নিউইয়র্ক ১০:৫৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন প্রকাশে বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষোভ

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ১০:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৫
  • / ১০৪০ বার পঠিত

নিউইয়র্কের কয়েকটি বাংলা পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপনদাতাদের বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন ছাপানোর হিড়িক বেড়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষোভ বাড়ছে। খবরের পর এখন বিজ্ঞাপন ‘কাট এন্ড পেষ্ট’ শুরু হওয়ায় অনেক বিজ্ঞাপনদাতাই আতংকে ভুগছেন। দু’একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার আগ্রহ থাকলেও বিজ্ঞাপন কালেক্টরদের টেলিফোন হামলার ভয়ে তারা এখন কোন পত্রিকাতেই বিজ্ঞাপন দিতে চান না। গত সোমবার জ্যাকসন হাইটসের গরমেট রেষ্টুরেন্টে একটি রাজনৈতিক দলের সাবাদিক সম্মেলনের পর একটি বিজ্ঞাপন সর্বস্ব পত্রিকার বিজ্ঞাপন কালেক্টর যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের এক নেতার কাছে বিজ্ঞাপন প্রকাশ বাবদ অর্থ দাবী করলে ছাত্রদল নেতা তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন যে আপনাকে বিজ্ঞাপন ছাপানোর অনুমতি কে দিলো? বিজ্ঞাপন কালেক্টর আমতা আমতা করে বলেন, ‘অমুখ ভাইর সাথে আপনার খাতির দেখে আমি আবদার করে বিজ্ঞাপনটি ছাপিয়ে দিয়েছি। এখন যা পারেন দেন’। ছাত্রদল নেতা আর কিছু না বলে অন্যদিকে চলে যান। কমিউনিটিতে এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের দূর্নাম রয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপনদাতার বিনানুমতিতে ছাপানোর। গত কয়েক সপ্তাহস ধরে সাপ্তাহিক পরিচয়-এ প্রকাশিত বিজ্ঞাপন, স্থানীয় খবর ও পরিচয়-এর নিজস্ব ছবি পরিচয়-এর পিডিএফ ভার্সন থেকে ‘কাট এন্ড পেষ্ট’ করে তার নিজের ‘বিজ্ঞাপনের লিফলেটে’ প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের ‘বিজ্ঞাপন ভিক্ষাবৃত্তি’ কমিউনিটিতে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার অপকর্ম থেকে বাঁচতে কয়েকটি পত্র-পত্রিকা তাদের ওয়েব ভার্সন ইন্টারনেটে আপলোড করতে বিলম্ব করছেন। এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের একমাত্র যোগ্যতা একটি ৫০ ডলারের ক্যামেরা হাতে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে কিছু ছবি তোলা এবং বিজ্ঞাপনের অর্থ দাবী করা। একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের বিরুদ্ধে মামাও ঠুকে দিয়েছেন। ঐ ব্যবসায় জ্যাকসন হাইটসে এসে একাধিক সংবাদপত্রের কর্মীর কাছে প্রশ্ন করেছেন এই বিজ্ঞাপন কালেক্টর কোন মানদন্ডে সাংবাদিক? ফলে কমিউনিটির বাংলা সাংবাদিকতায় নতুন সমস্যা ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে বিব্রত সংশ্লিষ্ট মিডিয়া ছাড়াও বিজ্ঞাপনদাতারা। কমিউনিটির পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি যেভাবে বাড়ছে মিডিয়ার সংখ্যা সেভাবে কিন্তু বাড়েনি বিজ্ঞাপনের বাজার। তারপরও থেমে নেই কমিউনিটির ‘মিডিয়া পাগল’ কেউ কেউ। অফিস থাক বা না থাকি, স্টাফ-কর্মচারী, সাংবাদিক থাক বা না থাক, পত্রিকা প্রকাশ করার যোগ্যতা থাক বা না থাক, বিজ্ঞাপনের বাজার যাচাই-বাছাই হোক বা না হোক ‘কাট এন্ড পেস্ট’ এর মাধ্যমে হলেও পত্রিকা প্রকাশ করতেই হবে। তাও আবার ফ্রি। পত্রিকার মতো একটি ‘ক্রিয়েটিভ’ বিষয়কে ফ্রি করা নিয়ে মিডিয়ামহল সহ কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আবার ফ্রি পত্রিকার কারণে বিজ্ঞাপনের মূল্য যথেচ্ছা পর্যায়ে চলে এসেছে। সেই সাথে সাংবাদিকতার মানও ‘ফ্রি’ পর্যায়ে চলে গেছে। যার ভুক্তভোগী এখন খোদ ফ্রি পত্রিকার উদ্যোক্তা বা মালিক/সম্পাদকরাই।
