নিউইয়র্ক ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিজ্ঞাপন :
মঙ্গলবারের পত্রিকা সাপ্তাহিক হককথা ও হককথা.কম এ আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুন +1 (347) 848-3834

বাখমুতে রুশ সেনাদের ঘিরে ফেলতে চায় ইউক্রেন

রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : ০৩:১০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩
  • / ১৭ বার পঠিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর বাখমুত দখল করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। টানা দশ মাসের লড়াইয়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর বাহিনীটি প্রায় বিধ্বস্ত। শহরটি দখলের পর এখন পর্যন্ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ পায়নি। গত বছর গ্রীষ্মে বাখমুতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। বিশ্লেষকরা তখন ছিলেন ধাঁধায়। মস্কো কেন এই ছোট শহর দখলে এত সেনা ও সরঞ্জাম হারাচ্ছে, যে শহরের কৌশলগত গুরুত্ব খুব সামান্য। শহরটি রক্ষায় সামরিক শক্তি নিয়োগ করে সমালোচনায় পড়ে ইউক্রেনও। তবে দেশটির নেতারা বলছেন, রুশ সেনাদের বিধ্বস্ত করতে পারাতে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে গেছে। দীর্ঘ এই লড়াইয়ে রাশিয়ার কয়েক হাজার সেনা নিহত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্ট্যালিনগ্রাদের লড়াইয়ের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। মূলত ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে এই তুলনা। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান বলেন, বাখমুত হলো স্ট্যালিনগ্রাদের মতো। কারণ কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় শহরটির প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে।

শহরটি দখল কিংবা রক্ষায় উভয় পক্ষ যে ক্ষয়ক্ষতি শিকার হয়েছে যা তা বাস্তবে কতটা কাজে আসবে তা জানা যাবে যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে। কয়েক মাস ধরে অর্থপূর্ণ কিছু অর্জনে ব্যর্থ রাশিয়া একটি জয় হিসেবে বাখমুতকে তুলে ধরতে পারছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শহরটি দখলের কোনও সুবিধা তারা আদায় করতে পারেনি। অপর দিকে, ইউক্রেন তাদের বহুল প্রতীক্ষিত পাল্টা আক্রমণে রাশিয়াকে আঘাত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রাশিয়ার দখলকৃত সব ভূখণ্ড তারা পুনরুদ্ধার করতে চায়। বাখমুত রক্ষায় ইউক্রেন ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হলেও তারা নিজেদের প্রশিক্ষিত ব্রিগেড মোতায়েন করেনি। এই সেনাদের পশ্চিমা মিত্রদের দেওয়া অস্ত্রে সজ্জিত করা হয়েছে পাল্টা আক্রমণের জন্য।

আরোও পড়ুন । ভারতে তারহীন অডিও পণ্য উৎপাদন করবে শাওমি

রাশিয়া এখন নিজেকে বাখমুতে ইউক্রেনীয় আক্রমণ প্রতিহত করার অবস্থায় পাচ্ছে। এছাড়া শীতকালে তাদের আক্রমণেও তারা গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এই লড়াই রুশ সামরিক বাহিনীর বিভাজনও সামনে এনেছে। ইউক্রেনের ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক ব্যাটালিয়ন কমান্ডার দিমিত্রো কুখারচুক বলেন, হ্যাঁ, তারা পুরো শহর পেয়েছে। কিন্তু কী মূল্যের বিনিময়ে তারা এটি পেলো? বাখমুতের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার বদলে রুশ সেনাদের এখন কাছের পাহাড়ি এলাকা থেকে আক্রমণ চালানো ইউক্রেনীয়দের মোকাবিলা করতে হবে। প্রতিশ্রুতি অনুসারে রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গোষ্ঠী বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার নিয়মিত সেনাদের হাতে তুলে দিয়ে চলে গেছে শহরটি ধরে রাখার জন্য সেনা মোতায়েনের উদ্যোগ নিতে হবে মস্কোকে।

