নিউইয়র্ক ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, বুলগেরিয়া, সিঙ্গাাপুর ও শ্রীলংকার পাশাপাশি বাংলাদেশেও জালিয়াতচক্র তৎপর

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪
  • / ১১১৬ বার পঠিত

নিউইয়র্ক: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের প্রাত্যাহিক কেনাকাটায় ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে কার্ড নিয়ে জালিয়াতির ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, বুলগেরিয়া, সিঙ্গাাপুর ও শ্রীলংকার পাশাপাশি বাংলাদেশেও এই জালিয়াতচক্র খুব তৎপর। প্রতারকরা সংঘবদ্ধভাবে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মিডিয়ার কল্যাণে এসব খবরাখবর মুহুর্তের মধ্যে পৌছে যাচ্ছে দেশে দেশে।
মাত্র গত সপ্তাহেই ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির একটি চাঞ্চল্যকর খবর পরিবেশন করছে সিএনএন। অষ্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরির সবচেয়ে বড় ঘটনায় রোমানিয়ার ৭ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরির মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার আত্মসাতের পরিকল্পনা করেছিল একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র। তাদের কাছে প্রায় ৫ লাখ অষ্ট্রেলিয় ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ছিলো বলে জানিয়েছে সে দেশের ফেডারেল পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও ইউরোপের ১৪টি দেশে অবৈধভাবে এই অর্থ লেনদেন হতো বলে জানা গেছে আন্তর্জাতিক একটি অপরাধ তদন্তের মাধ্যমে।
আমরা বাংলাদেশীরা কতটুকু নিরাপদ: ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে দেশে বা প্রবাসে আমরা কতটুকু নিরাপদ। জবাব একটাই- তাহলো আমরা সর্বত্র হাই রিস্কের মধ্যে আছি এবং একেবারেই অনিরাপদ। শুধু বিদেশী প্রতারক চক্রের কাছ থেকেই নয় দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে নিউ ইয়র্কে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশীদের নাম। বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন তারা। অনেকে জেল খাটছেন। কেউ জেল থেকে বেরিয়ে এসেছেন, কেউ সাজা ঘোষণার প্রতীক্ষায় রয়েছেন। আমরা যে-কোন সময় তাদেরও শিকার হতে পারি।
গত সপ্তাহেই টক অব দি কমিউনিটি ছিল ক্রেডিট কার্ডসহ বিভিন্ন জালিয়াতের অভিযোগে বাংলাদেশী মাহবুব জামান এর দোষী সাবস্থ্য হওয়ার ঘটনা। জুরি বোর্ড ৩ কাউন্টিতে তাকে দোষী সাব্যস্থ করেছে এবং তার ৫৫ বছর সাজা হবে বলে জানা গেছে।
তাছাড়া চলতি সপ্তাহে আরো কয়েকজন বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের জন্য অভিযুক্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। ৮ মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক জালিয়াতি ও ভিসা প্রতারণা মামলার দোষ স্বীকারকারী নজরুল ইসলামের ১৫ মাস কারাদন্ড হয়েছে। মানহ্যাটন কোর্টের ফেডারেল জাজ এলিসন জে নাখান ঘোষণা দেন।  এছাড়া আরও কয়েজন দোষ স্বীকার করেছেন। তাদের শাস্তির ঘোষণাও আসছে খুব শীগ্রই। এদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ আল হোসেন ওরফে সুমন, মো. খলিল ওরফে রবিন, একেএম গোলাম হোসেন, মো. রেজা প্রমুখ।
