নিউইয়র্ক ০৭:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাংলাদেশের জন্য বৃষ্টি আশীর্বাদ : অষ্ট্রেলিয়ার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগী

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
  • / ৬৩৬ বার পঠিত

ব্রিসবেন (অস্ট্রেলিয়া): বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিসবেনের (বিএবি) প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচের টিকিট অন লাইনে সংগ্রহে ব্রিসবেন প্রবাসীদের সবাইকে সহযোগীতা করেছে এই সংগঠনটি। তাদের উদ্যোগের কারনেই গাব্বায় বাংলাদেশ গ্যালারির একটি আসনও থাকেনি অবিক্রিত। শুধু এটাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশীদের ব্রিসবেনে জড়ো করার দায়িত্বও নিয়েছিল এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি। বাংলাদেশ দলের জার্সি, ক্যাপ, বাংলাদেশের পতাকা কোথায় পাওয়া যায়, অনলাইনে সেই প্রচারণাও করেছে সংগঠনটি। ক্যানবেরার মানুকা ওভাল ভর্তি বাংলাদেশ সমর্থকদের উপস্থিতি দেখে একটা জিদও চেপেছিল বিএবি’র। যে করেই হোক টেক্কা দিতে হবে ক্যানবেরার ওই সমর্থনকে, তার জন্য ব্রিসবেনের অন্য সব গ্যালারির টিকিটও সংগ্রহে ছিল তাদের। ব্রিসবেনে পা রাখা বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিয়ে নিজেদের সেই উদ্যোগের কথাই জানিয়ে দিয়েছিল সংগঠনটি। আন্তর্জাতিক ভাষাদিবস ২১ ফেব্রুয়ারী একদিন পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগে শোকাবহ পরিবেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যে কিছু একটা করতে। সে কারনেই সাইক্লোন মার্সিয়ার প্রভাবে ২১ ফেব্রুয়ারী সারাদিন একটানা বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ব্রিসবেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি অংশ গ্যালারিতে ছিল উপস্থিত। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রিকেট যুদ্ধ দেখতে হয়নি, এক পয়েন্ট না খেলেই পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তাতে দু’কূল রক্ষা হওয়ায় খুশি তারা। ব্রিসবেনে পিএইপি করতে আসা বায়েজীদ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী চিকিৎসক লিজিয়া অবশ্য খেলা দেখতে এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা দেখতে না পেরে কিছুটা অতৃপ্তি নিয়ে ফিরেছেন যার যার বাসায়। খেলা না হওয়ার টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন টিকিট ক্রেতারা, তা নিয়ে অবশ্য মাথাব্যাথা নেই নাজিমের-‘বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেয়েছে, এতেই আমরা খুশি। টাকা ফেরত না পেলেও চলবে।’
গত বছর বৃষ্টি কম ভোগায়নি বাংলাদেশকে। ইনচন এশিয়ান গেমসে রিজার্ভ ডে না থাকায় শ্রীলংকার বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়েছে টসে! তাতে হেরে স্বর্নের সম্ভাবনার মৃত্যু হয়েছে মাশরাফিদের। একটি ম্যাচও না হেরে ব্রোঞ্জ পদকে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। বৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে মেয়েদের স্বপ্নও। ফাইনালে বৃস্টির হানায় পাকিস্তানের বিপক্ষে অবধাারিত জয়ের সম্ভাবনা জাগানো বাংলাদেশ মেয়েদের টার্গেট দিয়েছে কঠিন করে।
এই বৃষ্টি শুধু কাঁদায়ই না, হাসায়ও বটে। জানেন কি, ২৩ বছর আগে এই অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে পাকিস্তানকে অবিশ্বাস্য সাফল্য দিয়েছিল এনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে হার দিয়ে শুরু করে, ভারত,দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে গ্রুপ রাউন্ডের বাধা পেরুনোই কঠিন ছিল পাকিস্তানের। তবে এডিলেডে ইংল্যান্ডের বোলিং তোপে ৭৪ রানে অলআউট হয়ে সেই ম্যাচে বৃষ্টির কৃপায় ১ পাওয়াটাই হয়ে যায় টার্নিং পয়েন্ট। এরপর পেছনে তাকাতে হয়নি পাকিস্তানকে। অপ্রত্যাশিতভাবে বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছে পাকিস্তান। এই বৃষ্টি আবার কাঁদিয়েছে ১৯৯২’র সেই আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের ২৫৩’র চ্যালেঞ্জে জয় থেকে মাত্র ২১ রান দূরে দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে যখন অবশিষ্ট ৪২ বল, তখন সিডনী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি! খেলা পুণরায় যখন শুরু হয়েছে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে দক্ষিণ আফ্রিকার টার্গেট ১ বলে ২২ ! স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে সে কি কান্না দ. আফ্রিকার। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে এ নিয়ে ৭টি। তবে এক বলও না খেলে ম্যাচ পরিত্যক্তের ঘটনা এটাই দ্বিতীয় ! প্রথম ঘটনাটি ১৯৭৯’র বিশ্বকাপে ওভালে শ্রীলংকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে, দ্বিতীয়টি শনিবার (২১ ফেব্রুয়ারী) ব্রিসবেনে।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে বৃষ্টিভাগ্যে পয়েন্ট অবশ্য এবারই প্রথম পায়নি বাংলাদেশ দল। ২০০৩ সালে কানাডা-কেনিয়ার মতো দলের কাছে হারের লজ্জার মিশনে পয়েন্ট শূন্য থাকেনি বাংলাদেশের। তা বেনোনিতে বৃষ্টির তোড়ে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটি ভেসে যাওয়ায়। জানেন, ২৯৬টি ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃষ্টি হাসি তামাশা করেছে এই নিয়ে ৫ বার। ১৯৯২’র বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হাসিয়েছে বৃষ্টি, এবার বৃষ্টি ভাগ্যটা হয়তোবা আশীর্বাদ হয়ে থাকছে বাংলাদেশের পাশে। (দৈনিক ইনকিলাব)

