মিডিয়ার বিপদ
- প্রকাশের সময় : ০৯:৫৬:১৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
- / ৭৪০ বার পঠিত
ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী: বাংলাদেশে মিডিয়া বিশেষ করে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার ব্যাপক বিস্তৃতি ঘটেছে। কিন্তু মিডিয়ার যত বিস্তার ঘটেছে, এর স্বাধীনতাও ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে ততটাই। প্রিন্ট কিংবা ইলেকট্রনিক মিডিয়া প্রায় সব বর্তমান সরকারী দল নিয়ন্ত্রিত। বিরোধী দল বা ভিন্ন মতাবলম্বীদের হাতে যা আছে বা ছিল তা উল্লেখযোগ্য নয়। যাওবা ছিল, তার প্রায় সবই সরকারী রোষে বন্ধ হয়ে গেছে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার এখন দোর্দন্ড প্রতাপ। এসব মিডিয়ার মালিক সরকারপন্থীরা। সেখানে এরা এমন সব কর্মী বেছে বেছে নিয়োগ করে, যারাও কট্টর সরকার সমর্থক। এ ক্ষেত্রে মিডিয়া আন্তর্জাতিক বা জাতীয় মান কোনোটাই রক্ষা করার চেষ্টা করে না। সরকার যে প্রচার-প্রপাগান্ডা চালায় বা চালাতে চায়, মিডিয়া সেটাই জোরেশোরে প্রচার করতে থাকে। ফলে এগুলো হয়ে পড়ে বিপজ্জনক ধরনের একপেশে। এখন মিডিয়ায় তেমন প্রচার-প্রপাগান্ডাই চলছে।
সরকার কিভাবে মানবাধিকার হরণ করছে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী কিভাবে নরহত্যায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে, অকারণে সাধারণ মানুষকে গুলি করে পঙ্গু করে দিচ্ছে, চালাচ্ছে গ্রেফতার বাণিজ্য, যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে কিভাবে গ্রামকে গ্রাম তছনছ করে দিচ্ছে, সে সংবাদের ছিটেফোঁটা খবরের কাগজে এলেও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় তার দেখা পাওয়া ভার। এসব মিডিয়া সরকারের প্রদর্শিত পথে পাল তুলে এগিয়ে যাচ্ছে। তাতে মিডিয়াগুলোর গ্রহণযোগ্যতা একেবারে শূন্যের কোঠায় পৌঁছে যাচ্ছে।
রাষ্ট্র ও সমাজের ভেতরে যদি সহনশীল গণতন্ত্রের চর্চা না থাকে, ভিন্ন মতের রাজনীতির অস্তিত্ব যদি বিপন্ন হয়ে পড়ে, তা হলে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রচারমাধ্যমগুলো বিপন্ন হতে বাধ্য। বর্তমান সরকার, বিরোধী সব মত একেবারে মূল থেকে উৎপাটন করে ফেলতে চাইছে। ভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোকে মেরে-কেটে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে। রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে মুক্তবুদ্ধির লোকেরা যে যেখানে ভিন্ন মত প্রকাশের চেষ্টা করছে, সেখানেই তাকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়া হচ্ছে।
ক্রমেই স্বাধীনভাবে কথা বলার অধিকার খর্ব হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, স্বাধীনভাবে কথা বলতে ১০বার এদিক ওদিক চোখ বুলিয়ে নিতে হচ্ছে। কিন্তু সেটুকুও সহ্য করতে রাজি নয় সরকার। কেউ সত্য কথা বললেই তাকে স্বাধীনতার শত্রু, একাত্তরের ঘাতক কিংবা ঘাতকদের দোসর হিসেবে সাব্যস্ত করা হচ্ছে। আর চিৎকার করে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে, এদের সমূলে উৎপাটন করতে হবে। এমনকি এদের পরিবারকেও ছেড়ে দেয়া হবে না। রাজনীতির ভিন্ন মতের কথা তো সরকার শুনতেই চায় না। এমনকি অর্থনীতি সমাজ সংস্কৃতির ক্ষেত্রেও নিজেদের চিন্তার বাইরে আর কিছুই শুনতে চায় না সরকার। সেটা শুনলে বরং তারা লাভবানই হতো। জনকল্যাণের পথে অগ্রসর হতে পারত। সেই সহনশীলতা ক্রমেই তিরোহিত হচ্ছে।