এর আগেও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি এবং ব্যাংকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কুমিল্লার জিয়া আলমের জেল হয় ৪ বছর ২ মাস। তাকে ফেরত দিতে হয় ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৭ ডলার। সাউদার্ন ডিষ্ট্রিক্ট কোর্টের জাজ কিম্বা এমউড এ রায় দেন।
ব্রুকলীনে বসবাসরত সিলেটের সন্তান মো. আলতাফ ওরফে সবুজ ইয়েলো ট্যাক্সিক্যাব টালাতেন। তার ট্যাক্সির পেছনেই থাকতো ক্রেডিট কার্ডের মেশিন। অভিযোগ রয়েছে তিনি সর্বনাশ করেছেন বহু বাংলাদেশীর। প্রতারণা করেছেন ব্যাংকের সাথে। ম্যানহাটনের একই আদালত তাকে জেল দেয় ৩ বছর ৬ মাস। তাকেও জরিমানা করা হয় বিরাট অংকের।
জালিয়াত ও প্রতারণার জন্য এখনো জেলে আছেন প্রাক্তন ঢাকা ক্লাবের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান। গ্রেফতার রয়েছেন রাশেদ আহমেদ, শাহজাহান কবির, শামসুল আরেফিন, মনজুর আলম, মাজহারুল করিম মামুন, মোর্শেদ সারোয়ার, মতিউর রহমান, মারুফ মিয়া প্রমুখ। তাদের এসব অপকর্ম আমাদের মাথা হেঁট করেছে এই দূর প্রবাসেও।
চলতি বছর অগাষ্ট মাসে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের অভিযোগ ওহাইয়োতে ধরা পড়েন তিন বাংলাদেশী। তারা হলেন যথাক্রমে ফলে আজিজ (৩৫), মো. কামাল পারভেজ (২২) এবং জালাল শাহ (৩৩)। তারা বসবাস করতেন নিউ ইয়র্ক। ৫ আগস্ট ওহাইয়োর বাজেটা টাউনশীপের ওয়ালমার্ট ষ্টোরে চুরি করা তথ্যের মাধ্যমে তৈরী ক্রেডিট কার্ড চার্জ করার সময় এফবিআই সদস্যের হাতে গ্রেফতার হয় তারা। পরে তাদের গাড়ী থেকে উদ্ধার হয় কয়েকশ ক্রেডিট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে অনেকে ব্যক্তিগতভাবে প্রতারিত হয়েছেন এবং অনেক খবরই মিডিয়ায় আসে না। কিছুদিন আগে নিউ ইয়র্ক ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট হিসাবে কর্মরত এক বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে প্রতারকচক্র ৪ হাজার ডলারের ইলেকট্রিক সামগ্রী ক্রয় করে। একই সাথে ব্লুমিং ডেল থেকে ক্রয় করে ৮০০ ডলারের জামা কাপড়। কার্ডটি ছিলে চেজ ব্যাংকের। তারা উল্লেখিত অর্থ এ কার্ডে ফেরত দিতে গরিমসি করলে শেষ পর্যন্ত উকিলের স্মরণাপন্ন হতে হয় সেই বাংলাদেশীকে।
ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতরা দূর থেকেও তাদের কালো হাত বিস্তৃত করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশীদের ক্ষতি করতে তৎপর। কিছুদিন আগে এফবিআই সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। সিরাজুল দেশের বাহিরে থেকে বিভিন্ন দেশে বরবাসরত বহু বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত করে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করছিল। এছাড়া আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে কোলকাতায় বাজার করে এক প্রতারক চক্র। অথচ তিনি কোনদিন কোলকাতার মাটিতে পা রাখেন নি।
গোয়েন্দা তথ্য অনযায়ী জালিয়াত চক্র বেশীর ভাগ ক্রেডিট কার্ড তথ্য সংগ্রহ করে থাকে ইমেইল একাউন্ট থেকে। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লন্ডন ও কানাডায় রয়েছে তাদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ চক্রের সদস্যরা পরবর্তীতে নিজের নামে ভূয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে কার্ড তৈরী করে অর্থ উত্তোলন করে। এছাড়াও জালিয়াত চক্র বিভিন্নভাবে কার্ডের সব ধরণের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। পরে ক্রেডিট কার্ড মেশিন রিডার দিয়ে নকল কার্ড বানানো হয়। এই কার্ড দিয়ে বাজার করার পর বিল কার্ডের প্রকৃত মালিকের কাছে চলে যায়।
