নিউইয়র্ক ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

কেন বারবার এই আচরণ ক্রিকেটারদের?

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৫২:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫
  • / ৯৪১ বার পঠিত

ঢাকা: গত ২২ ফেব্রয়ারী টেলিভিশনে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা দেখাকালীন বাংলাদেশ দলের পেস বোলার আল আমিনের শৃঙ্খলাভঙ্গের সংবাদটি পেলাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় আল আমিন টিম ম্যানেজমেন্টের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে সারা রাত হোটেলের বাহিরে কাটিয়ে ভোর রাতে (অস্ট্রেলিয়ান সময়) হোটেলে ফেরে। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও আল আমিনের কোনো হদিস পাননি। আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু) বিষয়টি তদন্ত করে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে অবহিত করে।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, আল আমিন যখন সকালে হোটেলে ফিরেছে তখন সে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না! এই ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আল আমিনকে দল থেকে বরখাস্ত করে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে শফিউল ইসলামকে দলে পাঠানো হচ্ছে। আল আমিনের এই শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়, লজ্জাকর ও পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলেই মনে করছেন দেশের ক্রীড়ামোদীরা। জাতীয় দলের যে কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকেই এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। দেশের ক্রীড়ামোদীরা তার এই আচরণে বিক্ষুব্ধ এবং তারা প্রত্যাশা করছেন বিশ্বকাপের মর্যাদার আসনে বাংলাদেশের সম্মান এভাবে নষ্ট করার অপরাধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দ্রুত আল আমিনের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয়, বিশ্ব ক্রিকেটের এক সময়ের অন্যতম পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন অর্থ সংকটের কারণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। অর্থের অভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এখন আর আগের মতো ক্রিকেটে আসতে চায় না। আরেক টেস্ট খেলুড়ে দেশ জিম্বাবুয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা ক্রিকেট খেলে কোনো টাকা-পয়সাই পায় না। রাস্তায় ডাব বিক্রি করে সংসার চলে এমন খেলোয়াড়ও রয়েছে জিম্বাবুয়ে দলে। ক্রিকেটের এক সময়ের আরেক পরাশক্তি ও সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দলের আর্থিক অবস্থাও অত্যন্ত শোচনীয় এবং পাকিস্তানের বর্তমান ক্রিকেট খেলোয়াড়রাও আর্থিকভাবে মোটেও সচ্ছল নয়। অথচ এদের তুলনায় সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটের। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ভাগ্যবদল শুরু হয়েছে এবং বর্তমানে আর্থিক দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটাররা এখন একেবারে রমরমা অবস্থায়। ক্রিকেট মানদন্ডের তুলনায় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা এখন বিশের অন্যতম শীর্ষস্থানে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সার্বিক মান ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে অনেক অনেক গুণ বেশি সুবিধা এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবেও অনেক অনেক গুণ বেশি পৃষ্ঠপোষকতা, সম্মান ও মর্যাদা পাচ্ছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রীড়ামোদী মানুষ আমাদের ক্রিকেট খোলোয়াড়দের তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়ে উৎসাহিত করে আসছেন। অথচ সেই তুলনায় দেশের প্রতি এই ক্রিকেট খেলোয়াড়দের কমিটমেন্টের অভাব এখনও অত্যন্ত প্রকট।
শৃঙ্খলাভঙ্গের আল আমিনই একমাত্র উদাহরণ নয়। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে। এরকম অনেক ঘটনাই অজানাও রয়ে যায় দেশের ক্রীড়ামোদীদের কাছে। এর আগে দেশের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত সাকিব আল হাসানের একের পর এক শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বাধ্য হয় তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বহিষ্কার করতে। তারও আগে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন রাতে বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়রা শৃঙ্খলা ভেঙে এক সতীর্থ খেলোয়াড়ের বাসভবনে সারারাত তার জন্মদিনের উৎসব পালন করে সকালে হোটেলে ফিরেছিল। এ ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছিল। ক্রীড়াঙ্গনে এ বিষয়টি তখন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও বিসিবি তখন ছিল নিশ্চুপ এবং খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই তারা নিতে পারেনি। দলের আরেক খেলোয়াড় রুবেল হোসেনও কিছুদিন আগে যে ঘটনার জন্ম দিয়েছিল তা কোনোভাবেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সুখকর নয়। ক্রিকেট খেলোয়াড়দের একের পর এক এ ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় ক্রীড়ামোদীদের মাঝে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে দেশের সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী হওয়ার পরও কেন আমাদের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা জাতির সঙ্গে বারবার এমন আচরণ করছে? এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন প্রাক্তন খ্যাতিমান খেলোয়াড় বলেন, ‘ক্রিকেটের মূল পরিভাষাই হচ্ছে ক্রিকেট ভদ্র লোকের খেলা। আমাদের দেশে আগে যারা ক্রিকেট খেলতেন তাদের প্রায় সকলেই ছিলেন অত্যন্ত শিক্ষিত, ভদ্র, মার্জিত ও অভিজাত পরিবারের সন্তান। ক্রিকেট খেলে অর্থ উপার্জনের কোনো চিন্তা তাদের ছিল না। বর্তমানে যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট চরিত্রেরও। এখন ক্রিকেট শহর ছেড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে। যে কারণে এখন ক্রিকেটে ওঠে আসছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সন্তানরাও। যা ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য খুবই আনন্দের এবং ইতিবাচক দিক। এমন অনেক খেলোয়াড়ও ভালো খেলে এখন আমাদের জাতীয় দলে স্থান করে নিচ্ছেন যারা সারা জীবনই থেকেছেন সামাজিক ও পারিবারিকভাবে শিক্ষা, ধনাঢ্য ও শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। বিষয়টি আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গর্বের, অহংকারের ও সম্ভাবনার হলেও বিপত্তিটা কিন্তু বেধেছে এখানেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের এসব খেলোয়াড়দের কেউ কেউ তাদের স্বপ্ন ও কল্পনাকেও হার মানিয়ে যাওয়া প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধা, দামি গাড়ি, বিলাসবহুল বাড়ি ও রাতারাতি বনে যাওয়া তারকা ইমেজের খ্যাতির চাপ আর বহন করতে পারছে না!’ (দৈনিক ইনকিলাব)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

