নিউইয়র্কের প্রেসনোট : ‘কমিউনিটি টিভি’ সমাচার
- প্রকাশের সময় : ১১:০৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০১৫
- / ৯৮১ বার পঠিত
নিউইয়র্কের বাংলা মিডিয়া জগতে কমিউনিটি টিভির বিষয়টি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে অর একুশে গানের গানের রচয়িতা গাফফার চৌধুরীর সাম্প্রতিক নিউইয়র্ক সফরকালে তার একটি বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিশ্বব্যাপী বাঙালীদের মধ্যে বিতর্কের ঝড় বয়ে যায়। সেই সময়ে নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত টাইম টেলিভিশনের সাথে গাফফার চৌধুরীর সাক্ষাৎকার ফেসবুক, ইউটিউব সহ বাংলাদেশের একাধিক টিভি চ্যানেলেও প্রচারিত হয়। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ব্রঙ্কসে আয়োজিত হাজারো কন্ঠে বাংলা গানের উপর ভিত্তি করে টিবিএন২৪-এর সংবাদ বিশ্বব্যাপী বাঙালীদের দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হয়। টাইম টিভি এবং টিবিএন২৪ নিউইয়র্ক ভিত্তিক ক্যাবল ও আইপি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দেখা যায়। এছাড়া ইন্টারনেটের মাধ্যমেও বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে এই দুটি টিভি দেখা যায়।
কমিউনিটি টিভি সময়ের দাবী বটে। কিন্তু একটি পূর্ণাঙ্গ কমিউনিটি টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে যে রিসোর্স এবং অবকাঠামোর প্রয়োজন তা এখনো হাতের নাগালের বাইরে। ফলে গত ১০ বছর ধরে নিউইয়র্ক ভিত্তিক একাধিক কমিউনিটি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার অব্যাহত রাখতে পারেনি। নিউইয়র্ক থেকে টিভি অনুষ্ঠান (চ্যানেল নয়) সম্প্রচার শুরু হয়েছিলো ৯০ দশকের মাঝামাঝি। রূপসী বাংলা, শ্যামল বাংলা, জীবনের আলো প্রভৃতি নামের টিভি অনুষ্ঠান কয়েক বছর প্রচারিত হলেও পরবর্তীতে আর টিকেনি। ২০০৫ সালের দিকে নিউইয়র্ক থেকে প্রথম এসটিভি ইউএস নামের একটি পূর্ণাঙ্গ টিভি চ্যানেল সম্প্রচার শুরু করার দুই বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায়। যদিও বাংলাদেশ থেকে বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেল গত প্রায় ১৫ বছর ধরে সম্প্রচারিত হচ্ছে। টিবিএন২৪ ২০১৪ সালের জুন মাসে আর টাইম টিভি ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিত সম্প্রচারিত হচ্ছে। কমিউনিটি সংবাদ, সিনেমা, নাটক গান, সঙ্গীতানুষ্ঠান প্রভৃতি অনুষ্ঠনের বাইরেও বিষয় ভিত্তিক নানা অনুষ্ঠান/টক শো সম্প্রচারিত হচ্ছে চ্যানেল দুটি থেকে। এর পাশাপাশি বাংলা টিভি নামের আরো একটি চ্যানেল সম্প্রচারিত হচ্ছে নিউইয়র্ক থেকে স্কাই ক্যাবলের মাধ্যমে। পূর্বে ধারণ করা কমিউনিটির বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ভিডিও লাগাতার প্রচারিত হচ্ছে বাংলা টিভি-তে। অতএব বাংলা টিভি-কে একটি আরকাইভ টিভি বলা যেতে পারে।
বাংলাদেশ থেকে সম্প্রচারিত প্রায় ডজনখানেক চ্যানেল যেগুলো নিউইয়র্কে বসে দেখা যায় সেগুলোর সাথে পাল্লা দিয়ে নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত বাংলা টিভি চ্যানেলের জন্য খুবই দূরহ কাজ, বলাই বাহুল্য। নিউইয়র্কের কমিউনিটি টিভি প্রবাসীদের কাঙ্খিত টিভি চ্যানেল হিসেবে নিজেদের তুলে ধরতে এখনো অনেক দূরে। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী কমিউনিটির আকার এবং আকৃতি অবশ্যই চোখে পড়ার মতো। এই ক্রমবর্ধমান কমিউনিটির চাওয়া-পাওয়া, আনন্দ-বেদনা, সুখ-দু:খ, সাফল্য-ব্যর্থতা সবকিছুর প্রতিচ্ছবি কমিউনিটি টিভিতে থাকা বাঞ্ছনীয়। বিশেষ করে প্রবাসীদের কমিউনিটি টিভির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টিতে স্থানীয় সংবাদ-এর গুরুত্ব অনেক বেশী। কমিউনিটি টিভির প্রতি দর্শকরা আগ্রহী হবেন তখন যখন টিভিগুলো কমিউনিটির কথা বলবে। রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত মতামতের উর্দ্বে উঠে সংবাদ প্রচারে সততা ও বিবেকের বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিবে। প্রবাসের প্রতিভাকে তুলে ধরতে সর্বাতœক প্রচষ্টা চালাবে। তখন কমিউনিটির দর্শককে টিভিগুলো কাছে পাবে। প্রযুক্তির কারণে টিভির সম্প্রচার প্রক্রিয়া অনেক সহজ হয়েছে বটে, কিন্তু তাই বলে যত্রতত্র ‘লাইভ সম্প্রচার’ টিভিগুলোর গুরুত্ব কমিয়ে ফেলছে।
নিউইয়র্ক থেকে সম্প্রচারিত চ্যানেল ওয়ান, চ্যানেল সেভেন, চ্যানেল ফোর জাতীয় মূলধারার টিভিগুলো বাংলাদেশী কমিউনিটি টিভিগুলোর জন্য অনুসরণের যোগ্য মডেল হতে পারে। সবশেষে কমিউনিটির সকলে আশা করে কমিউনিটির প্রতিচ্ছবি হবে কমিউনিটি টিভিগুলো বেঁচে থাকবে। ০২ অক্টোবর’২০১৫ (সাপ্তাহিক পরিচয়)