গত কয়েক বছর আগে ব্রঙ্কসের জেকোবি হাসপাতাল থেকে কয়েজন রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে হাজার হাজার বাংলাদেশীর তথ্যও ছিলো। ব্যাপারটি নিয়ে বাংলা পত্রিকা ফলাও করে রিপোর্ট করে। কিন্তু সেসব ইনফরমেশন পরে উদ্ধার হয়েছে এমন খবর আর পাওয়া যায়নি।
গত বছর টার্গেট ষ্টোর থেকে চার কোটিরও বেশী ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিলো সাইবার অপরাধীরা। টার্গেট কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর থ্যাংকস্ গিভিং ডে তেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এমনি ভাবে বিভিন্ন উপায়ে তথ্য চুরির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। এই তথ্য চুরির কার্যক্রম চালায় সাইবার অপরাধীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি: যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং আলোচিত ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের ঘটনাটি ধরা পড়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে। সংঘবদ্ধ একটি চক্র ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের মাধ্যমে ২০ কোটি ডলার হাতিয়ে নেয। পরে এ অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬জনকে আটক করে এফবিআই।
নিউজার্সী ভিত্তিক এ প্রতারণার জাল ২৮টি অঙ্গরাজ্যে বিস্তৃত ছিলো। ৭ হাজার ভূয়া পরিচয়ের মধ্যেমে তারা ২৫ হাজার ক্রেডিট কার্ড নিতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে ৭ হাজার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর ক্রেডিট রেটিং ইচ্ছাকতভাবে বাড়িয়ে দিয়ে বড় অংকের অর্থ ঋণ নেয়ায় পথ তৈরি করা হয়। জালিয়াতের মাধ্যমে ঋণ নেয়া অর্থ পরিশোধ করেনি প্রতারক চক্রটি। হাতিয়ে নেয়া অর্থ নানা উপায়ে তারা পাকিস্তান, ভারত, আরব আমিরাত, কানাডা, রোমানিয়া, চীন ও জাপানে পাচার করে।
বাংলাদেশে যেভাবে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি হচ্ছে: আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্র বাংলাদেশের ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডারদের একাউন্ট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আইটি এক্সপার্ট বা সিষ্টেম এনালিষ্টের ভূয়া পরিচয় পত্র তৈরী করে তা এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলে বুথের দরজায় আঠা দিয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস বা ম্যাগনেটি কার্ড রিডার বসিয়ে এটিএম কার্ডের সব তথ্য স্কান করছে। এটিএম বুথের বাটন যেখানে থেকে ঠিক তার উপরে গোপন মুভি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। গ্রাহক বুথ থেকে টাকা তুলতে গোপন পিন নাম্বার যখন চাপতে থাকে সেই দৃশ্য ধারণ করা হয় গোপন ক্যামেরায়। অন্যান্য পদ্ধতিতেও ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডারদের তথ্য উপাত্ত হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা এটিএম এবং ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তির একাউন্টে হানা দিচ্ছে।
