের উদ্ধার এবং তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানী ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অতি বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ২০ সহ¯্রাধিক মানুষ এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। বিএনপি ইতোমধ্যে দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে। তিনি উপদ্রুত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
রিপন বলেন, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি-এসব অঞ্চলের রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় অধিকাংশ উপজেলাগুলো জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে জনগণ বিশুদ্ধ খাবার পানী, খাবার ও আশ্রয়ের সংকটে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিএনপি এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ তৎপরতা পরিলক্ষিত না হওয়াকে দুঃখজনক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। (দৈনিক যুগান্তর)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

কক্সবাজারে বন্যায় মৃত ৭ : পানিবন্দী তিন লাখ মানুষ

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৯:৩৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ জুলাই ২০১৫

কক্সবাজার: টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কক্সবাজারে সাত জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার (২৬ জুন) জেলার রামু উপজেলায় পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে এবং বাড়ির দেয়াল ধসে মারা গেছেন পাঁচজন। অপরদিকে সেন্টমার্টিনে নারকেলগাছ চাপায় মারা গেছেন এক মা ও শিশু। পাহাড়ি ঢলের পানিতে জেলার রামু, চকরিয়া, সদর, পেকুয়াসহ আট উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এসব উপজেলার ৪০ ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়েছেন অন্তত তিন লাখ মানুষ।
রামু উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হিল্লোল বিশ্বাস জানিয়েছেন, উপজেলার কচ্ছপিয়া, উখিয়ার ঘোনা, কাউয়াখোপ ও জোয়ারিয়া নালা এলাকায় ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- খতিজা বেগম (৩৫), হালিমা বেগম (২৭), মোহাম্মদ রিদুয়ান (৬) ও জুনু মিয়া (৬০)। বৃহস্পতিবার বিকেলে দু’জন এবং শুক্রবার সকালে দু’জন পানিতে ভেসে যান। দুপুরে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া শুক্রবার সকালে রামু উপজেলার কাউয়াখোপ এলাকায় মাটির দেয়াল ধসে আমির হোসেন (৪০) নামে একজন মারা যান।
অপরদিকে প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনে প্রবল ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শুক্রবার সকালে বয়ে যাওয়া ঝড়ো হাওয়ায় অসংখ্য গাছপালা ও ঘরবাড়ি উপড়ে গেছে। ঝড়ে নারকেল গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন এক মা ও শিশু। তারা হলেন- সেন্টমার্টিনের কোনারপাড়ার নূর মোহাম্মদের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (২৫) ও তাদের শিশুপুত্র মোহাম্মদ জিশান (৪)।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আমিন জানান, শুক্রবার সকালে সেন্টমার্টিনে ঝড়ো হাওয়ায় নারকেলগাছের নিচে চাপা পড়ে মা ও শিশু মারা যান। আহত হন বেশ কয়েকজন। দ্বীপের হাসপাতালে কোনো চিকিৎসক না থাকায় আহতরা চিকিৎসা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
Dr. Ripon_BNPবন্যা দুর্গতদের জন্য ত্রাণ দেয়ার দাবি বিএনপি’র: এদিকে বৃহত্তর চট্টগ্রামে বন্যা উপদ্রুত এলাকায় অবিলম্বে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বিএনপি। শুক্রবার (২৬ জুন) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও দলের মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপন এ দাবি জানান। অনতিবিলম্বে দুর্গত মানুষদের উদ্ধার এবং তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ খাবার পানী ও ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে অতি বর্ষণে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ২০ সহ¯্রাধিক মানুষ এখন আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে। বিএনপি ইতোমধ্যে দুর্গত অঞ্চলে ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছে। তিনি উপদ্রুত জনগণের পাশে দাঁড়ানোর জন্য বিএনপির সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
রিপন বলেন, বান্দরবান, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, খাগড়াছড়ি-এসব অঞ্চলের রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে ডুবে যাওয়ায় অধিকাংশ উপজেলাগুলো জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যা পরিস্থিতিতে জনগণ বিশুদ্ধ খাবার পানী, খাবার ও আশ্রয়ের সংকটে পড়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিএনপি এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন। এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ত্রাণ তৎপরতা পরিলক্ষিত না হওয়াকে দুঃখজনক বলেও উল্লেখ করেন তিনি। (দৈনিক যুগান্তর)