নিউইয়র্ক ১১:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : সাংবাদিকতায় সিন্ডিকেট

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১১:২৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • / ৬১৯ বার পঠিত

গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক পরিচয়-এ যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম পরিচয়-এ যুবলীগ সংক্রান্ত প্রকাশিত একটি খবরের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বলেছেন, নিউইয়র্কের সব পত্রিকাই টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। সাপ্তাহিক পরিচয়-এর সম্পাদক ফরিদ আলমের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাত জানান। গত শনিবার পরিচয়-এ ফরিত আলমের বক্তব্য প্রকাশের পর নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমসমূহের তেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো ফরিদ আলম ভালো বিজ্ঞাপনদাতা। সেজন্য পত্রিকা সম্পর্কে তার আপত্তিকর বক্তব্যের পরও চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করেছে। ফরিদ আলমও হয়তো জানতেন তাই বক্তব্যের প্রতিবাদ করার সাহস সংবাদ মাধ্যমসমূহের সাথে সংশ্লিষ্টরা রাখেন না। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সাংবাদিকতার নূনতম নীতিমালা অনুসরণ করার চেয়ে যেকোন মূল্যে বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির সুযোগকে বেশী কাজে লাগাতে চান। প্রায় সব মিডিয়াই যেহেতু বিজ্ঞাপন নির্ভর, সেহেতু ২/১টি মিডিয়া ছাড়া বাকী সব মিডিয়ার নিকট বিজ্ঞাপন প্রাপ্তিটাই মুখ্য। ফলে নিউইয়র্কের বাংলা সাংবাদিকতা এখন কম্যুনিটির সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। যুবলীগ নেতা ফরিদ আলম আরো একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আর কোন মিডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের দুই নেতার বহিষ্কারের খবর ছাপা হয়নি। অথচ সাপ্তাহিক পরিচয়-এ কেন তা ছাপা হয়।
যুবলীগ নেতা ফরিদ আলমের বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলা সাংবাদিকতার নগ্ন দিক ফুটে উঠেছে। কোনটি সংবাদ, আর কোনটি সংবাদ নয়, এটা বিবেচনা করার দায়িত্ব সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদকদের, নাকি বিজ্ঞাপনদাতার? হালে অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে বিজ্ঞাপনদাতাদের কেউ কেউ ‘ওমুক সংবাদটি প্রথম পাতায়, ওমুক সংবাদ শেষের পাতায়, ওমুক সংবাদ দেওয়া যাবে না’ এমন নির্দেশও দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যত থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞাপন লাভের আশায় কতিপয় সম্পাদক অপর মিডিয়াকে আক্রমন করে সংবাদ ছাপানো, মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপনদাতাকে উষ্কে দেওয়া, এমনকি তাতেও খুশি না হয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গোপন লিফলেট ছাপানোর ভূমিকায় নেমেছিলেন নিউইয়র্কের একটি পত্রিকার সম্পাদক। এই সম্পাদকের সাম্প্রতিক ভূমিকাও আরো বেশী ন্যাক্কারজনক। সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে বাংলাদেশ সোসাইটির এক সাবেক সভাপতির অফিসে ধর্না দিতে। আবার এই সম্পাদকই সস্প্রতি একটি মেডিক্যাল সেন্টারের বিজ্ঞাপন লাভের আশায় উক্ত সেন্টারের অন্যতম পরিচালক ডাক্তার সাহেবের অনুগ্রহ ভিক্ষা করতে। মজার বিষয় হলো মেডিক্যাল সেন্টারের ডাক্তার সাহেব ৮/৯মাস আগে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় সোসাইটির ঐ সাবেক সভাপতিকে সোসাইটির ‘কালো পাহাড়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে ঐ সম্পাদক তথাকথিত এই কালো পাহাড় ও ডাক্তার সাহেবের মধ্যে বন্ধুত্ব রচনার উদ্যোগ নিয়েছেন, নাকি দু’জনের নিকট থেকে বিজ্ঞাপনের উছিলায় কিছু অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধায় লিপ্ত।
কিছু দিন পূর্বে একটি ট্রাভেল এজেন্সি তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করলেও একমাত্র পরিচয় ছাড়া কোন মিডিয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনের খবরটি প্রকাশিত হয়নি। এভাবেই কম্যুনিটির অনেক খবরই তথা কথিত ‘সিন্ডিকেট’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যাকে সাংবাদিকতায় অলিখিত সিন্ডিকেট বলা যেতে পারে। নিউইয়র্কের সকল পত্রিকাই কি তাহলে একই অফিস কিংবা একই টেবিল থেকে প্রকাশ করতে হবে। নাকি প্রকাশ করার আগে কমিউনিটি নেতাদের কাছে জানতে হবে যে খবরটি প্রকাশ পেলে তারা কষ্ট পাবেন কিনা। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে সত্য সব সময় কঠিন। তাই সত্য ও সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত সংবাদ সব সময় হজম করতে কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। সত্য প্রকাশে সৎ সাহস না থাকলে সাংবাদিকতায় জড়িত না হওয়াই সাংবাদিকতার জন্য মঙ্গল। আর এই সিন্ডিকেট থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারলে কম্যুনিটি সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব ফুটে উঠবে না, সাংবাদিকতাও সমৃদ্ধ হবে না। (সাপ্তাহিক পরিচয়)
০৪ সেপ্টেম্বর’২০১৫