গত কিছুদিন আগে এমনি একটি জালিয়াত চক্রকে গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ শ্রীলংকান বংশোদ্ভুত একজন বৃটিশ নাগরিক এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করে। জালিয়াত চক্রের সদস্যরা স্বীকার করেছে তাদের সংগে ইংল্যান্ড, কানাডা, শ্রীলংকা, ভারত ও বুলগেরিয়ার জালিয়াত চক্রের যোগাযোগ রয়েছে।
অনলাইনে কেনাকাটা কতটা নিরাপদ: আপনার অনলাইন একাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে যে কোন সময় তথ্য চুরি করে নিতে পারে সাইবার দুর্বত্তরা। সম্প্রতি মার্কিন অলাভজনক সংস্থ্যা ‘আরএএনডি’ কর্পোরেশনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড রিসোর্স বিভাগ একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয় হ্যাকারদের এই বাজার অত্যাধুনিক ও সুসংগঠিত। যারা হ্যাক বা তথ্য চুরি করে তারা শেষ পর্যন্ত সেই চুরি করা তথ্য অবৈধ কোন ওয়েব সাইটে বিক্রি করে দেয়। এরকম ওয়েব সাইটে ব্যক্তিগত তথ্য কেনা-বেচা করার সুবিধা আছে।
মার্কিন প্রযুক্তি বিশ্লেষক উইল ওবেমাস এ প্রসঙ্গে বলেন, এখন হ্যাকারদের দৃষ্টি ছবি এমনটি সামাজিক যোগাযোগের একাউন্টের ওপরও। চুরি করার উপায় থেকে অর্থ আয় করার পথ খুঁজে বের করেছে।
আর এ এনডির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে সাইবার কালোবাজারকে এখন বলা যায় হ্যাকারস বাজার। এই বাজারে এখন বিভিন্ন রকম পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিছু গোপন সংস্থা এ ধরণের বাজার তৈরী করছে। দেখা গেছে তারা এ ধরনের বাজার তৈরি করে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কাছে পৌছাতে পেরেছে আর চুরি করা তথ্য সেখানে কেনা বেচা করে লাখ লাখ ডলার আয় করছে।
হ্যাকারদের লক্ষ্য এখন মোবাইল ফোন: স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীরা কম্পিউটার কিংম্বা অন্য অনেক কিছু থেকে স্মার্ট ফোনেই নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং কাজ করে থাকেন। আর হ্যাকাররা এখন কম্পিউটার থেকে স্মার্ট ফোনের দিকেই বেশী নজর দিচ্ছে। ফোন ব্যবহারকারীদের অনেকেই ফোনেই ব্যাংকিং, ই-শপিংসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ করে থাকেন। আর এসব কাজে ব্যবহার করা ডেবিট/ ক্রেডিট কার্ডের তথ্য খুব সহজেই চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। এছাড়াও স্মার্ট ফোনে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাখেন যা অন্য কারো হাতে গেলে বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া পুরানো স্মার্টফোন বিক্রি করার সময় লক্ষ রাখতে হবে নতুন ফোনে যেন সফলভাবে ডাটা ট্রান্সফার করা হয় এবং পুরানোটির ডাটা ব্যাংক যেন শূণ্য থাকে।
এব্যাপারে অভিজ্ঞ একজন জানান, কোন মেমোরি থেকে মুছে ফেলার পরও বিভিন্ন তথ্য সেখানে থেকে যায়। অন্য কোন ডাটা সে জায়গা ওভাররাইট করার আগ পর্যন্ত খুব সহজেই এই তথ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব।
তাই ধরে নিতে হবে হ্যাকারদের হাত থেকে আপনার প্রিয় স্মার্ট ফোনটি আর নিরাপদ নেই। তাই সাবধানে নিজের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান করুন এবং অন্য কারো হাতে ফোন দেবার আগে দু’বার ভাবুন।
দেশে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের তৎপরতা আমাদের জনজীবনে অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলছে। এদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন অভিজ্ঞজনেরা। (বাংলা পত্রিকা)

Tag :

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

