ওবামার সাথে হাসিনার দেখা হবে ৫বার : জাতিসংঘে ভাষণ ৩০ সেপ্টেম্বর
- প্রকাশের সময় : ১২:৩২:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
- / ১০০২ বার পঠিত
নিউইয়র্ক: জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে অংশ নিতে ২৩ সেপ্টম্বর নিউইয়র্ক আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ঘিরে সরকার একদিকে নাগরিক সংবর্ধনার আয়োজন করছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। অপরদিকে, তার এই সফর প্রতিরোধ কর্মসূচি পালনের ডাক দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি। ফলে এ সব ইস্যুতে নিউেইয়র্কে রাজনীতিতে বইছে উত্তাপের হাওয়া।
বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে চায়ের আড্ডায় ঘুরেফিরে সাধারণ প্রবাসীদের মুখে প্রধানমন্ত্রীর নিউইয়র্ক সফর প্রসঙ্গ। এ ছাড়া বিএনপি ও আওয়ামী লীগ এই দুই সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ও প্রস্তুতি সভায় সরগরম নিউইয়র্ক। এরই ধারাবাহিকতায় বরাবরের মতো এবারও প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে নিয়মিত সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ মিশন। ১৮ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বিকেলে বাংলাদেশ মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে এই সাংবাদিক সম্মেলনের অনুষ্ঠিত হয়।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ড. একে আবদুল মোমেন সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন নিউইয়র্ক সফরের নানা সময়-সূচি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশন চলাকালে নিউইয়র্কেই প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে পাঁচবার দেখা হবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। এ ছাড়া ৩০ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ভাষণসহ বেশ কয়েকটি সাইড ইভেন্টে বক্তব্য দেবেন প্রধানমন্ত্রী।
জাতিসংঘের ৭০তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে ২৩ সেপ্টেম্বর রাত ১০টায় জে এফ কে এয়ারপোর্টে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যদিও অন্য একটি সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী ২২ সেপ্টেম্বর লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। ২৩ সেপ্টেম্বর লন্ডন থেকে নিউইয়র্ক পৌঁছাবেন। তবে, ড. মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক পৌঁছাতে ২৪ সেপ্টেম্বরও হয়ে যেতে পারে। ওই দিন অবশ্য নিউইয়র্কে পবিত্র ঈদুল আযহা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
‘এ বছর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী কতজন হচ্ছেন এবং তারা কারা’— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে শতাধিক ব্যক্তি নিউইয়র্কে আসছেন। যার মধ্যে রাজনৈতিক নেতা, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, কূটনৈতিক ও কবি-সাহিত্যিক রয়েছেন। এ ছাড়া ব্যক্তিগত খরচে আসছেন ১১৯ জন ব্যবসায়ী।
যদিও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এ বছরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন প্রায় দুই শতাধিক ব্যক্তির বিশাল বহর। সফরসঙ্গী না হলেও অধিবেশনে অংশ নিতে আরও আসছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমীন চৌধুরী, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং জাতিসংঘের ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন-আইপিইউ’র প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরীসহ কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদস্য।
ড. মোমেন জানান, ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় পোপ’র ভাষণের সময় উপস্থিত থাকবেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া ওই দিন থেকেই জাতিসংঘের বিভিন্ন অধিবেশনে অংশ নেবেন তিনি। যার মধ্যে সকাল ১১টায় জাতিসংঘের ডেভেলপমেন্ট সামিট-২০১৫ তে অংশগ্রহণ, দুপুর দেড়টায় ওয়ার্ল্ডঅপ এস্টোরিয়া হোটেলে বিজনেস কাউন্সিল ফর আইউতি যোগদান, বিকেল ৫টায় কলম্বিয়া ইউনিভার্সিতে ওয়ার্ল্ড লিডারশিপ ফোরামে অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
২৬ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টায় ইন্টারইক্টভ ডায়ালগ অন শাসটেইনেবল ইকোনমিক গ্রোথতে কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিকেল ৬টায় ওয়ার্ল্ডঅপ এস্টোরিয়ায় ৪ থেকে ৫ জন কংগ্রেসমান প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করবেন। একই দিন সন্ধ্যা ৭টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। যা প্রদান করবে জাতিসংঘের একটি সংগঠন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও এই পুরস্কার আরও ৮টি দেশের সরকার প্রধান গ্রহণ করবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি আরও জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাতিসংঘের ব্যস্ততম ৬ দিনের কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। এর মধ্যে দুটো এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। যার একটি হচ্ছে জলবায়ু মোকাবেলায় বাংলাদেশের সাহসিকতায় অবদানের জন্য ‘লিডাশিপ অন দা আর্থ এ্যাওয়ার্ড’। সন্ধ্যা ৭টায় এই এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন তিনি। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত সর্বজনীন নাগরিক সংবর্ধনায় ভাষণ দেবেন আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর। প্রবাসী নাগরিকরা ওই সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে ম্যানহাটনের হিলটন হোটেলে।
২৮ সেপ্টেম্বর পিস কিপিং সামিটে বাংলাদেশ কো-হোস্ট’র ভূমিকা পালন করবে প্রধানমন্ত্রী। যেখানে মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এ ছাড়া প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার রিসেপশনে যোগ দেবেন প্রধামনন্ত্রী। একই দিন জাতিসংঘের মহাসচিব বানকি মুনের রিসেপশনে, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশের ওপেনিংয়ে এবং সামিট অন পিস কিপিংয়ে বাংলাদেশ কো-হোস্টের দায়িত্ব পালন করবে। এই অধিবেশনে প্রেসিডেন্ট ওবামা মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন।
২৯ সেপ্টেম্বর ভায়লেন্ট এক্সট্রিজমের ওপর কাউন্সিলিং এ মডারেটরের দায়িত্ব পালন করবেন প্রেসিডেন্ট ওবামা। এই অধিবেশনেও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। সব মিলিয়ে বারাক ওবামার সাথে শেখ হাসিনার পাঁচবার দেখা হচ্ছে বলে জানান ড. একে মোমেন।
৩০ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন। এরপর ওই দিন বিকেল ৪টায় স্থায়ী মিশনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হবেন। ১ অক্টোবর লন্ডনের উদ্দেশে নিউইয়র্ক ত্যাগ করবেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। (দ্যরিপোর্ট২৪ডটকম)