নিউইয়র্ক ০৪:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : সম্পাদক ও সাংবাদিকদের মর্যাদার ব্যাপারে কমিউনিটি উদাসীন কেন?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:১৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০১৫
  • / ১১৭৪ বার পঠিত

সাম্প্রতিককালে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটসহ কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাংলা মিডিয়ার সম্পাদক/সাংবাদিকদের প্রতি অনুষ্ঠানের আয়োজকদের চরম অবহেলা ও অবজ্ঞা অতিরিক্ত মাত্রায় চোখে পড়ছে। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটি বিণির্মানে বাংলা মিডিয়াগুলোর অবদান বিশেষ করে গত ১৫ থেকে ২৫ বছর ধরে প্রকাশিত সাপ্তাহিকীগুলোর অবদান অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজকদের কেউ কেউ মিডিয়াকে সমাজের দর্পণ ও জাতির বিবেক হিসেবে বলাবলি করলেও কার্যত তা বলার জন্যই হয়তো বলেন। কেননা, যারা সমাজ বা জাতির বিবেক বা সমাজের দর্পন তারা যখন সমাজের দর্পণ হিসেবে কমিউনিটির প্রকৃত চেহারা তুলে ধরেন অথবা ‘জাতির বিবেক’ হিসেবে বিবেকবান সাংবাদিকতার চর্চা করেন তখন তা আর সহ্য করতে পারেন না। এই কমিউনিটিতে ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেকেই সম্পাদক/সাংবাদিকদের অনেকটা ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী’ জাতীয় লোকজন হিসেবে বিবেচনা করেন। অথবা ‘ভাড়া করা ফটোগ্রাফার’এর মতো আচরণ করেন। তাদের চোখে-মুখে, আচার-আচরণে সম্পাদক-সাংবাদিকদের প্রতি যে অবজ্ঞা, অবহেলা ফুটে উঠে তা যেকোন পেশাদার সম্পাদক-সাংবাদিকের জন্য বেদনার বিষয়।
এর কারণ কি? কেউ কেউ মনে করেন হালে কমিউনিটিতে নামসর্বস্ব অথবা বিজ্ঞাপনসর্বস্ব মিডিয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কমিউনিটির লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিজ্ঞাপনের জন্য অনবরত ফোন কলের পর ফোন কল অনুষ্ঠানের অয়োজক ও পৃষ্ঠপোষকদের মিডিয়াকে শ্রেফ ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করতে বাধ্য করছে। বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজকরা তাই এখন কোন মিডিয়াকে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী নন, তাদের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানাতে চান না। তারা এখন টাইপিং হাউজ থেকে তাদের অনুষ্ঠানের প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং নিজের তোলা ছবি প্রেস রিলিজ আকারে পত্রপত্রিকায় পাঠিয়ে দিয়ে তা ছাপানোর ব্যবস্থা করেন। এইসকল প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অনুষ্ঠানের ঘটনার বিবরণের চেয়ে আয়োজকদের পছন্দের লোকজনের নাম জুড়িয়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের অজুহাত একটি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে অন্য সকল মিডিয়াকে বিজ্ঞাপন দিতে হয়। এসকল অনুষ্ঠানের আয়োজকরা প্রকৃত মিডিয়া ও বিজ্ঞাপন সর্বস্ব মিডিয়ার মধ্যকার পার্থক্য বুঝেন না, বুঝার চেষ্টাও করেন না। তারা সকল মিডিয়ার লোকজনদেরকেই ‘বিজ্ঞাপন কালেক্টর’ কিম্বা ‘বিজ্ঞাপনের জন্য উৎপাত/ধকমদাতা’ হিসেবেই বিবেচনা করেন। আবার অনেক অনুষ্ঠানে সাংবাদিক তো বটেই সম্পাদকদেরকেও ফটোগ্রাফার মনে করা হয়। অনেকে রীতিমত সাংবাদিকদের ‘এই ছবি তোলেন, ঐ ছবি তোলেন’ এমন দাবীও করে বসেন। যা রীতিমত বিব্রতকর। আবার কেউ কেউ মনে করেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্যের কারণে সাংবাদিকতা পেশা মর্যাদাকর অবস্থানে যেতে পারছে না। প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকতের বিভাজনের সুযোগ নিচ্ছে কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কমিউনিটি নেতা বলেছেন, সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হলে অনেক খারাপ লোকের পক্ষে কমিউনিটিতে দাপট দেখানো আর সম্ভব হবে না। কেননা এইসকল খারাপ লোকজন বিজ্ঞাপনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কমিউনিটির প্রকৃত মিডিয়ার মধ্যে দূরত্ব ও বিভাজন সৃষ্টি করতে সক্ষম হচ্ছে। এই অবস্থার অবসান দরকার। কমিউনিটিতে সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা রক্ষায় প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। বিষয়টি ব্যক্তিগত নয়, বরং পেশাগত মর্যাদার কথা বিচেনা করেই প্রশ্নটি আজ তুলে ধরা হচ্ছে। ফলে মিডিয়াকে এড়িয়ে চলার সৃষ্ট মানসিকতা থেকে তাদের মনে প্রকৃত সম্পাদক/সাংবাদিকদের প্রতি অবজ্ঞা কিম্বা অবহেলার ভাব জন্ম নেয়। অথচ একটু চেষ্টা করলেই কমিউনিটিতে প্রকৃত এবং ধান্ধাবাজ মিডিয়ার পার্থক্য বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কিছু নয়। আমরা মনে করি সাংবাদিকদের যথাযথ মর্যাদা দিতে না পারলেও অসম্মানিত করা উচিৎ নয়। আমরা চাই পেশাদার সম্পাদক-সাংবাদিকদের ঐক্য, চাই পেশাদারিত্বপূর্ণ ও মর্যাদাশীল সাংবাদিকতা, চাই সাংবাদিকতা পেশাকে ‘সমাজের দর্পণ আর কমিউনিটির বিবেক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট সকলকেই ভাবা উচিৎ নয় কি?
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা টাইমস’র সম্পাদক পদে যোগ দিয়েছেন সাংবাদিক মাহমুদ খান তাসের। নতুন পদে যোগদানের আগে তিনি সাপ্তাহিক রানার-এর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। মাহমুদ খান তাসের বাংলা টাইমস-এর সম্পাদক পদে রেহানা হাসানের স্থলাভিসিক্ত হলেন। রেহানা হাসান মাত্র কয়েক সপ্তাহ এই দায়িত্বে ছিলেন। ১৫ মে’২০৫(সাপ্তাহিক পরিচয়)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : সম্পাদক ও সাংবাদিকদের মর্যাদার ব্যাপারে কমিউনিটি উদাসীন কেন?

প্রকাশের সময় : ০৯:১৪:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মে ২০১৫

সাম্প্রতিককালে জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন ও বাংলাদেশ কনস্যুলেটসহ কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাংলা মিডিয়ার সম্পাদক/সাংবাদিকদের প্রতি অনুষ্ঠানের আয়োজকদের চরম অবহেলা ও অবজ্ঞা অতিরিক্ত মাত্রায় চোখে পড়ছে। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটি বিণির্মানে বাংলা মিডিয়াগুলোর অবদান বিশেষ করে গত ১৫ থেকে ২৫ বছর ধরে প্রকাশিত সাপ্তাহিকীগুলোর অবদান অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আয়োজকদের কেউ কেউ মিডিয়াকে সমাজের দর্পণ ও জাতির বিবেক হিসেবে বলাবলি করলেও কার্যত তা বলার জন্যই হয়তো বলেন। কেননা, যারা সমাজ বা জাতির বিবেক বা সমাজের দর্পন তারা যখন সমাজের দর্পণ হিসেবে কমিউনিটির প্রকৃত চেহারা তুলে ধরেন অথবা ‘জাতির বিবেক’ হিসেবে বিবেকবান সাংবাদিকতার চর্চা করেন তখন তা আর সহ্য করতে পারেন না। এই কমিউনিটিতে ইদানিং দেখা যাচ্ছে অনেকেই সম্পাদক/সাংবাদিকদের অনেকটা ‘কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচী’ জাতীয় লোকজন হিসেবে বিবেচনা করেন। অথবা ‘ভাড়া করা ফটোগ্রাফার’এর মতো আচরণ করেন। তাদের চোখে-মুখে, আচার-আচরণে সম্পাদক-সাংবাদিকদের প্রতি যে অবজ্ঞা, অবহেলা ফুটে উঠে তা যেকোন পেশাদার সম্পাদক-সাংবাদিকের জন্য বেদনার বিষয়।