About Author Information

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, বুলগেরিয়া, সিঙ্গাাপুর ও শ্রীলংকার পাশাপাশি বাংলাদেশেও জালিয়াতচক্র তৎপর

প্রকাশের সময় : ০৯:২৭:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৪

নিউইয়র্ক: বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মানুষের প্রাত্যাহিক কেনাকাটায় ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। একই সাথে পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে কার্ড নিয়ে জালিয়াতির ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, স্পেন, বুলগেরিয়া, সিঙ্গাাপুর ও শ্রীলংকার পাশাপাশি বাংলাদেশেও এই জালিয়াতচক্র খুব তৎপর। প্রতারকরা সংঘবদ্ধভাবে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির মাধ্যমে তারা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মিডিয়ার কল্যাণে এসব খবরাখবর মুহুর্তের মধ্যে পৌছে যাচ্ছে দেশে দেশে।
মাত্র গত সপ্তাহেই ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতির একটি চাঞ্চল্যকর খবর পরিবেশন করছে সিএনএন। অষ্ট্রেলিয়ার ইতিহাসে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরির সবচেয়ে বড় ঘটনায় রোমানিয়ার ৭ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ক্রেডিট কার্ডের তথ্য চুরির মাধ্যমে প্রায় ৩ কোটি ১০ লাখ ডলার আত্মসাতের পরিকল্পনা করেছিল একটি আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র। তাদের কাছে প্রায় ৫ লাখ অষ্ট্রেলিয় ক্রেডিট কার্ডের তথ্য ছিলো বলে জানিয়েছে সে দেশের ফেডারেল পুলিশ। যুক্তরাষ্ট্রসহ এশিয়া ও ইউরোপের ১৪টি দেশে অবৈধভাবে এই অর্থ লেনদেন হতো বলে জানা গেছে আন্তর্জাতিক একটি অপরাধ তদন্তের মাধ্যমে।
আমরা বাংলাদেশীরা কতটুকু নিরাপদ: ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে দেশে বা প্রবাসে আমরা কতটুকু নিরাপদ। জবাব একটাই- তাহলো আমরা সর্বত্র হাই রিস্কের মধ্যে আছি এবং একেবারেই অনিরাপদ। শুধু বিদেশী প্রতারক চক্রের কাছ থেকেই নয় দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে নিউ ইয়র্কে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের তালিকায় রয়েছে বাংলাদেশীদের নাম। বিভিন্ন সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন তারা। অনেকে জেল খাটছেন। কেউ জেল থেকে বেরিয়ে এসেছেন, কেউ সাজা ঘোষণার প্রতীক্ষায় রয়েছেন। আমরা যে-কোন সময় তাদেরও শিকার হতে পারি।
গত সপ্তাহেই টক অব দি কমিউনিটি ছিল ক্রেডিট কার্ডসহ বিভিন্ন জালিয়াতের অভিযোগে বাংলাদেশী মাহবুব জামান এর দোষী সাবস্থ্য হওয়ার ঘটনা। জুরি বোর্ড ৩ কাউন্টিতে তাকে দোষী সাব্যস্থ করেছে এবং তার ৫৫ বছর সাজা হবে বলে জানা গেছে।
তাছাড়া চলতি সপ্তাহে আরো কয়েকজন বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের জন্য অভিযুক্ত হবার খবর পাওয়া গেছে। ৮ মিলিয়ন ডলারের ব্যাংক জালিয়াতি ও ভিসা প্রতারণা মামলার দোষ স্বীকারকারী নজরুল ইসলামের ১৫ মাস কারাদন্ড হয়েছে। মানহ্যাটন কোর্টের ফেডারেল জাজ এলিসন জে নাখান ঘোষণা দেন।  এছাড়া আরও কয়েজন দোষ স্বীকার করেছেন। তাদের শাস্তির ঘোষণাও আসছে খুব শীগ্রই। এদের মধ্যে রয়েছেন সৈয়দ আল হোসেন ওরফে সুমন, মো. খলিল ওরফে রবিন, একেএম গোলাম হোসেন, মো. রেজা প্রমুখ।