প্রিগোজিন দাবি করেছেন, বাখমুত দখলের মাধ্যমে রুশ সেনাবাহিনীকে আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে তার বাহিনী। তবে স্থানীয়ভাবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী একাধিক পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে শহরটির দক্ষিণে তারা রাশিয়ার কাছ থেকে কিছু ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করেছে। ইউক্রেনীয় ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক প্লাটুন কমান্ডার বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো কৌশলগতভাবে বাখমুতকে ঘিরে ফেলা। এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হোক বা না হোক, তাদের এই সীমিত পাল্টা আক্রমণের ফলে রুশ সেনারা নিজেদের পুনরায় সংগঠিত করতে পারছে না কিংবা এখানকার সেনাদের অন্যত্র মোতায়েন করতে পারছে না মস্কো। রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে ইউক্রেন যে বড় ধরনের অভিযানের পরিকল্পনা করছে এই সীমিত পাল্টা আক্রমণ তার অংশ।

এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ইউক্রেন সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় পরিস্থিতির উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার জ্বালানি ও বিভিন্ন গুদামে সম্প্রতি ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা জোরদার করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, রাশিয়াকে এখনও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু শত্রুদের সেনা সংখ্যা ও গোলাবারুদের সুবিধা রয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর একটি ড্রোন ইউনিটের কমান্ডার ইউরি ফেডোরেঙ্কো বলেন, শত্রুরা দুর্বল নয়। তবে রুশ সেনাদের মনোবল খুব কম। শাস্তি এড়াতে অনেকে লড়াই করছে। ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক ডেপুটি ব্রিগেড কমান্ডার বলেন, শুরুতে শত্রুরা এগিয়ে ছিল। এখন আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে। সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

বেলী/হককথা

সোশ্যাল মিডিয়ায় খবরটি শেয়ার করুন

বাখমুতে রুশ সেনাদের ঘিরে ফেলতে চায় ইউক্রেন

প্রকাশের সময় : ০৩:১০:২৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ মে ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় ছোট শহর বাখমুত দখল করেছে রাশিয়ার সেনাবাহিনী। টানা দশ মাসের লড়াইয়ে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির পর বাহিনীটি প্রায় বিধ্বস্ত। শহরটি দখলের পর এখন পর্যন্ত সামনে এগিয়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ পায়নি। গত বছর গ্রীষ্মে বাখমুতে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। বিশ্লেষকরা তখন ছিলেন ধাঁধায়। মস্কো কেন এই ছোট শহর দখলে এত সেনা ও সরঞ্জাম হারাচ্ছে, যে শহরের কৌশলগত গুরুত্ব খুব সামান্য। শহরটি রক্ষায় সামরিক শক্তি নিয়োগ করে সমালোচনায় পড়ে ইউক্রেনও। তবে দেশটির নেতারা বলছেন, রুশ সেনাদের বিধ্বস্ত করতে পারাতে ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে গেছে। দীর্ঘ এই লড়াইয়ে রাশিয়ার কয়েক হাজার সেনা নিহত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় স্ট্যালিনগ্রাদের লড়াইয়ের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে। মূলত ক্ষয়ক্ষতির নিরিখে এই তুলনা। ওয়াশিংটনের সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র উপদেষ্টা মার্ক কানসিয়ান বলেন, বাখমুত হলো স্ট্যালিনগ্রাদের মতো। কারণ কৌশলগত গুরুত্বের তুলনায় শহরটির প্রতীকী তাৎপর্য রয়েছে।

শহরটি দখল কিংবা রক্ষায় উভয় পক্ষ যে ক্ষয়ক্ষতি শিকার হয়েছে যা তা বাস্তবে কতটা কাজে আসবে তা জানা যাবে যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে। কয়েক মাস ধরে অর্থপূর্ণ কিছু অর্জনে ব্যর্থ রাশিয়া একটি জয় হিসেবে বাখমুতকে তুলে ধরতে পারছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত শহরটি দখলের কোনও সুবিধা তারা আদায় করতে পারেনি। অপর দিকে, ইউক্রেন তাদের বহুল প্রতীক্ষিত পাল্টা আক্রমণে রাশিয়াকে আঘাত করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। রাশিয়ার দখলকৃত সব ভূখণ্ড তারা পুনরুদ্ধার করতে চায়। বাখমুত রক্ষায় ইউক্রেন ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়তে হলেও তারা নিজেদের প্রশিক্ষিত ব্রিগেড মোতায়েন করেনি। এই সেনাদের পশ্চিমা মিত্রদের দেওয়া অস্ত্রে সজ্জিত করা হয়েছে পাল্টা আক্রমণের জন্য।