বিরোধী মতের রাজনৈতিক দলগুলোকে কোণঠাসা করতে করতে দেশকে একেবারে ধ্বংসের দুয়ারে নিয়ে গেছে সরকার। এ ক্ষেত্রে এরা কোনো দূরদর্শী চিন্তা ভাবনাও করতে নারাজ। কোনো একটি ঘটনা কিংবা সরকারের কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ কী ধরনের বৈরী পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে, সমাজের ভেতরে কী ধরনের আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারে, সে বিষয়ে বর্তমান সরকার উদাসীন। ভিন্ন মত থেকে যে সত্যোপলব্ধি সহজ হতে পারে সেটিও বর্তমান সরকার মেনে নিতে প্রস্তুত নয়। এরকম একটি পরিস্থিতি একটি সমাজকে শুধু পেছনেই ঠেলে। সামনে এগোতে দেয় না। এটি রাজনীতির ক্ষেত্রে যেমন সত্য, তেমনি সত্য সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রেও।
২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারীর চরম বিতর্কিত নির্বাচন দেশে এক অভাবনীয় সঙ্কটের সৃষ্টি করেছে। এই সঙ্কটেরও কার্যত জন্ম দেয়া হয়েছে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। ওই সংশোধনীর মধ্য দিয়ে সরকার এমন সব বিধান করেছে, যা অনন্তকালের জন্য অপরিবর্তনীয়। কিন্তু কালের পরিসরে যুগের চাহিদায় মানুষের আশা আকাংক্ষার পরিবর্তনের ফলে তা অপরিবর্তনযোগ্য থাকতে পারে না। সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সরকার তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বিলুপ্ত করেছে। জনমত যাচাইয়ের জন্য গণভোট ব্যবস্থা রদ করেছে। মানুষের নানা মৌলিক অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। নানা ধরনের আইন-কানুন করে কেড়ে নেয়া হয়েছে মৌলিক অধিকার। সে পথেই এখন দেশে এক অসহনীয় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
প্রথম থেকেই সরকার খড়গহস্ত মিডিয়ার ওপর। এই ক্ষোভের শুরু প্রধানত টেলিভিশনগুলোর টকশো নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক আগে থেকেই টকশোগুলোকে ভারি টক বলে বিদ্রুপ করেছেন। আর টকশোতে যারা অংশ নেন তাদের চোর-ছ্যাচ্চোর বলে গালিগালাজ করেছেন। কারণ তার মতে, চোরেরাই শুধু চুরি করার ধান্ধায় মধ্যরাত পর্যন্ত জেগে থাকে। যখন রাজপথে সভা সমাবেশ করে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়, তখন সত্য শুনতে উদগ্রীব থাকে মানুষ। সত্যের সন্ধানে তারা টকশোতে উচ্চারিত ভিন্ন মত শুনতে চায়।
টেলিভিশনের টকশোগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল সেখানে আলোচনার জন্য বিভিন্ন মতের মানুষকে একত্রিত করা হতো। এরা যার যার মতো করে তাদের মত প্রকাশের সুযোগ পেতেন। সাধারণ মানুষ এসব ভিন্ন মত থেকে আসল সত্য খুঁজে নেয়ার চেষ্টা করত। ফলে টকশোগুলোর চমৎকার জনপ্রিয়তা সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু যারা ¯্রােতের বাইরে দাঁড়িয়ে সত্য বলার চেষ্টা করতেন, তারা দ্রুতই সরকারের চক্ষুশূলে পরিণত হলেন। সরকারের তরফ থেকে বারবার ঘোষণা হতে থাকল, এই টকশো-অলারা জাতির শত্রু। অতএব এদেরও সমূলে উৎপাটন করতে হবে।