এর আগেও ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি এবং ব্যাংকের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে লাখ লাখ ডলার হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে কুমিল্লার জিয়া আলমের জেল হয় ৪ বছর ২ মাস। তাকে ফেরত দিতে হয় ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৮৮৭ ডলার। সাউদার্ন ডিষ্ট্রিক্ট কোর্টের জাজ কিম্বা এমউড এ রায় দেন।
ব্রুকলীনে বসবাসরত সিলেটের সন্তান মো. আলতাফ ওরফে সবুজ ইয়েলো ট্যাক্সিক্যাব টালাতেন। তার ট্যাক্সির পেছনেই থাকতো ক্রেডিট কার্ডের মেশিন। অভিযোগ রয়েছে তিনি সর্বনাশ করেছেন বহু বাংলাদেশীর। প্রতারণা করেছেন ব্যাংকের সাথে। ম্যানহাটনের একই আদালত তাকে জেল দেয় ৩ বছর ৬ মাস। তাকেও জরিমানা করা হয় বিরাট অংকের।
জালিয়াত ও প্রতারণার জন্য এখনো জেলে আছেন প্রাক্তন ঢাকা ক্লাবের স্বত্ত্বাধিকারী মিজানুর রহমান। গ্রেফতার রয়েছেন রাশেদ আহমেদ, শাহজাহান কবির, শামসুল আরেফিন, মনজুর আলম, মাজহারুল করিম মামুন, মোর্শেদ সারোয়ার, মতিউর রহমান, মারুফ মিয়া প্রমুখ। তাদের এসব অপকর্ম আমাদের মাথা হেঁট করেছে এই দূর প্রবাসেও।
চলতি বছর অগাষ্ট মাসে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের অভিযোগ ওহাইয়োতে ধরা পড়েন তিন বাংলাদেশী। তারা হলেন যথাক্রমে ফলে আজিজ (৩৫), মো. কামাল পারভেজ (২২) এবং জালাল শাহ (৩৩)। তারা বসবাস করতেন নিউ ইয়র্ক। ৫ আগস্ট ওহাইয়োর বাজেটা টাউনশীপের ওয়ালমার্ট ষ্টোরে চুরি করা তথ্যের মাধ্যমে তৈরী ক্রেডিট কার্ড চার্জ করার সময় এফবিআই সদস্যের হাতে গ্রেফতার হয় তারা। পরে তাদের গাড়ী থেকে উদ্ধার হয় কয়েকশ ক্রেডিট কার্ড।
ক্রেডিট কার্ড প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে অনেকে ব্যক্তিগতভাবে প্রতারিত হয়েছেন এবং অনেক খবরই মিডিয়ায় আসে না। কিছুদিন আগে নিউ ইয়র্ক ট্রাফিক এনফোর্সমেন্ট এজেন্ট হিসাবে কর্মরত এক বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে প্রতারকচক্র ৪ হাজার ডলারের ইলেকট্রিক সামগ্রী ক্রয় করে। একই সাথে ব্লুমিং ডেল থেকে ক্রয় করে ৮০০ ডলারের জামা কাপড়। কার্ডটি ছিলে চেজ ব্যাংকের। তারা উল্লেখিত অর্থ এ কার্ডে ফেরত দিতে গরিমসি করলে শেষ পর্যন্ত উকিলের স্মরণাপন্ন হতে হয় সেই বাংলাদেশীকে।
ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতরা দূর থেকেও তাদের কালো হাত বিস্তৃত করে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশীদের ক্ষতি করতে তৎপর। কিছুদিন আগে এফবিআই সিঙ্গাপুরে অবস্থানরত বাংলাদেশী সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। সিরাজুল দেশের বাহিরে থেকে বিভিন্ন দেশে বরবাসরত বহু বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত করে তাদের অর্থ আত্মসাৎ করছিল। এছাড়া আমেরিকা প্রবাসী এক বাংলাদেশীর ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি করে কোলকাতায় বাজার করে এক প্রতারক চক্র। অথচ তিনি কোনদিন কোলকাতার মাটিতে পা রাখেন নি।
গোয়েন্দা তথ্য অনযায়ী জালিয়াত চক্র বেশীর ভাগ ক্রেডিট কার্ড তথ্য সংগ্রহ করে থাকে ইমেইল একাউন্ট থেকে। আমেরিকা, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, লন্ডন ও কানাডায় রয়েছে তাদের শক্তিশালী সিন্ডিকেট। এ চক্রের সদস্যরা পরবর্তীতে নিজের নামে ভূয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে কার্ড তৈরী করে অর্থ উত্তোলন করে। এছাড়াও জালিয়াত চক্র বিভিন্নভাবে কার্ডের সব ধরণের তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে। পরে ক্রেডিট কার্ড মেশিন রিডার দিয়ে নকল কার্ড বানানো হয়। এই কার্ড দিয়ে বাজার করার পর বিল কার্ডের প্রকৃত মালিকের কাছে চলে যায়।