এর কারণ কি? কেউ কেউ মনে করেন হালে কমিউনিটিতে নামসর্বস্ব অথবা বিজ্ঞাপনসর্বস্ব মিডিয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কমিউনিটির লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। বিজ্ঞাপনের জন্য অনবরত ফোন কলের পর ফোন কল অনুষ্ঠানের অয়োজক ও পৃষ্ঠপোষকদের মিডিয়াকে শ্রেফ ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করতে বাধ্য করছে। বেশ কিছু অনুষ্ঠানের আয়োজকরা তাই এখন কোন মিডিয়াকে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী নন, তাদের অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণ পর্যন্ত জানাতে চান না। তারা এখন টাইপিং হাউজ থেকে তাদের অনুষ্ঠানের প্রেস বিজ্ঞপ্তি এবং নিজের তোলা ছবি প্রেস রিলিজ আকারে পত্রপত্রিকায় পাঠিয়ে দিয়ে তা ছাপানোর ব্যবস্থা করেন। এইসকল প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অনুষ্ঠানের ঘটনার বিবরণের চেয়ে আয়োজকদের পছন্দের লোকজনের নাম জুড়িয়ে প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়। তাদের অজুহাত একটি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপন দিলে অন্য সকল মিডিয়াকে বিজ্ঞাপন দিতে হয়। এসকল অনুষ্ঠানের আয়োজকরা প্রকৃত মিডিয়া ও বিজ্ঞাপন সর্বস্ব মিডিয়ার মধ্যকার পার্থক্য বুঝেন না, বুঝার চেষ্টাও করেন না। তারা সকল মিডিয়ার লোকজনদেরকেই ‘বিজ্ঞাপন কালেক্টর’ কিম্বা ‘বিজ্ঞাপনের জন্য উৎপাত/ধকমদাতা’ হিসেবেই বিবেচনা করেন। আবার অনেক অনুষ্ঠানে সাংবাদিক তো বটেই সম্পাদকদেরকেও ফটোগ্রাফার মনে করা হয়। অনেকে রীতিমত সাংবাদিকদের ‘এই ছবি তোলেন, ঐ ছবি তোলেন’ এমন দাবীও করে বসেন। যা রীতিমত বিব্রতকর। আবার কেউ কেউ মনে করেন প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের মধ্যে অনৈক্যের কারণে সাংবাদিকতা পেশা মর্যাদাকর অবস্থানে যেতে পারছে না। প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকতের বিভাজনের সুযোগ নিচ্ছে কমিউনিটির বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কমিউনিটি নেতা বলেছেন, সাংবাদিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ হলে অনেক খারাপ লোকের পক্ষে কমিউনিটিতে দাপট দেখানো আর সম্ভব হবে না। কেননা এইসকল খারাপ লোকজন বিজ্ঞাপনকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কমিউনিটির প্রকৃত মিডিয়ার মধ্যে দূরত্ব ও বিভাজন সৃষ্টি করতে সক্ষম হচ্ছে। এই অবস্থার অবসান দরকার। কমিউনিটিতে সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা রক্ষায় প্রকৃত ও পেশাদার সাংবাদিকদের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। বিষয়টি ব্যক্তিগত নয়, বরং পেশাগত মর্যাদার কথা বিচেনা করেই প্রশ্নটি আজ তুলে ধরা হচ্ছে। ফলে মিডিয়াকে এড়িয়ে চলার সৃষ্ট মানসিকতা থেকে তাদের মনে প্রকৃত সম্পাদক/সাংবাদিকদের প্রতি অবজ্ঞা কিম্বা অবহেলার ভাব জন্ম নেয়। অথচ একটু চেষ্টা করলেই কমিউনিটিতে প্রকৃত এবং ধান্ধাবাজ মিডিয়ার পার্থক্য বিচার-বিশ্লেষণ করা কঠিন কিছু নয়। আমরা মনে করি সাংবাদিকদের যথাযথ মর্যাদা দিতে না পারলেও অসম্মানিত করা উচিৎ নয়। আমরা চাই পেশাদার সম্পাদক-সাংবাদিকদের ঐক্য, চাই পেশাদারিত্বপূর্ণ ও মর্যাদাশীল সাংবাদিকতা, চাই সাংবাদিকতা পেশাকে ‘সমাজের দর্পণ আর কমিউনিটির বিবেক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে। বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট সকলকেই ভাবা উচিৎ নয় কি?
নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক বাংলা টাইমস’র সম্পাদক পদে যোগ দিয়েছেন সাংবাদিক মাহমুদ খান তাসের। নতুন পদে যোগদানের আগে তিনি সাপ্তাহিক রানার-এর প্রধান সম্পাদক ছিলেন। মাহমুদ খান তাসের বাংলা টাইমস-এর সম্পাদক পদে রেহানা হাসানের স্থলাভিসিক্ত হলেন। রেহানা হাসান মাত্র কয়েক সপ্তাহ এই দায়িত্বে ছিলেন। ১৫ মে’২০৫(সাপ্তাহিক পরিচয়)