কেন বারবার এই আচরণ ক্রিকেটারদের?

প্রকাশের সময় : ০৩:৫২:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ফেব্রুয়ারী ২০১৫

ঢাকা: গত ২২ ফেব্রয়ারী টেলিভিশনে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার খেলা দেখাকালীন বাংলাদেশ দলের পেস বোলার আল আমিনের শৃঙ্খলাভঙ্গের সংবাদটি পেলাম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সূত্রে। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় আল আমিন টিম ম্যানেজমেন্টের চোখ ফাঁকি দিয়ে লুকিয়ে সারা রাত হোটেলের বাহিরে কাটিয়ে ভোর রাতে (অস্ট্রেলিয়ান সময়) হোটেলে ফেরে। বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার সারারাত খোঁজাখুঁজি করেও আল আমিনের কোনো হদিস পাননি। আইসিসির দুর্নীতি দমন ও নিরাপত্তা ইউনিট (আকসু) বিষয়টি তদন্ত করে বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে অবহিত করে।
বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, আল আমিন যখন সকালে হোটেলে ফিরেছে তখন সে স্বাভাবিক অবস্থায় ছিল না! এই ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে আল আমিনকে দল থেকে বরখাস্ত করে দেশে ফিরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে শফিউল ইসলামকে দলে পাঠানো হচ্ছে। আল আমিনের এই শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনাটি অত্যন্ত নিন্দনীয়, লজ্জাকর ও পুরো জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল বলেই মনে করছেন দেশের ক্রীড়ামোদীরা। জাতীয় দলের যে কোনো প্রতিনিধির কাছ থেকেই এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই প্রত্যাশিত নয়। দেশের ক্রীড়ামোদীরা তার এই আচরণে বিক্ষুব্ধ এবং তারা প্রত্যাশা করছেন বিশ্বকাপের মর্যাদার আসনে বাংলাদেশের সম্মান এভাবে নষ্ট করার অপরাধে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড দ্রুত আল আমিনের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের ব্যবস্থা করবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয়, বিশ্ব ক্রিকেটের এক সময়ের অন্যতম পরাশক্তি ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন অর্থ সংকটের কারণে ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন। অর্থের অভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ানরা এখন আর আগের মতো ক্রিকেটে আসতে চায় না। আরেক টেস্ট খেলুড়ে দেশ জিম্বাবুয়ের অবস্থা আরও ভয়াবহ। জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটাররা ক্রিকেট খেলে কোনো টাকা-পয়সাই পায় না। রাস্তায় ডাব বিক্রি করে সংসার চলে এমন খেলোয়াড়ও রয়েছে জিম্বাবুয়ে দলে। ক্রিকেটের এক সময়ের আরেক পরাশক্তি ও সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান দলের আর্থিক অবস্থাও অত্যন্ত শোচনীয় এবং পাকিস্তানের বর্তমান ক্রিকেট খেলোয়াড়রাও আর্থিকভাবে মোটেও সচ্ছল নয়। অথচ এদের তুলনায় সম্পূর্ণ উল্টো চিত্র বাংলাদেশের ক্রিকেটের। টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার পর থেকেই বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের ভাগ্যবদল শুরু হয়েছে এবং বর্তমানে আর্থিক দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট এবং ক্রিকেটাররা এখন একেবারে রমরমা অবস্থায়। ক্রিকেট মানদন্ডের তুলনায় আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির দিক থেকে বাংলাদেশের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা এখন বিশের অন্যতম শীর্ষস্থানে। বাংলাদেশের ক্রিকেটের সার্বিক মান ও দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির তুলনায় বাংলাদেশ জাতীয় দলের বর্তমান ক্রিকেটাররা আর্থিকভাবে অনেক অনেক গুণ বেশি সুবিধা এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবেও অনেক অনেক গুণ বেশি পৃষ্ঠপোষকতা, সম্মান ও মর্যাদা পাচ্ছেন। পাশাপাশি, বাংলাদেশের কোটি কোটি ক্রীড়ামোদী মানুষ আমাদের ক্রিকেট খোলোয়াড়দের তাদের হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা ও সমর্থন দিয়ে উৎসাহিত করে আসছেন। অথচ সেই তুলনায় দেশের প্রতি এই ক্রিকেট খেলোয়াড়দের কমিটমেন্টের অভাব এখনও অত্যন্ত প্রকট।