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

বাংলাদেশের জন্য বৃষ্টি আশীর্বাদ : অষ্ট্রেলিয়ার সাথে পয়েন্ট ভাগাভাগী

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৩:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

ব্রিসবেন (অস্ট্রেলিয়া): বাংলাদেশ এ্যাসোসিয়েশন অব ব্রিসবেনের (বিএবি) প্রস্তুতি ছিল ব্যাপক। বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচের টিকিট অন লাইনে সংগ্রহে ব্রিসবেন প্রবাসীদের সবাইকে সহযোগীতা করেছে এই সংগঠনটি। তাদের উদ্যোগের কারনেই গাব্বায় বাংলাদেশ গ্যালারির একটি আসনও থাকেনি অবিক্রিত। শুধু এটাই নয়, অস্ট্রেলিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাংলাদেশীদের ব্রিসবেনে জড়ো করার দায়িত্বও নিয়েছিল এই অরাজনৈতিক সংগঠনটি। বাংলাদেশ দলের জার্সি, ক্যাপ, বাংলাদেশের পতাকা কোথায় পাওয়া যায়, অনলাইনে সেই প্রচারণাও করেছে সংগঠনটি। ক্যানবেরার মানুকা ওভাল ভর্তি বাংলাদেশ সমর্থকদের উপস্থিতি দেখে একটা জিদও চেপেছিল বিএবি’র। যে করেই হোক টেক্কা দিতে হবে ক্যানবেরার ওই সমর্থনকে, তার জন্য ব্রিসবেনের অন্য সব গ্যালারির টিকিটও সংগ্রহে ছিল তাদের। ব্রিসবেনে পা রাখা বাংলাদেশ দলকে সংবর্ধনা দিয়ে নিজেদের সেই উদ্যোগের কথাই জানিয়ে দিয়েছিল সংগঠনটি। আন্তর্জাতিক ভাষাদিবস ২১ ফেব্রুয়ারী একদিন পিছিয়ে ২২ ফেব্রুয়ারী উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা ভাষাশহীদদের আত্মত্যাগে শোকাবহ পরিবেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাফল্যে কিছু একটা করতে। সে কারনেই সাইক্লোন মার্সিয়ার প্রভাবে ২১ ফেব্রুয়ারী সারাদিন একটানা বৃষ্টি উপেক্ষা করেও ব্রিসবেন প্রবাসী বাংলাদেশীদের একটি অংশ গ্যালারিতে ছিল উপস্থিত। অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রিকেট যুদ্ধ দেখতে হয়নি, এক পয়েন্ট না খেলেই পেয়েছে বাংলাদেশ দল। তাতে দু’কূল রক্ষা হওয়ায় খুশি তারা। ব্রিসবেনে পিএইপি করতে আসা বায়েজীদ, অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী চিকিৎসক লিজিয়া অবশ্য খেলা দেখতে এসে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের খেলা দেখতে না পেরে কিছুটা অতৃপ্তি নিয়ে ফিরেছেন যার যার বাসায়। খেলা না হওয়ার টিকিটের টাকা ফেরত পাবেন টিকিট ক্রেতারা, তা নিয়ে অবশ্য মাথাব্যাথা নেই নাজিমের-‘বাংলাদেশ দল অস্ট্রেলিয়ার মতো দলের বিপক্ষে ১ পয়েন্ট পেয়েছে, এতেই আমরা খুশি। টাকা ফেরত না পেলেও চলবে।’
