নিউইয়র্ক ১১:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

জাতিসংঘ মিশনে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর সাযুজ্যহীন বক্তব্যটি কেন?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৫:৫৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০১৫
  • / ৯৩৩ বার পঠিত

মোহাম্মদ আলী বোখারী: এই পবিত্র সিয়াম সাধনার মাসে মহান একুশে গানের রচয়িতা ও বিশিষ্ট কলামিষ্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর একটি বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মুসলমানেরা যথেষ্ট ক্ষিপ্ত। গত ৩ জুলাই জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক সিরিজ আলোচনায় মিশনটির রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় তিনি সেই বক্তব্যটি দিয়েছেন। তাতে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি বলেছেন, ‘আজকের আরবী ভাষায় যে সব শব্দ; এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই কিন্ত কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্ত পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল’। এই বক্তব্যের ভিডিওতে দৃশ্যমান কোনো প্রকার রেফারেন্স ব্যতিরেকেই তিনি সে কথা অবলীলায় বলেছেন, এমনকি উপস্থিত শ্রোতাদের তরুণ একজন সেটির ব্যাখ্যাসহ ‘লাকুম দিনুকুম ওলিয়া দিন’ (অর্থাৎ ‘প্রত্যেকের ধর্মপালন তার একান্ত’ সুরা আল কাফিরুনের শেষ আয়াত, যা ইসলামিক মনোথিজম্) কুরআন কিংবা হাদিসের কি না জানতে চাইলেও তিনি তা সুষ্পষ্ট করতে পারেননি। এতে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তার একটি আলোচনা সভা মসজিদের মুসুল্লিরা পন্ড করে দেয়; তাতে তিনি যোগ দিতে পারেননি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিউইয়র্ক পুলিশেরও হস্তক্ষেপ ঘটে।
বিষয়টি ভাবনার বৈকি! যদি সত্যি ‘আল্লাহর ৯৯ নাম, কাফেরদের দেবতাদের নাম’ হবে, তবে ১৪০০ বছর উত্তীর্ণ সময়ে ১২০ কোটির উপর মুসলমান সারা বিশ্বে বিস্তৃত হলো কী করে? আপাতদৃষ্টিতে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন; তাতে যৌক্তিকভাবেই পৌত্তলিক দেবতার নাম আল্লাহর নাম হতে যাবে কেন? কলামিষ্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী তা উপলব্ধি করেননি। বাস্তবে আল কুরআন হচ্ছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী এবং এই কুরআনেরই রয়েছে আল্লাহর সেই সকল নাম, প্রতিটি মুসলমান তা অন্তঃকরণে বিশ্বাস করে। অন্যদিকে, আরবী ভাষার প্রাগৈতিহাসিক প্রেক্ষাপট কিংবা মরফোলজিক্যাল অ্যানোটেশন, সিনটেকটিক ট্রিব্যাংক ও সিমেনটিক অন্টোলজি বিশ্লেষণেও দেখা যায়, আল কুরআন রচিত হয়েছে ‘ক্ল্যাসিক্যাল আরবী’ ভাষায়; অর্থাৎ আরবী সাহিত্যে। লক্ষণীয় দিকটি হচ্ছে, ঐতিহাসিকভাবে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামের ‘লিটারজিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজ’ বা গণপ্রার্থনার বিধি সংক্রান্ত ভাষাই আধুনিক ধাঁচকে বিস্তৃত করেছে ৪২ কোটি আরবী ভাষীর মাঝে, যার উত্তরণকাল সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীর উমাইয়া ও আব্বাসীয় শাসনামলে। আর আরবী আফ্রো-এশিয়াটিক ভাষা গোত্রের পর্যায়ক্রমিক সেমিটিক, সেন্ট্রাল সেমিটিক, অ্যারাবিক থেকে ‘ক্ল্যাসিক্যাল অ্যারাবিক’-এ রূপান্তরিত এবং তারও রয়েছে চব্বিশোর্ধ আধুনিক বাচনিক ভাষা। ২০১৩ সালে ওয়েষ্টবো প্রেস প্রকাশিত ও গ্রে ল্যামবার্ট রচিত ‘দ্য লিডার্স আর কামিং’ গ্রন্ত্রে’র ২৮৭ পৃষ্টা এবং ২০১২ সালে ভ্যানগার্ড প্রেস