তখন আওয়ামী গুন্ডারা টকশো-অলাদের কর্মস্থল বা বাসভবনে হানা দিতে শুরু করল। আওয়ামী এক মন্ত্রী তো নিউইয়র্কে অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য ভাষায় টকশোর আলোচকদের গালিগালাজ করে বসলেন। টকশোতে যারা ভিন্ন মত নিয়ে আসেন, তারা ভদ্রলোক। কিন্তু এরকম ভীতি প্রদর্শনের খামোশ হয়ে গেলেন তাদের অনেকেই। এদের মধ্যে বিরোধী দলের লোক ছিলেন। সরকারের স্বৈরতান্ত্রিক রোষে তাদের বেশির ভাগই এখন কারাগারে। অনেকে আবার পলাতক। সরকারের তরফ থেকে অনেক টিভি চ্যানেলকে জানিয়ে দেয়া হলো, টকশোতে অমুককে আর ডাকা যাবে না। বেশ কয়েকটি বেয়াড়া টকশো সরকারের রোষে বন্ধ হয়ে গেল।
রাজনৈতিক ভিন্ন মত এখন ভয়াবহ রকম সঙ্কুচিত। সেখানে আলোচনার ভিন্নমতও এখন প্রায় নির্বাসনে। সরকার ইতোমধ্যেই চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টেলিভিশন, দিগন্ত টেলিভিশন বন্ধ করে দিয়েছে। একুশে টেলিভিশনেরও গলা টিপে ধরেছে সরকার। ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করেনি বটে, তবে সার্ভারদের হুমকি এমন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে, সম্প্রচার চালু থাকলেও চ্যানেলটি যেন কেউ দেখতে না পারে। অথচ এর চেয়ারপারসনও সরকার সমর্থিত লোকই, ভিন্ন মতের কেউ নন। ফলে সরকার সমর্থক চ্যালেনগুলো এখন পড়েছে নানা ধন্ধে। কাকে ডাকবে, কখন বন্ধ হয়ে যাবে চ্যানেল।
সরকারী লোকেরা বলতে শুরু করেছে টকশো, সংবাদপত্র কিংবা সুশীলসমাজ- এদেরও মূলোৎপাটন করা হবে। ভিন্ন মতের রাজনীতিকদের যেভাবে সরকার গলা টিপে ধরেছে, তাতে ইতোমধ্যেই সরকার অনেকখানি অন্ধ হয়ে পড়েছে। তার ওপর যদি মিডিয়ার ওপরেও নিয়ন্ত্রণের খড়গ নামিয়ে দেয়া হয়, তাহলে সরকার হয়ে পড়বে সম্পূর্ণরূপে গোয়েন্দানির্ভর, জননির্ভরতার লেশমাত্রও থাকবে না। এ ক্ষেত্রে সরকার প্রথম যে কাজ করছে, তা হলো টিভি চ্যানেলগুলোর লাইভ অনুষ্ঠান বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বন্ধ করে দিয়েছে। এগুলো ছিল সরকারের এক ধরনের চোখ। শত ক্যামেরায় যা ধারণ করা যেত সরকারের গোয়েন্দা রিপোর্টে তা ধারণ করা সম্ভব নয়। সে উপলব্ধি সরকার হারিয়ে ফেলেছে।
সারা দেশে ২০ দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচী শুরু হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা যানবাহনে পেট্রলবোমা মেরেছে। তাতে কয়েক ডজন মানুষের প্রাণহানী ঘটেছে। অর্ধশতাধিক মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। অনেকেই কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে। সন্দেহ নেই, এ ঘটনা মর্মান্তিক। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সরকারের আতিপাতি মন্ত্রীরা ‘বার্ন ইউনিট’, ‘বার্ন ইউনিট’ বলে এর যাবতীয় দোষ ২০ দলীয় জোটের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে। আর বার্ন ইউনিটের কথা বলে তারা ঘোষণা করলেন, যারা সংলাপের কথা বলে তারা জাতির শত্রু। তাদের নির্মূল করতে হবে।
কিন্তু খবরের কাগজে একে একে বের হতে থাকল চাঞ্চল্যকর তথ্য। পেট্রলবোমা মারতে গিয়ে, বানাতে গিয়ে সরকার দলের লোকেরা যখন ধরা পড়তে থাকল, তখন আর এ বিষয়ে সরকারের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করার জো থাকল না। সরকার দলের অফিসে পাওয়া গেল বোমার গুদাম। সরকারী এমপির বাড়িতে পাওয়া গেল বোমার কারখানা। বোমা মারতে গিয়ে যারা ধরা পড়ল, দেখা গেল, তাদের বেশির ভাগই সরকারী দলের সদস্য। তখন সরকারী এমপি নেতারা শ’য়ে শ’য়ে সেসব বোমাবাজের নামে চারিত্রিক সার্টিফিকেট ইস্যু করল- ওই বোমাবাজেরা সৎ ও মেধাবী এবং আওয়ামী লীগের কর্মী। অতএব তাদের যেন ছেড়ে দেয়া হয়। সরকার সমর্থিত টিভি চ্যালেনগুলো বার্ন ইউনিটের হাহাকার আর কান্না নিয়ে রিপোর্ট করতে থাকল। আর বার্ন ইউনিট যেন হয়ে গেল একটি শুটিং স্পট। অনেকেই আহত রোগীদের নানা ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে চোখে গ্লিসারিন লাগিয়ে কান্নার ছবি তুলতে লাগল।