গত কয়েক বছর আগে ব্রঙ্কসের জেকোবি হাসপাতাল থেকে কয়েজন রোগীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হয়ে যায়। এর মধ্যে হাজার হাজার বাংলাদেশীর তথ্যও ছিলো। ব্যাপারটি নিয়ে বাংলা পত্রিকা ফলাও করে রিপোর্ট করে। কিন্তু সেসব ইনফরমেশন পরে উদ্ধার হয়েছে এমন খবর আর পাওয়া যায়নি।
গত বছর টার্গেট ষ্টোর থেকে চার কোটিরও বেশী ক্রেডিট কার্ডের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছিলো সাইবার অপরাধীরা। টার্গেট কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী ২৮ নভেম্বর থ্যাংকস্ গিভিং ডে তেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এমনি ভাবে বিভিন্ন উপায়ে তথ্য চুরির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। এই তথ্য চুরির কার্যক্রম চালায় সাইবার অপরাধীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি: যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এবং আলোচিত ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের ঘটনাটি ধরা পড়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে। সংঘবদ্ধ একটি চক্র ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতের মাধ্যমে ২০ কোটি ডলার হাতিয়ে নেয। পরে এ অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৬জনকে আটক করে এফবিআই।
নিউজার্সী ভিত্তিক এ প্রতারণার জাল ২৮টি অঙ্গরাজ্যে বিস্তৃত ছিলো। ৭ হাজার ভূয়া পরিচয়ের মধ্যেমে তারা ২৫ হাজার ক্রেডিট কার্ড নিতে সক্ষম হয়। এর মধ্যে ৭ হাজার ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীর ক্রেডিট রেটিং ইচ্ছাকতভাবে বাড়িয়ে দিয়ে বড় অংকের অর্থ ঋণ নেয়ায় পথ তৈরি করা হয়। জালিয়াতের মাধ্যমে ঋণ নেয়া অর্থ পরিশোধ করেনি প্রতারক চক্রটি। হাতিয়ে নেয়া অর্থ নানা উপায়ে তারা পাকিস্তান, ভারত, আরব আমিরাত, কানাডা, রোমানিয়া, চীন ও জাপানে পাচার করে।
বাংলাদেশে যেভাবে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি হচ্ছে: আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্র বাংলাদেশের ব্যাংক একাউন্ট হোল্ডারদের একাউন্ট থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের আইটি এক্সপার্ট বা সিষ্টেম এনালিষ্টের ভূয়া পরিচয় পত্র তৈরী করে তা এটিএম বুথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা বলে বুথের দরজায় আঠা দিয়ে একটি বিশেষ ডিভাইস বা ম্যাগনেটি কার্ড রিডার বসিয়ে এটিএম কার্ডের সব তথ্য স্কান করছে। এটিএম বুথের বাটন যেখানে থেকে ঠিক তার উপরে গোপন মুভি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করে জালিয়াত চক্রের সদস্যরা। গ্রাহক বুথ থেকে টাকা তুলতে গোপন পিন নাম্বার যখন চাপতে থাকে সেই দৃশ্য ধারণ করা হয় গোপন ক্যামেরায়। অন্যান্য পদ্ধতিতেও ব্যাংকের একাউন্ট হোল্ডারদের তথ্য উপাত্ত হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্যরা এটিএম এবং ক্রেডিট কার্ড ক্লোন করে বিভিন্ন ব্যক্তির একাউন্টে হানা দিচ্ছে।
