নিউইয়র্ক ০৪:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০১৫
  • / ১৩৩৪ বার পঠিত

মোহাম্মদ আলী বোখারী: যে পিতা লাশ শনাক্ত করতে ভয় পায়/ আমি তাকে ঘৃণা করি/ যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে/ আমি তাকে ঘৃণা করি-/ যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানি/ প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না/ আমি তাকে ঘৃণা করি-/ ঃ এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না/ এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না/ এই রক্তাত কসাইখানা আমার দেশ না/ আমি আমার দেশকে ফের কেড়ে নেব।
পশ্চিমবঙ্গের সাড়া জাগানো কবি নবারুণ ভট্টাচার্যের ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’Ñ কবিতাগ্রন্থের এই প্রারম্ভিক কবিতাটাই যেন পড়ন্ত তুষারের শীতে গত ১ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় টরন্টোয় প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিবাদী নারী-পুরুষের প্রতিধ্বনি হয়ে ওঠে। তারা ঢাকার বইমেলায় ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ড. অভিজিৎ রায়ের খুনের প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হন। ‘সত্যবাদিকে হত্যা করা যায়, কিন্ত সত্যকে নয়’Ñ সচিত্র ব্যানারে যৌথভাবে তা আয়োজন করে গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘যথার্থ’। এতে সভাপতিত্ব করেন কানাডার উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল মালিক এবং শিরোনাম কবিতাটি আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শেখর-ই-গোমেজ। অনুষ্ঠান উপস্থাপকের অভিব্যক্তিতে তা ছিল ধ্বনিমুখর ও প্রতিবাদী।
আমিও স্বচক্ষে তারই প্রতিরূপ দেখতে পাই সমবেত প্রতিটি মানুষের চোখে-মুখে। কবিতাটি উপস্থাপনের পূর্বাপর বক্তৃতায় তারই প্রতিফলন ঘটে। প্রসঙ্গক্রমে সাম্প্রতিক চলমান পেট্রলবোমায় আহত-নিহত মানুষের আহাজারি ও লঞ্চডুবি মানুষের মর্মযন্ত্রণারও উদগীরণ ঘটে। যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের অভ্যুদয়, সে দেশটি আজ রাষ্ট্রযন্ত্রের আপসকামিতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে তারই করুণগাথা স্বয়ং সভাপতিই দ্বিধাহীনচিত্তে তুলে ধরেন। তারপরও এত প্রতিবাদের মাঝে ড. অভিজিৎ রায়ের নৃশংস খুনের ঘটনাটি রহস্যাবৃতই থেকে যায়, অন্তত ঘাতকদ্বয়ের নির্বিঘœ পলায়নে। সবার গহীন মনের জিজ্ঞাসাÑ কী করে একজন মুক্তমনের অধিকারী ও বিজ্ঞানমনস্ক প্রবাসী দশ দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে গিয়ে তিন-স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার নিছিদ্র বইমেলায় অবলীলায় নিহত ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা মারাতœক আহত হলেন।
টরন্টোয় প্রতিবাদের পরদিন ২ মার্চ দৈনিক আমাদের অর্থনীতির প্রথম পাতায় মুদ্রিত পিংকি আক্তারের সাহসী ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি যে কাউকে চরমভাবে বাক-বিমূঢ় করবে। ‘অথচ নৃশংসতা দেখে তারাও এগোয়নি : ওইদিন পুলিশ বলছিল ওনাদের কেউ ধরেন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ মাত্র দুজন ঘাতকের চাপাতির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত ড. অভিজিৎ রায়কে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি আর কেউ নন, মাত্র মাস ছয়েক ধরে সাংবাদিকতায় আসা বাংলার চোখ নিউজ এজেন্সির ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ। তারই উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছেÑ ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল শত শত মানুষ এবং অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়েছিল পুলিশও। কিন্ত সবাই নির্বাক, নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল। এমতাবস্থায় আমি প্রথমে দুটি ছবি তুলি, যেহেতু ফটো সাংবাদিক হিসেবে এটি আমার দায়িত্ব। ঘটনাস্থলে পুলিশ বলছিল ওনাদের কেউ ধরেন’। একই স্বগোতোক্তিতে রয়েছেÑ ‘বইমেলা থেকে আগত একটি যাত্রীবাহী সিএনজির সাহায্যে ঘটনাস্থল থেকে অভিজিৎ ও বন্যাকে ঢাকা মেডিকেলে নেই। কিন্ত সিএনজিতে ওঠার পর রাফিদা আহমেদ বন্যা চিৎকার করে ওঠে। কারণ তিনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ওই মুহূর্তে তিনি তার স্বাভাবিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং আমাকে সন্দেহ করেন। এ সময় রাফিদা আহমেদ বারবারই আমার কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে তাদের ছেড়ে দিতে বলেন। জীবন বলেন, সিএনজিতে অভিজিৎ রায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ আমার কোলেই ছিল। ঘটনাস্থলের পুলিশ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে কোনো প্রকার সাহায্য করেনি। আমি ভয়কে জয় করে মানবতার পরিচয় দিয়ে একাই অবশেষে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই’।
পাশাপাশি পুলিশের এই নির্বিকার ভূমিকাটি একই দিন একই পত্রিকায় বিবৃত হয়েছে বার্তা সম্পাদক দীপক চৌধুরীর প্রতিবেদনে। সেখানে ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লর্ড অ্যাভাবুরি বলেছেন, ‘অভিজিতের খুনিদের পালিয়ে যেতে দিয়েছে পুলিশ’। এছাড়াও গোয়েন্দাদের ভাষ্যে বাংলা ট্রিবিউনের আরেকটি সংবাদে তাজ্জব হতে হয় যে, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার বাংলা সেভেন’ টুইট বার্তাটি পাঠানো হয় ব্রিটেন থেকে। একই সংবাদে রয়েছে- হত্যাকান্ডের কিছু সময় পর অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের মোবাইল ফোনে দেওয়া হুমকিটি আসে গাইবান্ধা থেকে। এরপর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এতে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা আর আপাত: দৃষ্টিতে রাষ্ট্রযন্ত্রের রহস্যময় ও নির্বিকার ভূমিকা প্রত্যক্ষ করে কবি নবারুণ ভট্টাচার্যেরÑ ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’ বিমূর্ত প্রেরণায় কী জাতির সম্বিৎ ফেরাতে সক্ষম হবে? (দৈনিক আমাদের অর্থনীতি)
লেখক: সাংবাদিক, টরন্টো (কানাডা)।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’

প্রকাশের সময় : ০৮:২৪:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ মার্চ ২০১৫

মোহাম্মদ আলী বোখারী: যে পিতা লাশ শনাক্ত করতে ভয় পায়/ আমি তাকে ঘৃণা করি/ যে ভাই এখনও নির্লজ্জ স্বাভাবিক হয়ে আছে/ আমি তাকে ঘৃণা করি-/ যে শিক্ষক বুদ্ধিজীবী কবি ও কেরানি/ প্রকাশ্য পথে এই হত্যার প্রতিশোধ চায় না/ আমি তাকে ঘৃণা করি-/ ঃ এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না/ এই জল্লাদের উল্লাস মঞ্চ আমার দেশ না/ এই রক্তাত কসাইখানা আমার দেশ না/ আমি আমার দেশকে ফের কেড়ে নেব।
পশ্চিমবঙ্গের সাড়া জাগানো কবি নবারুণ ভট্টাচার্যের ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’Ñ কবিতাগ্রন্থের এই প্রারম্ভিক কবিতাটাই যেন পড়ন্ত তুষারের শীতে গত ১ মার্চ রোববার সন্ধ্যায় টরন্টোয় প্রায় দেড় শতাধিক প্রতিবাদী নারী-পুরুষের প্রতিধ্বনি হয়ে ওঠে। তারা ঢাকার বইমেলায় ‘মুক্তমনা’ ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা ড. অভিজিৎ রায়ের খুনের প্রতিবাদ জানাতে সমবেত হন। ‘সত্যবাদিকে হত্যা করা যায়, কিন্ত সত্যকে নয়’Ñ সচিত্র ব্যানারে যৌথভাবে তা আয়োজন করে গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল উদ্যোগ ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘যথার্থ’। এতে সভাপতিত্ব করেন কানাডার উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ও বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল মালিক এবং শিরোনাম কবিতাটি আবৃত্তি করেন বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শেখর-ই-গোমেজ। অনুষ্ঠান উপস্থাপকের অভিব্যক্তিতে তা ছিল ধ্বনিমুখর ও প্রতিবাদী।