কোন মিডিয়ায় কোন বিজ্ঞাপন যাবে তা নির্ভার হওয়া উচিৎ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতার ইচ্ছে-অনিচ্ছার উপরের পাশাপাশি পত্রিকাগুলোর সার্কুলেশনের (সর্বাধিক প্রচার সংখ্যা) উপর। কিন্তু নিউইয়র্কের বাংলা প্রিন্ট মিডিয়া জগতে এত্তো ফ্রি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে যে কোন পত্রিকার প্রচার সংখ্যা কত বা কোন পত্রিকা প্রচারে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এখানে সকল পত্রিকাই মনে করছে তারাই প্রচারের শীর্ষে। কিন্তু বিষয়টি হলো ‘ফ্রি’ হিসেব করে তো পত্রিকাগুলোর র্শীষ অবস্থান নির্ধারণ করা ঠিক নয়, এটি নির্ধারিত হওয়া উচিৎ পত্রিকা বিক্রির উপর। অবশ্য আধুনিক বিশ্বে এখন আবার কেউ কেউ ইন্টারনেট পাঠকের সংখ্যার ভিত্তিতেই মিডিয়ার পাঠক সংখ্যা গণনা করে তারাও দাবী করছেন তারাই শীর্ষে! বলতে দ্বিধা নেই আধুনিকার নামে বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু, অনেক ক্ষেত্রেই বদলে যাচ্ছে চিরাচরিত ব্যাকরণগুলোও।
জ্যাকসন হাইটসের এক আড্ডায় এক পত্রিকার সম্পাদক জানালেন, আমার পত্রিকায় প্রকাশিত খবর তো আছেই, প্রকাশিত বিজ্ঞাপনও অন্য একটি পত্রিকায় বিনানুমতিতে প্রকাশিত হয়েছে। কিভাবে কার অনুমোতিতে বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হলো তা আমিও জানিনা, বিজ্ঞাপনদাতাও জানেন না। তিনি আরো বললেন, ‘বিজ্ঞাপন সংগ্রাহক’ নির্ভর কোন কোন পত্রিকা বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিল আদায় করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিরও সৃষ্টি করছে। তারা প্রকাশ্যেই বিজ্ঞাপনের বিল দাবী করছে এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ‘যা পারেন তাই দেন’ দাবী করে সাংবাদিকতার মহৎ কাজ করছেন। আড্ডায় কেউ কেউ বললেন, এজন্য শুধু শুধু পত্রিকাওয়ালাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এজন্য বিজ্ঞাপনদাতাদেরও দোষ রয়েছে। দু:খজনক হলেও সত্য যে, অনেক বিজ্ঞাপনদাতা রয়েছেন যারা বাছ-বিচার না করে, পত্রিকার পাঠক প্রিয়তা না দেখে বা কমিউনিটিতে পত্রিকাটির কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তা যাছাই-বাছাই না করে কিছু কিছু মিডিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। পত্রিকা ছাপা শুরু করলেই বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়- এই ধারণা থেকেই প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন পত্রিকা প্রকাশে আগ্রহ অনেকের। কমিউনিটি সংবাদ প্রকাশ নয়, কমিউনিটির বিজ্ঞাপনদাতাদের বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে বা বিজ্ঞাপনদাতার অহেতুক ও অপ্রাসঙ্গিক গুণ-গান বা ছবি ছাপিয়ে ‘টু-পাইস’ কামানোই এই সকল পত্র-পত্রিকা প্রকাশের একমাত্র লক্ষ্য। শুধু তাই নয়, কমিউনিটিতে প্রভাব বিস্তার কিম্বা নিজের অতীত অপকর্ম ঢাকতে অবৈধ পথে আয় করা অর্থ দিয়েও কেউ কেউ পত্রিকা প্রকাশ করছেন। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত (অতীত/বর্তমান) এমন একাধিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক/প্রকাশক/সম্পাদকের ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। বিষয়টি এখন জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ব্রুকলীন, ওজনপার্কের বাঙালী পাড়ায় আলোচিত হচ্ছে। সম্পাদকদের পেশাগত ও শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও কমিউনিটিতে প্রশ্ন উঠেছে। সব মিলিয়ে কমিউনিটির বাংলা সাংবাদিকতা মারাত্বকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