প্রকাশিত রয় এইচ উইলিয়াম-মাইকেল আর ড্রিও কর্তৃক যৌথ রচিত ‘পেনডুলাম: হাউ পাস্ট জেনারেশন্স শেপ আওয়ার প্রেজেন্ট অ্যান্ড প্রিডিক্ট আওয়ার ফিউচার’ গ্রন্থের ১৪৩ পৃষ্টা অনুসারে আল্লাহ কুরআন শরীফ মৌখিকভাবে ফেরেশতা জিব্রারাইলের মাধ্যমে হেরা পর্বতে ধ্যানরত হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর উপর নাজিল করেছেন। এই নাজিলের সময়কাল ছিল ৬০৯-৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ অর্থাৎ রসুলের ৪০ বছর থেকে ইন্তেকাল অবধি, মোট ২৩ বছরে।
প্রসঙ্গতঃ ২০০৫ সালের ১৮ নভেম্বর মিশরীয় দৈনিক আল আহরামে প্রকাশিত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া বিষয়ক অধ্যাপক ড. মাহমুদ আবদুল রাজেক আল রাদওয়ানির মতে, আল্লাহর ৯৯টি নামের ৬৯টি-ই কুরআনে রয়েছে; ‘আল্লাহ’ ব্যতীত অবশিষ্ট ২৯টি নামের ৭টি হচ্ছে ‘মুদাফা’ বা কুরআনিক আলোকে সংযুক্ত এবং ২২টি হচ্ছে ‘আফাল ও আওসাফ’ অর্থাৎ নিজস্ব অভিব্যক্তিতে বিশ্লেষণপূর্ণ নয়। তার যুক্তি হচ্ছে এই ২৯টি নাম অবশ্যই ইংরেজির ‘নাউন’ বা ‘বিশেষ্য’ হওয়া চাই, কিন্ত তা ‘ভার্ব’ বা ‘ক্রিয়াপদ’ অথবা ‘অ্যাডজেক্টিভ’ বা ‘বিশেষণ’ হিসেবে দৃশ্যমান। ‘দ্য কনসেপ্ট অব টাইম ইন ইসলাম’ গ্রন্থের রচয়িতা ও যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ষ্টাডিজের অধ্যাপক জারহাড বাওয়ারিংয়ের মতে, সুরা আল-আরাফের ১৮০, সুরা আল-ইসরার ১১০, সুরা তা’হা-র ৮ ও সুরা আল-হাশরের ২৪ আয়াতে এই ‘সবচেয়ে সুন্দর নাম’ ‘আল ইসম আল আজম’ অর্থাৎ আল্লাহর সর্বোচ্চ নাম হিসেবে বিবেচিত। সুরা আল-আরাফের ১৮০ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহর আছে সর্বোত্তম নাম। সেভাবেই তাঁকে ডাকো। আর তাদেরকে বর্জন করো, যারা তাঁর নাম নিয়ে কটুক্তি করে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে’। সুরা আল-ইসরার ১১০ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহ কিংবা রহমান বলে ডাকো – যে নামেই ডাকো না কেন সকল সুন্দর নামই তাঁর। নামাজ আদায়কালে উচু কিংবা নিচুস্বরে নয়, বরং মধ্যমস্বরে তাঁকে ডাকো’। সুরা তা’হার ৮ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য বা ইলাহ নেই। সকল সৌন্দর্যমন্ডিত নামই তাঁর’। একইভাবে সুরা আল হাশরের ২৪ আয়াতে রয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, ¯্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা; উত্তম সকল নামই তাঁর। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষনা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়’।
সবশেষে আল কুরআনের অলৌকিকতার বিষয়ে আল্লাহ নিজেই চ্যালেঞ্জ রেখেছেন। তাতে সুরা আল-ইসরার ৮৮ আয়াত, সুরা-হুদের ১৩ আয়াত এবং সুরা আল-বাকারার ২৩ আয়াতে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের প্রতি যথাক্রমে সমগ্র কুরআন, ১০টি অধ্যায় অথবা নিদেনপক্ষে সমতুল্য ১টি অধ্যায় রচনা করার আহবান রেখেছেন।
তারপরও কী আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর বক্তব্যের কোনো সাজুয্যতা থাকে? নাকি তার সেই বক্তব্য প্রদানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কোনো বৈধ মেন্ডেট বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একান্নবর্তী থাকার কোনো যৌক্তিক উদ্দেশ্য পরিপূরণ হয়? (আমাদের সময়.কম)
টরন্টো, কানাডা।
ই-মেইল:bukhari.toronto@gmail.com

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

জাতিসংঘ মিশনে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর সাযুজ্যহীন বক্তব্যটি কেন?

