নিউইয়র্ক ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারের মুক্তি দাবি

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৬:০৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৫
  • / ৮৪২ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ এবং সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাব আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারসহ আটক সকল সাংবাদিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সহ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবী, দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ করে দেওয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবী জানান। খবর ইউএনএ’র।
সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর শিকদারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত ১৮ আগষ্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে (সাপ্তাহিক দেশবাংলা/বাংলা টাইমস মিলনায়তন) আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় নিউইয়র্কের সাংবাদিকরা অংশ নেন। নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং হককথা.কম ও বার্তা সংস্থা ইউএনএ-এর সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমদ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও আইঅনবাংলাদেশ টিভি’র পরিচালক রিমন ইসলাম, ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর দফতর সম্পাদক এবং একুশে টিভি’র ইউএস প্রতিনিধি ইমরান আনসারী, এনটিভি ইউএসএ’র বার্তা সম্পাদক আবিদুর রহীম, যমুনা টিভি’র ইউএসএ প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান সাকি, টাইম টেলিভিশনের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ও দ্য রিপোর্ট-এর নিউইয়র্ক প্রতিনিধি শিবলী চৌধুরী কায়েস প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে দৈনিক নয়াদিগন্তের বিশেষ প্রতিনিধি শওকত ওসমান রচি, টাইম টেলিভিশনের কনসালটেন্ট (বার্তা) পুলক মাহমুদ, প্রেসক্লাবের সদস্য সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, মাসিক সমীক্ষা’র সহকারী সম্পাদক আব্দুর রশীদ, সময় টিভি’র আনোয়ার হোসেন বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকরাও রাজনীতি করতে পারেন, যেকোন দল সমর্থন করতে পারেন, এটা দোষের কিছু নয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই রয়েছে আর রাজনীতি হচ্ছে গণতন্ত্রের অলংকার। কিন্তু আজকে যেভাবে গণমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চলছে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাই বলে রাতের আঁধারে প্রথিতযশা সাংবাদিকদের এভাবে আটক করা দেশের গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে নোটিস দেওয়া যেতে পারতো। তিনি অবিলম্বের গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দাবী করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারসহ আটক সকল সাংবাদিককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সহ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবী, দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ করে দেওয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া বলেন, আমাদের প্রজন্মের সাংবাদিকদের কাছে সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শওকত মাহমুদরা ‘আইকন’। তারা আমাদের নেতা। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, একদিকে সাংবাদিক নেতা অপরদিকে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কারণে তাদের পরিচয় আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দেশের সাংবাদিক সমাজ। এটা কাম্য নয়। তিনি বিনয়ের সাথে বলেন, সাংবাদিক নেতাদের হয় সাংবাদিক নেতা, না হয় হাসিনা-খালেদার উপদেষ্টা হিসেবে দলীয় রাজনীতি করা উচিৎ।
রিমন ইসলাম বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবীসহ আমরা এখানে বসে অনেক প্রতিবাদ করছি। কিন্তু আমাদের প্রতিবাদ সরকারের কানে যাচ্ছে না, সরকার আমলে নিচ্ছে না। তারপরও আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে নির্যাতন চলছে, তাতে অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন। যা দেশের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না।
শেখ সিরাজুল ইসলাম দেশের সাংবাদিক ও মিডিয়ার উপর সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের কথা উল্লেখ করে সাগর-রুনি হত্যার বিচার, বন্ধ করে দেয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবী জানান।
মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে মনে হচ্ছে আইনের শাসন নেই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে। একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে এর চেয়ে আর বেশী কি আশা করা যায়? তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বিভক্তিই সাংবাদিকদের দূর্বল করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, অধিকার আদায়ে দেশে-প্রবাসে সাংবাদিকদের ঐক্যের বিকল্প নেই।
