নিউইয়র্কের প্রেসনোট : সাংবাদিক সম্মেলনে তথ্য সঙ্কটে প্রধানমন্ত্রী

- প্রকাশের সময় : ১১:১১:৪৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫
- / ৬৪২ বার পঠিত
গত ২৯ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের বাংলাদেশ মিশন আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে তথ্য সঙ্কটে পড়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কানেকটিকাটে দূর্বৃত্তের গুলিতে নিহত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ নেতা বেলাল তরফদার ও নিউইয়র্কের ওজনপার্কে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি নজমুল ইসলাম খুন হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব হত্যাকান্ডের বিচার হয়নি। সাথে সাথে সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত সাপ্তাহিক ঠিকানা সম্পাদক লাবলু আনসার প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন যে, বেলাল তরফদার হত্যার বিচার হয়েছে এবং হত্যাকারীরা সাজা খাটছে। অপরদিকে নজমুল ইসলাম হত্যার সাথে জড়িতদের আটক করা হয়েছে এবং অভিযুক্তরা রায়ের অপেক্ষায় জেলে দিন কাটাচ্ছে। এসময় প্রধানমন্ত্রীকে বেশ বিব্রত দেখা যায়। প্রশ্ন উঠেছে প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন তথ্য অবিহিত করার দায়িত্ব কার? প্রধানমন্ত্রী নিশ্চয়ই সংবাদপত্র খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পড়ার সুযোগ পান না। প্রধানমন্ত্রীকে সময়ে সময়ে তথ্য দেয়া বা অবহিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মিডিয়া সেলসহ তথ্য মন্ত্রনালায় এবং আরো কয়েকটি দফতরে বেশ কিছু লোক কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারী, ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারী, এ্যাসিসটেন্ট প্রেস সেক্রেটারী এমন পদ মর্যাদায় বেশ কিছু লোক কাজ করছেন। যদিও তাদের অনেকেরই যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন রয়েছে। কেবল রাজনৈতিক পরিচয়েই এরা চাকুরীর সুযোগ পেয়ে গেছেন। ফলে তথ্য সংগ্রহ এবং যথাযথ স্থানে তা পরিবেশন করার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বিব্রতকর অবস্থা তারই প্রমাণ। ভাগ্যিস, এটি বাংলাদেশী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে হয়েছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাঝে মধ্যেই বিদেশী মিডিয়ার সম্মুখীন হন। তাদের প্রশ্নের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সে সময় যদি তিনি তথ্য সঙ্কটে পড়েন সেটা দেশের জন্য এবং প্রধানমন্ত্রীর নিজের জন্যও লজ্জার বিষয় হতে পারে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে আশু ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরী হয়ে পড়েছে। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যেতে পারে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবার যে ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরষ্কারটি পেয়েছেন সেটি এর আগে আরো দু’জন বাংলাদেশী পেয়েছিলেন। এবারও প্রধানমন্ত্রীর সাথে লিবার ব্রাদার্সের একজন শীর্ষ স্থানীয় কর্মকর্তাসহ আরো ৫জন ভাগাভাগি করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি এ তথ্যটি অবহিত ছিলেন?- এই প্রশ্ন এখন অনেকের। কেননা, প্রধানমন্ত্রী যদি জানতেন তাহলে একজন সরকার প্রধান হয়ে তিনি সাধারণ নাগরিকদের সাথে এই পুরষ্কার ভাগাভাগি করতে আগ্রহী নাও হতে পারতেন। বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি উত্থাপনও করা হয়েছে।
সৌভাগ্য সরকার ও সরকারী দলের দেশের বিরোধ দলের এখন করুণ অবস্থা। যার ফলে বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে ব্যাপক আলোচনা না হলেও অনেকের মনে প্রধানমন্ত্রীর এই পুরষ্কার প্রাপ্তি হালকা ঠেকেছে। সবই ঘটেছে সঠিক তথ্য সংগ্রহ আর যথাযথ স্থানে সময়মত পরিবেশন করতে ব্যর্থ হওয়ার কারণে। এই অবস্থার দ্রুত অবসান জরুরী। ০৯ অক্টোবর’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)