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৩:১৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জুলাই ২০১৫

মোহাম্মদ আলী বোখারী: এই পবিত্র সিয়াম সাধনার মাসে মহান একুশে গানের রচয়িতা ও বিশিষ্ট কলামিষ্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর একটি বক্তব্য নিয়ে বাংলাদেশের ধর্মপ্রান মুসলমানেরা যথেষ্ট ক্ষিপ্ত। গত ৩ জুলাই জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যত’ শীর্ষক সিরিজ আলোচনায় মিশনটির রাষ্ট্রদূত ড. এ কে আব্দুল মোমেনের পরিচালনায় তিনি সেই বক্তব্যটি দিয়েছেন। তাতে সুনির্দিষ্টভাবে তিনি বলেছেন, ‘আজকের আরবী ভাষায় যে সব শব্দ; এর সবই কাফেরদের ব্যবহৃত শব্দ। যেমন- আল্লাহর ৯৯ নাম, সবই কিন্ত কাফেরদের দেবতাদের নাম। তাদের ভাষা ছিল আর-রহমান, গাফফার, গফুর ইত্যাদি। সবই কিন্ত পরবর্তীতে ইসলাম এডাপ্ট করেছিল’। এই বক্তব্যের ভিডিওতে দৃশ্যমান কোনো প্রকার রেফারেন্স ব্যতিরেকেই তিনি সে কথা অবলীলায় বলেছেন, এমনকি উপস্থিত শ্রোতাদের তরুণ একজন সেটির ব্যাখ্যাসহ ‘লাকুম দিনুকুম ওলিয়া দিন’ (অর্থাৎ ‘প্রত্যেকের ধর্মপালন তার একান্ত’ সুরা আল কাফিরুনের শেষ আয়াত, যা ইসলামিক মনোথিজম্) কুরআন কিংবা হাদিসের কি না জানতে চাইলেও তিনি তা সুষ্পষ্ট করতে পারেননি। এতে পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় তার একটি আলোচনা সভা মসজিদের মুসুল্লিরা পন্ড করে দেয়; তাতে তিনি যোগ দিতে পারেননি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিউইয়র্ক পুলিশেরও হস্তক্ষেপ ঘটে।
বিষয়টি ভাবনার বৈকি! যদি সত্যি ‘আল্লাহর ৯৯ নাম, কাফেরদের দেবতাদের নাম’ হবে, তবে ১৪০০ বছর উত্তীর্ণ সময়ে ১২০ কোটির উপর মুসলমান সারা বিশ্বে বিস্তৃত হলো কী করে? আপাতদৃষ্টিতে ইসলামের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে একেশ্বরবাদ প্রতিষ্ঠা করেছেন; তাতে যৌক্তিকভাবেই পৌত্তলিক দেবতার নাম আল্লাহর নাম হতে যাবে কেন? কলামিষ্ট আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরী তা উপলব্ধি করেননি। বাস্তবে আল কুরআন হচ্ছে আল্লাহ প্রেরিত ওহী এবং এই কুরআনেরই রয়েছে আল্লাহর সেই সকল নাম, প্রতিটি মুসলমান তা অন্তঃকরণে বিশ্বাস করে। অন্যদিকে, আরবী ভাষার প্রাগৈতিহাসিক প্রেক্ষাপট কিংবা মরফোলজিক্যাল অ্যানোটেশন, সিনটেকটিক ট্রিব্যাংক ও সিমেনটিক অন্টোলজি বিশ্লেষণেও দেখা যায়, আল কুরআন রচিত হয়েছে ‘ক্ল্যাসিক্যাল আরবী’ ভাষায়; অর্থাৎ আরবী সাহিত্যে। লক্ষণীয় দিকটি হচ্ছে, ঐতিহাসিকভাবে সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামের ‘লিটারজিক্যাল ল্যাঙ্গুয়েজ’ বা গণপ্রার্থনার বিধি সংক্রান্ত ভাষাই আধুনিক ধাঁচকে বিস্তৃত করেছে ৪২ কোটি আরবী ভাষীর মাঝে, যার উত্তরণকাল সপ্তম থেকে নবম শতাব্দীর উমাইয়া ও আব্বাসীয় শাসনামলে। আর আরবী আফ্রো-এশিয়াটিক ভাষা গোত্রের পর্যায়ক্রমিক সেমিটিক, সেন্ট্রাল সেমিটিক, অ্যারাবিক থেকে ‘ক্ল্যাসিক্যাল অ্যারাবিক’-এ রূপান্তরিত এবং তারও রয়েছে চব্বিশোর্ধ আধুনিক বাচনিক ভাষা। ২০১৩ সালে ওয়েষ্টবো প্রেস প্রকাশিত ও গ্রে ল্যামবার্ট রচিত ‘দ্য লিডার্স আর কামিং’ গ্রন্ত্রে’র ২৮৭ পৃষ্টা এবং ২০১২ সালে ভ্যানগার্ড প্রেস প্রকাশিত রয় এইচ উইলিয়াম-মাইকেল আর ড্রিও কর্তৃক যৌথ রচিত ‘পেনডুলাম: হাউ পাস্ট জেনারেশন্স শেপ আওয়ার প্রেজেন্ট অ্যান্ড প্রিডিক্ট আওয়ার ফিউচার’ গ্রন্থের ১৪৩ পৃষ্টা অনুসারে আল্লাহ কুরআন শরীফ মৌখিকভাবে ফেরেশতা জিব্রারাইলের মাধ্যমে হেরা পর্বতে ধ্যানরত হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর উপর নাজিল করেছেন। এই নাজিলের সময়কাল ছিল ৬০৯-৬৩২ খ্রিষ্টাব্দ অর্থাৎ রসুলের ৪০ বছর থেকে ইন্তেকাল অবধি, মোট ২৩ বছরে।
