নিউইয়র্ক ১২:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘বসন্ত বাতাসে’ স্মারক গ্রন্থ : পাঠকের মত

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:০২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬
  • / ২১৭৩ বার পঠিত

মাহমুদ রেজা চৌধুরী: ‘বসন্ত বাতাসে’ জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি, নিউইয়র্ক; বাংলা নববর্ষ ১৪২৩-কে স্বাগত জানিয়ে এই স্মারক গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। হঠাৎ দেখলেই মনে হবে নূতন প্রকাশিত কোন উপন্যাস কি না। বইটার নামের মধ্যেই এমন একটি মৌ মৌ গন্ধ আছে। এই নিয়েই পাঠকের দু’একটি ভালো, মন্দ কথা।
দীর্ঘ তিন দশকের উপরে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই রকম ঝর ঝরে নান্দনিক অর্থে দৃষ্টি কেড়ে নেয়া গ্রন্থ দৃষ্টিতে পড়েছে বলে মনে পড়ছে না। তাই শুরুতেই এর উদ্যোক্তা, পৃষ্ঠপোষক, লেখক-লেখিকা, সম্পাদক প্রত্যেককে আন্তরিক অভিনন্দন। গ্রন্থটির বৈশিষ্ট্য কে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। লেখার কলেরব না বাড়াতে কেবল বুলেট পয়েন্ট দিয়ে বলছি।
১) চমৎকার প্রচ্ছদ এবং এর নামকরণটিও। বিশেষ করে আমাদের লোক সাহিত্যের অন্যতম কিংবদন্তি শাহ আব্দুল করিমের গানের কথা দিয়ে স্মারক গ্রন্থের নামকরণটি নববর্ষের ইমেজকেও বাড়িয়েছে।
২) মার্কিন প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা গ্রন্থের আকর্ষনকে অনেক বাড়েিয়ছে।
৩) মুদ্রিত বইটা লেখা সংক্ষিপ্ত কিন্তু সমৃদ্ধ এর তথ্য এবং সেই তথ্যের উপস্থাপনাতে। বাউল শাহ আব্দুল করিমের (১৯১৬-২০০৯) সংক্ষিপ্ত জীবন বর্ণণা বাংলা ও ইংরেজীতে এই গ্রন্থের একটি বিশেষ তাৎপর্য বলা যায়।
৪) প্রতিটা লেখার সাথে লেখকের ছবি এবং সাথে লেখার সামঞ্জস্য রেখে ছবি ও অংকনগুলোও লেখাগুলোর আবেদন এবং এর আকর্ষনকে দ্বিগুণ করেছে। বিষয়টা প্রবাসে গত্যনুগতিক স্মারক গ্রন্থের পূর্বের সকল কৃতিত্বকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ধন্যবাদ সম্পাদক, প্রচ্ছদ শিল্পি এবং এর ব্যবস্থাপক সবাইকে।