আমিও স্বচক্ষে তারই প্রতিরূপ দেখতে পাই সমবেত প্রতিটি মানুষের চোখে-মুখে। কবিতাটি উপস্থাপনের পূর্বাপর বক্তৃতায় তারই প্রতিফলন ঘটে। প্রসঙ্গক্রমে সাম্প্রতিক চলমান পেট্রলবোমায় আহত-নিহত মানুষের আহাজারি ও লঞ্চডুবি মানুষের মর্মযন্ত্রণারও উদগীরণ ঘটে। যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশের অভ্যুদয়, সে দেশটি আজ রাষ্ট্রযন্ত্রের আপসকামিতায় মুখ থুবড়ে পড়েছে তারই করুণগাথা স্বয়ং সভাপতিই দ্বিধাহীনচিত্তে তুলে ধরেন। তারপরও এত প্রতিবাদের মাঝে ড. অভিজিৎ রায়ের নৃশংস খুনের ঘটনাটি রহস্যাবৃতই থেকে যায়, অন্তত ঘাতকদ্বয়ের নির্বিঘœ পলায়নে। সবার গহীন মনের জিজ্ঞাসাÑ কী করে একজন মুক্তমনের অধিকারী ও বিজ্ঞানমনস্ক প্রবাসী দশ দিনের মাথায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে গিয়ে তিন-স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তার নিছিদ্র বইমেলায় অবলীলায় নিহত ও তার স্ত্রী রাফিদা আহমেদ বন্যা মারাতœক আহত হলেন।
টরন্টোয় প্রতিবাদের পরদিন ২ মার্চ দৈনিক আমাদের অর্থনীতির প্রথম পাতায় মুদ্রিত পিংকি আক্তারের সাহসী ও অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি যে কাউকে চরমভাবে বাক-বিমূঢ় করবে। ‘অথচ নৃশংসতা দেখে তারাও এগোয়নি : ওইদিন পুলিশ বলছিল ওনাদের কেউ ধরেন’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছেÑ মাত্র দুজন ঘাতকের চাপাতির আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত ড. অভিজিৎ রায়কে ঘটনাস্থল থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি আর কেউ নন, মাত্র মাস ছয়েক ধরে সাংবাদিকতায় আসা বাংলার চোখ নিউজ এজেন্সির ফটো সাংবাদিক জীবন আহমেদ। তারই উদ্ধৃতিতে বলা হয়েছেÑ ‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল শত শত মানুষ এবং অস্ত্র হাতে দাঁড়িয়েছিল পুলিশও। কিন্ত সবাই নির্বাক, নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল। এমতাবস্থায় আমি প্রথমে দুটি ছবি তুলি, যেহেতু ফটো সাংবাদিক হিসেবে এটি আমার দায়িত্ব। ঘটনাস্থলে পুলিশ বলছিল ওনাদের কেউ ধরেন’। একই স্বগোতোক্তিতে রয়েছেÑ ‘বইমেলা থেকে আগত একটি যাত্রীবাহী সিএনজির সাহায্যে ঘটনাস্থল থেকে অভিজিৎ ও বন্যাকে ঢাকা মেডিকেলে নেই। কিন্ত সিএনজিতে ওঠার পর রাফিদা আহমেদ বন্যা চিৎকার করে ওঠে। কারণ তিনি আমাকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ওই মুহূর্তে তিনি তার স্বাভাবিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন এবং আমাকে সন্দেহ করেন। এ সময় রাফিদা আহমেদ বারবারই আমার কাছে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে তাদের ছেড়ে দিতে বলেন। জীবন বলেন, সিএনজিতে অভিজিৎ রায়ের ক্ষতবিক্ষত দেহ আমার কোলেই ছিল। ঘটনাস্থলের পুলিশ আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে কোনো প্রকার সাহায্য করেনি। আমি ভয়কে জয় করে মানবতার পরিচয় দিয়ে একাই অবশেষে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাই’।
পাশাপাশি পুলিশের এই নির্বিকার ভূমিকাটি একই দিন একই পত্রিকায় বিবৃত হয়েছে বার্তা সম্পাদক দীপক চৌধুরীর প্রতিবেদনে। সেখানে ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লর্ড অ্যাভাবুরি বলেছেন, ‘অভিজিতের খুনিদের পালিয়ে যেতে দিয়েছে পুলিশ’। এছাড়াও গোয়েন্দাদের ভাষ্যে বাংলা ট্রিবিউনের আরেকটি সংবাদে তাজ্জব হতে হয় যে, ব্লগার ও লেখক অভিজিৎ রায় হত্যার দায় স্বীকার করে জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার বাংলা সেভেন’ টুইট বার্তাটি পাঠানো হয় ব্রিটেন থেকে। একই সংবাদে রয়েছে- হত্যাকান্ডের কিছু সময় পর অভিজিৎ রায়ের বাবা অধ্যাপক অজয় রায়ের মোবাইল ফোনে দেওয়া হুমকিটি আসে গাইবান্ধা থেকে। এরপর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এতে প্রশ্ন জাগে, বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা আর আপাত: দৃষ্টিতে রাষ্ট্রযন্ত্রের রহস্যময় ও নির্বিকার ভূমিকা প্রত্যক্ষ করে কবি নবারুণ ভট্টাচার্যেরÑ ‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’ বিমূর্ত প্রেরণায় কী জাতির সম্বিৎ ফেরাতে সক্ষম হবে? (দৈনিক আমাদের অর্থনীতি)
লেখক: সাংবাদিক, টরন্টো (কানাডা)।