প্রসঙ্গতঃ ২০০৫ সালের ১৮ নভেম্বর মিশরীয় দৈনিক আল আহরামে প্রকাশিত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শরিয়া বিষয়ক অধ্যাপক ড. মাহমুদ আবদুল রাজেক আল রাদওয়ানির মতে, আল্লাহর ৯৯টি নামের ৬৯টি-ই কুরআনে রয়েছে; ‘আল্লাহ’ ব্যতীত অবশিষ্ট ২৯টি নামের ৭টি হচ্ছে ‘মুদাফা’ বা কুরআনিক আলোকে সংযুক্ত এবং ২২টি হচ্ছে ‘আফাল ও আওসাফ’ অর্থাৎ নিজস্ব অভিব্যক্তিতে বিশ্লেষণপূর্ণ নয়। তার যুক্তি হচ্ছে এই ২৯টি নাম অবশ্যই ইংরেজির ‘নাউন’ বা ‘বিশেষ্য’ হওয়া চাই, কিন্ত তা ‘ভার্ব’ বা ‘ক্রিয়াপদ’ অথবা ‘অ্যাডজেক্টিভ’ বা ‘বিশেষণ’ হিসেবে দৃশ্যমান। ‘দ্য কনসেপ্ট অব টাইম ইন ইসলাম’ গ্রন্থের রচয়িতা ও যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ষ্টাডিজের অধ্যাপক জারহাড বাওয়ারিংয়ের মতে, সুরা আল-আরাফের ১৮০, সুরা আল-ইসরার ১১০, সুরা তা’হা-র ৮ ও সুরা আল-হাশরের ২৪ আয়াতে এই ‘সবচেয়ে সুন্দর নাম’ ‘আল ইসম আল আজম’ অর্থাৎ আল্লাহর সর্বোচ্চ নাম হিসেবে বিবেচিত। সুরা আল-আরাফের ১৮০ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহর আছে সর্বোত্তম নাম। সেভাবেই তাঁকে ডাকো। আর তাদেরকে বর্জন করো, যারা তাঁর নাম নিয়ে কটুক্তি করে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে’। সুরা আল-ইসরার ১১০ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহ কিংবা রহমান বলে ডাকো – যে নামেই ডাকো না কেন সকল সুন্দর নামই তাঁর। নামাজ আদায়কালে উচু কিংবা নিচুস্বরে নয়, বরং মধ্যমস্বরে তাঁকে ডাকো’। সুরা তা’হার ৮ আয়াতে রয়েছে, ‘আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য বা ইলাহ নেই। সকল সৌন্দর্যমন্ডিত নামই তাঁর’। একইভাবে সুরা আল হাশরের ২৪ আয়াতে রয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, ¯্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা; উত্তম সকল নামই তাঁর। নভোমন্ডলে ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, সবই তাঁর পবিত্রতা ঘোষনা করে। তিনি পরাক্রান্ত প্রজ্ঞাময়’।
সবশেষে আল কুরআনের অলৌকিকতার বিষয়ে আল্লাহ নিজেই চ্যালেঞ্জ রেখেছেন। তাতে সুরা আল-ইসরার ৮৮ আয়াত, সুরা-হুদের ১৩ আয়াত এবং সুরা আল-বাকারার ২৩ আয়াতে আল্লাহ অবিশ্বাসীদের প্রতি যথাক্রমে সমগ্র কুরআন, ১০টি অধ্যায় অথবা নিদেনপক্ষে সমতুল্য ১টি অধ্যায় রচনা করার আহবান রেখেছেন।
তারপরও কী আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর বক্তব্যের কোনো সাজুয্যতা থাকে? নাকি তার সেই বক্তব্য প্রদানে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের কোনো বৈধ মেন্ডেট বা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একান্নবর্তী থাকার কোনো যৌক্তিক উদ্দেশ্য পরিপূরণ হয়? (আমাদের সময়.কম)
টরন্টো, কানাডা।
ই-মেইল:bukhari.toronto@gmail.com