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : সাংবাদিকতায় সিন্ডিকেট

প্রকাশের সময় : ১১:২৭:১৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক পরিচয়-এ যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফরিদ আলম পরিচয়-এ যুবলীগ সংক্রান্ত প্রকাশিত একটি খবরের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে বলেছেন, নিউইয়র্কের সব পত্রিকাই টাকা দিয়ে কিনে ফেলা যায়। সাপ্তাহিক পরিচয়-এর সম্পাদক ফরিদ আলমের এই বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাত জানান। গত শনিবার পরিচয়-এ ফরিত আলমের বক্তব্য প্রকাশের পর নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সংবাদ মাধ্যমসমূহের তেমন প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা যায়নি। হয়তো ফরিদ আলম ভালো বিজ্ঞাপনদাতা। সেজন্য পত্রিকা সম্পর্কে তার আপত্তিকর বক্তব্যের পরও চুপ থাকাই শ্রেয় মনে করেছে। ফরিদ আলমও হয়তো জানতেন তাই বক্তব্যের প্রতিবাদ করার সাহস সংবাদ মাধ্যমসমূহের সাথে সংশ্লিষ্টরা রাখেন না। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম সাংবাদিকতার নূনতম নীতিমালা অনুসরণ করার চেয়ে যেকোন মূল্যে বিজ্ঞাপন প্রাপ্তির সুযোগকে বেশী কাজে লাগাতে চান। প্রায় সব মিডিয়াই যেহেতু বিজ্ঞাপন নির্ভর, সেহেতু ২/১টি মিডিয়া ছাড়া বাকী সব মিডিয়ার নিকট বিজ্ঞাপন প্রাপ্তিটাই মুখ্য। ফলে নিউইয়র্কের বাংলা সাংবাদিকতা এখন কম্যুনিটির সকলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ। যুবলীগ নেতা ফরিদ আলম আরো একটি তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, আর কোন মিডিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের দুই নেতার বহিষ্কারের খবর ছাপা হয়নি। অথচ সাপ্তাহিক পরিচয়-এ কেন তা ছাপা হয়।
যুবলীগ নেতা ফরিদ আলমের বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলা সাংবাদিকতার নগ্ন দিক ফুটে উঠেছে। কোনটি সংবাদ, আর কোনটি সংবাদ নয়, এটা বিবেচনা করার দায়িত্ব সংবাদ মাধ্যমের সম্পাদকদের, নাকি বিজ্ঞাপনদাতার? হালে অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে বিজ্ঞাপনদাতাদের কেউ কেউ ‘ওমুক সংবাদটি প্রথম পাতায়, ওমুক সংবাদ শেষের পাতায়, ওমুক সংবাদ দেওয়া যাবে না’ এমন নির্দেশও দিচ্ছেন বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যত থেকে অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞাপন লাভের আশায় কতিপয় সম্পাদক অপর মিডিয়াকে আক্রমন করে সংবাদ ছাপানো, মিডিয়ার বিরুদ্ধে বিজ্ঞাপনদাতাকে উষ্কে দেওয়া, এমনকি তাতেও খুশি না হয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গোপন লিফলেট ছাপানোর ভূমিকায় নেমেছিলেন নিউইয়র্কের একটি পত্রিকার সম্পাদক। এই সম্পাদকের সাম্প্রতিক ভূমিকাও আরো বেশী ন্যাক্কারজনক। সম্প্রতি তাকে দেখা গেছে বাংলাদেশ সোসাইটির এক সাবেক সভাপতির অফিসে ধর্না দিতে। আবার এই সম্পাদকই সস্প্রতি একটি মেডিক্যাল সেন্টারের বিজ্ঞাপন লাভের আশায় উক্ত সেন্টারের অন্যতম পরিচালক ডাক্তার সাহেবের অনুগ্রহ ভিক্ষা করতে। মজার বিষয় হলো মেডিক্যাল সেন্টারের ডাক্তার সাহেব ৮/৯মাস আগে জ্যাকসন হাইটসের পালকি পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় সোসাইটির ঐ সাবেক সভাপতিকে সোসাইটির ‘কালো পাহাড়’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। প্রশ্ন উঠেছে ঐ সম্পাদক তথাকথিত এই কালো পাহাড় ও ডাক্তার সাহেবের মধ্যে বন্ধুত্ব রচনার উদ্যোগ নিয়েছেন, নাকি দু’জনের নিকট থেকে বিজ্ঞাপনের উছিলায় কিছু অর্থ হাতিয়ে নেয়ার ধান্ধায় লিপ্ত।
কিছু দিন পূর্বে একটি ট্রাভেল এজেন্সি তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রসঙ্গে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করলেও একমাত্র পরিচয় ছাড়া কোন মিডিয়ায় সাংবাদিক সম্মেলনের খবরটি প্রকাশিত হয়নি। এভাবেই কম্যুনিটির অনেক খবরই তথা কথিত ‘সিন্ডিকেট’ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। যাকে সাংবাদিকতায় অলিখিত সিন্ডিকেট বলা যেতে পারে। নিউইয়র্কের সকল পত্রিকাই কি তাহলে একই অফিস কিংবা একই টেবিল থেকে প্রকাশ করতে হবে। নাকি প্রকাশ করার আগে কমিউনিটি নেতাদের কাছে জানতে হবে যে খবরটি প্রকাশ পেলে তারা কষ্ট পাবেন কিনা। কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে সত্য সব সময় কঠিন। তাই সত্য ও সঠিক তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রকাশিত সংবাদ সব সময় হজম করতে কষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। সত্য প্রকাশে সৎ সাহস না থাকলে সাংবাদিকতায় জড়িত না হওয়াই সাংবাদিকতার জন্য মঙ্গল। আর এই সিন্ডিকেট থেকে বেড়িয়ে আসতে না পারলে কম্যুনিটি সাংবাদিকতায় পেশাদারিত্ব ফুটে উঠবে না, সাংবাদিকতাও সমৃদ্ধ হবে না। (সাপ্তাহিক পরিচয়)
০৪ সেপ্টেম্বর’২০১৫