গত কিছুদিন আগে এমনি একটি জালিয়াত চক্রকে গ্রেফতার করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ শ্রীলংকান বংশোদ্ভুত একজন বৃটিশ নাগরিক এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেফতার করে। জালিয়াত চক্রের সদস্যরা স্বীকার করেছে তাদের সংগে ইংল্যান্ড, কানাডা, শ্রীলংকা, ভারত ও বুলগেরিয়ার জালিয়াত চক্রের যোগাযোগ রয়েছে।
অনলাইনে কেনাকাটা কতটা নিরাপদ: আপনার অনলাইন একাউন্ট হ্যাক করে সেখান থেকে যে কোন সময় তথ্য চুরি করে নিতে পারে সাইবার দুর্বত্তরা। সম্প্রতি মার্কিন অলাভজনক সংস্থ্যা ‘আরএএনডি’ কর্পোরেশনের ন্যাশনাল সিকিউরিটি এন্ড রিসোর্স বিভাগ একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয় হ্যাকারদের এই বাজার অত্যাধুনিক ও সুসংগঠিত। যারা হ্যাক বা তথ্য চুরি করে তারা শেষ পর্যন্ত সেই চুরি করা তথ্য অবৈধ কোন ওয়েব সাইটে বিক্রি করে দেয়। এরকম ওয়েব সাইটে ব্যক্তিগত তথ্য কেনা-বেচা করার সুবিধা আছে।
মার্কিন প্রযুক্তি বিশ্লেষক উইল ওবেমাস এ প্রসঙ্গে বলেন, এখন হ্যাকারদের দৃষ্টি ছবি এমনটি সামাজিক যোগাযোগের একাউন্টের ওপরও। চুরি করার উপায় থেকে অর্থ আয় করার পথ খুঁজে বের করেছে।
আর এ এনডির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে সাইবার কালোবাজারকে এখন বলা যায় হ্যাকারস বাজার। এই বাজারে এখন বিভিন্ন রকম পণ্য পাওয়া যাচ্ছে। কিছু গোপন সংস্থা এ ধরণের বাজার তৈরী করছে। দেখা গেছে তারা এ ধরনের বাজার তৈরি করে প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কাছে পৌছাতে পেরেছে আর চুরি করা তথ্য সেখানে কেনা বেচা করে লাখ লাখ ডলার আয় করছে।
হ্যাকারদের লক্ষ্য এখন মোবাইল ফোন: স্মার্ট ফোন ব্যবহারকারীরা কম্পিউটার কিংম্বা অন্য অনেক কিছু থেকে স্মার্ট ফোনেই নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং কাজ করে থাকেন। আর হ্যাকাররা এখন কম্পিউটার থেকে স্মার্ট ফোনের দিকেই বেশী নজর দিচ্ছে। ফোন ব্যবহারকারীদের অনেকেই ফোনেই ব্যাংকিং, ই-শপিংসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ করে থাকেন। আর এসব কাজে ব্যবহার করা ডেবিট/ ক্রেডিট কার্ডের তথ্য খুব সহজেই চলে যেতে পারে হ্যাকারদের হাতে। এছাড়াও স্মার্ট ফোনে নানা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রাখেন যা অন্য কারো হাতে গেলে বিপদ ডেকে আনতে পারে। এছাড়া পুরানো স্মার্টফোন বিক্রি করার সময় লক্ষ রাখতে হবে নতুন ফোনে যেন সফলভাবে ডাটা ট্রান্সফার করা হয় এবং পুরানোটির ডাটা ব্যাংক যেন শূণ্য থাকে।
এব্যাপারে অভিজ্ঞ একজন জানান, কোন মেমোরি থেকে মুছে ফেলার পরও বিভিন্ন তথ্য সেখানে থেকে যায়। অন্য কোন ডাটা সে জায়গা ওভাররাইট করার আগ পর্যন্ত খুব সহজেই এই তথ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব।
তাই ধরে নিতে হবে হ্যাকারদের হাত থেকে আপনার প্রিয় স্মার্ট ফোনটি আর নিরাপদ নেই। তাই সাবধানে নিজের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আদান প্রদান করুন এবং অন্য কারো হাতে ফোন দেবার আগে দু’বার ভাবুন।
দেশে বিদেশে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াত চক্রের তৎপরতা আমাদের জনজীবনে অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তাহীনতা বাড়িয়ে তুলছে। এদের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিরোধ গড়ে তোলার পাশাপাশি সবাইকে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন অভিজ্ঞজনেরা। (বাংলা পত্রিকা)