৫) গ্রন্থের কবিতা এবং গল্পগুলোও সুখ পাঠ্য এবং এর পরিচ্ছন্ন মুদ্রন কৃতিত্বের দাবিদার। এতো গেলো গ্রন্থটির ব্যপারে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া। এবার যাই ভেতেরর পাতায় যেখানে থেকে শেখার আছে লেখকদের সুচিন্তিত এবং তথ্যপূর্ণ বক্তব্যেও।
লেখক, সাংবাদিক ও সাহিত্য সমালোচক এবং নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাঙালী’র সম্পাদক কৌশিক আহমেদ এর রচনা ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ লেখাটির ব্যাকগ্রাউন্ডের পেইন্টিং লেখার পুরো আবেদনেই মিষ্টি এক ধরণের ইমেজ কে ফুটিয়েছে। লেখাটি তথ্যপূর্ণ তো বটেই। বিশেষ করে হাসান রাজার গানে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সাথে মানুষের সম্পর্কের কথা যে আছে; এটা রবীন্দ্রনাথ ও তার অক্সফোর্ড ইউনির্ভাসিটির ভাষণে উল্লেখ করেন বলে কৌশিক লিখেছেন। অনেকেই হয়তো এটা আমরা জানতাম না। এ দ্বারা কৌশিকের লেখাতে এক অসাম্প্রদায়িক বাঙালী জাতির মন ও মননশিলতার কথা ও তথ্য এসেছে সুন্দরভাবে। লেখককে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
‘নিউইয়র্কের জ্যামাইকা’ রচনাতে সাংবাদিক, সংগঠক, ওয়েব পোর্টাল হককথা ও নিউজ এজেন্সি ইউএনও সম্পাদক এবং নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব-এর সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদের লেখাতে জেনেছি অনেক তথ্য। যেমন নিউইয়র্কের কোন কাউন্টিতে লোক সংখ্যা কত, এর মধ্যে বাংলাদেশীরা কতো, পাশাপাশি জ্যামাইকার আকর্ষণ স্থানীয় বাংলাদেশীদের কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো লেখক তার সুন্দর উপস্থাপনাতে বর্ণনা দিয়েছেন আমাদের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্তরিক অভিমতের মধ্য দিয়ে। সালাহউদ্দিনকেও আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘জ্যামাইকা থেকে জ্যামাইকা’ লেখার লেখক, প্রবীণ সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশের আরটিভি’র আবাসিক পরিচালক কাজী শামসুল হকের লেখাতে ফুটে উঠেছে একজন ধর্মপ্রাণ মানুষের সহজ সরল এবং বলিষ্ঠ অনুভূতি। পাশাপাশি প্রবাসের অনেকের সুপ্রিয় মুখ, হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি কথাও লেখার আকর্ষণ।
‘নিষেঠের দেয়াল ও আমাদের ঐতিহ্য’ এই লেখাতে লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু প্রবাসে আমাদের আচার-আচরণের মৃদু সমালোচনা নিঃসন্দেহের একটি ইতিবাচক লেখা বলতে কোন দ্বিধা নেই।
‘ভাটি বাংলার লোকগানে প্রকৃতির প্রভাব, প্রেক্ষিত’ শাহ আব্দুল করিম-এর লেখাটি এই গ্রন্থের ভাড় বাড়েিয়ছে বলা যায়।
‘রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত ভাবনা, আইনষ্টাইন সংসর্গে’ কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, সাংবাদিক এবং দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকে’র লেখাটিও এই গ্রন্থের এক প্রকার সিগনেচার লেখা বললে বেশী বলা হবে না। লেখাটি গ্রন্থের পাঠক প্রিয়াতর গুনগত মানকেও বৃদ্ধি করেছে।
আব্দুল্লাহ জাহিদ-এর ‘সাবওয়ে’ লেখাটিও নিঃসন্দেহে অনেক তথ্য বহুল।
এক কথায় ‘বসন্ত বাতাসে’ স্মারক গ্রন্থের প্রতিটা ভাবনা, গল্প, কবিতা, তথ্য সব কিছু মিলিয়ে অনবদ্য। গ্রন্থটির প্রতিটা লেখা এর নিজস্ব মাত্রা, দন্দ্ব এবং আন্তরিকাতার স্পর্শে ভরা। বইটি ব্যক্তিগত বই ঘরে বা শেলফে সংগ্রহের তালিকায় রাখার সব কটি উপযোগিতা মেটায়। এ ব্যাপারে দ্বিমত করা কঠিন। বলেছিলাম ভালো-মন্দ দু’টোই বলবো। মন্দটা না বললেই বা কি। এটাতো জরুরিও না।
জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি আগামীতেও তাদের কাজে কর্মে এভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের গর্ব হয়ে থাকুক। এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: কলামিষ্ট, নিউইয়র্ক

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

‘বসন্ত বাতাসে’ স্মারক গ্রন্থ : পাঠকের মত

প্রকাশের সময় : ১১:০২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ জুলাই ২০১৬