একটি সুন্দুর, ঐক্যবদ্ধ, দায়িত্বশীল কমিউনিটি গড়তে কমিউনিটির সকলকেই দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ নয় কি? ২৪ এপ্রিল’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

নিউইয়র্কের প্রেসনোট : বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন প্রকাশে বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষোভ

প্রকাশের সময় : ১০:৫৪:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৫

নিউইয়র্কের কয়েকটি বাংলা পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপনদাতাদের বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন ছাপানোর হিড়িক বেড়ে যাওয়ায় বিজ্ঞাপনদাতাদের ক্ষোভ বাড়ছে। খবরের পর এখন বিজ্ঞাপন ‘কাট এন্ড পেষ্ট’ শুরু হওয়ায় অনেক বিজ্ঞাপনদাতাই আতংকে ভুগছেন। দু’একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়ার আগ্রহ থাকলেও বিজ্ঞাপন কালেক্টরদের টেলিফোন হামলার ভয়ে তারা এখন কোন পত্রিকাতেই বিজ্ঞাপন দিতে চান না। গত সোমবার জ্যাকসন হাইটসের গরমেট রেষ্টুরেন্টে একটি রাজনৈতিক দলের সাবাদিক সম্মেলনের পর একটি বিজ্ঞাপন সর্বস্ব পত্রিকার বিজ্ঞাপন কালেক্টর যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রদলের এক নেতার কাছে বিজ্ঞাপন প্রকাশ বাবদ অর্থ দাবী করলে ছাত্রদল নেতা তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেন যে আপনাকে বিজ্ঞাপন ছাপানোর অনুমতি কে দিলো? বিজ্ঞাপন কালেক্টর আমতা আমতা করে বলেন, ‘অমুখ ভাইর সাথে আপনার খাতির দেখে আমি আবদার করে বিজ্ঞাপনটি ছাপিয়ে দিয়েছি। এখন যা পারেন দেন’। ছাত্রদল নেতা আর কিছু না বলে অন্যদিকে চলে যান। কমিউনিটিতে এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের দূর্নাম রয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন বিজ্ঞাপনদাতার বিনানুমতিতে ছাপানোর। গত কয়েক সপ্তাহস ধরে সাপ্তাহিক পরিচয়-এ প্রকাশিত বিজ্ঞাপন, স্থানীয় খবর ও পরিচয়-এর নিজস্ব ছবি পরিচয়-এর পিডিএফ ভার্সন থেকে ‘কাট এন্ড পেষ্ট’ করে তার নিজের ‘বিজ্ঞাপনের লিফলেটে’ প্রকাশ করা হয়। এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের ‘বিজ্ঞাপন ভিক্ষাবৃত্তি’ কমিউনিটিতে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তার অপকর্ম থেকে বাঁচতে কয়েকটি পত্র-পত্রিকা তাদের ওয়েব ভার্সন ইন্টারনেটে আপলোড করতে বিলম্ব করছেন। এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের একমাত্র যোগ্যতা একটি ৫০ ডলারের ক্যামেরা হাতে নিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গিয়ে কিছু ছবি তোলা এবং বিজ্ঞাপনের অর্থ দাবী করা। একজন রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী এই বিজ্ঞাপন কালেক্টরের বিরুদ্ধে মামাও ঠুকে দিয়েছেন। ঐ ব্যবসায় জ্যাকসন হাইটসে এসে একাধিক সংবাদপত্রের কর্মীর কাছে প্রশ্ন করেছেন এই বিজ্ঞাপন কালেক্টর কোন মানদন্ডে সাংবাদিক? ফলে কমিউনিটির বাংলা সাংবাদিকতায় নতুন সমস্যা ও সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এনিয়ে বিব্রত সংশ্লিষ্ট মিডিয়া ছাড়াও বিজ্ঞাপনদাতারা। কমিউনিটির পরিধি বৃদ্ধির পাশাপাশি যেভাবে বাড়ছে মিডিয়ার সংখ্যা সেভাবে কিন্তু বাড়েনি বিজ্ঞাপনের বাজার। তারপরও থেমে নেই কমিউনিটির ‘মিডিয়া পাগল’ কেউ কেউ। অফিস থাক বা না থাকি, স্টাফ-কর্মচারী, সাংবাদিক থাক বা না থাক, পত্রিকা প্রকাশ করার যোগ্যতা থাক বা না থাক, বিজ্ঞাপনের বাজার যাচাই-বাছাই হোক বা না হোক ‘কাট এন্ড পেস্ট’ এর মাধ্যমে হলেও পত্রিকা প্রকাশ করতেই হবে। তাও আবার ফ্রি। পত্রিকার মতো একটি ‘ক্রিয়েটিভ’ বিষয়কে ফ্রি করা নিয়ে মিডিয়ামহল সহ কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়াও রয়েছে। আবার ফ্রি পত্রিকার কারণে বিজ্ঞাপনের মূল্য যথেচ্ছা পর্যায়ে চলে এসেছে। সেই সাথে সাংবাদিকতার মানও ‘ফ্রি’ পর্যায়ে চলে গেছে। যার ভুক্তভোগী এখন খোদ ফ্রি পত্রিকার উদ্যোক্তা বা মালিক/সম্পাদকরাই।