কিন্তু মুদ্রার অপর পিঠ রইল অন্ধকারেই। সেটা সরকারী বাহিনীর হাতে তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ও আহতদের কাহিনী। এ সব ক্ষেত্রেই পরিবারগুলোর তরফ থেকে দাবি করা হলো যে, তাদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর লোক। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বারবার সে কথা অস্বীকার করল। তারপর দেখা গেল, তথাকথিত বন্দুকযুদ্ধে সে মারা গেছে বা কোথায়ও তার লাশ পাওয়া গেছে। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেল রাজনীতির সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন কাউকে ধরে নিয়ে গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। চাঁদা দাবি করেছে, পরিবার চাঁদা দিতে ব্যর্থ হলে হাঁটুর ওপর গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে। অনেকেরই পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে। এভাবে এক একটি জীবন ধ্বংস হয়েছে। বিনা অপরাধে পঙ্গুত্ববরণ করতে হয়েছে। সেসব পরিবারেও উঠেছে কান্নার রোল। যারা ‘বার্ন ইউনিট’, ‘বার্ন ইউনিট’ করে অনেক কথা বলেছেন, তারা পঙ্গু হাসপাতালে পড়ে থাকা মানুষের আহাজারি শোনেননি। সরকারী কোনো মহলকে এ নিয়ে একটি কথাও বলতে শুনিনি। কিন্তু মিডিয়া যদি স্বাধীন থাকত, তাদের ওপর যদি হস্তক্ষেপ করা না যেত, তাহলে নিশ্চিত করে বলতে পারি, সেখানে পড়ে থাকা আহত অঙ্গহানী রোগীরা ও তার স্বজনরা আসল কথা বলতে পারতেন। সরকার দৃষ্টি দিতে পারত সেদিকেও। তারা মুক্ত থাকতে পারত এই বিপুলসংখ্যক মানুষের অভিসম্পাত থেকে।
সর্বশেষ ঘটনাটি ঘটেছে ডেইলি স্টার পত্রিকা নিয়ে। ডেইলি স্টার পত্রিকা কিছু দিন আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবুত তাহরীরের পোস্টারের একটি ছবি ছেপে লিখেছিল যে, হরতাল অবরোধের সুযোগে ওই সংগঠনটি আবার তাদের কুৎসিত মাথা বের করার চেষ্টা করছে। সংবাদটি সরকারের জন্য শতভাগ পজিটিভ ছিল। কিন্তু কোনো এক উকিল এই মর্মে আদালতে মামলা ঠুকে দেয় যে, ডেইলি স্টার পত্রিকা ওই ছবিটি ছেপে হিজবুত তাহরীরকে উৎসাহিত করার চেষ্টা করেছে। শুরুতে আমার নিজের কাছে ব্যাপারটি হাস্যকর মনে হয়েছিল। কিন্তু জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী ডেইলি স্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিলেন, তখন বিষয়টি আর হাস্যকর থাকেনি। এরপর আওয়ামী নেতারা অবিরাম গাল দিতে থাকল ডেইলি স্টার সম্পাদককে। সম্পাদক মাহফুজ আনাম ডেইলি স্টারের প্রথম পাতায় মন্তব্য লিখে এবং টেলিভিশনে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বিষয়টির কোনো সুরাহা করতে পারছেন না। তার বিরুদ্ধে বিষোদগার চলছে। সরকার বুঝতে পারছে না যে, মিডিয়া দলন বা নিয়ন্ত্রণ করে বা মিডিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে অধিকতর অন্ধত্বই বরণ করতে হয়। চোখের সামনে থেকে নিভে যায় সব আলো। ফলে দিকভ্রান্ত হওয়া ছাড়া তাদের আর গত্যন্তর থাকে না।
লেখক: সাংবাদিক ও সাহিত্যিক।