আরোও পড়ুন । ভারতে তারহীন অডিও পণ্য উৎপাদন করবে শাওমি

রাশিয়া এখন নিজেকে বাখমুতে ইউক্রেনীয় আক্রমণ প্রতিহত করার অবস্থায় পাচ্ছে। এছাড়া শীতকালে তাদের আক্রমণেও তারা গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে। এই লড়াই রুশ সামরিক বাহিনীর বিভাজনও সামনে এনেছে। ইউক্রেনের ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক ব্যাটালিয়ন কমান্ডার দিমিত্রো কুখারচুক বলেন, হ্যাঁ, তারা পুরো শহর পেয়েছে। কিন্তু কী মূল্যের বিনিময়ে তারা এটি পেলো? বাখমুতের পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার বদলে রুশ সেনাদের এখন কাছের পাহাড়ি এলাকা থেকে আক্রমণ চালানো ইউক্রেনীয়দের মোকাবিলা করতে হবে। প্রতিশ্রুতি অনুসারে রুশ ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গোষ্ঠী বাখমুতের নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার নিয়মিত সেনাদের হাতে তুলে দিয়ে চলে গেছে শহরটি ধরে রাখার জন্য সেনা মোতায়েনের উদ্যোগ নিতে হবে মস্কোকে।

প্রিগোজিন দাবি করেছেন, বাখমুত দখলের মাধ্যমে রুশ সেনাবাহিনীকে আরও পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার সুযোগ তৈরি করেছে তার বাহিনী। তবে স্থানীয়ভাবে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনী একাধিক পাল্টা হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে শহরটির দক্ষিণে তারা রাশিয়ার কাছ থেকে কিছু ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করেছে। ইউক্রেনীয় ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক প্লাটুন কমান্ডার বলেছেন, আমাদের লক্ষ্য হলো কৌশলগতভাবে বাখমুতকে ঘিরে ফেলা। এই লক্ষ্য অর্জন সম্ভব হোক বা না হোক, তাদের এই সীমিত পাল্টা আক্রমণের ফলে রুশ সেনারা নিজেদের পুনরায় সংগঠিত করতে পারছে না কিংবা এখানকার সেনাদের অন্যত্র মোতায়েন করতে পারছে না মস্কো। রাশিয়ার দখলে থাকা ভূখণ্ড পুনরুদ্ধারে ইউক্রেন যে বড় ধরনের অভিযানের পরিকল্পনা করছে এই সীমিত পাল্টা আক্রমণ তার অংশ।

এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সীমান্তবর্তী অঞ্চলে ইউক্রেন সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় পরিস্থিতির উত্তেজনা আরও বাড়িয়েছে। এছাড়া রাশিয়ার জ্বালানি ও বিভিন্ন গুদামে সম্প্রতি ড্রোন ও দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হামলা জোরদার করেছে ইউক্রেন। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর দাবি, রাশিয়াকে এখনও প্রতিরোধের মুখে পড়তে হচ্ছে। কিন্তু শত্রুদের সেনা সংখ্যা ও গোলাবারুদের সুবিধা রয়েছে। ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর একটি ড্রোন ইউনিটের কমান্ডার ইউরি ফেডোরেঙ্কো বলেন, শত্রুরা দুর্বল নয়। তবে রুশ সেনাদের মনোবল খুব কম। শাস্তি এড়াতে অনেকে লড়াই করছে। ৩য় অ্যাসল্ট ব্রিগেডের এক ডেপুটি ব্রিগেড কমান্ডার বলেন, শুরুতে শত্রুরা এগিয়ে ছিল। এখন আমরা সুবিধাজনক অবস্থানে। সূত্র : ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল

বেলী/হককথা