কোন মিডিয়ায় কোন বিজ্ঞাপন যাবে তা নির্ভার হওয়া উচিৎ সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞাপনদাতার ইচ্ছে-অনিচ্ছার উপরের পাশাপাশি পত্রিকাগুলোর সার্কুলেশনের (সর্বাধিক প্রচার সংখ্যা) উপর। কিন্তু নিউইয়র্কের বাংলা প্রিন্ট মিডিয়া জগতে এত্তো ফ্রি পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে যে কোন পত্রিকার প্রচার সংখ্যা কত বা কোন পত্রিকা প্রচারে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে তার কোন ইয়ত্তা নেই। এখানে সকল পত্রিকাই মনে করছে তারাই প্রচারের শীর্ষে। কিন্তু বিষয়টি হলো ‘ফ্রি’ হিসেব করে তো পত্রিকাগুলোর র্শীষ অবস্থান নির্ধারণ করা ঠিক নয়, এটি নির্ধারিত হওয়া উচিৎ পত্রিকা বিক্রির উপর। অবশ্য আধুনিক বিশ্বে এখন আবার কেউ কেউ ইন্টারনেট পাঠকের সংখ্যার ভিত্তিতেই মিডিয়ার পাঠক সংখ্যা গণনা করে তারাও দাবী করছেন তারাই শীর্ষে! বলতে দ্বিধা নেই আধুনিকার নামে বদলে যাচ্ছে অনেক কিছু, অনেক ক্ষেত্রেই বদলে যাচ্ছে চিরাচরিত ব্যাকরণগুলোও।
জ্যাকসন হাইটসের এক আড্ডায় এক পত্রিকার সম্পাদক জানালেন, আমার পত্রিকায় প্রকাশিত খবর তো আছেই, প্রকাশিত বিজ্ঞাপনও অন্য একটি পত্রিকায় বিনানুমতিতে প্রকাশিত হয়েছে। কিভাবে কার অনুমোতিতে বিজ্ঞাপনটি প্রকাশিত হলো তা আমিও জানিনা, বিজ্ঞাপনদাতাও জানেন না। তিনি আরো বললেন, ‘বিজ্ঞাপন সংগ্রাহক’ নির্ভর কোন কোন পত্রিকা বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে বিল আদায় করতে গিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিরও সৃষ্টি করছে। তারা প্রকাশ্যেই বিজ্ঞাপনের বিল দাবী করছে এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে ‘যা পারেন তাই দেন’ দাবী করে সাংবাদিকতার মহৎ কাজ করছেন। আড্ডায় কেউ কেউ বললেন, এজন্য শুধু শুধু পত্রিকাওয়ালাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এজন্য বিজ্ঞাপনদাতাদেরও দোষ রয়েছে। দু:খজনক হলেও সত্য যে, অনেক বিজ্ঞাপনদাতা রয়েছেন যারা বাছ-বিচার না করে, পত্রিকার পাঠক প্রিয়তা না দেখে বা কমিউনিটিতে পত্রিকাটির কতটুকু গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে তা যাছাই-বাছাই না করে কিছু কিছু মিডিয়াকে পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। পত্রিকা ছাপা শুরু করলেই বিজ্ঞাপন পাওয়া যায়- এই ধারণা থেকেই প্রতি সপ্তাহে নতুন নতুন পত্রিকা প্রকাশে আগ্রহ অনেকের। কমিউনিটি সংবাদ প্রকাশ নয়, কমিউনিটির বিজ্ঞাপনদাতাদের বিনানুমতিতে বিজ্ঞাপন ছাপিয়ে বা বিজ্ঞাপনদাতার অহেতুক ও অপ্রাসঙ্গিক গুণ-গান বা ছবি ছাপিয়ে ‘টু-পাইস’ কামানোই এই সকল পত্র-পত্রিকা প্রকাশের একমাত্র লক্ষ্য। শুধু তাই নয়, কমিউনিটিতে প্রভাব বিস্তার কিম্বা নিজের অতীত অপকর্ম ঢাকতে অবৈধ পথে আয় করা অর্থ দিয়েও কেউ কেউ পত্রিকা প্রকাশ করছেন। নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত (অতীত/বর্তমান) এমন একাধিক পত্রিকার প্রধান সম্পাদক/প্রকাশক/সম্পাদকের ক্রিমিনাল ব্যাকগ্রাউন্ড রয়েছে। বিষয়টি এখন জ্যাকসন হাইটস, জ্যামাইকা, ব্রঙ্কস, ব্রুকলীন, ওজনপার্কের বাঙালী পাড়ায় আলোচিত হচ্ছে। সম্পাদকদের পেশাগত ও শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও কমিউনিটিতে প্রশ্ন উঠেছে। সব মিলিয়ে কমিউনিটির বাংলা সাংবাদিকতা মারাত্বকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।
একটি সুন্দুর, ঐক্যবদ্ধ, দায়িত্বশীল কমিউনিটি গড়তে কমিউনিটির সকলকেই দায়িত্বশীল হওয়া উচিৎ নয় কি? ২৪ এপ্রিল’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)