মাহমুদ রেজা চৌধুরী: ‘বসন্ত বাতাসে’ জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি, নিউইয়র্ক; বাংলা নববর্ষ ১৪২৩-কে স্বাগত জানিয়ে এই স্মারক গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে। হঠাৎ দেখলেই মনে হবে নূতন প্রকাশিত কোন উপন্যাস কি না। বইটার নামের মধ্যেই এমন একটি মৌ মৌ গন্ধ আছে। এই নিয়েই পাঠকের দু’একটি ভালো, মন্দ কথা।
দীর্ঘ তিন দশকের উপরে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে এই রকম ঝর ঝরে নান্দনিক অর্থে দৃষ্টি কেড়ে নেয়া গ্রন্থ দৃষ্টিতে পড়েছে বলে মনে পড়ছে না। তাই শুরুতেই এর উদ্যোক্তা, পৃষ্ঠপোষক, লেখক-লেখিকা, সম্পাদক প্রত্যেককে আন্তরিক অভিনন্দন। গ্রন্থটির বৈশিষ্ট্য কে নানাভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। লেখার কলেরব না বাড়াতে কেবল বুলেট পয়েন্ট দিয়ে বলছি।
১) চমৎকার প্রচ্ছদ এবং এর নামকরণটিও। বিশেষ করে আমাদের লোক সাহিত্যের অন্যতম কিংবদন্তি শাহ আব্দুল করিমের গানের কথা দিয়ে স্মারক গ্রন্থের নামকরণটি নববর্ষের ইমেজকেও বাড়িয়েছে।
২) মার্কিন প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিসহ স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা গ্রন্থের আকর্ষনকে অনেক বাড়েিয়ছে।
৩) মুদ্রিত বইটা লেখা সংক্ষিপ্ত কিন্তু সমৃদ্ধ এর তথ্য এবং সেই তথ্যের উপস্থাপনাতে। বাউল শাহ আব্দুল করিমের (১৯১৬-২০০৯) সংক্ষিপ্ত জীবন বর্ণণা বাংলা ও ইংরেজীতে এই গ্রন্থের একটি বিশেষ তাৎপর্য বলা যায়।
৪) প্রতিটা লেখার সাথে লেখকের ছবি এবং সাথে লেখার সামঞ্জস্য রেখে ছবি ও অংকনগুলোও লেখাগুলোর আবেদন এবং এর আকর্ষনকে দ্বিগুণ করেছে। বিষয়টা প্রবাসে গত্যনুগতিক স্মারক গ্রন্থের পূর্বের সকল কৃতিত্বকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ধন্যবাদ সম্পাদক, প্রচ্ছদ শিল্পি এবং এর ব্যবস্থাপক সবাইকে।