শৃঙ্খলাভঙ্গের আল আমিনই একমাত্র উদাহরণ নয়। প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলে। এরকম অনেক ঘটনাই অজানাও রয়ে যায় দেশের ক্রীড়ামোদীদের কাছে। এর আগে দেশের সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচিত সাকিব আল হাসানের একের পর এক শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বাধ্য হয় তাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বহিষ্কার করতে। তারও আগে বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগিতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচের আগের দিন রাতে বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়রা শৃঙ্খলা ভেঙে এক সতীর্থ খেলোয়াড়ের বাসভবনে সারারাত তার জন্মদিনের উৎসব পালন করে সকালে হোটেলে ফিরেছিল। এ ঘটনায় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সরকারের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছিল। ক্রীড়াঙ্গনে এ বিষয়টি তখন ব্যাপকভাবে সমালোচিত হলেও বিসিবি তখন ছিল নিশ্চুপ এবং খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাই তারা নিতে পারেনি। দলের আরেক খেলোয়াড় রুবেল হোসেনও কিছুদিন আগে যে ঘটনার জন্ম দিয়েছিল তা কোনোভাবেই বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য সুখকর নয়। ক্রিকেট খেলোয়াড়দের একের পর এক এ ধরনের শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনায় ক্রীড়ামোদীদের মাঝে এখন প্রশ্ন দেখা দিয়েছে দেশের সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী হওয়ার পরও কেন আমাদের ক্রিকেট খেলোয়াড়রা জাতির সঙ্গে বারবার এমন আচরণ করছে? এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের একজন প্রাক্তন খ্যাতিমান খেলোয়াড় বলেন, ‘ক্রিকেটের মূল পরিভাষাই হচ্ছে ক্রিকেট ভদ্র লোকের খেলা। আমাদের দেশে আগে যারা ক্রিকেট খেলতেন তাদের প্রায় সকলেই ছিলেন অত্যন্ত শিক্ষিত, ভদ্র, মার্জিত ও অভিজাত পরিবারের সন্তান। ক্রিকেট খেলে অর্থ উপার্জনের কোনো চিন্তা তাদের ছিল না। বর্তমানে যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেট চরিত্রেরও। এখন ক্রিকেট শহর ছেড়ে ছড়িয়ে পড়েছে সারা বাংলাদেশের গ্রামে-গঞ্জে। যে কারণে এখন ক্রিকেটে ওঠে আসছে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সন্তানরাও। যা ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য খুবই আনন্দের এবং ইতিবাচক দিক। এমন অনেক খেলোয়াড়ও ভালো খেলে এখন আমাদের জাতীয় দলে স্থান করে নিচ্ছেন যারা সারা জীবনই থেকেছেন সামাজিক ও পারিবারিকভাবে শিক্ষা, ধনাঢ্য ও শহুরে জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন। বিষয়টি আমাদের ক্রিকেটের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গর্বের, অহংকারের ও সম্ভাবনার হলেও বিপত্তিটা কিন্তু বেধেছে এখানেই, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমাদের এসব খেলোয়াড়দের কেউ কেউ তাদের স্বপ্ন ও কল্পনাকেও হার মানিয়ে যাওয়া প্রাপ্ত আর্থিক সুবিধা, দামি গাড়ি, বিলাসবহুল বাড়ি ও রাতারাতি বনে যাওয়া তারকা ইমেজের খ্যাতির চাপ আর বহন করতে পারছে না!’ (দৈনিক ইনকিলাব)