গত বছর বৃষ্টি কম ভোগায়নি বাংলাদেশকে। ইনচন এশিয়ান গেমসে রিজার্ভ ডে না থাকায় শ্রীলংকার বিপক্ষে সেমিফাইনাল ম্যাচের ফল নির্ধারিত হয়েছে টসে! তাতে হেরে স্বর্নের সম্ভাবনার মৃত্যু হয়েছে মাশরাফিদের। একটি ম্যাচও না হেরে ব্রোঞ্জ পদকে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। বৃষ্টি কেড়ে নিয়েছে মেয়েদের স্বপ্নও। ফাইনালে বৃস্টির হানায় পাকিস্তানের বিপক্ষে অবধাারিত জয়ের সম্ভাবনা জাগানো বাংলাদেশ মেয়েদের টার্গেট দিয়েছে কঠিন করে।
এই বৃষ্টি শুধু কাঁদায়ই না, হাসায়ও বটে। জানেন কি, ২৩ বছর আগে এই অস্ট্রেলিয়ায় বৃষ্টি আশীর্বাদ হয়ে পাকিস্তানকে অবিশ্বাস্য সাফল্য দিয়েছিল এনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে হার দিয়ে শুরু করে, ভারত,দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে গ্রুপ রাউন্ডের বাধা পেরুনোই কঠিন ছিল পাকিস্তানের। তবে এডিলেডে ইংল্যান্ডের বোলিং তোপে ৭৪ রানে অলআউট হয়ে সেই ম্যাচে বৃষ্টির কৃপায় ১ পাওয়াটাই হয়ে যায় টার্নিং পয়েন্ট। এরপর পেছনে তাকাতে হয়নি পাকিস্তানকে। অপ্রত্যাশিতভাবে বিশ্বকাপ ট্রফি জিতেছে পাকিস্তান। এই বৃষ্টি আবার কাঁদিয়েছে ১৯৯২’র সেই আসরে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের ২৫৩’র চ্যালেঞ্জে জয় থেকে মাত্র ২১ রান দূরে দক্ষিণ আফ্রিকার হাতে যখন অবশিষ্ট ৪২ বল, তখন সিডনী স্টেডিয়ামে বৃষ্টি! খেলা পুণরায় যখন শুরু হয়েছে ডাকওয়ার্থ-লুইস মেথডে দক্ষিণ আফ্রিকার টার্গেট ১ বলে ২২ ! স্কোরবোর্ডের দিকে তাকিয়ে সে কি কান্না দ. আফ্রিকার। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত বৃষ্টিতে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে এ নিয়ে ৭টি। তবে এক বলও না খেলে ম্যাচ পরিত্যক্তের ঘটনা এটাই দ্বিতীয় ! প্রথম ঘটনাটি ১৯৭৯’র বিশ্বকাপে ওভালে শ্রীলংকা-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচে, দ্বিতীয়টি শনিবার (২১ ফেব্রুয়ারী) ব্রিসবেনে।
বিশ্বকাপ ইতিহাসে বৃষ্টিভাগ্যে পয়েন্ট অবশ্য এবারই প্রথম পায়নি বাংলাদেশ দল। ২০০৩ সালে কানাডা-কেনিয়ার মতো দলের কাছে হারের লজ্জার মিশনে পয়েন্ট শূন্য থাকেনি বাংলাদেশের। তা বেনোনিতে বৃষ্টির তোড়ে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচটি ভেসে যাওয়ায়। জানেন, ২৯৬টি ম্যাচে বাংলাদেশের সঙ্গে বৃষ্টি হাসি তামাশা করেছে এই নিয়ে ৫ বার। ১৯৯২’র বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হাসিয়েছে বৃষ্টি, এবার বৃষ্টি ভাগ্যটা হয়তোবা আশীর্বাদ হয়ে থাকছে বাংলাদেশের পাশে। (দৈনিক ইনকিলাব)