৫) গ্রন্থের কবিতা এবং গল্পগুলোও সুখ পাঠ্য এবং এর পরিচ্ছন্ন মুদ্রন কৃতিত্বের দাবিদার। এতো গেলো গ্রন্থটির ব্যপারে তাৎক্ষনিক প্রতিক্রিয়া। এবার যাই ভেতেরর পাতায় যেখানে থেকে শেখার আছে লেখকদের সুচিন্তিত এবং তথ্যপূর্ণ বক্তব্যেও।
লেখক, সাংবাদিক ও সাহিত্য সমালোচক এবং নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাঙালী’র সম্পাদক কৌশিক আহমেদ এর রচনা ‘আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম’ লেখাটির ব্যাকগ্রাউন্ডের পেইন্টিং লেখার পুরো আবেদনেই মিষ্টি এক ধরণের ইমেজ কে ফুটিয়েছে। লেখাটি তথ্যপূর্ণ তো বটেই। বিশেষ করে হাসান রাজার গানে বিশ্ব ব্রহ্মান্ডের সাথে মানুষের সম্পর্কের কথা যে আছে; এটা রবীন্দ্রনাথ ও তার অক্সফোর্ড ইউনির্ভাসিটির ভাষণে উল্লেখ করেন বলে কৌশিক লিখেছেন। অনেকেই হয়তো এটা আমরা জানতাম না। এ দ্বারা কৌশিকের লেখাতে এক অসাম্প্রদায়িক বাঙালী জাতির মন ও মননশিলতার কথা ও তথ্য এসেছে সুন্দরভাবে। লেখককে ধন্যবাদ জানাতেই হয়।
‘নিউইয়র্কের জ্যামাইকা’ রচনাতে সাংবাদিক, সংগঠক, ওয়েব পোর্টাল হককথা ও নিউজ এজেন্সি ইউএনও সম্পাদক এবং নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব-এর সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদের লেখাতে জেনেছি অনেক তথ্য। যেমন নিউইয়র্কের কোন কাউন্টিতে লোক সংখ্যা কত, এর মধ্যে বাংলাদেশীরা কতো, পাশাপাশি জ্যামাইকার আকর্ষণ স্থানীয় বাংলাদেশীদের কাছে কেন গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলো লেখক তার সুন্দর উপস্থাপনাতে বর্ণনা দিয়েছেন আমাদের কাছে স্থানীয় বাসিন্দাদের আন্তরিক অভিমতের মধ্য দিয়ে। সালাহউদ্দিনকেও আন্তরিক ধন্যবাদ।
‘জ্যামাইকা থেকে জ্যামাইকা’ লেখার লেখক, প্রবীণ সাংবাদিক ও সম্পাদক এবং নিউইয়র্কে বাংলাদেশের আরটিভি’র আবাসিক পরিচালক কাজী শামসুল হকের লেখাতে ফুটে উঠেছে একজন ধর্মপ্রাণ মানুষের সহজ সরল এবং বলিষ্ঠ অনুভূতি। পাশাপাশি প্রবাসের অনেকের সুপ্রিয় মুখ, হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি কথাও লেখার আকর্ষণ।
‘নিষেঠের দেয়াল ও আমাদের ঐতিহ্য’ এই লেখাতে লেখক ও সাংবাদিক আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু প্রবাসে আমাদের আচার-আচরণের মৃদু সমালোচনা নিঃসন্দেহের একটি ইতিবাচক লেখা বলতে কোন দ্বিধা নেই।
‘ভাটি বাংলার লোকগানে প্রকৃতির প্রভাব, প্রেক্ষিত’ শাহ আব্দুল করিম-এর লেখাটি এই গ্রন্থের ভাড় বাড়েিয়ছে বলা যায়।
‘রবীন্দ্রনাথের সঙ্গীত ভাবনা, আইনষ্টাইন সংসর্গে’ কথা সাহিত্যিক, নাট্যকার, সাংবাদিক এবং দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হকে’র লেখাটিও এই গ্রন্থের এক প্রকার সিগনেচার লেখা বললে বেশী বলা হবে না। লেখাটি গ্রন্থের পাঠক প্রিয়াতর গুনগত মানকেও বৃদ্ধি করেছে।
আব্দুল্লাহ জাহিদ-এর ‘সাবওয়ে’ লেখাটিও নিঃসন্দেহে অনেক তথ্য বহুল।
এক কথায় ‘বসন্ত বাতাসে’ স্মারক গ্রন্থের প্রতিটা ভাবনা, গল্প, কবিতা, তথ্য সব কিছু মিলিয়ে অনবদ্য। গ্রন্থটির প্রতিটা লেখা এর নিজস্ব মাত্রা, দন্দ্ব এবং আন্তরিকাতার স্পর্শে ভরা। বইটি ব্যক্তিগত বই ঘরে বা শেলফে সংগ্রহের তালিকায় রাখার সব কটি উপযোগিতা মেটায়। এ ব্যাপারে দ্বিমত করা কঠিন। বলেছিলাম ভালো-মন্দ দু’টোই বলবো। মন্দটা না বললেই বা কি। এটাতো জরুরিও না।
জ্যামাইকা বাংলাদেশ ফ্রেন্ডস সোসাইটি আগামীতেও তাদের কাজে কর্মে এভাবে প্রবাসী বাংলাদেশীদের গর্ব হয়ে থাকুক। এটাই প্রত্যাশা।
লেখক: কলামিষ্ট, নিউইয়র্ক