ইমরান আনসারি বলেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সেরা ছাত্র, দেশের সাংবাদিকদের নেতা। তিনি বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট তথা তথ্যপ্রযুক্তির মত একটি কালো আইনের ৫৭ ধারায় দু’জন প্রখ্যাত সাংবাদিককে গ্রেফতারই প্রমাণ করে সরকার গণমাধ্যমকে কতটা নগ্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। শওকত মাহমুদের মত সাংবাদিক যার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। একইভাবে প্রবীর সিকদারের পরিবারের মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগও সবার জানা। তারপরও এ ধরনের ঘটনায় জাতিকে লজ্জিত করে। তিনি অবিলম্বে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানসহ আটককৃত সকল সাংবাদিকের মুক্তি, দৈনিক আমার দেশ সহ বন্ধ করে দেয়া দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান টিভি খুলে দেয়ার দাবী জানান।
আবিদুর রহীম বলেন, সাংবাদিকদের আটকের ঘটনায় প্রমান করে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সরকার ভিন্নমত পোষণকে সহ্য করতে পারছে না। তিনি এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
হাসানুজ্জামান সাকি বলেন, সাংবাদিক আটকের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে যে গ্রেফতার করা হবে তা আগে থেকেই বুঝতে পারছিলাম। তাকে আটক করতে সময় নেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সরকারকে আরো ধন্যবাদ জানাই সন্ত্রাসীদের হামলায় পুঙ্গ হওয়া সাংবাদিক প্রবীরকে পুলিশ ডান্ডা-বেড়ী না পরিয়ে হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ঐক্য ছাড়া এমন পরিস্থিতির অবসান হবেন না।
শিবলী চৌধুরী কায়েস বলেন, শওকত মাহমুদ দেশের প্রতিভাবান, কৃতি সাংবাদিক। আজকের মিডিয়া জগতের অনেক সাংবাদিক তার হাতে গড়া। অপরদিকে প্রবীর শিকদার মুক্তিযুদ্ধে আতœজীবন বিসর্জনকারী শহীদ পরিবারের নির্যাতিত-নিপীড়িত সাংবাদিক। তাদেরকে গ্রেফতার মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, দেশের সাংবাদিক সমাজ ও নেতাদের বিভক্তির কারণেই আজকের এই পরিণতি। আমরা যাদের আদর্শ ভেবে গণমাধ্যমকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি তারাই এখন নিজেদের স্বার্থে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে এর পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের প্রতিবাদ সভায় সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারের মুক্তি দাবি

প্রকাশের সময় : ০৬:০৭:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৫

নিউইয়র্ক: বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) সভাপতি ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ এবং সাংবাদিক প্রবীর সিকদারের গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাব। প্রেসক্লাব আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় বক্তারা শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারসহ আটক সকল সাংবাদিককে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সহ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবী, দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ করে দেওয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবী জানান। খবর ইউএনএ’র।
সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর শিকদারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গত ১৮ আগষ্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সিটির জ্যাকসন হাইটস্থ প্রেসক্লাবের অস্থায়ী কার্যালয়ে (সাপ্তাহিক দেশবাংলা/বাংলা টাইমস মিলনায়তন) আয়োজিত এই প্রতিবাদ সভায় নিউইয়র্কের সাংবাদিকরা অংশ নেন। নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি এবং সাপ্তাহিক বাংলা পত্রিকা’র সম্পাদক ও টাইম টিভি’র সিইও আবু তাহেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এবং হককথা.কম ও বার্তা সংস্থা ইউএনএ-এর সম্পাদক এবিএম সালাহউদ্দিন আহমদ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখেন প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও আইঅনবাংলাদেশ টিভি’র পরিচালক রিমন ইসলাম, ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)-এর দফতর সম্পাদক এবং একুশে টিভি’র ইউএস প্রতিনিধি ইমরান আনসারী, এনটিভি ইউএসএ’র বার্তা সম্পাদক আবিদুর রহীম, যমুনা টিভি’র ইউএসএ প্রতিনিধি হাসানুজ্জামান সাকি, টাইম টেলিভিশনের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ও দ্য রিপোর্ট-এর নিউইয়র্ক প্রতিনিধি শিবলী চৌধুরী কায়েস প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে দৈনিক নয়াদিগন্তের বিশেষ প্রতিনিধি শওকত ওসমান রচি, টাইম টেলিভিশনের কনসালটেন্ট (বার্তা) পুলক মাহমুদ, প্রেসক্লাবের সদস্য সৈয়দ ইলিয়াস খসরু, মাসিক সমীক্ষা’র সহকারী সম্পাদক আব্দুর রশীদ, সময় টিভি’র আনোয়ার হোসেন বাবু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় প্রেসক্লাবের সভাপতি আবু তাহের বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে সাংবাদিকরাও রাজনীতি করতে পারেন, যেকোন দল সমর্থন করতে পারেন, এটা দোষের কিছু নয়। মত প্রকাশের স্বাধীনতা সবারই রয়েছে আর রাজনীতি হচ্ছে গণতন্ত্রের অলংকার। কিন্তু আজকে যেভাবে গণমাধ্যমের ওপর দমন-পীড়ন চলছে তা কোনভাবেই কাম্য নয়। কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাই বলে রাতের আঁধারে প্রথিতযশা সাংবাদিকদের এভাবে আটক করা দেশের গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। তাদের আদালতের মাধ্যমে নোটিস দেওয়া যেতে পারতো। তিনি অবিলম্বের গ্রেফতারকৃত সাংবাদিকদের মুক্তি দাবী করেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ তার বক্তব্যে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও প্রবীর সিকদারসহ আটক সকল সাংবাদিককে নিঃশর্ত মুক্তির দাবি সহ সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার দাবী, দৈনিক আমার দেশ-এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি, বন্ধ করে দেওয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া বলেন, আমাদের প্রজন্মের সাংবাদিকদের কাছে সাংবাদিক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, ইকবাল সোবহান চৌধুরী, শওকত মাহমুদরা ‘আইকন’। তারা আমাদের নেতা। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, একদিকে সাংবাদিক নেতা অপরদিকে রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার কারণে তাদের পরিচয় আজ প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে। বিভক্ত হয়ে পড়েছেন দেশের সাংবাদিক সমাজ। এটা কাম্য নয়। তিনি বিনয়ের সাথে বলেন, সাংবাদিক নেতাদের হয় সাংবাদিক নেতা, না হয় হাসিনা-খালেদার উপদেষ্টা হিসেবে দলীয় রাজনীতি করা উচিৎ।
রিমন ইসলাম বলেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মুক্তি দাবীসহ আমরা এখানে বসে অনেক প্রতিবাদ করছি। কিন্তু আমাদের প্রতিবাদ সরকারের কানে যাচ্ছে না, সরকার আমলে নিচ্ছে না। তারপরও আমাদের প্রতিবাদ করতে হবে। তিনি বলেন, দেশের সাংবাদিকদের ওপর যেভাবে নির্যাতন চলছে, তাতে অনেকেই এখন বাধ্য হয়ে আমেরিকাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছেন। যা দেশের জন্য শুভ ফল বয়ে আনবে না।
শেখ সিরাজুল ইসলাম দেশের সাংবাদিক ও মিডিয়ার উপর সরকারের বিমাতাসুলভ আচরণের কথা উল্লেখ করে সাগর-রুনি হত্যার বিচার, বন্ধ করে দেয়া সকল মিডিয়া খুলে দেয়া, মাহমুদুর রহমানের মুক্তি এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিলের দাবী জানান।
মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, দেশে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাতে মনে হচ্ছে আইনের শাসন নেই, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সরকার যা ইচ্ছে তাই করছে। একটি অবৈধ সরকারের কাছ থেকে এর চেয়ে আর বেশী কি আশা করা যায়? তিনি বলেন, সাংবাদিকদের বিভক্তিই সাংবাদিকদের দূর্বল করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, অধিকার আদায়ে দেশে-প্রবাসে সাংবাদিকদের ঐক্যের বিকল্প নেই।
ইমরান আনসারি বলেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদ একটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের সেরা ছাত্র, দেশের সাংবাদিকদের নেতা। তিনি বলেন, আইসিটি অ্যাক্ট তথা তথ্যপ্রযুক্তির মত একটি কালো আইনের ৫৭ ধারায় দু’জন প্রখ্যাত সাংবাদিককে গ্রেফতারই প্রমাণ করে সরকার গণমাধ্যমকে কতটা নগ্নভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। শওকত মাহমুদের মত সাংবাদিক যার পরিবারের সদস্যরা ছিলেন মুক্তিযোদ্ধা। একইভাবে প্রবীর সিকদারের পরিবারের মুক্তিযুদ্ধে ত্যাগও সবার জানা। তারপরও এ ধরনের ঘটনায় জাতিকে লজ্জিত করে। তিনি অবিলম্বে সাংবাদিক শওকত মাহমুদ ও মাহমুদুর রহমানসহ আটককৃত সকল সাংবাদিকের মুক্তি, দৈনিক আমার দেশ সহ বন্ধ করে দেয়া দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, চ্যানেল ওয়ান টিভি খুলে দেয়ার দাবী জানান।
আবিদুর রহীম বলেন, সাংবাদিকদের আটকের ঘটনায় প্রমান করে দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সরকার ভিন্নমত পোষণকে সহ্য করতে পারছে না। তিনি এমন ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
হাসানুজ্জামান সাকি বলেন, সাংবাদিক আটকের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিক শওকত মাহমুদকে যে গ্রেফতার করা হবে তা আগে থেকেই বুঝতে পারছিলাম। তাকে আটক করতে সময় নেয়ার জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সরকারকে আরো ধন্যবাদ জানাই সন্ত্রাসীদের হামলায় পুঙ্গ হওয়া সাংবাদিক প্রবীরকে পুলিশ ডান্ডা-বেড়ী না পরিয়ে হাতকড়া পড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য। তিনি বলেন, সাংবাদিকদের ঐক্য ছাড়া এমন পরিস্থিতির অবসান হবেন না।
শিবলী চৌধুরী কায়েস বলেন, শওকত মাহমুদ দেশের প্রতিভাবান, কৃতি সাংবাদিক। আজকের মিডিয়া জগতের অনেক সাংবাদিক তার হাতে গড়া। অপরদিকে প্রবীর শিকদার মুক্তিযুদ্ধে আতœজীবন বিসর্জনকারী শহীদ পরিবারের নির্যাতিত-নিপীড়িত সাংবাদিক। তাদেরকে গ্রেফতার মেনে নেয়া যায় না। তিনি বলেন, দেশের সাংবাদিক সমাজ ও নেতাদের বিভক্তির কারণেই আজকের এই পরিণতি। আমরা যাদের আদর্শ ভেবে গণমাধ্যমকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছি তারাই এখন নিজেদের স্বার্থে বিভাজন সৃষ্টি করছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে এর পরিণতি আরও ভয়াবহ হবে।