নিউইয়র্ক ০৭:৩০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

আ-মরি বাংলা ভাষা : তেষট্টি বছরেও বাংলা সর্বস্তরে চালু হয়নি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৭:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
  • / ১২৭৬ বার পঠিত

আহমদ রফিক: শুরুটা ১৯৪৭ সালের প্রথম দিকে, যখন মুসলিম লীগের শীর্ষনেতারা বলতে থাকেন যে হবু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এর লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন জনাকয় বাঙালী মুসলমান দৈনিক পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখে। সাংবাদিক-লেখক আবদুল হক তাদের অন্যতম। এভাবে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা উপলক্ষে বাঙালি-অবাঙালীর বাদ-প্রতিবাদ। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২- এই সময়ে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, আন্দোলন প্রধানত বাংলা ভাষার দাবী নিয়ে। বায়ান্নর আন্দোলনে মানুষ হত্যা, আন্দোলনের চরিত্রে বদল ঘটায়। ভাষাচেতনার বিস্তার ঘটে শুধু ছাত্রসমাজেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে পাকিস্তান-চেতনার সঙ্গে ভাষাচেতনার দ্বন্দ্ব শুরু। একের পর এক পাকিস্তান সরকারের বাংলাবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বাঙালীরা লড়াই করেছে। যদিও এ লড়াইয়ের ভিত তৈরি করেছে ছাত্রসমাজ, কিন্তু ঘটনাপরম্পরায় তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ। এর সমর্থনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবী জোরদার হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা রক্ষা পায়। ভাষা সংগ্রামের সময় আমার বয়স ছিল ২৩ বছর। তখন আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজনৈতিক বাধা উপেক্ষা করে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি। এ বছর আমাদের মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৩ বছর হচ্ছে অথচ রক্তেভেজা একুশের চেতনা কিংবা বাংলা ভাষার ব্যবহার সর্বত্র হয়নি। বাংলা ভাষার ব্যবহার যারা টিকিয়ে রাখতে চান তাদের বায়ান্নর রক্তঝরা দিনকে স্মরণ করে, ভাষার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভাষাপ্রীতির মাধ্যমে দেশপ্রেম গড়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পায়।
লেখক: প্রাবন্ধিক, ভাষাসংগ্রামী ও চিকিৎসক

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

আ-মরি বাংলা ভাষা : তেষট্টি বছরেও বাংলা সর্বস্তরে চালু হয়নি

প্রকাশের সময় : ০৭:৪৮:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

আহমদ রফিক: শুরুটা ১৯৪৭ সালের প্রথম দিকে, যখন মুসলিম লীগের শীর্ষনেতারা বলতে থাকেন যে হবু পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। এর লিখিত প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন জনাকয় বাঙালী মুসলমান দৈনিক পত্রিকায় প্রবন্ধ লিখে। সাংবাদিক-লেখক আবদুল হক তাদের অন্যতম। এভাবে শুরু হয় রাষ্ট্রভাষা উপলক্ষে বাঙালি-অবাঙালীর বাদ-প্রতিবাদ। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫২- এই সময়ে বিক্ষোভ, প্রতিবাদ, আন্দোলন প্রধানত বাংলা ভাষার দাবী নিয়ে। বায়ান্নর আন্দোলনে মানুষ হত্যা, আন্দোলনের চরিত্রে বদল ঘটায়। ভাষাচেতনার বিস্তার ঘটে শুধু ছাত্রসমাজেই নয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে পাকিস্তান-চেতনার সঙ্গে ভাষাচেতনার দ্বন্দ্ব শুরু। একের পর এক পাকিস্তান সরকারের বাংলাবিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে বাঙালীরা লড়াই করেছে। যদিও এ লড়াইয়ের ভিত তৈরি করেছে ছাত্রসমাজ, কিন্তু ঘটনাপরম্পরায় তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে শিক্ষক, লেখক, সাংবাদিক, পেশাজীবী ও সাধারণ মানুষ। এর সমর্থনে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবী জোরদার হয়। এরপর ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী রক্তের বিনিময়ে মাতৃভাষা রক্ষা পায়। ভাষা সংগ্রামের সময় আমার বয়স ছিল ২৩ বছর। তখন আমরা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে রাজনৈতিক বাধা উপেক্ষা করে মাতৃভাষা রক্ষার জন্য আন্দোলন করেছি। এ বছর আমাদের মাতৃভাষা আন্দোলনের ৬৩ বছর হচ্ছে অথচ রক্তেভেজা একুশের চেতনা কিংবা বাংলা ভাষার ব্যবহার সর্বত্র হয়নি। বাংলা ভাষার ব্যবহার যারা টিকিয়ে রাখতে চান তাদের বায়ান্নর রক্তঝরা দিনকে স্মরণ করে, ভাষার প্রতি ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। ভাষাপ্রীতির মাধ্যমে দেশপ্রেম গড়ে ওঠে। মনে রাখতে হবে, বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দেশের সম্মান বৃদ্ধি পায়।
লেখক: প্রাবন্ধিক, ভাষাসংগ্রামী ও চিকিৎসক